গতকাল ১৩ বছর আগের এক দুর্ঘটনায় বলিউড তারকা সালমান খানেকে পাচঁ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে ভারতীয় আদালত। রায় নিয়ে ভারতীয় গনমাধ্যমে চলছে তুমুল আলোচনা, কিছুটা ছড় বইছে বাংলার সালমান প্রেমীদের উপরও। বিভিন্ন মাধ্যমে তা উঠে আসছে, আমি শুধু দেখেই ছিলাম। কিন্তু অভিজিৎ এর টুইট, "রাস্তা হল গাড়ি চলাচলের জন্য এবং কুকুরদের ঘুমানোর জন্য, রাস্তা কোনো গরীবের বাপের নয় যে সেখানে তারা ঘুমিয়ে থাকবে।"(১) দেখে আর চুপ থাকতে পারলাম না।
২০১৩ সালে বলিউডের "Jolly LLB" ছবিটি যদি কেউ দেখে থাকেন তবে সালমানের এই রায়ের সাথে তার মিল পাবেন। ছবিটিতে বমান ইরানী ও আরসাদ ওয়ার্সী অভিনয় করেছেন। সেখানে একজন বড় ইন্ডাস্ট্রিয়ালের ছেলে মদ পান করে ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা পাচঁ মানুষকে মেরে ফেলে। বমান ইরানী সেই ছেলের হয়ে ওকালতি করে একরকম প্রমাণই করে ফেলেন সেই ছেলেটি নির্দোষ, কিন্তু পরবর্তীতে নিজের কিছু চালের জন্য আরসাদকে জড়িয়ে ফেলেন তিনি। উকিল হিসাবে নতুন হয়েও আরসাদের ওকালতি ছিল চরম যুক্তিসম্পন্ন।
কী ভাবছেন, আপনাদের মুভির রিভিউতে টেনে আনলাম, আসলে কিছুটা তাই। কিন্তু প্রয়োজন ছিল। মুভির শেষ কিছু ডায়ালগ এমন ছিল 'মহান বিচারক, ২২(সঠিক মনে নেই) এতো বছরের যুবক, আসুন ধরে নেই সেই দুর্ষনটাটি ঘটিয়েছে। কিন্তু ফুটপাত কারো ঘুমানোর জায়গা নয়, তাই অন্যের ভুলের জন্য আমার মক্কেল সাজা পেতে পারে না।'
প্রতিপক্ষ (আরসাদ) এর বক্তব্য ছিল। 'আসলেই তাই, ফুটপাত কারো ঘুমানোর জায়গা নয়। কিন্তু ফুটপাত কারো গাড়ি চালানোর জন্যও নয়। অন্যের দিকে নয়, একজন মানুষের দিকে তাকিয়ে তার হক, তার প্রতি একটি ন্যায় বিচার করা হোক। তারা আদালতেের কাছে কোন ভিক্ষা নয়, তাদের হক চাইছে। আইনের হাত অনেক বড় বলা হয়, এবার প্রমাণের সময়।'
গতকালও সালমানের রায়ে তেমনই কিছু ঘটেছে, তা না ১৩ বছর লাগে একটি হত্যার বিচার করতে! যাই হোক দেরীতে হলেও ভারতে সত্যের জয় হয়েছে। দেখতে গেলে সালমানও যুবক, বয়স যাই হোক না কেন। তবে ঘটনার সত্যতা নতুন করে যাচাইয়ের দরকার নেই, ১৩ বছর যাচাইয়ের পরই রায় হয়েছে গতকাল। এই ১৩ বছরে সালমান নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেনি, তাই ঘটনায় সালমানই জড়িত বলে মেনে নেওয়া যায়।
এখন আসি আমার বাংলার সালমান প্রেমীদের জন্য, ভাইরে বিচার হয়েছে অন্যায়ের, কোন তারকার নয়। এখন আপনাদের তারকা এই কাজ করে থাকলে সাজাতো পাওয়া উচিৎ তাই না। তবে খুসি হতাম, ঘটনার সঙ্গেই সালমান যদি দোষ স্বীকার করে সেই পরিবারের পাশে দাড়াতেন। কারণ যে মরেছে সে মানুষই ছিল আর সালমানও মানুষ। অথচ অনেকঐ ভাবেন তিনি অন্যরকম মানুষ, যিনি মিথ্যা বলতে পারেন না, তাই তাদের মতে সালমানের প্রতি ভুল বিচার করা হয়েছে।
আমার মতে সালমানের সাজা আরও বেশী হওয়া উচিৎ ছিল, কারণ সে তার ভুলের জন্য অনুতপ্ত নয়(সে স্বীকারই করেনি, যদিও প্রমান হয়েছে)। তাই একজন সাধারণ মানুষ হিসাবেই তার সাজার দরকার ছিল, আর একজন মানুষকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ১৩ বছর মিথ্যা বলার সাজা পাচনন বছর অতি সামান্যই।
আশা করব, সালমান ফিরবে(সাজা শেষে), আবারও অভিনয় করবে এবং আরও কিছু ভালো ছবি উপহার দিবে।
***সালমান ভক্তদের কষ্ট দেবার জন্য দু:খিত। আমিও সালমানের ভক্ত, কিন্তু অন্যায়ের পক্ষে সাফাই গাইবার মানুষ নই।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




