সেই রাহেলা বু’কে খুজে পেয়েছি
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চেনা পথ, অচেনা গন্তব্য। মটর বাইক নিয়ে ছুটে চলেছি সেই গন্তব্যে। সঙ্গে আছে ভাতিজা হারুন অর রশিদ। ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা সড়ক ধরে থামলাম বদরগঞ্জ (দশমাইল) বাজারে। রাহেলা বু’র অবস্থান জানলাম আলতাফ ভাইয়ের কাছ থেকে। তিনি আগে থেকেই খোঁজ করে রাখছিলেন রাহেলা বু’কে। বাজার পর হয়েই একটি সরু পথ মিশেছে আলিয়ারপুর গ্রামে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম হচ্ছে আলিয়ারপুর। চেনা পথটি আজ বড্ডো অচেনা মনে হচ্ছিল। ইট পাথরের দালান কোঠায় বদলে গেছে গ্রামের মানচিত্র। এই গ্রামের একটি খুপরি ঘরে থাকেন স্বামী পরিত্যাক্তা রাহেলা বু। রাহেলা বু’কে দেখার অতৃপ্ত বাসনা আর ৪০ বছর আগের স্মৃতি দোদুল্যমান বুকে। রাহেলা বু’র বাড়ির পথ যতই কমে আসছিলো, ততই হৃদস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছিল। আবার মনে শংকা জাগছিলো সত্যিই কি রাহেলা বু বেঁচে আছেন ? যাকে দেখতে পাবো আসলে সেই কি রাহেলা বু ? গ্রামবাসির কাছে জিজ্ঞেস করতে করতে ঢুকে পড়ি রাহেলা বু’র বাড়ি। অচেনা মুখ আর আগন্তুক দেখে বাড়ির লোকজন ভড়কে যাচ্ছিল। কন্ঠ শুনে ষাটোর্ধ রাহেলা বু একটি খুপরি ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। পরিচয় দিলে তিনি প্রথমে চিনতে পারলেন না। আমার আব্বার নাম বলা মাত্রই বুকে জড়িয়ে নিলেন রাহেলা বু। শাড়ির আঁচলে তখনও যেন সেই ৪০ বছর আগের ঘ্রান। উষ্ণ মমতায় কিছুক্ষনের জন্য হারিয়ে গেলাম সেই শৈশবে। জিজ্ঞাসা করলেন আমার জামাই (আমার আব্বাকে তিনি জামাই বলে ডাকতেন) কি বেঁচে আছে ? ইন্তেকালের কথা শুনে চোখ বেয়ে অশ্রæ বারি ঝরে পড়লো তার। বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে জানালেন অনেক স্মৃতিকথা। ৪০ বছর আগের সেই রাহেলা বু’র মুখাবয়াব ঠিক থাকলেও বয়স আর অসুখ বেসুখে তিনি এখন অনেকটাই মাজুর। মাথায় এলোমলো পাঁকা চুল আর পান খেয়ে ঠোট দুটো লাল টকটক করছিল। হ্যাঁ এই সে রাহেলা বু, যাকে আমি অনেক দিন ধরেই খুজছিলাম। somewhereinblog-এ বিষয়টি লেখার পর ব্লগের বন্ধুরা আমাকে অনুপ্রেরনা দিয়েছিলেন রাহেলা বু’কে খোঁজ করার জন্য। আমি ব্লগের বুন্ধুদের ধন্যবাদ জানায়। অবশেষে তাদের সাহস আর তাগাদা আমাকে ৪০ বছর আগের সেই রাহেলা বু’কে খুজে পেতে সাহায্য করেছে। আশির দশকে আমি যখন আব্বার বাইসাইকেলে চেপে দশমাইল আখ সেন্টারে যেতাম, তখন রাহেলা বু’ ওই মেসে রান্নার কাজ করতেন। আখ সেন্টারে পৌছানো মাত্র সাইকেল থেকে ছোঁ মেরে রাহেলা বু আমাকে কোলে তুলে নিতেন। তারপর, তারপর ঠিক মায়ের মতোই পরম মমতায় আমাকে বসিয়ে খাওয়াতেন। আজ সেই আখ সেন্টারের জৌলুশ হারিয়ে গেছে। চিনি কলের হুইসেল আর বাজেনা। কৃষকরা ছেড়ে দিয়েছেন আখ চাষ। তাই ভাঙ্গা হাটে পরিণত হয়েছে ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রগুলো। অতীতের সেই স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। আমার রাহেলা বু হাজার বছর বাঁচুক এই দোয়া করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের...
...বাকিটুকু পড়ুনলিখেছেন
সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০

সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/...
...বাকিটুকু পড়ুনলিখেছেন
ক্লোন রাফা, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২৪

গল্প শুনেন বলি-
আমরা পড়ালেখা গুছগাছ কইরে চাকরীতে ঢুকছি।হঠাৎ বন্ধু গো ইমেইলের গ্রুপে মেসেজ (নাম ধরেন রফিক), রফিক যে পাড়ায় (রেড লাইট এরিয়া) যাইতো সেখানের একজন সার্ভিস প্রোভাইডাররে বিয়া...
...বাকিটুকু পড়ুনলিখেছেন
ইসিয়াক, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪০
কে আছিস বলবান!
হ্ আগুয়ান।
দে সাড়া দে ত্বরা।
ধরতে হবে হাল,বাইতে হবে তরী, অবস্থা বেসামাল।
জ্বলছে দেখ প্রাণের স্বদেশ
বিপর্যস্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
মানবিকতা, মূল্যবোধ, কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতির বাতিঘর।
সর্বত্র আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক এসেছে, বলেছে, I have a plan; তারেকের প্ল্যানটা কি? এই মহুর্তে তার প্ল্যান হতে পারে, নমিনেশন বাণিজ্য করে কমপক্ষে ৩০০০ কোটি টাকা আয়। ৩০০ সীটে গড়ে ১০...
...বাকিটুকু পড়ুন