বাঙ্গালা সনের সুচনা নিয়ে পন্ডিতগণের মতগুলো অস্পষ্ট এবং দ্বান্দ্বিক। তবে সবচেয়ে বেশী যে মতটি প্রচলিত তা হচ্ছে, বাঙ্গলা সনের প্রবক্তা হলেন মুগল সম্রাট আকবর। যে ক’টি বিশেষ কর্মের জন্য আকবর আলোচিত, বাংলা সনের প্রবর্তন তার অন্যতম। আকবর বাংলা সন প্রবর্তন করেন খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে। এছাড়াও রাজ্যের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গঠনও এর পেছনে উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করেছিল।
পানি পথের দ্বিতীয় যুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে এবং নিজের রাজ্য থেকে আরও সুবিধাজনক উপায়ে খাজনা আদায় করতে আকবর ‘এলাহী সনের’ প্রর্বতন করেন। পরবর্তীতে তা ফসলি সন এবং পরে বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়।
মুগল আমলে রাজারা খাজনা আদায় করতেন চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী। চাঁদের উদয় অস্তের হিসেব করে গোনা হয় চান্দ্রবর্ষ। কৃষক তার জমির ফসল ঘরে তুলতে পারতো একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর। কিন্তু চান্দ্রবর্ষ প্রতিবছর ১১ দিন করে এগিয়ে যেতো; যা কৃষকের খাজনা দেয়া ও ফসল তোলার মধ্যে একটা সমস্যা সৃষ্টি করতো। কৃষক শ্রেণীর জন্য খাজনা দেয়া অনেক সময়ই কষ্টদায়ক ব্যাপার বঙ্গাব্দ আর নববর্ষের কথা হয়ে দাঁড়াতো। এ ধনের বিপত্তি থেকে রক্ষা পাওয়াও সন প্রবর্তনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিলো।
সম্রাট আকবর তার শাসনামলের শুরু থেকেই সহজ বিজ্ঞানভিত্তিক ও কার্যকর পদ্ধতিতে বছরের হিসাব রাখার কথা ভাবছিলেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার দায়িত্ব দেন সে সময়ের বিখ্যাত জ্যোর্তিবিদ আমির ফতুল্লাহ শিরাজীকে। শিরাজীর প্রচেষ্টায় ১৫৮৪ খ্রীষ্টব্দের ১০ বা ১১ মার্চ সম্রাট আকবর ‘এলাহী সন’ নামে নতুন এক সন প্রথার প্রচলন করেন। কৃষক শ্রেণীর কাছে এটি ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত পায়। পরে আবার এটি ‘বঙ্গাব্দ’ নামেই প্রচলিত হয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




