somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

~ ~ আপন ~ ~

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাটক্ষেতের পঁচা পানির মধ্যে গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে বসে আছি । সময়টা সঠিক জানি না , তবে অনুমান বলছে এখন সম্ভবত রাত দশটা । যদি আমার অনুমান ঠিক হয় তাহলে এখানে প্রায় বারো ঘন্টা অপেক্ষা করছি । সময়টা ডিসেম্বরের প্রথম দিক , সময়ে অসময়ে বৃষ্টি মতো কুয়াশা ঝড়ে । তার উপর প্রচন্ড ঠান্ডা পানিতে বসে থাকতে গেলে কষ্টটা বেড়ে যায় অনেক । আজকের দিনটাতে সূর্যের মুখ দেখা যায় নি , সারাটা দিন গুমোট একটা ভাব ছিলো প্রকৃতির ।সেই সাথে কোথা থেকে যেন বাতাস বয়ে যাচ্ছে , পাটক্ষেতের পানিতে এমনিতেই রোদ পরে না কখনো তার উপর কুয়াশার মিশ্রনে প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছে । গত তিনটা দিন ঘুমাতে পারি নি, অবসাদে ভেঙ্গে আসতে চাচ্ছে শরীর । গোঁয়ারের মতো তবু জেগে আছি , না দেখেও বলে দিতে পারি চোখজোড়া রক্তলাল হয়ে আছে । অন্য কিছুর জন্য না হোক অন্তত নিজেকে বাচানোর জন্য হলেও জেগে থাকতে হবে । পাটক্ষেতের মধ্যে প্রায় হাটু পর্যন্ত কাঁদায় ঢেকে আছে , সামান্য নড়াচড়াতেই আরো নিচে ঢুকে যেতে চায় । আর একবার যদি এই কাঁদার পাঁক কোমড় পর্যন্ত ডুবিয়ে ফেলতে পারে তাহলে বাঁচার আশা আর নেই । এই বিষাক্ত কালো পানিতে ডুবে মরতে হবে । আশে পাশে পরিচিত লোকটাও আমার কাছ থেকে প্রায় ত্রিশ ফুট দূরে , মরে গেলে হয়তো লাসটাও খুঁজে পাবে না । পাটক্ষেতের আশেপাশে ধানক্ষেতের বেষ্টনির মতো গড়ে উঠেছে । গুমোট কালো অন্ধকারের কোন কাটতি নেই , একটানা একঘেয়ে ভাবে ডেকে যাচ্ছে ঝিঁ ঝিঁ পোকার দল । প্রাণের অস্তিত্ব ঘোষনা করে যাচ্ছে । সেই সাথে আছে মশার দল , ভোঁ ভোঁ শব্দ করে সূচের মতো করে কামড়ে দিচ্ছে আমার সমস্ত মুখ আর ঘাড়ের অনাবৃত অংশ । নিঃশব্দে পানিতে নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষনা করে চলছে জোঁকের দল । এ জিনিসটা খুবই ভয়াবহ , কখন যে নিরব ঘাতক হয়ে উঠবে টেরও পাওয়া যায় না । হাতের স্টেনগানটাকে আরেকটু উচু করে ধরলাম পানি থেকে । এখন এই জিনিসটার উপরই আমার জীবন মৃত্যুর দেয়ালটার স্থায়িত্ব নির্ভর করছে । পানিতে গান পাউডার ভিজে গেলে বিপদে পরবো । ক্ষিণ একটা শব্দ ভেসে এলো ডান পাশ থেকে , অনেকটা খস্ খস্ এর মতো শোনালো । যেন একটা পাটগাছ আরেকটার সাথে জোরে ঘষা লাগছে । শব্দটা নিয়মিত ছন্দে ভেসে আসছে । তিনবার করে আসছে , মাঝখানে নিরবতা , আবারও তিনবার । একধরনের কোড এটা । তারমানে বিপদ হতে পারে , সর্তক থাকতে হবে । ঘুম ঘুম ভাবটা নিমিশেই উবে গেলো , শ্বাপদের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি সামনে । পাটগাছের ফাঁক দিয়ে মৃদু আলো আসছে , সেই সাথে ইন্জিনের অস্পষ্ট শব্দ শুনতে পাচ্ছি । তারমানে মিশনের প্রথম ভাগ শুরু হতে যাচ্ছে , আবার নাও হতে পারে , তাকিয়ে আছি আগ্রহ নিয়ে । একটা ফোর হুইল জীপ চলে গেলো ২০০ গজ দূরে অবস্থিত কাঁচা রাস্তা দিয়ে ।



নাহ্ তারা রুটিন টহল দিচ্ছে , সুতরাং অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই । তাদের কনভয়টা বের হলেই মিশন শুরু হবে আমাদের । জীপটা সড়ে গেলো দূরে , স্নায়ুগুলো আবার শিথিল হয়ে গেলো , ক্লান্তিতে আবারো ভেঙ্গে আসতে চাইছে শরীর । ঘাড় সোজা করে আকাশের দিকে তাকালাম , পাটগাছের আড়াল থেকে খুব সামান্যই দেখা যায় আকাশটাকে । আজকে অমাবস্যা, সমস্ত আকাশ কালো হয়ে আছে । আমাদের জন্য ভালই হলো , গেরিলাদের জন্য অন্ধকারের চেয়ে আপন সঙ্গি খুব কমই আছে । তাকিয়ে থাকতে থাকতে তন্দ্রামতো আসলো , চোখ বুজে আসলো সামান্য । মনে হলো স্মৃতির ফিতা ঘুড়ছে পিছনের দিকে । হটাত্‍ করেই যেন নিজেকে বাড়ির উঠোনে আবিস্কার করলাম । উঠোনের একপাশে বাঁশের তৈরি মাঁচা , আর মাঁচার উপর আম্মা চালতার আচার দিয়ে রেখেছেন কুলার উপর । উঠোনে এক পাশ থেকে আরেক পাশ সরু নাইলনের দড়ি বাধানো , সে দড়ির উপর আম্মার সবুজ রংয়ের শাড়িটা শুকোতে দেওয়া হয়েছে । হালকা বাতাসে শাড়িটা মৃদু কাঁপছে , মাড় দেওয়া শাড়িটার মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে । মসজিদ থেকে আযানের ধ্বনি ভেসে এলো , সেই সাথে সূর্য মাথার উপর উঠে এসেছে । আব্বা মসজিদে যাবেন নামায পড়তে , আমাকে যদি জামাআতের একদম সামনের কাতারে না দেখেন তাহলে আজকে ভাত বন্ধ । আমি কল্পনাতেই দেখতে পাই , নাইলনের দড়িতে ঝুলানো নতুন লুঙ্গি আর গামছাটা হাতে নিয়েই দৌড় দিয়েছি পুকুরের দিকে । ঘাটের কাছে কাপড়গুলো রেখে এক দৌড়ে পানিতে ঝাপ দিয়েছি ।ভুস ভুস শব্দে ডুব দিয়ে উঠতেই দেখি শ্রেয়াসী দাড়িয়ে আছে ঘাটের কাছে । খিল খিল করে হাসছে আমার দিকে তাকিয়ে । মেয়েটাকে এতো বিরক্ত লাগতো আমার যখন এভাবে ঘাটের কাছে দাড়িয়ে থাকতো ! রেগে উঠে বলতাম "কিরে এখানে কি ? যা ভাগ আমি অযু করবো ।" মেয়েটা হাসতে হাসতেই চলে যেতো । শ্রেয়াসী পাশের বাড়ির চেয়ারম্যান কাকার মেয়ে । তাড়াতাড়ি ওযু করেই ছুটতাম মসজিদে , গিয়েই দেখতাম আব্বা দাড়িয়ে আছেন আমার অপেক্ষায় । আব্বাকে বাঘের মতো ভয় পেতাম । যা হোক নামায শেষে বাড়িতে ফিরতেই দেখতাম আম্মা ভাত বেড়ে বসে আছেন । সবাই একসাথে ভাত খেতে বসতাম , মাঝে মাঝে শ্রেয়াসী চলে আসতো । আম্মা তাকেও বসিয়ে দিতেন জোড় করে , আর শ্রেয়াসী আসলে আমার কাজ হতো দ্রুত ওখান থেকে উঠে যাওয়া । মেয়েটাকে নিজের অজান্তেই যে ভাল লেগে গেছে তা বুঝতেই পারিনি আগে । এমনিতে একটু ভয় পেতাম মেয়েটাকে , যে বিচ্ছু মেয়ে ! আমার বারোটা বাজিয়ে দেবে । তাছাড়া মেয়েটার মুচকি হাসি তো আছেই , খেতে বসলেই আব্বা একবার আমার দিকে আর একবার শ্রেয়াসীর দিকে তাকাতেন । সাথে সাথেই আমার সব খাওয়া হজম হয়ে যেতো ভয়ে । তবুও শ্রেয়াসীর প্রতি অদ্ভুত ভাল লাগা অনুভব করতাম । একটা সময় ভর্তি হলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ­ রসায়ন বিভাগে । সময়টা ছিল ১৯৬৮ । গনঅভ্যুত্থানের সময়কাল । শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬সালে ৬ দফা দাবি পেশ করেছিলেন । কিন্তু সরকার দাবি তো মানেই নি বরং তাকে সহ আরো প্রধান কিছু নেতাকে প্রধান আসামী করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করে । ১৯৬৮ সালের ডিসেম্বর মাস তখন । ছাত্ররা ১১ দফা দাবি ঘোষনা করে এবং ১৯৬৯ এর ৪ তারিখ গনআন্দোলনের ডাক দেয়া হয় । কেন্দ্রিয় সরকার এ আন্দোলন নস্যাত্‍ করার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে । আমরা সিদ্ধান্ত নিই ১৪৪ ধারা মানবো না । আর্মি নামানো হয় শহরে । গণহারে গুলিবর্ষন চলে , নবম শ্রেনির ছাত্র মতিউর শহীদ হয় । একটা সময় জনতাও ক্ষেপে উঠে । ২১ , ২২ জানুয়ারী ঢাকা ছিলাম । কিন্তু ২৩ তারিখ হটাত্‍ আব্বা এসে হাজির হন হলে । আব্বা আমাকে নিয়ে যেতে এসেছিলেন । প্রথমে একটু আমতা আমতা করলেও আব্বার চোখে চোখ তুলে কথা বলার সাহস ছিল না । সুতরাং তল্পিতল্পা গুটিয়ে আব্বার পিছন পিছন বাধ্য ছেলে হয়ে গ্রামে ফিরে গেলাম । আব্বা সাফ বলে দিলেন ঢাকা যাওয়া হবে না । মন খারাপ হয়ে গেলো , ঢাকা থেকে চিঠি আসতো আমার কাছে । কিন্তু কোন চিঠির উত্তর দেওয়া হতো না । শ্রেয়াসী প্রায়ই বাসায় আসতো , আমাকে খুঁজতো । আমি তখন হয়তো পুকুর পাড়ে বসে পানিতে ঢিল ছুড়তাম অথবা উঠোনের শেষ দিকে ঠায় দাড়িয়ে থাকা আমগাছটার নিচে পাটি বিছিয়ে শুয়ে থাকতাম । শ্রেয়াসী কিভাবে যেন হটাত্‍ বড় হয়ে গেলো , পুকুরপাড়ে আমার পাশে এসে বসলেও গম্ভীর হয়ে থাকতো । কিংবা পাটির কোনের কাছে চুপচাপ বসে থাকতো । মাঝে মাঝে দেশের পরিস্থিতি জিজ্ঞেস করতো । মাঝে মাঝে আমি চাপা স্বরে রেগে বলতাম "একটা যুদ্ধ হবে রে শ্রেয়াসী । কঠিন একটা যুদ্ধ হবে ।" হটাত্‍ করে বড় হয়ে যাওয়া মেয়েটা তখন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতো আমার দিকে । একদিন বিকেলবেলা বসে ছিলাম পুকুরপাড়ে । সন্ধ্যা নামবে নামবে অবস্থা , পাখির দল কিচির মিচির শব্দে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলো । আমি চুপচাপ তাকিয়ে ছিলাম পানির দিকে , পরন্ত সূর্যের ছায়া পরেছে পানিতে । শ্রেয়াসী কখন যে আমার পিছনে এসে দাড়িয়েছিল খেয়ালই করিনি । উঠে দাড়িয়ে পিছনে ফিরতেই স্তব্ধ হয়ে গেলাম । অবাক হয়ে দেখলাম একটা ছোট্ট সাদা পরি দাড়িয়ে আছে আমার সামনে । শ্রেয়াসীকে কখনো সাজতে দেখিনি । মেয়েটা আজকে সেজেছে , হয়তো এতো বেশি কিছু নেই তার সাজার উপকরনে । শ্রেফ চোখ দুটো কাজল দিয়ে রাঙ্গানো আর কপালের ঠিক মাঝখানটায় একটা কালো রংয়ের টিপ দেয়া । আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম শ্রেয়াসীর দিকে । মেয়েটা মুচকি হাসছিলো । আগে কখনো শ্রেয়াসীকে ভালবাসার অনুভূতি দিয়ে চিন্তা করেছিলাম কিনা এ নিয়ে দ্বিধা ছিল । কিন্তু সেদিন সব দ্বিধা ভুলে গিয়েছিলাম আমি । অবাক বিস্ময়ে আমি দেখলাম আমার মাথার মধ্যে শুধু একটা বাক্যই ঘুড়ছে এ মেয়েটাকে আমার চাই । কখন যে সূর্য বিদায় নিলো আর কখন যে দিঘির জলে গাঢ় ছায়ার আস্তরন নেমে এলো আমি খেয়ালই করিনি ।



একটা দুটা করে জোনাক জ্বলা শুরু করলো , তাদের মায়াবি আলোয় শ্রেয়াসীকে আরো মায়াবি লাগছিলো । আমি জানি না কখন আমি ডান হাত দিয়ে শ্রেয়াসীর চিবুক স্পর্শ করেছিলাম । মেয়েটা হটাত্‍ খুব লজ্জা পেল , ঘুরেই দৌড় দিলো । আমিও সম্ভবত ধাক্কা খেয়ে বাস্তবে ফিরে এসেছিলাম । আম্মাকে বলতে গেলাম মেয়েটাকে ভালবাসি । আম্মা আমাকে অবাক করে দিয়ে জানালো আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হলেই ওর সাথে আমার বিয়ে । সেদিন থেকে আমার জীবনের রঙ্গিন দিনগুলো শুরু । বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার ফিরে গেলাম বটে , তবে আব্বা এবার কোন ভাবেই আমাকে হলে রাখতে রাজি না । সুতরাং আমায় জায়গা হলো ফুফুর বাসায় । তাছাড়া আমাকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হলো এসব মিটিং মিছিল করা একদমই চলবে না । আব্বার কথা কখনো অমান্য করবো , এতোটা দুঃসাহস হয়ে উঠেনি । সুতরাং আমার গন্ডিটা বিশ্ববিদ্যালয় আর ফুফুর বাসাতেই সীমাবদ্ধ ছিল । রাসেল ছিল আমার ফুফাত ভাই । তারা এক ভাই আর এক বোন , বোনটা সব সপ্তম শ্রেণীতে পড়তো , নাম রাহেলা । রাসেলটা মাত্রই এন্ট্রান্স পাশ করেছে , বাউন্ডুলেদের মতো টো টো করে ঘুড়তো আর আমার নামটার ফায়দা নিয়ে ভার্সিটিতে গিয়ে আমারই বন্ধুবান্ধবদের সাথে ভাব জমাতো । দেশের পরিস্থিতি তখন ভাল না , প্রশ্চিম পাকিস্তান খুব বেশিই অত্যাচার করছে তখন । রাসেল প্রায় প্রতিদিনই বাসায় এসে আমাকে খুব আগ্রহ নিয়ে পরিস্থিতির বর্ননা দিতো । নির্বাচন ঘনিয়ে এলো প্রায় , আব্বা আমাকে আবারও বাড়িতে ডেকে আনলেন । দেখতে দেখতে নির্বাচনটা হয়েও গেলো এবং আওয়ামিলীগ জিতে গেলো । কিন্তু পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে একটা প্রহসন সৃষ্টি করে রেখেছিলো । একটা সময় ইয়াহিয়ার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলো জিন্নাহ । সারা পাকিস্তানে সামরিক শাষন জারি করা হলো । মার্চ মাস চলছিলো তখন , রেডিওতে প্রতিদিন অরাজকতার খবরগুলো শুনে রাগ লাগতো খুব । কিন্তু আব্বার জন্য কিছু করতে পারতাম না । ৭ মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দিলেন শেখ মুজিবুর রহমান । ভাষন শুনতে শুনতে ঘাড়ের লোমগুলো সব দাড়িয়ে গিয়েছিলো "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম , এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম" । সময় গড়িয়ে যাচ্ছিলো অস্থির একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে । তারপর এলো ২৫ শে মার্চ , দিনটা বৃহস্পতিবার ছিল । আমার সেদিন শরীরটা ভাল ছিল না , সন্ধ্যা হতে না হতেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম । ঘুম যখন ভাঙ্গলো , দেখলাম আব্বা অস্থির হয়ে হাটাহাটি করছেন আর আম্মা ভীত চোখে তাকিয়ে আছেন তার দিকে । আমাকে দেখে আব্বা বললেন "ঢাকায় আর্মি নামছে । অবস্থা ভাল না । যারেই সামনে পাইতেছে তারেই মারতেছে । তোর ফুফুগো কি হইলো খবর পাইলাম না ।" আব্বাকে এতোটা দুশ্চিন্তা করতে দেখিনি কখনো । একটু পর বাসায় শ্রেয়াসী এসে হাজির হলো , মেয়েটা চুপচাপ আম্মার পাশে গিয়ে বসে আম্মার হাত জড়িয়ে ধরে রইলো । সারাটা রাত আমরা কেউ ঘুমাইনি । আব্বা রেডিওর নব ঘুড়িয়ে গেছে প্রতিনিয়ত । আমি হয়তো আবার ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম , কারন ঘুম যখন ভাঙ্গলো তখন শুনলাম রেডিওটা খড়খড় শব্দ করছে । আমি চুপচাপ শুনলাম আরেকবারের মতো আমার ঘাড়ের লোমগুলো দাড়িয়ে গিয়েছিলো । মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে । আমাদের বাড়িটা কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আমড়াতলী গ্রামে । সুতরাং পাকিস্তান আর্মি এতটুক পর্যন্ত আসতে প্রায় এক মাসের মতো সময় নিলো । কিন্তু যখন এলো আমি দেখলাম মানুষ কিভাবে পশুর চেয়েও অধম হয় । প্রথমেই তারা গণহারে বাড়ি ঘরে আগুন লাগিয়ে দিলো । যুবক বয়সী ছেলেদের ধরে নিয়ে যেতো , যুবতি কিশোরি মেয়েদের ধর্ষন করতো বাড়িতে ঢুকে । এমনি মধ্যবয়সী মহিলারা পর্যন্ত বাদ যায় নি এই কুত্তাগুলোর হাত থেকে । দুধের বাচ্চাদের বুটের তলায় থেতলে দিয়ে যেতো তারা । আর তাদের সাহায্য করতো আমাদেরই কিছু লোক । যাদের সাথে একটা সময় উঠা বসা ছিলো আমাদের । আব্বাকে জোড় করে শান্তি কমিটির সদস্য করে নিলো তারা , প্রতিদিন আব্বা ঘরে ফিরতেন মুখ ভার করে । ফুফুর খোঁজ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন আব্বা , ধরেই নিয়েছিলেন তারা কেউই বেচে নেই ।



একদিন হটাত্‍ রাসেল এসে হাজির হলো গভির রাতে । বাড়িতে ঢুকেই কান্নায় ভেঙ্গে পরলো ছেলেটা , সবাইকে মেরে ফেলেছে হায়েনার দল । রাসেল কোন রকমে পালিয়ে এসেছে । আব্বা স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলেন সারা রাত , আর রাসেল সারাটা রাত আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে গেছে , আমি নিঃশব্দে কেঁদে গিয়েছি । আব্বাকে প্রতিদিন সকালে বের হতে হতো , তার দায়িত্ব ছিল গ্রামের কোন কোন বাড়িতে হিন্দু আছে তা খুঁজে বের করা । আব্বা একদিন দুপুরে ফিরে এলেন সারা শরীর রক্তাক্ত অবস্থায় । তার দোষ ছিল তিনি বলেছিলেন তিনি আর এসব অন্যায় অবিচার করতে পারবেন না , পাকিস্তানি সৈনিকরা এই অপরাধে আব্বাকে বন্দুকের বাট দিয়ে পিটিয়েছে । হু হু করে কেঁদে যাচ্ছিলেন তিনি , আমি রাগে দুঃখে ফুসছিলাম শুধু । গ্রামের প্রায় সব ছেলেরাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলো , আব্বার কারনে যেতে পারিনি । আব্বা সেদিন কাছে ডেকে বলেছিলেন "যা বাবা । কুত্তাগুলার একটারেও ছাড়বি না । আমি পাপ করছি , এই পাপের বোঝা তুই হালকা কইরা দিস ।" সেদিনই রাসেলকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম । এক মাস ট্রেনিং এর পর আমাকে আর রাসেলকে বরুড়াতেই পাঠানো হলো । অনেকদিন বাড়িতে যাওয়া হয় না , তাই আরো একমাস পর বাড়িতে গিয়েছিলাম একবার । আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃসহ স্মৃতিগুলোর শুরু তখনই হয়েছিলো । রাজাকারের দল কিভাবে যেন খবর পেয়ে গিয়েছিলো আমার আসার খবর । আগে থেকেই উত্‍ পেতে ছিল । বাড়িতে ঢুকতেই আব্বা আম্মা আর আমাকে ধরে নিয়ে গেলো পাকিস্তানি ক্যাম্পে । আমাকে একটা আম গাছের সাথে বাধা হলো । বলা হলো আমার সহযোদ্ধাদের নাম বলতে , কিছুতেই বললাম না । তারপর যখন তারা দেখলো কিছুতেই রাজি হচ্ছি না তখন আমারই চোখের সামনে আব্বা আম্মাকে গুলি করলো শূয়ারগুলা । আমি প্রতিজ্ঞা করলাম মরে যাব তবুও কুত্তাগুলাকে কিছু বলবো না । হেন কোন অত্যাচারের উপায় বাদ রাখেনি তারা , প্লাস দিয়ে নোখ উপরে ফেলা থেকে চোখের পাপড়ি কেটে জ্বলন্ত বাল্বের সামনে বসিয়ে রাখা সবই করেছে । এক পর্যায়ে আমি ঘন ঘন জ্ঞান হারিয়ে ফেলতাম । একদিন জ্ঞান ফিরতেই দেখি আমার সামনে শ্রেয়াসী দাড়ানো , প্রায় অর্ধনগ্ন । শ্রেয়াসীকে এ অবস্থায় দেখে চিত্‍কার করে উঠলাম । পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন আমার চুল ধরে টান দিয়ে কানের কাছে এসে বলল "বল শালে মুক্তি কিধার হ্যায় ।" আমি ঝাকি দিয়ে তার হাত সরিয়ে দিয়ে থুতু ছিটিয়ে দিলাম তার মুখে । তারপরের দৃশ্যটা খুব ভয়াবহ ছিল , আমার সামনেই শ্রেয়াসীকে ধর্ষন করলো তারা । শ্রেয়াসীর চিত্‍কার আমার শরীরে সেলের মতো এসে লাগছিলো , দেখতে চাইলাম না দৃশ্যটা । কিন্তু আমাকে দেখতে বাধ্য করা হলো । চিত্‍কার করে উঠলাম , সাথে সাথে বেয়নেট চার্জ করা হলো আমার তলপেটে , ব্যাথায় কুকড়ে গিয়েছিলাম । আমার চোখের সামনে নরপশুর দল আমার প্রিয় মানুষটাকে খুবলে খেলো । আল্লাহর কাছে মৃত্যু কামনা করছিলাম শুধু , শ্রেয়াসী শেষবার শুধু আমার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলো তারপর নিস্তেজ হয়ে গিয়েছিলো তার শরীর । আমি ভেবেছিলাম আমি মরে গেছি , কিন্তু জ্ঞান যখন ফিরলো আমি তখন একটা অস্থায়ী হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে ছিলাম । পরে শুনেছি আমাকে আমার সহযোদ্ধারা উদ্ধার করেছে । দেড় মাস হাসপাতালে থাকার পর আবার যুদ্ধে ফিরে আসি । আমার এখন কোন পিছুটান নেই , শ্রেয়াসীর একটা ছবি রয়ে গেছে আমার কাছে । চোখে কাজল , কপালে টিপ দেয়া একটা পরি তাকিয়ে থাকে আমার দিকে হাসিমুখে । মাঝে মাঝে যখন অনেক কষ্ট হয় তখন ছবিটার সাথে কথা বলি । আমার শ্রেয়াসীকে বলি যে একদম মন খারাপ না করতে , আমি খুব তাড়াতাড়িই চলে আসবো তার কাছে । আজকে ৭ই ডিসেম্বর , গতকাল থেকে এভাবেই পাটক্ষেতে পরে আছি , আমরা জানি আমরা বিজয়ের খুব কাছাকাছি । ভোরের দিকে আক্রমনের সংকেত এলো , প্রথমেই আমাদের দিক থেকে একটা এসএমজির ব্রাশ ফায়ারের শব্দ ভেসে এলো । সাথে সাথে গর্জে উঠলো সবকটা অস্ত্র । প্রায় সারাদিন ধরে চললো গোলাগুলি ।



কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট আমাদের দখলে চলে আসলো । স্বাধীন হলো কুমিল্লা । আমাদের একটা গ্রুপ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো , আমার পায়ে গুলি লাগায় আমি সহ আরো কয়েকজন রয়ে গেলাম । ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন হলো দেশ । ২রা ফেব্রুয়ারি নিজের গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আমারই গ্রামের আরো ১২ জন মুক্তিযোদ্ধার সাথে । রাসেলের শার্টটা গায়ে জড়িয়ে আছি । ছেলেটা কখনই আমার কথা শুনে না , এবারও শুনেনি । পাকিস্তানিদের একটা ট্যাঙ্ক খুব ঝামেলা করছিলো , রাসেল বুকে মাইন বেধে শার্টটা আমাকে ধরিয়ে দিয়ে হাসিমুখে বলেছিলো "নাফিস ভাই আমার ভাগের সিগারেটগুলো আজ থেকে তোমার ।" ট্যাঙ্কটা বিশ মিনিট পর বিকট শব্দে বিস্ফোরিতো হয়েছিলো । দেখতে দেখতে গ্রামের কাছাকাছি এসে গেলাম । গ্রামের মানুষরা খবর পেয়ে এসে স্কুল মাঠে দাড়িয়ে আছে । আমার সহযোদ্ধারা সবাই ছুটে যাচ্ছে স্বজনদের দিকে । আমি থমকে দাড়ালাম । শূন্য দৃষ্টিতে তাকালাম সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর দিকে । হাজার মানুষের ভিড়ে অপকৃতস্থের মতো খুঁজে চললাম আমার প্রিয় মুখগুলোকে । বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন ফিরতাম আম্মা অনেকটা রাস্তা এগিয়ে এসে দাড়িয়ে থাকতেন । আমাকে দেখামাত্র তার মুখে মমতার হাসি ফুটে উঠতো । আমি আম্মাকে খুঁজলাম , না আম্মা আসেনি । কঠোরতার প্রতিমূর্তি আব্বার কঠোর চেহারাটা খুঁজলাম , পেলাম না । আমার প্রিয় মানুষটা , শ্রেয়াসীকে খুঁজলাম । কেউ নেই । কার কাছে ফিরে যাব ? বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে ,মসজিদ থেকে আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে । যে যার বাড়ি ফিরে গেছে অনেক আগেই । আমি চুপচাপ দাড়িয়ে আছি , চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে আমার । আস্তে আস্তে বসে পরলাম মাটির উপর । একজন পিছুটানহীন মানুষ । যার জন্য কেউ অপেক্ষা করে নেই , চলে গেছে সবাই তাকে একা রেখে । টুপ করে এক ফোটা অশ্রু মাটিতে পরলো , শুকনো মাটি দ্রুত শুষে নিলো অশ্রুজল । আমি চিত্‍ হয়ে শুয়ে পরলাম আকাশের দিকে মুখ করে । আজ আকাশে কোন চাঁদ নেই । শুধু একটা দুটো তারা জেগে আছে । আমি তারা গুনছি , এক , দুই । আমার চোখ বেয়ে পানি পরছে অবিরাম । কতোদিন পর কাদছি আমি ! তপ্ত মাটি দ্রুত শুষে নিচ্ছে আমার চোখের জল । অস্থির লাগছে খুব , আব্বাকে দেখতে ইচ্ছা করছে , আম্মাকে দেখতে ইচ্ছা করছে । শ্রেয়াসীকে দেখতে ইচ্ছা করছে খুব , ওর হাত ধরে বসে থাকতে ইচ্ছা করছে । খুব বলতে ইচ্ছা করছে "এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না শ্রেয়া ? আমরা তো একটা সুখের সংসারের স্বপ্ন দেখেছিলাম । তাহলে অসম্পূর্ন স্বপ্নের তপ্ততায় ভষ্ম হতে থাকা আমাকে রেখে কেন চলে গেলে ?" । আল্লাহর কাছে অভিমান করে বলতে ইচ্ছা করছে "খোদা আমার কি দোষ ছিল ? কেন এভাবে নিঃস্ব করে দিলে ?" । অন্ধকারের মাঝে শুয়ে আছি আমি , একজন যোদ্ধা যে নিজের দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে , সম্পূর্ন নিঃস্ব । যার কোন পিছুটান নেই , নেই ভালবাসার কোন মানুষ । ধিরে ধিরে উঠে বসলাম , মুঠো করে ধরলাম মাটি । এই মাটির বুকে কোথাও না কোথাও শুয়ে আছে আমার বাবা , মা , আমার প্রিয় মানুষটা । ভাবলাম ভালই আছে , আমার মায়ের বুকে শুয়ে আছে আমার প্রিয় মানুষগুলো । রাত ঘন হয় , হিমেল বাতাস বয়ে চলে , আকাশের তারার উজ্জ্বলতা ম্লান হয় একটু , একজন যোদ্ধার অবয়ব অস্পষ্ট দেখা যায় , উপুর হয়ে মাটিকে আলিঙ্গন করছে সে , এ মাটিই যে তার সবচেয়ে আপন ।



কিছু কথাঃ


আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখতে পারি না । আমি আসলে লিখতেই পারি না । মুক্তিযুদ্ধ নামক মহান বিষয় নিয়ে লিখতে গেলে আমার হাত কাঁপে । কলম থেমে যায় । কি লিখবো ? মুক্তিযোদ্ধারা যে আশা নিয়ে যুদ্ধ করেছেন তাদের সে আশা কি ৪২ বছরেও পূরন করতে পেরেছি আমরা ? সবাই নিজের স্বার্থ নিয়ে ব্যাস্ত । একজন যোদ্ধা যে সব হারিয়ে ফেলেছে এ দেশকে ভালবেসে । তাকে কি দিয়েছি আমি আপনি ? আমি আর কিছু লিখবো না । আল্লাহতালা সেসব মহান যোদ্ধাদের বেহেশতে নসিব করুন । যাই হোক আমাকে মাফ করবেন কিছু ভুল হলে । এটাই হয়তো আমার শেষ লেখা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে । যেদিন এ দেশটা সোনার দেশে পরিনত হবে আর আমি দেখে যেতে পারবো । সেদিন একটা গল্প লিখবো , সুখের গল্প । আমি সেদিনের অপেক্ষায় আছি ।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×