দুঃখের বিষয় আমার বাবা তামিম ইকবাল ছিলো না। হার্ট এ্যাটাকের পর যখন চট্টগ্রাম হাটহাজারীর মেডিক্যাল থেকে তাকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যেতে হবে বলা হলো, তখন তিনি বড়দিঘী পাড়ের জ্যামে আটকে গেছেন। অ্যাম্বুলেন্স ঘুরিয়ে দিয়ে আশেপাশের কোন হাসপাতালের খোঁজ করছিলাম।
ফতেয়াবাদ ক্লিনিকে গেলাম। তারা বললো শহরে নিয়ে যেতে হবে। আবারো গাড়ি ঘুরালাম। আবারো জ্যামে আটকে গেলাম। আমি লাফ দিয়ে নেমে, জ্যাম ছুটানোর চেষ্টা করলাম। কে কার কথা শুনে । আমার বাবা তো আর সবার বাবা না!
তৎক্ষণে বাবার হাত পা সোজা হয়ে গিয়েছে। শুধু জানা দরকার, উনি সত্যি মারা গেছেন কি না। আবারো গাড়ি ব্যাক করে চৌধুরী হাট আরেকটা হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। বাবা অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে আছে। মারা গেছে ভেবে ওরা হাসপাতালেও ঢুকালো না। বললো, চিটাগং মেডিক্যাল নিয়ে যান।
আমি আমারো গাড়ি ঘুরাতে বললাম। আবারো সামনে এগিয়ে দেখি সেই বড়দিঘি পাড়ের জ্যাম। ইচ্ছে হলো, বাবাকে কাঁধে করে নিয়ে সামনে এগুতে। সেটা সম্ভব না । আমাদের বাবারা তো আর ভিআইপি না।
আবারও গাড়ি ঘুরালাম। পাশে এলাকার মামা বসে ছিলো। তাকে বললাম, বাবা কি মারা গেছে? সে বললো, পালস্ তো নেই মনে হচ্ছে।
মারা গেছে কি না এটা শিওর হতে পথে পথে মেডিক্যাল খুঁজছি। চোখে কোন জল নেই। দরকার একটি মেডিক্যাল যেখানে বাবাকে অন্তত চেক্ করে বলবে, উনি আছে কিংবা নেই।
দুই ঘন্টা হয়ে গেলো, কেউ বাবাকে রিসিভ করতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলাম। খুবই ছোট একটি হাসপাতাল। বাসার অনেকটা কাছে। কিন্তু কখনো যাওয়া হয়নি ।
সেখানে এমআর করে অনেক লতা পাতা পেঁচিয়ে ওনারা ডিক্লার করলো, বাবা আর আমাদের মাঝে নেই।
হয়তো আজ আপনার বাবা আছে। উনিও একটি তামিমের মতো স্ট্রোক করে মারা যেতে পারে। আমার লেখার ক'সম, কোন মেডিক্যাল, ডাক্তার, নার্স আপনাকে চিনবেও না।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




