somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর উপায়

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


1. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসরদের অহংকার কমাতে হবে। যাদের মেধা নাই, তাদের শেষ সম্বল BCS পরীক্ষা। মেধাবী মানুষ কখনো BCS ক্যাডার হয় না, মেধাহীনরা হয়। বিসিএস ক্যাডার হওয়াটা তো গর্বের বিষয় নয়, লজ্জার বিষয়। এটা মাথায় রাখতে হবে।
2. বিজ্ঞান বিভাগের প্রোফেসরদের গবেষণা না করাটা অপরাধ। যারা তিন বছরে একটাও গবেষণা জার্নালে প্রকাশ করে না, তাদের চাকরী সরকারী হলেও বরখাস্ত করে দেয়া উচিত। বরখাস্ত করা না গেলে বেতন কেটে নিতে হবে। অনেকে হয়ত বলবেন, “যেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই গবেষণার সুযোগ সুবিধা নেই, ল্যাবে যন্ত্রপাতি নাই সেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহে গবেষণা কিভাবে সম্ভব ?” তখন আমি জবাবে বলব, “কলেজসমূহের প্রোফেসররা কেন গবেষণার সরঞ্জাম ও সুবিধা চেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারের কাছে আবেদন করে না ? দোষ তো প্রোফেসদেরই।”
3. গবেষণা না করাটা অপরাধ। তার চেয়েও বড় অপরাধ ক্লাস না নেয়া। এই অপরাধে জরিমানা হওয়া দরকার। এসব তথাকথিত শিক্ষা ক্যাডারগুলো ভাবে, “সরকারী চাকরী, ক্লাস নিলেও বেতন পাব আর না নিলেও বেতন পাব। কি দরকার শুধু শুধু ক্লাস নেয়ার ?” উপযুক্ত কারণ ছাড়া একটা ক্লাস মিস দিলে এক হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
4. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসরগণ মাস্টার্সের ক্লাস নিলেও প্রায় কারোরই অনার্স লেভেলের জ্ঞান নাই। এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। কোন প্রোফেসর কেমন ক্লাস নিল, তার উপর শিক্ষার্থীরা প্রোফেসরদের নম্বর দিবে। যে প্রোফেসর সবচেয়ে কম নম্বর পাবে, তাকে ক্লাসে ভাল করে বুঝানোর জন্য Warning দেয়া হবে।
5. শিক্ষার্থীদের সাথে সমষ্টিগত সম্পর্ক না রেখে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখতে হবে। অর্থাৎ মাত্র একজন শিক্ষার্থী ক্লাসে আসলেও পড়াতে হবে। এ কথা বলা যাবে না - সবাই আসলে ক্লাস নেব।
6. শিক্ষার্থীদের সাথে প্রোফেসরদের আচরণ বদলাতে হবে। প্রোফেসরেরা যদি শিক্ষার্থীদের সাথে ভাল আচরণ না করেন তবে কোন শিক্ষার্থী কেন তাদের সাথে ভাল আচরণ করবে ? কেন তাদের বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা করবে ? বেয়াদপদের সাথে বেয়াদপিই করতে হয়।
7. ব্যবহারিক পরীক্ষায় অন্য কলেজের প্রোফেসররা পরিদর্শক হিসেবে আসলে তাদের খাওয়ানোর জন্য জাবির প্রোফেসরগণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক টাকাও নিতে পারবে না।
8. ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় তথাকথিত শিক্ষকগণ যদি চান প্রত্যেক শিক্ষার্থী একা একা এক্সপেরিমেন্ট করতে পারুক, তবে শিক্ষার্থীদের শেখাতেও হবে এককভাবে। সর্বোচ্চ দুইজন শিক্ষার্থী নিয়ে একটা গ্রুপ বানাতে পারেন। প্রোফেসরগণ শেখাবেন দলীয়ভাবে আর আশা করবেন প্রত্যেক শিক্ষার্থী এককভাবে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবে, এটা তো অন্যায়। এই যুক্তি দিয়েন না যে, “ব্যবহারিক সবসময় গ্রুপ হিসেবেই করানো হয়।” কোন প্রথা আবহমান কাল ধরে চলে আসছে, তার মানে এই নয় যে প্রথাটি সঠিক।
9. ক্লাসের বাইরে কোন শিক্ষার্থী তার ব্যক্তিগত সমস্যা ( লেখাপড়া সংক্রান্ত ) নিয়ে কোন শিক্ষক বা শিক্ষিকার কাছে আসলে দেখা যায় যে, প্রোফেসরগণ এমনভাবে তাকায় যেন কেউ উনার কিডনী দুটা চেয়ে বসছে। আপনি হয়ত যুক্তি দিবেন, “ক্লাসের বাইরে প্রোফেসররা পড়াতে বাধ্য নন। কারণ, ক্লাসের বাইরে ছাত্রের ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধান করা তার দায়িত্ব নয়।” .... আমি জবাবে বলব, “একজন শিক্ষক সবজায়গায়ই শিক্ষক। ক্লাসের ভিতরেও, ক্লাসের বাইরেও। শিক্ষার্থীর প্রয়োজনে সব জায়গায় শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করতে শিক্ষককে বাধ্য থাকতে হবে। শিক্ষকতা কোন পেশা নয়। শিক্ষকতা হল প্যাশন। যদি পড়াতে ভাল লাগে, তবে শিক্ষক কর্মসময়ের বাইরেও শিক্ষার্থীকে তার ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধান করে দিবে। প্যাশন হিসেবে নিতে না পারলে শিক্ষকতা করারই দরকার নাই। ”
কোন শিক্ষার্থী বাসায় নিজে নিজে পড়তে গিয়ে কোন জায়গায় আটকে গেল, হয়ত ঐ শিক্ষার্থীর পড়ার সাথে ক্লাসের পড়ার কোন মিল নাই, হয়ত শিক্ষার্থীটি যা পড়ছে সেটা সিলেবাসেরও বাইরে। তবু শিক্ষার্থীটির সেই আটকে যাওয়া টপিকটি বুঝিয়ে দিতে তার বিভাগের সকল প্রোফেসর বাধ্য থাকবে। জিজ্ঞেস করার সাথে সাথে বুঝিয়ে দিতে না পারলেও বাসা থেকে পড়ে এসে বুঝিয়ে দিবে। কিন্তু কিছুতেই বিরক্তি প্রকাশ করা যাবে না।
10. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে থিসিস করাতে হবে। প্রোফেসরগণ হয় কলেজের ফান্ডিং থেকে অথবা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে শিক্ষার্থীর গবেষণা জার্নালে প্রকাশ করাবে। শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক টাকাও নিবে না।
11. কলেজের প্রোফেসরগণ ফ্রীতে টিউশন দিবে, যদি কোন শিক্ষার্থীর প্রয়োজন হয়। টাকা নিয়ে পড়ানো যাবেই না। যদি আপনি যুক্তি দেন যে, “শিক্ষকের পরিশ্রমের একটা মূল্য আছে।” তখন আমি বলব, “শিক্ষকের পরিশ্রম অমূল্য। এটা টাকা দিয়ে পরিশোধ করার মত নয়। তাই অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার দরকার নাই।”
12. কলেজে মানবাধিকার সংস্থা (Human Rights Organization) থাকতে হবে। প্রোফেসরগণ শিক্ষার্থীদের বকা দিতে পারে, সেই অধিকার তাদের আছে। কোন প্রোফেসরের অধিকার নাই কোন শিক্ষার্থীকে অপমান করার। বকা এবং অপমান দুটা সম্পূর্ণ আলাদা। সংস্থার কাজ হবে অপমানকারী ও অপমানিত ব্যক্তিদ্বয়কে পাশাপাশি বসিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা। কিন্তু ঐ সংস্থা কাউকে বহিস্কারের হুমকি দিয়ে ভয় দেখাতে পারবে না অথবা কাউকে দিয়ে জোর করে ক্ষমা চাওয়াতে পারবে না।
13. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারী কলেজগুলোয় বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে হবে। প্রতি বছরে দুটা সেমিস্টার হবে।
14. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই ঈংরেজী ভার্শনে পড়াশুনা করাতে হবে। বাংলা ভার্শনে পড়াশুনা করে কিছুই শেখা যায় না। প্রোফেসরদের একাডেমিক ইমেইল থাকতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×