somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুরুষের জীবন অর্থবহ করার দশ উপায়

৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুরুষের জীবন অর্থবহ করার দশ উপায়
মধ্য ৩০ বয়সের পুরুষেরা নিম্নোক্ত কাজগুলিতে ফোকাস করার মাধ্যমে নিজের জীবনকে আরও অর্থবহ করে তুলতে পারেঃ
১। পরিবার সংশ্লিষ্টতাঃ
কিশোর তরুণেরা বয়সের জোশে বাইরে রাত কাটায়। আর পুরুষেরা নিজের অবসর সময় কাটায় পরিবারের সাথে। বয়স যদি ৩০ এর মাঝামাঝি হয়, আর আপনার বাবা মা এখনও জীবিত থাকেন, তো তাদের সান্নিধ্যে সময় কাটান, তাদের খেদমত করুন। এটা আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত।
২। প্রকৃতির সংস্পর্শ
মানুষ প্রকৃতির সন্তান, যদিও নগর জীবনের ব্যস্ততায় সে তা ভুলতে বসেছে। কাজেই, সময় সুযোগ হলেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে চলে যান। নিজেকে প্রকৃতির শক্তিতে রিচারজ করুন।
৩। এক্সারসাইজ করা
এক্সারসাইজ করলে শরীরে হ্যাপি হরমোন নিঃসৃত হয়। ইয়াং এইজে আমরা অনেকে এক্সারসাইজ করলেও বয়স ও ব্যস্ততা বাড়ার সাথে সাথে এক্সারসাইজ করা বন্ধ করে দেই। মধ্য ৩০ এ এসে জিমে জয়েন করাটা একটা ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে। নিজের স্বাস্থ্যকে প্রায়োরিটি দেয় এমন একটা সার্কেলের সাথে ভালো বন্ডিং হবে। জিমে জয়েন করতে না পারলেও নিয়মিত হাঁটা বা জগিং করা যায়।
৪। প্রফেশনাল ডেভলাপমেন্ট
আমাদের পেশাগত জীবনও গুরুত্বপূর্ণ। যে যেই পেশায় আছি, সে পেশায় থেকে এমন একটা উচ্চতায় ওঠার চেষ্টা করা যেতে পারে, যাতে করে আমরা আমাদের কমিউনিটিকে আক্ষরিক অর্থেই ভালো কিছু সার্ভিস দিয়ে যেতে পারি। নিজেদের লেগেসি তৈরি করতে পারি।
৫। পুরনো বন্ধুবান্ধবদের সাথে যোগাযোগ
পেশাগত জীবনে উন্নতির ইঁদুর দৌড়ে অংশ নিতে গিয়ে দেখা যায় প্রায়ই আমরা আমাদের শেকড়কে ভুলে যাই। আমাদের গঠনকালীন সময়ে, যখন আমরা পেশাগতভাবে, কিংবা ব্যক্তিজীবনে ততোটা সফল হয়ে উঠি নি, তখন যে বন্ধুবান্ধবরা আমাদের ঘিরে রাখতো, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি আমাদের মানসিক প্রশান্তি এনে দেবে।
৬। পুরনো কোন শখ পুনরুদ্ধার করা
একই সঙ্গে, দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় হারিয়ে যাওয়া সুর ও রংগুলো পুনরুদ্ধার করাও করে তুলতে পারে আমাদের জীবনকে রঙ্গিন ও সুরেলা। গান গাওয়া, গিটারে টুংটাং সুর তোলা, নাটকপাড়ায় নাটক কিংবা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা, আর্ট এক্সিবিশন ঘোরা - এ সবই জীবনকে নতুন করে অর্থ প্রদান করে।
৭। ডায়রি লেখা
আমাদের মনে যে সব চিন্তা ঘোরে, তার সবই গুরুত্বপূর্ণ, অন্তত আমাদের কাছে। কাজেই সেগুলোকে হারাতে না দেয়া, মাথায় আসার সাথে সাথে লিপিবদ্ধ করে ফেলা ডায়রির পাতায় - এটাও আমাদের মনের ভার কমিয়ে মনকে হালকা করতে সহায়তা করে।
৮। ধর্মচর্চা করা
ধর্মচর্চা মানুষকে অন্তর্মুখী হতে সহায়তা করে। জীবনকে নিয়ে আরও গভীরভাবে তলিয়ে ভাবতে সহায়তা করে। জীবনের সংকীর্ণতাগুলিকে আরও বড় পারস্পেক্টিভ থেকে দেখতে ও ডিল করতে শেখায়। জীবনকে একটা ধরাবাঁধা রুটিনের মধ্যে আনে।
৯। শুয়ে শুয়ে মেঘ দেখা
ছোটবেলার মতো বারান্দায়, কিংবা জানালার ধারে বসে আকাশের মেঘ দেখা যেতে পারে। ছেলেবেলায় যেমন তারা হাতি ঘোড়া কিংবা ডাইনোসরের আঁকার ধারন করতো - অমন হয়তো করবে না, কিন্তু শৈশবের একটা অভ্যাস বাঁচিয়ে রাখা আমাদের মনের শিশুসত্ত্বাকে সজীব করে রাখবে।
***
লোকটার ডায়রি নামিয়ে রাখা মাত্রই তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "শেষ দিকে এসে ভালোমতো ব্রেইন স্টর্ম করতে পারি নাই। দশ নং পয়েন্টটা ভেবেও বের করতে পারলাম না।"
"আপনি অনেক গুছিয়ে ভেবেছেন কিন্তু," আমি পাশের টিটেবিলে রাখা ওনার লগবুকে আজকের সেশনের ডিটেইলসগুলো তুলে রাখা শুরু করি। "আপনার চিন্তার ধোঁয়াশাচ্ছন্ন ভাব কেটে গেছে অনেকটাই। এটা একটা ভালো লক্ষন।"
"তা ঠিক ..." লোকটা চুপ হয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ।
"আমার বাচ্চা যে জামা গায়ে দেয়, তাতে ওর শরীরের গন্ধ মিশে থাকে সর্বোচ্চ দেড়দিনের মতো। তারপর সে গন্ধ ফিকে হতে থাকে,"
আমি লোকটার কথায় পুনরায় নড়েচড়ে বসি। হাতের খাতা বন্ধ করে কোলের ওপর রেখে দিয়ে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাই তার দিকে।
"তারপর, তারপর তো ... কষ্ট লাগে, বুঝলেন ... দেখা হয় না। দেখতে দেয় আবার দেয় না ... বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আইন আদালত, মামলা মোকদ্দমা কার সহ্য হয় ..."
লোকটা খানিকটা গলা খাঁকড়ি দেয়। মনে হয়, তার যেন অস্বস্তি হচ্ছে কথা বলতে।
"কিন্তু, এখন কি করা ডক্টর বলেন ... বাচ্চা তো ... আমারই বাচ্চা ... সহ্য হয় না তো ওকে ছাড়া থাকা ... তাই ... তাই আমি একটা উপায় বের করেছি..."
লোকটার চোখ জোড়া একদম জ্বলজ্বল করতে থাকে আনন্দে - উৎসাহে।
"বাজারে এয়ারটাইট পলিথিন ব্যাগ পাওয়া যায়, বুঝলেন। ওগুলোর ভেতরে যদি আমি আমার বাচ্চার কাপড় ভরে রাখি, তাহলে প্রায় এক সপ্তাহের কাছাকাছি সময় তার ঘ্রাণ ঠিক থাকে। অতটুকুই দরকার আমার আপাতত ..."
লোকটা মুখ ফিরিয়ে বসে জানালার দিকে। আলো এসে ঝলসে দেয় তার চেহারা। অতি উজ্জ্বল আলোর মাঝেও আমি দেখতে পাই, তার চোখের কোল ঘেঁষে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি ঝরে তার বুক ভিজিয়ে দিচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ২:৪৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফিরে দেখা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ভারতের প্রতি একটি সতর্ক বার্তা

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০০

অতীতে গরুর মাংসে হাড় বেশি হওয়ার জের ধরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে দেখেছি,
.
ও ভাই মুজে মারো মুজে মারো নেহি মাজাক হ রাহে
.
ঢাল-সড়কি,টেঁটা-বল্লম, গুলতি, লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে তারা দলে দলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকা কেন শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করলো?

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১১



ব্লগে কে কে বলেন, আমেরিকা শেখকে হত্যা করেছে? খুব বেশী ব্লগার ইহা বলেন না; তারা শেখের দুর্নীতি, আওয়ামী লীগের দোষ টোষ নিয়ে বলেন যে, কিছু বিপথগামী সৈনিক শেখকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় বিএসএফের বর্বরতা: পঞ্চগড় সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিকে হত্যা

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২১

আরেকটি নিরীহ প্রাণের বলিদান

আবারও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের সীমান্তে নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আনোয়ার হোসেন নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা এলাকাবাসীর মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্ডিয়া আমাদের দেশ দখল করে নেবে......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৭

ইন্ডিয়া আমাদের দেশ দখল করে নেবে......

এতো সোজা!
চাইলেই কেউ কোনো দেশ দখল করে নিতে পারে না- তা সে যতই শক্তিধর দেশ হোক। বড়ো, শক্তিশালী রাষ্ট্র হলেই যদি ছোট এবং দুর্বল দেশকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এসো বসো গল্প শুনি

লিখেছেন শায়মা, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১২


ছোট থেকেই আমি বকবক করতে পারি। তখনও আমি গল্পের বই পড়তে শিখিনি, তখনও আমি বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলতে পারতাম। আর আমার সে সব গল্প শুনে বাড়ির সকলে হাসতে হাসতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×