কার্যত দ্বিধা নিয়ে কাটে এখন দুপুরবেলা।
জননীর জননীকোলে ঘুরে বেড়ানো দিন
শেষ হলো কি আগুনসলক ভরদুপুরে ?
শৈশবের রোদ এসে আঁচ দেয় পিঠের পরে
বহুক্ষণ গাঙ্গে গা ধুয়ে রোদে এসে শুকোতে
দাঁড়ানো কিশোর শরীরে ফোটা কাদাচিত্র
ভাঙতে প্রলুব্ধ করে বার্ষিক কারাগার।
তখন মাতাল হই ;
বর্ধিত জীবনের খরা খোঁজে
জিড়েন রসের ভাড়,
চারের তলে নিজেল পানি
আর কুষ্টা জাগের গন্ধে মাতাল মামাবাড়ি।
এখন অসুখদিনে বু’র কোলে চড়ে
যাওয়া হয় না বদাডাক্তার বাড়ি ;
বু আমার আবদারী সারথী (জনণীর জননী )
বয়সী ব্যাকরণ অস্বীকার করে
আজ আগুনঘরে আমি শুনি তার
‘ম্যাবাই, আমার কাছে আয়দি’
আয়ুষ্কাারাগার ভেঙ্গে
এই আগুনবেলা অস্তে নিতে
আজ আর যেতে পারি না বু’র কোলে
বু নাকি মরে গেছে !
অতএব মুছে গেছে বদাবাড়ি
বেড়ে গেছে অসুখের মহামারি।
মার্চ’১৪
ব্যবহৃত আঞ্চলিক শব্দের অর্থ
সলক : আধার কেটে আলো ফোটা।
জিড়েন রসের ভাড় : শীতের সকালে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার সময় মুড়ি বা খই দিয়ে খাবার জন্য অথবা শুধু কাঁচা খাবার জন্য পরিষ্কার রস আলাদা করে একটা বা দুটা ঠিলায় আলাদা করে রাখা হয়। আমাদের যশোর অঞ্চলে এই পরিষ্কার রসের ঠিলা বা পাত্র (যা দেখতে অনেকটা ছোট কলসির মতো) কে বলা হয় জিড়েন রসের ভাড়।
চার : বাঁশের সাঁকো কে চার বলা হয়। যেমন – চার পার হয়ে বাড়ি যাব।
নিজেল : টলমল পরিষ্কার।
ম্যাবাই : মিঞা ভাই এর সংক্ষিপ্ত রূপ। আমাদের এলাকায় দাদা দাদী নানা নানীরা তাদের পৌত্রদের আদর করে ম্যাবাই ডেকে থাকে।
কুষ্টা : পাট। পাটকে যশোর অঞ্চলে কুষ্টা বলা হয়।
জাগ : পাট পঁচানোর জন্য পানিতে পাটের যে ভেলা তৈরী করা হয়।
গাং : নদী