somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাগজের ফেরিওয়ালা
যদি ভালো ইনসানই না হতে পারি, তবে এই রক্ত-মাংস-রূহ-মস্তিষ্কের মূল্য কী? আমি উড়ার স্বপ্ন দেখি না, উড়তে তো মাছিও পারে! আমি মাটির আদম, মাটিতেই মরতে চাই, আমার বুকে লাগিয়ে দিও কদম ফুলের গাছ।

সেক্যুলার জ্ঞান বনাম আধ্যাত্মিক জ্ঞান

২১ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জ্ঞানের দুইটি শাখা। একটি হলো, সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞান। অপরটি হলো, আধ্যাত্মিক জ্ঞান। সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এরা শুধুমাত্র সেই জিনিসকেই ব্যাখ্যা করতে পারে, যা দেখা যায় ও ছোঁয়া যায়। অন্যদিকে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের পরিধি অনেক বিস্তৃত। এটা শুধু দেখা, শোনা বা ছোঁয়ার উপর নির্ভরশীল নয়। এর বাইরেও অনেক কিছুর ব্যাখ্যা আধ্যাত্মিক জ্ঞান দিতে সক্ষম। যেমন ধরুন মানুষের ভালবাসা। সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞানে ভালবাসা মানে দৈহিক মিলন বা সেক্স। ভালবাসার অন্য সংজ্ঞা সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞান গ্রহণ করে না। অন্যদিকে, আধ্যাত্মিক জ্ঞানে মানব ভালবাসার সংজ্ঞা অনেক বিস্তৃত। এখানে রয়েছে হৃদয়ের আবেগ, মায়া, বিশ্বাস, নির্ভরতাসহ আরো অনেক কিছু। সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞান সবসময় আধ্যাত্মিক জ্ঞানকে কটাক্ষ করে এসেছে। বস্তুবাদকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। কারণ, সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞান ধর্মহীন। তার মতে ধর্মের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। তার কাছে ধর্মের স্থান অতীত সভ্যতার যাদুঘরে। আধুনিক সভ্যতায় ধর্মের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই যেসব দেশে সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞানের প্রাধান্য বিস্তার করেছে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের উপর, সেসব দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা গির্জাসমূহ পরিণত হয়েছে পিজা হাট, বার, বিঙ্গো হল, কেএফসিতে।
সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞানের প্রধান শত্রু হলো ইসলাম ধর্ম। কারণ, ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা বিশ্বের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যতকে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের আলোকে সঠিকভাবে বর্ণনা করতে সক্ষম। সভ্যতার ক্রমশ বিকাশকে বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। ইসলাম এমন একটি সমুদ্র যেখানে বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের উভয় দরিয়া এসেই এক মোহনায় মিলিত হয়েছে। এমনকি ইতিহাসের যেসব প্রশ্নের উত্তর সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞানের কাছেও নেই, ইসলামের আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কাছে তার উত্তর রয়েছে। এরকমই একটি প্রশ্ন হলো, ইহুদিদের জেরুজালেমে প্রত্যাবর্তন। কী করে একটি জাতি হাজার বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার পর পুনরায় তাদের পিতৃপুরুষের ভূমিতে ফিরে এলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বেলফোর ডিক্লারেশনের মাধ্যমে ইহুদিদের পবিত্রভূমিতে ফিরে আসা ছিল আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কাছে সেক্যুলার সাইন্টিফিক জ্ঞানের সবচেয়ে বড় পরাজয়।
সুরা আম্বিয়ায় উল্লেখ রয়েছে,
নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে একটি শহরের উপর যাকে আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি, তারা (অর্থাৎ সেখানকার অধিবাসীরা) আর ফিরে আসতে পারবে না যতক্ষণ না ইয়াজুজ ও মাজুজকে মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে এবং তারা সবদিকে ছড়িয়ে না পড়ছে। আর সত্য ওয়া'দের সময় নিকটবর্তী হলে হঠাৎ কাফিরদের চোখ স্থির হয়ে যাবে। তারা বলবে, "হায়! আমাদের দুর্ভাগ্য! আমরা তো এ বিষয়ে উদাসীন ছিলাম, বরং আমরা ছিলাম জালিম।"
[সুরা আম্বিয়া ২১: ৯৫-৯৭]।
এই শহরটি হচ্ছে জেরুজালেম যার অধিবাসীদের ঐশ্বরিক শাস্তিস্বরূপ বিতাড়িত করা হয়েছিল। পবিত্র কোরানের ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী, তারা আবার সে শহরে প্রত্যাবর্তন করে ইয়াজুজ মাজুজদের সাহায্যে। প্রথমে ইয়াজুজ মাজুজরা কলোনিজমের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে তাদের আধিপত্য স্থাপন করে। সেখানে পশ্চিমা আইনব্যবস্থা, পশ্চিমা ভাষা, পশ্চিমা মুদ্রাব্যবস্থা, পশ্চিমা সমাজব্যবস্থা, পশ্চিমা রাজনৈতিক ব্যবস্থা, পশ্চিমা সংস্কৃতি ইত্যাদি কায়েম করার মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে তাদের কারবনকপিতে পরিণত করে। আর যারা তাদের আনিত ব্যবস্থাকে ত্যাগ করে, তারা তাদের আনসিভিলাইজড, ন্যাটিভ বলে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে এবং এসব ন্যাটিভদের তেলাপোকা মারার মত হত্যা করতে থাকে। পুরো পৃথিবী এই গণহত্যার বিরুদ্ধে এমনভাবে নিশ্চুপ থাকে যেন ন্যাটিভ আমেরিকান বা অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসীরা মানুষই নয়।
ইয়াজুজ মাজুজরা কলোনিজমের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার পর এবং সেখানকার অধিবাসীদের তাদের কারবনকপিতে পরিণত করার পর দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল খিলাফতব্যবস্থাকে ধ্বংস করা এবং পবিত্রভূমির দখল নেয়া। তারা এতে সফল হওয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘটায় যার উদ্দেশ্য ছিল ইহুদিদের এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি করা যাতে সমগ্র পৃথিবীর করুণা তারা অর্জন করতে সক্ষম হয় এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদিদের পবিত্রভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায় এবং ইহুদিরাস্ট্র ইজরায়েল গঠন করা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:৪৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×