নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সরকার যেন এক নতুন রূপে ধরা দিল। না, না—কোনো মন্ত্রিসভা রদবদল হয়নি। হয়েছে মাত্র একটি ছোট্ট যাত্রা, তবে সে যাত্রার যাত্রীটি ছিল একটু ব্যতিক্রম। যাত্রী? না, আদতে "গরু"। আর বাহন? সরকারি গাড়ি!
ইউএনও ম্যাডাম অফিসিয়াল মিটিংয়ে রাজশাহী গেলেন—সব ঠিকঠাক। মিটিং শেষে এক পশুহাটে ঢুকে কোরবানির গরু কিনলেন—তাতেও আপত্তি নেই। কিন্তু তখনই ঘটলো সরকারি সেবার নতুন দিগন্তের উন্মোচন! রাজস্ব মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই ডাবল ক্যাব সরকারি পিকআপের পেছনে উঠে গেল সেই সদ্যক্রয়কৃত চারপেয়ে! ম্যাডাম সামনেই, আর পেছনে গরু—গভীর শাসন প্রশাসনের এক অপূর্ব সঙ্গম!
যেখানে সাধারণ মানুষ সরকারি গাড়ির ধারে কাছেও আসতে পারে না, সেখানে গরু উঠে গেল সরাসরি পেছনের সিটে! প্রজাতন্ত্রের এই বিশেষ যাত্রী অবশ্য পাসপোর্ট ছাড়াই নিরাপত্তা পাস পেল। কোন যানবাহনে উঠবে, কবে নামবে—সবই যেন পূর্ব নির্ধারিত VIP রোস্টার।
যদিও অনেকেই বলছে, এটা “অপব্যবহার”, ইউএনও ম্যাডাম বলছেন—“ব্যতিক্রম নয়, বরং উদ্ভাবন!” তার যুক্তি, বাগাতিপাড়ায় হাট নেই, তাই সময় বাঁচিয়ে সরকারি গাড়িতে গরুটা তুলে আনা ছাড়া উপায় ছিল না। শুনে গরুটাও নাকি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে—“কোন দিন ভাবিনি আমি সরকারি পিকআপে চড়ব!”
এদিকে জেলা প্রশাসক বলছেন—“আমি কিছুই জানি না।” জানা না থাকাটাই এখন যেন প্রশাসনিক স্টাইল স্টেটমেন্ট! আর তদন্ত হবে ঈদের পর—কারণ ঈদের আগে গরুর মামলার চেয়ে রেজিস্ট্রি অফিস ব্যস্ত থাকে বেশি।
এখানে প্রশ্ন একটাই: প্রজাতন্ত্র কার? মানুষের, না গরুর?
আর সরকারি গাড়ি—এটা কি ‘সবার জন্য’ নাকি শুধুই ‘চারপায়ের জন্য’?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:৫২