যতদিন আইএসও ও এলডব্লিউজির কমপ্লায়েন্স স্বীকৃতি না পাওয়া যাবে ততদিন কোরবানির গরু ছাগলের চামড়া এভাবে নদীতে ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই ।
.
ছোটবেলায় আমাদের শোভাকলোণীতে কোরবানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো কার গরুর চামড়া কত দামে বিক্রী হচ্ছে এটা দেখা ।
.
পনের হাজার টাকা গুরুর চামড়া দেড়হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রী হয়েছে । মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে চলতো কার আগে কে চামড়া সংগ্রহ করতে পারবে তার প্রতিযোগিতা ।
.
এলডব্লিউজির সনদ পেতে ১৩৬৫ বাংলাদেশ অর্জন করেছে মাত্র ২০০ নম্বর। যেখানে ১০০ নম্বর সিইটিপি দিয়ে, বাকি ১০০ নম্বর ডাম্পিং ইয়ার্ড দিয়ে। অবশিষ্ট ১১৬৫ নম্বর এখনও বিসিক ও ট্যানারি মালিকদের অর্জন করতে হবে।
.
এমন যদি হয় এই দায় অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে । আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ব্যবসা করার মতো তারা এখনো ব্যবসায়ীদের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে পারেনি ।
.
আমার ব্যক্তিগত অভিমতে যেটা মনে হয়, আমাদের দেশে বিদেশীরা তো ঠিকি কমপ্লায়ান্স করে গার্মেন্টস শিল্পে ব্যবসা করে যাচ্ছে যা পুরো পৃথিবীতে প্রথম সারিতে রয়েছে । সরকারও ঠিকি পরিবেশ সৃষ্টি করতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলছে । তাহলে চামড়া শিল্পে আমরা কেনো কমপ্লায়েন্স হতে পারছি না?
.
এর মূল কারণ হতে পারে, এদেশে চামড়া শিল্পের উপর নির্ভর করতো প্রায় মাদ্রাসা মক্তব এতিমখানা এমনকি কাওমী ধরণার মদ্রাসাও ।
.
বিবিসির প্রায় বছর ‘কাঁচা চামড়ার বাজারে বিপর্যয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাদ্রাসা-এতিমখানা’ এমন নিউজগুলো দেখে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন ঘাপলাটা কোন জায়গায় ।
.
বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের বিকাশকে যে তিলে তিলে বাধাগ্রস্ত করা হবে এটা সহজেই অনুমেয় । এরপরেও কি আল্লাহ মাদ্রাসা এতিমখানাগুলো চালাচ্ছে না? রিজিকের মালিকতো রাজ্জাক । কমপ্লায়েন্স ইস্যু দিয়ে ব্যবসার প্রসার দমিয়ে রাখা পশ্চিমা এবং ইউরোপিয়ানদের একটা পুরনো কৌশল ।
.
সঙ্গত কারণে সনদ পেতে বাংলাদেশ এখন ১৩৬৫ নম্বরের মধ্যে ২০০ পাচ্ছে যখন ১৫০০/২০০০/৩০০০ টাকায় চামড়া বিক্রী করতাম তখন এই নাম্বারিং কোথায় ছিলো? তখনকার ৩০০০ টাকা মানে এখন ১৫০০০ থেকে ২১০০০ টাকারও বেশী ।
.
তখন যে গরু বিশ হাজার টাকা ছিলো তা এখন দেড় লাখ টাকা সে হিসেব করলে সাতগুণ বেড়েছে গরুর দাম অথচ উল্টো দিকে সাতগুণ কমেছে চামড়া দাম ।
.
ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, প্রায় এক কোটি গরু ছাগল কোরবানি করা হয় । এভারেজে দুইহাজার টাকা করে হিসেব করলেও দুই হাজার কোটি টাকা বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ যা দিয়ে এক যুগে আরেকটা পদ্মা সেতু করা সম্ভব ।