“There are many things in haven and earth, Horatio.
Than are dreamt of in your philosophy.”
__William Shakespeare [Hamlet,Act I, Scene V]
৩১/০৫/২০১৪
প্রিয়তমেষু,
এক কাঁপ ধোঁয়াটে চা,কলম, ডায়েরী আর মুঠোফোনে “লিভিং অন আ প্রেয়ার ...” । লিখতে বসেছি তোমাকে। আমার সমস্ত অন্ধকার অন্ধকার কল্পনা আর নীলচে বাস্তবতা এক করে লিখতে বসেছি তোমাকে। আমার চারপাশে গাড়ো অন্ধকার, মাঝখানে মোমবাতির আলোয় তোমাকে শব্দ বন্দী করার কৌশল।
তোমাকে দেখার আজ চতূর্থ ঐকান্তিক অমাবশ্যার মাস পূর্ণ হল। এর মাঝে, সারাটা সময় জুড়ে শুধু কালো আর তোমার চোখের হারিয়ে যাওয়ার মত তেপান্তরের আলো।প্রতি রাতে ঠিক রাত তিনট বাজার অপেক্ষায় আমার যেসব ঘুম-স্বপ্ন দেখা নিষিদ্ধ করেছো হৃদয়ে, তাদের জড়ো করে এনেছি সস্তা বলপয়েন্ট কলমে। এই যে তোমাকে বর্ণনা করব করব ভাবছি- আমি আসলে শব্দ খুঁজে পাচ্ছিনা। তাই কালো দাগগুলোও অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে।
কোন এক শীতের জমজমাট কালো রাতে ঠিক তিন’টের অন্ধকারে নিমজ্জিত আমি বন্ধ ঘড়ের খাটের পাশে এক রাজপুত্রের অবয়ব দেখে চমকে উঠি! কি অদ্ভুত মুগ্ধতা তোমার চোখে! অথচ সবকিছুকে ছাপিয়ে আমার ভয়! এক দৌড়ে দড়জাটা খুলেই নীচে! আমার ঘড়ে মানুষ জড়ো হবার পর আর তোমার নাম নিশানা নেই। তুমি কি তবে বাতাস ছিলে?
এরপর প্রতিদিন ঠিক রাত তিনটাই তোমার দশ মিনিটের দেখা পাবার আকুল অপেক্ষায় আমার প্রতিটি রাত নির্ঘুম কাঁটে।অথচ তুমি আসো মাঝে মাঝে। কপালে আলতো করে হাত বুলিয়ে, ছোট্ট একটা হাঁসি দিয়েই ব্যাস! নিরুদ্দেশ! কি নির্দয় তুমি! আর কিছুক্ষণ সময় নিয়ে আসা যায় না? জানো, প্রতিটা রাত কি নিদারুন অপেক্ষমান অপেক্ষায় কাঁটে আমার? আচ্ছা, তোমাকে যে এত বড় চিঠির বার্তা দিচ্ছি, তুমি পড়তে পারবে তো? অশরীরিদের অক্ষরজ্ঞ্যান সম্পর্কে জানা থাকলে লিখতে সুবিধা হত।
শুরুতে ভেবেছিলাম সবই হ্যালুশিনেশন। এরপর যেদিন মা ঘড় গোছাতে গিয়ে তোমার ফেলে যাওয়া স্বর্গীয় অথবা পাতাল ফুলের পাঁপড়ি খুঁজে পেল, আমি বুঝে নিলাম সৃষ্টিকর্তা আমার জন্য যাকে পাঠিয়েছিলেন সে বিগত কোন শতকের বাসিন্দা অথবা পৃথিবীর মোহমুক্ত। ফিরে এসেছে তার পাজড়ের হাঁড়ের খোঁজে। এরপর তোমার ধোঁয়াটে প্রেমের মত ব্লাকহোলে মুখোশ ফেলে হারিয়ে যাওয়া।
কেউ একজন আমাকে বলেছিল- “সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেকের জন্য জোড় নির্ধারণ করে পাঠিয়েছেন। হতে পারে সে এসেছিল কয়েকশ আগে অথবা আসতে পারে আমাদের মৃত্যুর বহু বছর পর। সুখি মানুষদের জোড় বর্তমানেই বিদ্যমান।“ আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে শুরু করেছি , আমার যে মানচিত্রের অর্ধাংশ আমাদের দেখা হবার আগেই বিগতদিনের বর্ষার মত হারিয়ে গিয়েছিল, সে আবার ফিরে এসেছে আমার কল্পনা আর বাস্তবতার মাঝ বরাবর রাস্তাটি ধরে। আমাকে নতুন কোন নামে লিখতে।
তোমার জন্য অজস্র রঙ্গিন খামে জমা করেছি আবেগ। একদিন সময় করে বাস্তবতায় এসো। আমার শব্দবন্দী স্বপ্ন আর কল্পনাতীত ভালোবাসার প্রেক্ষাপটে বোনা কাগজগুলো নিয়ে যেয়ো।
ইতি,
রাতবন্দী মেয়েটি