বিস্বাস আর কুসংস্কার
প্রকৃত শিক্ষার আলো যেখানে না থাকে সেখানে অন্ধকার বাসা বাধেঁ। আর সে অন্ধকারে অনায়াসে ঢুকে পড়ে সংস্কার , গুজব, আর বিস্বাস। তার পর সেখানে আর যুক্তির কোন স্থান থাকে না। আর এই বিস্বাসকে পুজিঁ করে গড়ে প্রতারণার নতুন এক আস্তনা। সহজ সরল মানুষকে ধোকা দিয়ে কিছূ মানুষ গড়ে তুলে সম্পদের পাহাড়। এই সার্থ হছিলের জন্য তার আশ্রয় নেয় মিথ্যা আর ভন্ডামির। মনে হয় এরা যা বলে সব সত্য কিন্তু একটু গভিরে গিয়ে চিন্তা করলে বেরিয়ে আসে এদের আসল রুপ। মানুষের সরল মনের বিস্বাসকে নিয়ে খেলা করে এরা। আর মানুষ তাদের বিস্বাস করে হারিয়ে ফেলে নিজের সর্বস। আমি কি বলতে চাইছি বুঝতে পারছেন??? মনে হয় না। তাহলে বলছি ভন্ড পীর ফকিরের মাজার আর কবিরাজী চিকিৎসার নামেই এই ধরনের ভন্ডামীটা বেশি করা হয়। অনেকে ধমীয়দিক দিয়ে আমার এই কথার সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু আপনি একটু ভাল করে ধমীয় পুস্তকগুলো জেনে বুজে তার পর সমালোচনা করুন আমি প্রস্তুত আছি আপনাদের উত্তর দিতে। ইসলামী বিধান মতে কোন মাজার মানা কবিরাহ গুনাহ।
এবার আসুন জেনে নেই এই সব ভন্ডদের কাজ কর্ম সম্পকে। এরা প্রথমে একটা গুজব ছড়াবে ওমুক কাজ করলে এই হয় সেই হয়। ওমুক মাজারের পানি পড়া মাটি পড়া খেলে এই অসুখ ভাল হয় ঐ অসুখ ভাল হয়। এমনকি আপনার মনের সব কামনা বাসনা পূর্ণ হয়। এরা বিশেষ করে প্রভাবিত করে গ্রামের সহজ সরল মহিলাদেরকে। আর এই সব মহিলারা তাল থেকে তিল খসলেই তা প্রচার করে বেড়ায় সব জায়গায়। আর তারপর শুরু হয় ব্যবসা। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত মানুষ থেকে শুরু করে অনেক শিক্ষিত মানুষও আসতে শুরু করে এইসব জায়গায়। মানুষ বিস্বাস করতে শুরু করে তাদের কেরামতি। আসলেই কি তাই???
কোন ভাবেই না। বিজ্ঞান কিংবা কোরআন কিন্তু তা বলে না। বিজ্ঞান বলে এই সবের কোন ভিত্তি নেই আর কোরআন বলে সব কিছুর মালিক আল্লাহ। একটু লক্ষ করুন আমি বললাম সব কিছূর মালিক আল্লাহ আর এই কথাটাকেই পুজি করে অনেকে। তাদের প্রচার এমন যে ওমুকের মাজারের ওমুকের কাছে কিছু চাইলে কেউ ব্যার্থ হয় না। কারণ হিসাবে তারা বলে এই সব লোক নাকি বুজুর্গ তাই তাদের কথা আল্লাহ সহজে গ্রহন করে। কিন্তু ধর্ম বলে ভিন্ন কথা।
সেই দিকে না যাই এবার আসি কিভাবে তারা মানুষের মনে জন্ম দেয় বিস্বাসের। প্রথমে কিছু ভুয়া চিকিৎসা করায় আর সেইটা প্রচার করে ব্যাপক হারে যাতে মানুষের মনে বিস্বাসের জন্ম নেয়। আর সেই বিস্বাস থেকে মানুষ আসে তাদের কাছে। এদের আবার একটা মন্ত্রও আছে আর তা হল অাপনার যদি বিস্বাসে সব কিছু হয়। এখন যদি কেউ তাদের কাছে কোন ফল না পায় তবে সরাসরি বলে আপনার মনে বিস্বাস ছিল না তাই ফল হয়নি। আসলেই কি তাই????
আমার ত মনে হয় না।
এবার আসি একটা ঘটনায়। আমার নিজের সাথে ঘটনাটি ঘটে ২০১১ সালের জানুয়ারী মাসে। আমি আমার কয়েকজন আত্বীয়ের সাথে গিয়েছিলাম সিলেটে ঘুরতে। আর সেই বারই প্রথম এবং আমার জীবনে একবার ঘটা ঘটনাটা ঘটে। আমার পকেট থেকে আমার মোবাইল আর কিছূ টাকা পকেট মার হয়ে যায়। সিলেটের কোন একটা মাজারে ঘটে এই ঘটনাটা। আমি তখন মাদ্রসার ছাত্র। আ্ল্লাহর রহমতে তখন আমি হাদিস কোরআন সম্পক্যে মুটামুটি জানি। আমাকে নিয়ে যাওয়া হল একটা মাজারে আর বলা হল এই মাজারের নিয়ম হল পাহাড়ের উপরের কবর থেকে নিচে নামার সময় উল্টোদিক হয়ে নামতে হবে নয়ত ঐ পীরের অসম্মান হবে। যেহেতু আমি ধর্মসম্পকে কিছুটা জানতাম সেহেতু এই বিষটা আামি মানতে পারিনি। তাছাড়া উল্টোহয়ে পাহাড় থেকে নামাটাও বিপদজনক। আর তাই আমি আমার মত করে নামার চিন্তা করলাম আর ঠিক তখনি দেখি আমার পকেট থেকে মোবাইল আর টাকা সাথে নিচে রাখা জুতাও উদাও। ঘটনাটা আমার সাথে যারা ছিল তাদের বললে তারা যা বলল তাতে আমার আর কিছু বলার ছিল না তখন। আমার নাকি বিস্বাস ছিল না তাই এমন হয়েছে। তাদের কথার জোর ছিল তখন তাই কিছূ বলতে পারিনি কিন্তু তার জবাব আমি দিয়েছিলাম কিছুক্ষন পর যখন আমি শাহজালাল এর মাজারে গেলাম। দিনটি ছিল শুক্রবার আর আমি সেখানেই জুম্মার নামাজ আদায় করার পর ঐ মসজিদের ইমামকে সবার সমানে এই ঘটনাটার ব্যাখ্যা চাই। আর তিনি যা বললেন তাতে সবাই চুপ করে না থেকে পারেনি। কি ছিল উনার কথা?? আমি যদিও আগে থেকেই জানতাম তারপরও আমার কথার জোর তখন কম ছিল বিদায় উনার কাছ থেকেই তাদের শুনালাম”এক মাত্র আল্লাহ ব্যাতিত কারো কাছে কোন কিছূ চাওয়া যাবেনা। কারো কাছে মাথা নত করা যাবে না। আর আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কাউকে সিজদা দেওয়া যাবে না এমনকি কাবা ঘরকে না। মৃত্যলোকের কোন ক্ষমতা নাই দুনিয়ার কারো জন্য কিছু করার।””
সর্বশেষ একটা কথা বলতে চাই বিস্বাস করুন এমন কাউকে যে আপনাকে তার নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৪৪