somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় উৎসব নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি কবে বন্ধ হবে

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হুজুর :: এই যে আতাহার সাহেব আপনি মুসলমান হয়ে পুজা মন্ডপে কেন গেছেন , জানেন না পুজা মন্ডপে যাওয়া শিরিক করা এবং কবিরা গুণা !!
আতাহার হোসেন :: আপনার কথাটা মানলাম না , আমি তো পুজা করিনি ওখানে শুধু দেখেছি এবং ওদের মন্ডপের পাশে যে মন্চ বানিয়েছে সেখানকার সংস্বকৃতি অনুষ্ঠান মুলত দেখেছি । বড় বড় পুজা মন্ডপে একদিকে পুজার বেদি থাকে যেখানে পুজা হয় এবং অন্য দিকে সংস্বকৃতিক মন্চে নাচ গান কির্তন শ্যামা সংগিত ইত্যাদি হয় । প্রথমে ঢুকে দেখলাম হিন্দুরা পুজা করছে মুর্তির সামনে সেই সাথে ঢোল বাজানো হচ্ছে , দুই তিন মিনিট পুজা দেখে সংস্বকৃতিক মন্চের সামনে বসে অনুষ্ঠান দেখেছি , তার পর নৃপেনদা এসে লাড্ডু সিঙ্গারা দিল এবং সেই সাথে ভেজিটেল খিচুরি খেয়ে চলে এলাম ।
হুজুর ::: তোবা তোবা আপনি পুজার প্রশাদ খাইছেন , আপনি জানেন না পুজার প্রশাদ খাওয়া হারাম
আতাহার ::: ইসলামের নামে উল্টা পাল্টা কথা মিথ্যা কথা বন্ধ করেন দয়া করে , প্রশাধ টা তো কোন মাংস ছিল না , মাংস হোলে হারাম বলা যেত , লাড্ডু সিঙ্গারা কি করে হারাম হয় ।
হুজুর ::: পুজার প্রশাধ হারাম , এর প্রমাণ কি আপনি দেখতে চান
আতহার ::::: মাংস ব্যথিত পুজার প্রশাধ যে হারাম না সেটা কি আপনি দেখতে চান ??
হুজুর :::: খালি খালি আজাইড়া পেচাল পাড়েন কেন
আতাহার :::: শুনুন কোরানে আল্লাহ তালা বলেছেন শুধু --- আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কারো নামে জবাই করা পশু পাখির মাংস হারাম এবং এই বিষয়টি শুধু মাংসের ক্ষেত্রে প্রজোয্য ,এবার আপনাকে একটা প্রশ্ন করি জীবনে কি কখনো পুজার মন্ডপে গেছেন ।
হুজুর :::: তোবা তোবা প্রশ্নই আসে না ।

আতাহার :::: শুনুন পুজার বেদির উপরে মুর্তির সামনে পুজার সময়ে যে খাবারটা থাকে তাকে প্রশাধ বলে , এবং বাহিরে প্যান্ডেলের পাশে বড় বড় হাড়ি ডেকচিতে সারা দিন যে রান্না হয় ঐ খাবার গুলোকে বলে ভোগ , ঐ মন মন হাড়ি ডেকচি ভরা ভোগ পুজার বেদির সামনে আনা হয় না এবং আলাদা ভাবে বিতরন করা হয় । যদি আপনার প্রশাধ খাওয়াকে হারাম মনে হয় তাহোলে ভোগটা খেতে পারেন ।

হুজুর :::: আমার মাথা খারাপ হয় নি যে ভোগ খাবো যাহা প্রশাধ তাহাই ভোগ এবং তাহাই হারাম

আতাহার ::: কোরানের আয়াত থেকে উদাহরন দিতে পারবেন একটাও , যেখানে কোরানে শুধু আল্লাহর নামে জবাই ছাড়া পশু পাখির মাংসকে হারাম করেছেন অন্য কোন খাবারকে নহে । প্রশাধ হোল যে খাবার দেবতার মুর্তির সামনে থাকে এবং দেবতার উদ্দেশ্য উৎসর্গ করা হয় এবং ভোগ হোল উৎসর্গকৃত খাবার গুলো নহে ।

শুনুন মাওলানা সাহেব পুজা দেখা মানে তাদের বিশ্বাষ গ্রহন করা নহে , যদি বিশ্বাষ গ্রহন করা হোত যদি আমি পুজা করতাম । আপনার লেকচার মারেন পুজা দেখলেই নাকি শিরিকি করা হয়ে যায় তাদের বিশ্বাষের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করা হয়ে যায় , আমি জীবণে বহু পুজা দেখেছি কিন্তু কখনো তাদের বিশ্বাষ গ্রহন করি নি । যাদের ঈমাণ দুর্বল তাদের পুজা না দেখাই ভালো কারন দেখলেই মুর্তির প্রতি তাদের ঈমাণ এসে যাবে ।
এবার হুজুর আপনাকে একটা প্রশ্ন করি - আমি একজন মুসলমান এবং আমার সামনে কয়েক জন মুসুল্লি নামাজ পড়ছে এবং আমি সেই নামাজ পড়া দেখছি কিন্তু পড়ছি না তাহোলে কি দেখার জন্য আমার নামাজ পড়া হবে ???

হুজুর :::: কি পাগলের মত কথা বলেন অন্যের নামাজ পড়া দেখলে কি কোন দিন নামাজ পড়া হয় !!!!!!

আতাহার :::: ও হয় না বুঝি কিন্তু মুসল্লিদের ঈমাণ আর আমার ঈমাণ এক তাহোলে ও নামাজ পড়া দেখার জন্য নামাজ হবে না !!!
হুজুর :::::: নিয়ত করে ওজু করে নামাজ নিজে না পোড়লে অন্যের নামাজ পড়াতে নিজের নামাজ কোন দিন হবে না যতই নামাজ পড়া দেখেন না কেন ।
আতাহার ::: ও মুসলমান হয়ে অন্য মুসলমানের নামাজ পড়া দেখলে নামাজ হবে না কিন্তু মুসলমান হয়ে অন্য বিশ্বাষের মানুষের পুজা করা দেখলে আমার পুজা করা হয়ে যাবে শিরিক করা হয়ে যাবে এবং হিন্দুদের বিশ্বাষ গ্রহন না করলেও আমার পুজা করা হয়ে যাবে ।
হুজুর ::: বড় বড় চোখ করে তাকায়
আতাহার :::: শুনুন হুজুর আপনি মাঠে বা টিবিতে যদি কোন খেলা দেখেন তখন আপনি দর্শক খেলোয়ার নহেন , আমি যদি অন্যের নামাজ পড়া দেখি আমি দর্শক নামাজি নহি এবং আমি যদি অন্যের পুজা করা দেখি তাহোলে আমি দর্শক পুজারি নহি । পুজা মন্ডপে যাই পুজা করতে না দেখতে এবং সেটা অল্প কিছুক্ষণ , বেশি ভাগ সময় কাটে মন্চের সামনে কালচারাল অনুষ্ঠান দেখে । আমি হিন্দুদের বা অন্য ধর্মের মানুষের সাথে এত মিশি এবং আমি তাদের ধর্ম গ্রন্থ ও পড়ি কিন্তু কখনো তাদের বিশ্বাষ গ্রহন করি নি , আমার ঈমাণ অত দুর্বল নহে ।
হুজুর ::::: থামেন খুব বেশি প্যাচাল পাড়েন , শুনুন কোরানে আট দশটা আয়াত আছে যেখানে আল্লাহ মুর্তি বা অন্য কোন কিছুকে পুজা করতে শক্ত ভাবে নিষেধ করেছেন, তাহোলে আল্লাহর আদেশ অমান্য কোরে মোনাফেকদের ফতুয়া শুনতে আমরা রাজি নই

আতাহার ::::: শুনুন হুজুর কোরানের ঐ সকল আয়াত আমার পড়া আছে ওখানে পুজা করতে মানা করেছে এবং আপনাকে এতো বার বলার পর কেন বার বার একই কথা বোলছেন কোন কিছু দেখা মানে সেই কাজটা করা নহে , নামাজ দেখা মানে নামাজ পড়া নহে , খেলা দেখা মানি খেলা করা নহে , নাটক দেখা মানি নাটকে অভিনয় করা নহে , পুজা দেখা মানি পুজা করা নহে ।

হুজুর :::: "তোমরা মুশরিকদের উপাসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করো না। কারণ সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে।" ' - 'উমার ফারুক (রা) (তথ্যসূত্রঃ ইবনুল ক্বাইয়্যিম(রাহিঃ), আহকামুল জিম্মাহ ১/৭২৩- ----- এর পরে ও কি আপনার কোন প্রশ্ন আছে ???
আতাহার ::::: এটা কোন কোরানের আয়াত নহে এবং হাদিস নহে এবং হযরত ওমর ফারুক (রা: ) নামে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সেটা কোরানের নিচের আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক .
---- আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য এবাদতের নিয়ম কানুন নির্ধারন করে দিয়েছি যা ওরা পালন করে , তুমি ওদের তোমার প্রতিপালকের দিকে ডাক.. ওরা যদি তোমার সাথে তর্ক করে বল, তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ ভাল করেই জানেন। তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছ আল্লাহ কিয়ামতের দিন সে সে বিষয়ে তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন , সুরা হজ ৬৭-৬৯ ।

তার মানি হিন্দুদের স হ অন্য সব ধর্মের ইবাদতের নিয়ম কানুন আল্লাহ ঠিক করে দিয়েছেন ।যদি আল্লাহ নিজে অন্য ধর্মের রিচুয়াল নিয়ম কানুন ঠিক করে দেন তাহোলে গজব নাজিল হবে কেন ??? যদি তাদের উপর গজব নাজিল হয় যারা পুজা করছে, তাহোলে যারা পুজা করছে না দেখছে তাদের উপর কেন নাজিল হবে ??? আল্লাহ যদি ইবাদতের নিয়ম কানুন ঠিক করে দেন তাহোলে কেন গজব দিবেন ।
হযরত ওমর ফারুক (রা: ) এর নামে যে কথা বলা হয়েছে সেটা কোরান বা হাদিস নহে এবং সুরা হজ ৬৭-৬৯ এর সাথে সাংঘর্ষিক ।



সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×