
অত্যাচার সইতে না পেরে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিলেন রাজুকুমার মাহাতো ৷
রবিবার দুপুরে তার ঠিক আগেই বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল তাঁর৷ স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁর স্ত্রী ও শ্যালিকাকে সোমবার সকালে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেন প্রতিবেশী মহিলারা ৷ আলিপুরদুয়ারের অরবিন্দ কলোনি এলাকার ঘটনা৷ স্থানীয় ১০ জন মহিলার বিরুদ্ধে আলিপুরদুয়ার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্তরা৷ বছর চারেক আগে রাজুকুমারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মমতা সূত্রধরের ৷
বিয়ের পর থেকেই স্বামী -স্ত্রীর মধ্যে নিত্য দিন ঝামেলা লেগে থাকত৷ প্রতিবেশীদের অভিযোগ, মমতা তাঁর স্বামীর ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতেন৷ রবিবার দুপুরে বিবাদে চরমে ওঠায় অভিমানে আত্মঘাতী হন রাজু৷ রেল পুলিশের কাছে রাজু মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দিয়েছিলেন, স্ত্রী ও শ্যালিকার অত্যাচারেই তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন৷ সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ এলাকার মহিলারা এককাট্টা হয়ে মমতা ও তাঁর বোন সরস্বতীকে একটি গাছের সঙ্গে পিছমোড়া করে বেঁধে প্রায় ঘণ্টাখানেক মারধর করে ৷
তাঁদের দাবি , মমতা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত বলেই অশান্তি হত স্বামীর সঙ্গে৷ প্রতিবাদ করলে স্বামীকে মারধর করতেন মমতা ৷
রাজুর ওপর চড়াও হতেন মমতার বোন সরস্বতী ও মা সন্ধ্যাও৷ প্রতিবেশী মায়া পাল বলেন, ‘আমরা ইতিপূর্বেও মমতাকে বেশ বেশ কয়েক বার সাবধান করেছি৷ সন্ধে হতেই ও নিজের ঘরে ফূর্তির আসর বসাতো ৷
রাজু প্রতিবাদ করলেই শুরু হত অশান্তি ৷’ আরেক প্রতিবেশী পার্বতী দাস বলেন, ‘রবিবার সকালে মমতার প্রেমিকের ফোন এসেছিল ওর মোবাইলে৷ সেটা রাজু ধরে ফেলায়, ওর ওপর চড়াও হয় মমতা ও সরস্বতী ৷ প্রচণ্ড মারধর করা হয় রাজুকে ৷
শেষ পর্যন্ত ও চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেয়৷ এ ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না৷’ প্রতিবেশীদের অভিযোগ অস্বীকার করে মমতা বলেন, ‘আমি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিইনি ৷
অনটনের সংসার চালাতে না পেরে নিজে মরে গিয়ে আমার স্বামী আমাকে ও আমার দুই সন্তানকে পথে বসিয়ে দিয়ে গেল৷ মিথ্যে অভিযোগে আমাদের দুই বোনকে মারধর করা হয়েছে৷ ওদের শাস্তি চাই৷’ মমতার ভাই আবার সরব হয়েছেন নিজের দিদির বিরুদ্ধেই ৷
রাজুকুমার মাহাতোর শ্যালক গণেশ সূত্রধর বলেন, ‘যতই আমার দিদি হোক না কেন, সত্যিই ও সবসময় জামাইবাবুর ওপর অত্যাচার চালাতো৷ অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছি৷ কিন্ত্ত লাভ হয়নি৷ তার ফলেই আজ জনরোষের মুখে পড়েছে আমার দিদি৷ ওর সাজা হওয়া দরকার ৷’
এ দিন খবর পেয়ে পুলিশ এসে জনতার হাত থেকে দুই বোনকে উদ্ধার করে৷ ১০ জন মহিলার বিরুদ্ধে গণধোলাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেছেন মমতা মাহাতো ৷
তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ ৷ আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি৷ কেউ হাতে আইন তুলে নিতে পারেন না ৷ সময় মতো পুলিশ না পৌঁছলে বড় অঘটন ঘটতে পারত৷আরো বিস্থারিত দেখুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


