somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাচ্চা কাচ্চারা খুব শ্রদ্ধেয়,তাদের শ্রদ্ধা করতে শিখুন

০৭ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৪:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যেদিন থেকে আমার পিচ্চি মামাতো ভাই আমার কাঁধে উঠে দুঘন্টা নামার নাম করল না, সেদিন থেকে বাচ্চাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়ে গেল।শ্রদ্ধা না করে উপায় আছে।একেকটা লাদেন।সে থেকে যে আমার কাধঁ বাকা হইছে এখন পর্যন্ত সোজা হয়নি।এখনো আমি ছবি তুললে কাঁধ বাকা হয়ে থাকে।বন্ধুরা বলে তোর কাঁধ বাঁকা ক্যান?

আমার ভাগিনা আমাদের গ্রামে আসছে।নানা বাড়ি এসে সে পুরা পাঙ্খা।এটা করে ওইটা করে।এক সকালে সবার চিল্লাচিল্লিতে উঠে দেখি ভাগিনা আমার খড়ের স্তুপে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।যাক হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।ঘরেতো আর ধরাইনি।কিন্তু সে কই?আগুন নিভিয়ে সবাই তাকে খোজা নিয়ে ব্যাস্ত।কোথাও নাই।এদিক খুজি ওদিক খুজি কিন্তু সে নাই।আমার দাদি তাকে খুজতে খুজতে বাড়ীর পাশে জংলা টাইপের একটা জায়গার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল।দাদী ভিতরে কাশির শব্দ শুনলো।ভিতরে গিয়ে দেখে আমার ভাগিনা।ভাগিনা আমার ভীষন চালাক।দাদিকে দেখে শব্দ করে জানান দিল সেখানে সে আছে।;)

এর পরের দিনের ঘটনা তাও সকালে সবার চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভাঙ্গল।আজকের কাহিনী হল পাশের ঘরের ছাগল পানিতে ফেলে দিছে।ঘটনা তেমন কিছু না সে ছাগলকে আদর করতে গেছিল কিন্তু ছাগল তা বুঝতে পারেনি,তাই ছাগলকে পুকুরে ফেলে দিছে।একদম উচিত করেছিস।যে ব্যাটা আদর বুঝেনা সেতো আসলে একটা ছাগল।তারে পানিতেই ফেলা উচিত।

এবার আসি আমার আরেক ভাগিনা মাহামতি রাগীব সাহেবের কথায়।তিনি আরেক কাঠি সরেস।একদিন তার মায়ের মোবাইল পুকুরে ফেলে দিছে।তার মা তাকে জিজ্ঞেস করল “মোবাইল ফেলছিস ক্যান” তার নির্বিকার উত্তর “সাপ আর মাছেরা কথা বলবে তাই”।
রাগীবের মাথা অসম্বভ শক্ত।তার এই মাথা নিয়ে সবাইকে সকাল বিকাল জিদানের ঢুস মারে।তার ঢুস খেয়ে আমার মাথা কয়েক ইঞ্চি ডেবে গেছে।আমাকে মারে ভাল কথা।কিন্তু সে তার স্কুলের ম্যাডামকে বলে “ম্যাডাম আমার মাথা শক্ত,ঢুস মারবো” আমি কেবল তার মাথার ভয়ে তাকে ঘাটাই না।থাক বাবা তুই তোর মাথা নিয়েই থাক। :|

এবার আসি আমার মাননীয় ভাগ্নি মৌরিনের কথা।তিনি বাংলা সিনেমার রওশন জামিলের কাছাকাছি।আমার গায়ের রং কাল আর সে সকাল বিকাল আমাকে “কালা বলে ধিক্কার দেয়”।অথচ আমাকে চুপ করে এসব বর্ণবাদী কথাবার্তা শুনতে হয়।কারন কিছু বললেই ভেঁ ভেঁ করে কান্দে আর আপু এসে আমাকে চিল্লায়।:-/
আপুর বাসায় গেলে নিয়ম অনুযায়ী আমি কিছু টাকা নিই।ক্যামনে জানি মৌরিন এটা দেখে ফেলল।তারপর আর কি থাকা যায়।সে যদি কিছু কিনে দিতে বলে আর আমার যদি তা কিনে দিতে দেরী হয় সাথে সাথে শুরু করে দেয় “আমার আম্মু থেকেকো টাকা নিতে পারিস,আমারে কিনে দিতে বললে দিস না কেন?”
আমার মত একজন সম্মানীয় মানুষকে তুই তোকারি করে।মাঝে মাঝে ভাবি কি লাভ বেঁচে থেকে?

বাচ্চা দেখলে আমার একটা বদঅভ্যাস হল টান দিয়ে তাদের প্যান্ট খুলে দেয়া।সেদিন আমার ভাতিজা সালমানের প্যান্ট খুলে দিলাম,কি আজব সে এসে আমার প্যান্ট নিয়া টানাটানি করতেছে।দেখছেন কি বেইজ্জতি কারবার।একেবারে মান ইজ্জতে হাত দিয়া দিছে।সেই থেকে আমি সাবধান।লুঙ্গি পড়া থাকলে ভুলেও আমি এই কাম করতে যাই না। এবং বেল্ট না পড়ে কখনই তাদের প্যান্ট নিয়া টানাটানি করি না।/:)

এই ব্যাক্তিটিই আমার প্যান্ট নিয়া টানাটানি করেছিল।

আমার ভাতিজা আহনাফকে নিয়ে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড এর খেলা দেখতে গেলাম ষ্টেডিয়ামে।সে বায়না ধরল সে পেপসি খাবে,মাঠের গাড়ী থেকে।এখন আমি কি করি।তারে বললাম “ওই গাড়ী থেকে পেপসি খেতে হলে আগে তোকে ক্রিকেট খেলতে হবে”।সে বলল “তাহলে আমি এখন ওদের সাথে ক্রিকেট খেলবো”।
আমি যাই কই?আইসক্রিম খাওয়াই,সে খায়।শেষ হলে বলে “ওদের সাথে ক্রিকেট খেলে গাড়ী থেকে পেপসি খাব”এবার চকলেট দিই,চকলেট শেষ করে আবার বলে “ওদের সাথে ক্রিকেট খেলে গাড়ী থেকে পেপসি খাব”।এভাবে পেপসি,চকলেট,আইসক্রিম,ঝালমুড়ি সব খাওয়া শেষ তবুও বলে ““ওদের সাথে ক্রিকেট খেলে গাড়ী থেকে পেপসি খাব”X(
ততক্ষনে বাংলাদেশ অলআউট।যাক বাচাঁ গেল।ধন্যাদ বাংলাদেশ টিম।


বিঃদ্রঃ বাচ্চা কাচ্চারা সবসময় খুব শ্রদ্ধেয়।

বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে আমার আগের লিখা এখানে।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:৫৪
১৯টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×