somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খলনায়িকা থেকে নায়িকা হওয়ার গল্প।

২২ শে মে, ২০১৭ রাত ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সর্রদার আমি আর থাকছি না।আসলাম শাপলার দিকে একনজর তাকিয়ে নিলো।তার কোড নেম শাপ্লু।আসলাম একবার ভেবে নিল যে সে ভুল শুনছে কিনা.!তার ভুল ভেঙে দিয়ে শাপ্লু আবার বলল 'সর্দার আমি আর প্রতারণা করে মানুষকে ঠকাতে পারব না..!'আসলাম বলে তুমি তো জানো আমাদের ধান্ধায় কতো সমস্যা..!কেউ যদি আমাদের লাইন থেকে বের হয় তবে তার মৃত্যু...!তবে মৃত্যুই আমি বেছে নেব।কিন্তু আর কার সাথে প্রতারণা করতে পারব নাহ..।আসলাম ভালোই চিন্তায় পরে গেলো।এটা কিভাবে সম্ভব.! ২ বছর আগে শাপলা নিজেই তার কাছে এসেছিলো।তার মা-বাবা মারা যায় বেশ আগেই।অনেক কষ্টে বড় হয়েছে।শেষে এই পথে আসে। আসলাম যদিওবা তাকে বেশ কিছু শর্ত দেয়।যেমন: তাদের ধান্ধা ছাড়া যাবে নাহ,ভিকটিমের সাথে সহানুভূতি দেখানো বা প্রকাশ করা যাবে নাহ।আসলে তাদের ধান্ধাই যে এমন।কিছু অবিবাহিত এবং সরল বড় লোকদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে সব সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়া।প্রতি অপারেশন এ এক থেকে দেড় মাস লাগে।শাপলা ২ বছরে প্রায় ২০-২২ টা সফল অপারেশন শেষ করে যার প্রতিটা আসলাম গাইড করেছে।যদিওবা আরো অনেকে আছে তাও আসলাম শাপলাকে বেশি ভরশা করে।কারন শাপলা সব সময় সফলতা এনে দেয়।শাপলাও এই কাজ ইনজয় করে।শুধু শেষ অপারেশন এর পর থেকে সে কেমন জানি হয়ে গেছে..!এই কাজ ভাল লাগছে নাহ।

দুই.

এই যে আপনি... একটু শুনবেন.?
কে আমি.?
হুম।আর কে আছে এখানে.?
ওকে বলেন।
আমার মিরপুর চার এ খুব দরকারি কাজে যেতে হবে।কিন্তু দেখুন না আমার গাড়ির চাকা পামচার হয়ে গেছে।আমি যদি একটু আমায় লিফট দিতেন।রাফায়েল বেশ কিছুক্ষণ ভেবে রাজি হয়।রাফায়েল সহজ,সরল একা মানুষ।আপন বলতে তার কেউ নেই।নিজের চেষ্টায় সে বড় লোক হয়েছে।
আসলাম তার ব্যাপারে ১ মাস ধরে গোপনে খোজ নিচ্ছে।আজ তারই কথামতো শাপলা অপারেশন শুরুকরেছে।
রাত ৮.৩০ বাজে।রাফায়েল গাড়ি চালাচ্ছে।শাপলা পাশে বসে আছে।একটু পর রাজিব বলে আপনার নামটা জানা হলো না.! "আমি শাপলা।চট্টগ্রাম থাকি।অফিসের কাজে এখানে এসেছি।ও আচ্ছা।আরো কয়েকটা টুকটাক কথায় গন্তব্য পৌছে তারা।ধন্যবাদ জানিয়ে শাপলা চলে যায়।আজকের জন্য এইটুকুই ঠিক।কাল আবার শুরু করবে।এইদিকে পরের দিন আসলামের দক্ষ ইনফোরমার সুজন আসলামের কথা মতো রাফায়েলকে ফলো করছে।সকালে ১০ টার পর রাফায়েল বসুন্ধরাসিটিতে যায়।এই খবর আসলাম পায়।তার কথামতো শাপলা সেখানে পৌছে তাকে খুঁজে বের করে।শাপলা রাফায়েল এর পাশে গিয়ে এমন ভাব করলো যেন সে শপিং এ এসেছে। রাফায়েলও তাই ভাবলো।শাপলাকে দেখে রাফায়েল ডাক দিলো।তারপর কাছে গিয়ে বলে "আরে আপনি এখানে..!" হুম একটু শপিং এ এসেছি।তো আপনি এখানে.? আমিও শপিং।সেখানে বেশ কিছুক্ষণ কথার পর শাপলা বিদায় নিয়ে চলে আসে।তার দুই দিন পর আসলাম জানতে পারে আজ রাফায়েল এক হোটেল উদ্বোধন করতে বনানী যাচ্ছে।শাপলা সেখানেও পৌছে গেলো।রাফায়েল তাকে দেখতে পেয়ে তার কাছে গিয়ে জানতে পারে সে একজনের গেষ্ট হিসেবে এসেছে।পর পর তিন দিন দেখা হল তাই রাফায়েল তাকে লাঞ্চ অফার করে।শাপলা সাড়া দেয়।লাঞ্চের সময় তারা বেশ গল্পে কাটিয়ে দিল।শেষে ফোন নম্বর এক্সচেঞ্জ হল।বিদায় নিয়ে শাপলা চলে গেল।দুই দিন পর রাফায়েল তাকে ফোন করে।এই ভাবেই শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়।সোজা কথায় প্রেমের অধ্যায়।

তিন.

অন্য অপারেশন এর সময় শাপলা খুব হলে দুমাস সময় নিতো।এবার তিন মাস হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছেনা দেখে আসলাম শাপলাকে ডেকে কথা বলে।শাপলা তার কাছে আরো কয়েকদিন সময় চায়।কথা শেষে শাপলা ভাবতে থাকে কি হচ্ছে তার সাথে..!!কেনই বা হচ্ছে.?সে কি তবে রাফায়েলের সত্যি প্রেমে পরেছে.?আসলে রাফায়েল মানুষটাই এমন।এই তিন মাসে সে অপারেশনের কথা ভুলেই গিয়েছিল।মনে পরতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল।পরক্ষনেই মন শক্ত করে নিল।কারন এটাই তার জীবন।ধোকা তাকে দিতেই হবে।

চার.

চোখ খুলেই রাফায়েল শাপলার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।সে নড়তে পারছে না।হাত পেছনে বাধা।একটু পরেই তার মনে পরলো, সে আর শাপলা পার্কএ ছিল।পরে কে যেন একটা রুমাল নাকে চেপে ধরে পেছন থেকে।চোখ খুলে দেখে সে এখানে।একটু পর আসলাম আসে।এসে বলে "দেখো রাফায়েল ভাল চাও তাও কিছু কাগজ দিচ্ছি সই করে দাও।আমরা তোমায় কিছু করব না।" রাফায়েল একনজরে শাপলার দিকে তাকিয়ে আছে..! সে কেনো এমন করল.? তাকেতো নিজের চেয়েও বেশি ভালবেসেছে সে।কিন্তু পেল প্রতারণা..!শাপলা খুব কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু প্রকাশ করতে পারছে না।রাফায়েলের হাত খুলে দেয়া হল।তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল।আজই সে শাপলাকে প্রপোজ করত।রিংটা পকেটে আছে।যাইহোক দলিলে সই করে দিল সে।কি আর করার আছে..!আসলামের কথা মতো সাইফ তাকে নিয়ে দূরে ছেড়ে দিতে যাচ্ছিল।যাওয়ার সময় রাফায়েল রিং টা পকেট থেকে বের করে শাপলার পায়ের দিকে ছুড়ে দিয়ে চলে যায়।শাপলা সেটা তুলে নিয়ে কাঁদতে থাকে।এটা কি করল সে..!

পাঁচ.

গত কয়েক মাসে শাপলা কোন অপারেশন এ যায়নি।আসলাম তাকে ডেকে ডেকে কোনো কাজ নেওয়াতে পারেনি।আজ সে আসলামকে বলেই দিয়েছে সে আর পারবে না।আসলাম বুঝে যায়।সত্যি আর হবে না তাকে দিয়ে..! অবাক করা কাণ্ড হলেও আসলাম তাকে ছেড়ে দিলো সাথে রাফায়েলের সই করা কাগজ গুলোও ফেরত দিল তাকে।শাপলা খুশিতে লাফাতে গুলশান চলে আসে।এখানে রাফায়েলের অফিস আর এখন ছুটির সময়।

শেষ.
রাফায়েল ব্যস্ততা নিয়ে অফিস থেকে বের হল।বের হয়েই শাপলাকে দেখতে পায়।তাকে এড়িয়ে চলে যাচ্ছিল তখনি শাপলা তার হাত ধরে থামিয়ে দেয়।তার পর হাটু গেড়ে তার সামনে বসে বলে "আমায় ক্ষমা করতে পারবে..?আমায় আবার ভালবাসতে পারবে.?Will you merry me..?বলেই সেই রিং টা এগিয়ে দিলো যেটা রাফায়েল ফেলে দিয়েছিল।
আমি কিন্তু আর বড় লোক নই।তখনি শাপলা তার কাগজ গুলো ফেরত দিলো।

পরিশেষ :- মগ বাজার কাজি অফিস থেকে একটু আগেই বের রাফায়েল আর শাপলা। সাক্ষী ছিল আসলাম। নতুন শুরু,নতুন জীবন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৭ রাত ২:১৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×