somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মুসলিম চিন্তা : কে এই ইসরায়েল? (পর্ব ১)

২৩ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১ম পর্ব :
যেদেশটির সন্ত্রাসের উপর ভিত্তি করে জন্ম হয়েছে তাকে সমর্থন করা, তার বিরোধিতা না করা শুধু মুসলিমদের বিদ্ধাচারণই নয় এটা মানবাধিকার বিরোধী এবং মানবজাতির জন্য লজ্জাজনক।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া সহ নানাবিধ মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা দেখলাম সন্ত্রাসী ইজরাইল বাহীনি ফিলিস্তিনে কিভাবে হামলা চালিয়েছে ! নারী, পুরুষ এবং শিশুদের উপর বর্বরোচিত হামলা করেছে ! এই ইহুদিরা সবসময় মুসলমানদের ক্ষতি করে আসছে । ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের এই বর্বরতা নতুন কিছু নয়, বহুত পুড়ানো।

কে এই ইজরাইল ?
১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর তৎকালিন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার 'জেমস বালফোর' ইহুদীবাদীদেরকে পত্রের মাধ্যমে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ষড়যন্ত্র মূলক প্রতিশ্রুতি দেয়। যার ফলে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের বসতি গড়তে বিপুলসংখ্যক ইহুদি ইউরোপ থেকে ফিলিস্তিনে এসে বসতি স্থাপন করতে থাকে।

১৯২৩ সালে স্বাধীন তুরস্কের জন্মের পর ফিলিস্তিনে ইহুদীরা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য উদগ্রীব হয়ে যায়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, নরওয়ে, পোল্যান্ড, গ্রীস এবং সুইজাল্যান্ডে বসবাসকারী ইহুদীদেরকে নেতারা আহ্বান জানান ফিলিস্তিনে বসতি গড়তে। তাছাড়া ব্রিটিশ সরকার ইহুদীদেরকে তাদের নিজস্ব ভূমি ছেড়ে দেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়। শুধুমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে প্রায় আড়াই লাখ ইহুদী ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে পাড়ি জমায়।

১৯২১ সালে ইহুদীরা 'হাগানাহ' নামের এক বাহিনী তৈরি করে যা ইহুদীবাদীদের রাষ্ট্র তৈরির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । প্রথমে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদীদের সহায়তা করা ছিল হাগানাহ বাহিনীর দায়িত্ব । আর এটিই ইসরায়েলের মূল সামরিক বাহিনী যা মুসলিমদের জায়গা দখল করে মুসলিমদেরই বিনাশ করার জন্য কাজ করছে ।

১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিত করার সফল চক্রান্ত হিসেবে জাতিসংঘে ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দ্বিখণ্ডিত করার প্রস্তাব পাশ করে ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনীদের এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ইহুদীবাদীদের হাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এভাবেই ১৯৪৮ সালের ১৪ মে মুসলিমদের জায়গায় সন্ত্রাসী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল দখল করে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ১৯৪৮ সালের ১৭ মে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ইজরাইলকে প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় !

ইজরাইলী সন্ত্রাসীরা কামান, ট্যাংক আর বোমা দিয়ে ফিলিস্তিনীদের উপর হামলা করছে আর ফিলিস্তিনীরা প্রতিরোধ করছে পাথর দিয়ে! আর যৎ সামান্য অশ্রসশ্র দিয়ে ! আশ্চর্যের বিষয় হলো, যারা অবৈধ ভাবে দখল করল সেই ইজরাইলিরা শিক্ষা, দিক্ষা, আধুনিক অশ্রসশ্র এবং নানাবিধ হাতিয়ারের বিরাট সংগ্রহ করে ফিলিস্তিনীদের উপর হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে ! অথচ এত দিনের ষড়যন্ত্র, নির্যাতন থাকার পরেও ফিলিস্তিনীরা তাদের নিজেদের প্রটেকশনের জন্য যথাযথ সামরিক বাহীনি তৈরী করতে পারে নাই !!! পাথর আর গুড্ডি দিয়ে কি বন্দুক আর কামানের মোকাবেলা করা যায় ! আর এজন্যই তারা মার খাচ্ছে বেশি !

আজ ইজরাইলী বাহিনীর বর্বরতায় নিশ্চুপ বিশ্বনেতারা! ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের নেতারা ত ইজরাইলেরই সাফাই গাইছে ! আবার দুষছে ফিলিস্তিনীদের ! কেন ? ফিলিস্তিনীরা মুসলমান বলে ? যদিও এর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, এজন্য তাকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। কোন মুসলিমদের বিপদে অন্য মুসলিম যদি কথা না বলে, তার পক্ষ না হয় তাহলে কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ র কাছে জবাব দিতে হবে ।
আর যেসব বেদ্বীন, কাফের, মুশরেক, বেঈমানের দল ইজরাইলকে মদদ দিচ্ছে তাদের প্রতি ঘৃণা জনাই, ওরা কি গজব দেখেও বোঝে না ! আমি আমার অন্তরের সমস্ত ঘৃণা দিয়ে এই হামলার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই।

বর্তমানে ফিলিস্তিনীদের উপর অবৈধ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইজরাইল নির্যাতন চালাচ্ছে, জাতিসংঘ নিরব !!! আর নিরব থাকবেই না কেন এরাই ত ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জায়গায় ইহুদিদের বসবাসের নোংরা নকশা একেছিল। সুতরাং, খ্রিষ্টান ও ইহুদি কর্তৃক পরিচালিত জাতিসংঘ মুসলমানদের কোন উপকারে আসে নাই, আসবেও না ! গোটা মুসলিমদের উপকারের জন্য, তাদের প্রবৃত্তি ও নিরাপত্তার জন্য আলাদা মুসলিম জাতিসংঘ তৈরী করতে হবে ।

মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি ফিলিস্তিনীদের শক্তি, সামর্থ্য ও ক্ষমতা বাড়িয়ে দেন । আর ঐসব নরপশু, ঘৃনীত নরপিশাচদের গজব দিয়ে ধংস করে দেন।

---চলবে
লেখক : আবদুল্লাহ্ আল মামুন।
ছবি : ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
২য় পর্বের লিংক : Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৫২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×