আমার ভাগিনা আমাদের গ্রামে আসছে।নানা বাড়ি এসে সে পুরা পাঙ্খা।এটা করে ওইটা করে।এক সকালে সবার চিল্লাচিল্লিতে উঠে দেখি ভাগিনা আমার খড়ের স্তুপে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।যাক হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।ঘরেতো আর ধরাইনি।কিন্তু সে কই?আগুন নিভিয়ে সবাই তাকে খোজা নিয়ে ব্যাস্ত।কোথাও নাই।এদিক খুজি ওদিক খুজি কিন্তু সে নাই।আমার দাদি তাকে খুজতে খুজতে বাড়ীর পাশে জংলা টাইপের একটা জায়গার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল।দাদী ভিতরে কাশির শব্দ শুনলো।ভিতরে গিয়ে দেখে আমার ভাগিনা।ভাগিনা আমার ভীষন চালাক।দাদিকে দেখে শব্দ করে জানান দিল সেখানে সে আছে।
এর পরের দিনের ঘটনা তাও সকালে সবার চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভাঙ্গল।আজকের কাহিনী হল পাশের ঘরের ছাগল পানিতে ফেলে দিছে।ঘটনা তেমন কিছু না সে ছাগলকে আদর করতে গেছিল কিন্তু ছাগল তা বুঝতে পারেনি,তাই ছাগলকে পুকুরে ফেলে দিছে।একদম উচিত করেছিস।যে ব্যাটা আদর বুঝেনা সেতো আসলে একটা ছাগল।তারে পানিতেই ফেলা উচিত।
এবার আসি আমার আরেক ভাগিনা মাহামতি রাগীব সাহেবের কথায়।তিনি আরেক কাঠি সরেস।একদিন তার মায়ের মোবাইল পুকুরে ফেলে দিছে।তার মা তাকে জিজ্ঞেস করল “মোবাইল ফেলছিস ক্যান” তার নির্বিকার উত্তর “সাপ আর মাছেরা কথা বলবে তাই”।
রাগীবের মাথা অসম্বভ শক্ত।তার এই মাথা নিয়ে সবাইকে সকাল বিকাল জিদানের ঢুস মারে।তার ঢুস খেয়ে আমার মাথা কয়েক ইঞ্চি ডেবে গেছে।আমাকে মারে ভাল কথা।কিন্তু সে তার স্কুলের ম্যাডামকে বলে “ম্যাডাম আমার মাথা শক্ত,ঢুস মারবো” আমি কেবল তার মাথার ভয়ে তাকে ঘাটাই না।থাক বাবা তুই তোর মাথা নিয়েই থাক।
এবার আসি আমার মাননীয় ভাগ্নি মৌরিনের কথা।তিনি বাংলা সিনেমার রওশন জামিলের কাছাকাছি।আমার গায়ের রং কাল আর সে সকাল বিকাল আমাকে “কালা বলে ধিক্কার দেয়”।অথচ আমাকে চুপ করে এসব বর্ণবাদী কথাবার্তা শুনতে হয়।কারন কিছু বললেই ভেঁ ভেঁ করে কান্দে আর আপু এসে আমাকে চিল্লায়।
আপুর বাসায় গেলে নিয়ম অনুযায়ী আমি কিছু টাকা নিই।ক্যামনে জানি মৌরিন এটা দেখে ফেলল।তারপর আর কি থাকা যায়।সে যদি কিছু কিনে দিতে বলে আর আমার যদি তা কিনে দিতে দেরী হয় সাথে সাথে শুরু করে দেয় “আমার আম্মু থেকেকো টাকা নিতে পারিস,আমারে কিনে দিতে বললে দিস না কেন?”
আমার মত একজন সম্মানীয় মানুষকে তুই তোকারি করে।মাঝে মাঝে ভাবি কি লাভ বেঁচে থেকে?
বাচ্চা দেখলে আমার একটা বদঅভ্যাস হল টান দিয়ে তাদের প্যান্ট খুলে দেয়া।সেদিন আমার ভাতিজা সালমানের প্যান্ট খুলে দিলাম,কি আজব সে এসে আমার প্যান্ট নিয়া টানাটানি করতেছে।দেখছেন কি বেইজ্জতি কারবার।একেবারে মান ইজ্জতে হাত দিয়া দিছে।সেই থেকে আমি সাবধান।লুঙ্গি পড়া থাকলে ভুলেও আমি এই কাম করতে যাই না। এবং বেল্ট না পড়ে কখনই তাদের প্যান্ট নিয়া টানাটানি করি না।
এই ব্যাক্তিটিই আমার প্যান্ট নিয়া টানাটানি করেছিল।
আমার ভাতিজা আহনাফকে নিয়ে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড এর খেলা দেখতে গেলাম ষ্টেডিয়ামে।সে বায়না ধরল সে পেপসি খাবে,মাঠের গাড়ী থেকে।এখন আমি কি করি।তারে বললাম “ওই গাড়ী থেকে পেপসি খেতে হলে আগে তোকে ক্রিকেট খেলতে হবে”।সে বলল “তাহলে আমি এখন ওদের সাথে ক্রিকেট খেলবো”।
আমি যাই কই?আইসক্রিম খাওয়াই,সে খায়।শেষ হলে বলে “ওদের সাথে ক্রিকেট খেলে গাড়ী থেকে পেপসি খাব”এবার চকলেট দিই,চকলেট শেষ করে আবার বলে “ওদের সাথে ক্রিকেট খেলে গাড়ী থেকে পেপসি খাব”।এভাবে পেপসি,চকলেট,আইসক্রিম,ঝালমুড়ি সব খাওয়া শেষ তবুও বলে ““ওদের সাথে ক্রিকেট খেলে গাড়ী থেকে পেপসি খাব”
ততক্ষনে বাংলাদেশ অলআউট।যাক বাচাঁ গেল।ধন্যাদ বাংলাদেশ টিম।
বিঃদ্রঃ বাচ্চা কাচ্চারা সবসময় খুব শ্রদ্ধেয়।
বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে আমার আগের লিখা এখানে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:৫৪