somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্রমণ: নিউ ইয়র্ক নিউ ইয়র্ক ২ - ম্যানহাটান ফাইনান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্ট, ডাউনটাউন নিউ ইয়র্ক সিটি এবং রাতের ব্রুকলীন ব্রীজ

০৩ রা আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(লেডি লিবার্টি - ছবি কপিরাইট আফলাতুন হায়দার চৌধুরী)

স্টেটেন আইল্যান্ড থেকে ফিরে নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহাটান অংশের টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে বোওলিং গ্রীন সাবওয়ে স্টেশন বাঁয়ে ফেলে আমরা চারজন আবার উঠে এলাম ব্রডওয়েতে। আমরা চারজন বলতে কাজিনের মেয়ে, নাতি, নাতনী, সাথে আমি। এগিয়ে যাচ্ছি উত্তর দিকে ওয়াল স্ট্রীটের দিকে। হাঁটছি আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছি। প্রাচীন এবং আধুনিক স্থাপনার অসাধারন সহাবস্থান। দেখতেও ভালো লাগছে। আগে থেকেই প্ল্যান ছিলো যতখানি সম্ভব পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াবো। আধুনিক স্থাপনাগুলোর বেশীরভাগই আমেরিকান আইকনিক আকাশচুম্বি অতি উচ্চ ভবন। বাকিগুলো বৃটিশ কলোনিয়ালদের বা নতুন যুক্তরাষ্ট্রের আমলে বানানো। প্রতিটি প্রাচীন বিল্ডিং, এদের কনস্ট্রাকশন ডিজাইন সব বৃটিশ স্টাইলে ইংরেজদের হাতে বানানো। আমেরিকা স্বাধীন হবার বহুবছর পরও ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ডেভেলপমেন্টের জন্য ইংরেজ এবং ইউরোপিয়ানদের সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন হয়েছিলো। এখনও আমেরিকায় ইংলিশদের বিশাল প্রভাব যা স্থানীয় ইমিগ্র্যান্টরা কখনও বুঝবেনা, বুঝবে বৃটেন বা ইউরোপের নাগরিকেরা।

আমেরিকায় গাড়ী রং সাইড দিয়ে চলে। অর্থাৎ রাস্তার ডান দিক দিয়ে যানবাহন চলাচল করে, গাড়ীগুলোর ড্রাইভার বসে সামনের বাম দিকের সীটে যেখানে স্টিয়ারিং হুইল আছে। আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে, সেখানে গাড়ী চলে রাস্তার বাঁ দিক ধরে। বৃটেনেও তাই। বৃটেনে এসেছি এই সেদিন, ২১ বছর আগে। “গাড়ী রং সাইড দিয়ে চলে?” হঠাৎ নিজে নিজে হেসে ফেললাম। পৃথিবীর ১৬৫ টি রাষ্ট্রে গাড়ী চলে রাস্তার ডান দিক ধরে। অন্যদিকে আমাদের বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, বৃটেন এবং বৃটিশ কলোনীগুলো সহ সব মিলিয়ে ৭৫ টি রাষ্ট্রে গাড়ী চলে রাস্তার বাম দিক ধরে। এখন প্রশ্ন, কারা রং সাইডে গাড়ী চালায়? ১৭৫ টি দেশ নাকি ৭৫ টি দেশ?

ব্রডওয়ে ধরে সামান্য এগিয়ে গেলে হাতের বাঁয়ে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার (আগের টুইন টাওয়ার) পাশে ট্রিনিটি চার্চ, সেটাকে পেছনে রেখে ডানে মোড় নিলে ওয়াল স্ট্রীট। সেখানে ঢুকে সামান্য এগিয়ে গেলে হাতের বাঁয়ে নিউ ইয়র্কের ঐতিহাসিক ফেডারেল হল। এই সেই ফেডারেল হল যেখানে আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রের জাতির পিতা, জর্জ ওয়াশিংটন ৩০ এপ্রিল ১৭৮৯ সালে সে দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ১৭০৩ সালে নির্মিত এই ভবনের আগের নাম ছিলো নিউ ইয়র্ক সিটি হল। এর আগের ডিজাইনও অন্য রকম ছিলো। তবে আগের এবং পরের দুটো ডিজাইনই গ্রীক স্থাপত্যকলা। ভবনের সামনের অংশের স্তম্ভ বা কলামগুলো গ্রীকদের সুপ্রাচীন সভ্যতা এবং অসাধারণ নির্মানশৈলীর কথা মনে করিয়ে দেয়।

(ফেডারেল ভবনের সামনে পরাক্রমশালী আমেরিকান জাতির পিতা জর্জ ওয়াশিংটনের মুর্তি)

ফেডারেল বিল্ডিংয়ের প্রবেশদ্বারের সিঁড়িগুলোর সামনে একটা বেদীর উপর শোভা পাচ্ছে প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের ভাষ্কর্য। ঠিক এখানে দাঁড়িয়ে আমেরিকান জাতির জনক জর্জ ওয়াশিংটন যখন শপথ নিচ্ছিলেন তখন এটা পুরোনো ভবন ‘সিটি হল’-এর প্রথম তলার (1st floor) বেলকনি ছিলো। তখন ওয়াল স্ট্রীট ছিলো সুপ্রশস্থ, সিটি হল থেকে পূব দিকে ট্রিনিটি চার্চ পর্যন্ত আবার পশ্চিম দিকেও ছিলো বেশ খানিকটা খোলামেলা যায়গা যেখানে দাঁড়িয়ে স্বাধীন আমেরিকার হাজার হাজার মানুষ জাতির পিতা জর্জের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলো। ব্রোঞ্জ নির্মিত বিশাল এই মূর্তটি তৈরী করেন বিখ্যাত স্কাল্পটর জন ওয়ার্ড (John Quincy Adams Ward)। স্কাল্পটর ওয়ার্ডের জন্ম আমেরিকার ওহাইও অঙ্গরাজ্যের আরবানা শহরে।

(ফেডারেল হল)

ফেডারেল বিল্ডিংয়ের ঠিকানা ২৬ ওয়াল স্ট্রীট। মজার ব্যাপার হচ্ছে একেবারে কাছাকাছি সাবেক এবং বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের ৭১ তলা একটা উঁচু ভবন আছে (The Trump Building)। ট্রাম্পের এই দৃষ্টিনন্দন স্কাই স্ক্র্যাপারের বাইরের ডেকরেশন ১২ শতকের ইংলিশ গথিক স্টাইলের যা কিনা ট্যূরিষ্টদেরও পছন্দ। ‘দ্য ট্রাম্প’ বিল্ডিংএর ঠিকানা ৪০ ওয়াল স্ট্রীট।

(ট্রাম্প বিল্ডিং, ৪০ ওয়াল স্ট্রীট ফাইনান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্ট, নিউ ইয়র্ক সিটি)

ফেডারেল বিল্ডিংয়ের মুখোমুখি উল্টোদিকে নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ যার বিষয়ে আগের পর্বে লিখেছি। স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে আছে আরেকটি চমৎকার ব্রোঞ্জ মূর্তি আছে যার নাম Fearless Girl (নির্ভিক মেয়ে)। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে কর্মক্ষেত্রে নারী শক্তির প্রতি সম্মান জানিয়ে এই মূর্তিটি বানান ক্রিস্টেন ভিসবাল । ২০১৭’র ৭ মার্চ ফিয়ারলেস গার্ল কে নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে স্থাপন করা হয়। এই ছোটখাট মূর্তিটির প্রতিও ট্যূরিষ্টদের দারুণ আগ্রহ।


(নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ বিল্ডিং)

(দ্য ফিয়ারলেস গার্ল)

এর মধ্যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমরা সবাই মিলে ডাউনটাউন নিউ ইয়র্কের ম্যাহাটান ফাইনান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্টের চিপাচাপায় পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বিখ্যাত ব্রডওয়ে, ওয়াল স্ট্রীট, নিউ স্ট্রীট, ব্রড স্ট্রীট, উইলিয়াম স্ট্রীট, এক্সচেঞ্জ প্লেইস আরো কত কি। গ্রীষ্মের দিন থাকে দীর্ঘ, এখন সন্ধ্যা হয় আট টায়। অফিস আওয়ার শেষ সেই বেলা পাঁচটায় শেষ তাই ভয়াবহ ট্রাফিক বা জ্যাম নেই। নেই অফিস ওয়ার্কারদের নিদারুণ ভীড় কিংবা ব্যস্ত চলাফেরা। তবে ট্যূরিষ্ট আছে প্রচুর। গ্রীষ্মের এই দারুণ আবহাওয়ায় আমেরিকান সহ সারা বিশ্বের পর্যটকেরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে নিউ ইয়র্কে।

যতটা হাঁটছি তারচেয়ে বেশী দৌড়াদৌড়ি আর লাফ-ঝাঁপ করছি নাতি রাফসান আর নাতনী নাজহ্-র সাথে। অদ্ভুত বিষয় হল দুপাশে এত উঁচু উঁচু সব বিল্ডিং যা কিনা আকাশছোঁয়া তাই নাম স্কাইস্ক্র্যাপার। তবুও বৃটিশ আমলের পুরোনো সরু পথগুলোকে মোটেও চিপাগলি বলে মনে হচ্ছেনা। সবখান থেকেই আকাশ দেখা যাচ্ছে, বুকভরে নেয়া যায় নিশ্বাস। একটা দুটো করে তারাও ফুটছে পরিষ্কার আকাশে। উইলিয়াম স্ট্রীট হয়ে হাঁটতে হাঁটতে সবাই মিলে চলে এলাম স্টোন স্ট্রীটে যেটা হচ্ছে ম্যানহাটান ফাইনান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্টের খানাপিনার জন্য সবচেয়ে চমৎকার জায়গা। স্টোন স্ট্রীট শুধুমাত্র পথচারীদের চলাচলের জন্য (pedestrians-only street)।

পাথরে বাঁধানো এই স্টোন স্ট্রীটের বয়স কিন্তু অনেক। বৃটিশদের আগে নিউ ইয়র্ক ছিলো ডাচ্ (ন্যাদারল্যান্ডস) উপনিবেশ তখন এর নাম ছিলো নিউ আমস্টার্টডাম।
নিউ আমস্টার্ডামের (আজকের নিউ ইয়র্ক সিটি) এই সরু সড়ক (narrow cobblestone street) সে আমলের সর্বপ্রথম পাথর বাঁধানো পথ যা বানানো হয় ষোড়শ শতাব্দীতে, আজ থেকে প্রায় ৩৬০ বছর আগে। সময়ের নির্মম পরিহাস, স্টোন স্ট্রীন এখন শুধুই একটা গলি। সাউথ উলিয়াম স্ট্রীট আর পার্ল স্ট্রীটের পেছনের গলি। তবে এঁদো গলি নয়, নিউ ইয়র্ক সিটির সুবিখ্যাত স্ট্রীট ডাইনিং এরিয়া।

(রাতের ফাইনান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্ট, স্টোন স্ট্রীট, নিউ ইয়র্ক সিটি)

স্টোন স্ট্রীটের দুধারে সারি বেঁধে দুনিয়ার সব খাবারদাবারের দোকান। বার, রেষ্ট্যূরেন্ট, ইংলিশ পাব, স্টেক হাউজ, গ্রীল হাউজ, সব মিলিয়ে হুলুস্থুল ব্যাপার। রাস্তার এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত লম্বা লম্বা ভারী কাঠের টেবিলসহ শত শত চেয়ার বসানো। উপরে গাজেবো (তাবুর ছাদের মত সামিয়ানা)। ডিনার করব, জয়া আর বেলাল দেখেশুনে “বেকেটস্ বার এণ্ড গ্রীল” পছন্দ করলো, আমরা একটা টেবিল নিয়ে বসলাম। কপাল আমার, এটা ইংলিশ স্পোর্টস পাব। লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে এস ইংলিশ পাবেই খেতে হবে? খেতে খেতে মনে হচ্ছিল বৃটেনের কোন পাব বা রেষ্ট্যূরেন্টের খোলা অংশে বসে ডিনার করছি। ম্যাহাটানের গভীরে খাঁটি ব্রিটিশ আবহ।

আমেরিকা পৌঁছার প্রথম দিন থেকেই ভাগনী বলে আসছিলো পায়ে হেঁটে ব্রুকলিন ব্রীজ না পার হলে নিউ ইয়র্ক সিটি আসাটাই অনর্থক। তাই অসম্ভব মজাদার পাব-ডিনার শেষ করে আর দেরী করিনি। সোজা চলে এসেছি নিউ ইয়র্কের ইতিহাস বিখ্যাতি ব্রুকলীন সাসপেনশন ব্রীজ দেখতে, এবং ঘুরতে।

(নিউ ইয়র্ক বেড়াতে এসে ব্রুকলীন ব্রীজ রাতের বেলা পায়ে হেঁটে পার না হলে জীবন বৃথা)

ব্রুকলিন ব্রীজ মুলতঃ হাইব্রিড ব্রীজ যেটা দুটো বারা (Borough) ম্যানহাটান এবং ব্রুকলীনকে সংযুক্ত করেছে। হাইব্রিড (বা দোআঁশলা) বলতে ফিক্সড এবং সাসপেনশন (ঝুলন্ত) এই দুই প্রযুক্তির সম্মিলন বোঝানো হয়েছে। ব্রীজের পূর্ণদৈর্ঘ দুই কিলোমিটারের একটু কম। সবচেয়ে বড় স্প্যান প্রায় আধা কিলোমিটার (১৫৯৬ ফুট) এবং অবস্থান পানির চেয়ে চল্লিশ মিটার (১৩৩ ফুট) উঁচুতে। আমেরিকার অন্যতম প্রাচীন এই ব্রীজ বিশ্বের সর্বপ্রথম ঝুলন্ত ব্রীজ (Steel-wire suspention bridge)। অন্যদিকে এটা ইস্ট রিভারের উপর নির্মিত প্রথম সেতুও বটে। ১৯৬৪ সালে ব্রুকলিন ব্রীজকে আমেরিকার ন্যাশণাল হিস্টরিক ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়ে এবং ১৯৭২ সালে আমেরিকান সোসাইটি অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স একে ন্যাশণাল হিস্টরিক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যান্ডমার্ক হিসাবে মনোনীত করে। ব্রুকলীন ব্রীজের নীচে আটলান্টিকের পানিকে কোন যুক্তিতে আমেরিকানরা রিভার বলে আমি বুঝিনা। এটা কিছুতেই নদী নয়, প্রকৃতপক্ষে এটা একটা প্রণালী (Strait)। যাই হোক, ঘাড়মোটা মাথামোটা আমেরিকানদের নিয়ে আর কিই বা বলার আছে।

১৮৬৯ সালে কাজ শুরু করে চৌদ্দ বছর লাগিয়ে এই সেতুর কাজ শেষ হয় আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে অর্থাৎ ১৮৮৩ সালে। প্রথমে নিউ ইয়র্ক এন্ড ব্রুকলিন ব্রীজ, পরে ইস্ট রিভার ব্রীজ এবং শেষ পর্যন্ত ব্রুকলিন ব্রীজ হিসেবেই এর নামকরণ হয়। শুরুতে এই ব্রীজের উপর রেললাইন ছিলো, ঘোড়ায় টানা ওয়াগন দিয়ে মানুষ এবং মালপত্র পরিবহন চলতো। এর পরথেকে শুধুমাত্র গাড়ী, পথচারী এবং বাইসাইকেল চলাচল করে। মালবাহী পরিবহন চলাচলের অনুমতি নেই।

যাই হোক, যেহেতু আলাদাভাবে পথচারী পারাপারের অত্যন্ত সুন্দর ব্যাবস্থা রয়েছে সেহেতু আটলান্টিকের অল্প একটু পানিকে রিভার বলার অপরাধ ক্ষমা করে দিয়ে ব্রীজের উত্তর দিক তথা সিটি হল পার্ক অংশ থেকে হাঁটতে আরম্ভ করলাম। সন্ধ্যা গড়িয়ে তখন রাত প্রায় সাড়ে নয়টা। ট্যূরিষ্টদের ভীড় কমে গেছে কিন্তু পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকার স্যুভেনির বিক্রেতারা তখনও বাড়ী ফিরে যায় নি। এটা ওটা দেখাচ্ছে, বিক্রী করতে চাইছে।

(চাঁদটাও যেন শহরের কোন আলো)

আমরা হেঁট যাচ্ছি ব্রীজের উপরতলা দিয়ে যেখান দিয়ে চলবে শুধু পথচারী আর পাশে বাইসাইকেল পাথ। নীচতলায় দুটো আলাদা গাড়ীচলার পথ, যাওয়া এবং আসার। প্রতিটি তিন লেন করে। হাঁটছি আর অভিভূত হচ্ছি এই ব্রীজ আর আশপাশ দেখে। অপরূপ সুন্দর রাত। নদীর দুপাশে নিউ ইয়র্ক, একপাশে ব্রুকলীন আর অন্যপাশে ম্যানহাটান। ম্যানহাটানের প্রায় সবগুলো স্কাইস্ক্র্যাপার দেখা যাচ্ছে। রাতের আঁধারে শহুরে আলো, সবকিছুই মানুষের বানানো অথচ আমার মনে হচ্ছে নৈসর্গিক শোভা। আকাশের চাঁদাটাও যেন শহরের কোন আলো। মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় এর কতটুকুইবা ধরা সম্ভব?

(রূপের রানী, রাতের রানী নিউ ইয়র্ক নিউ ইয়র্ক)

ব্রীজের উপর সময় কাটিয়েছি বেশ অনেক ক্ষন। প্রানভরে দেখেছি নদী, নদীর দুপাশ আর রাতের নিউ ইয়র্ক সিটির স্কাই স্ক্র্যাপার্স। হেঁটেছি অনেক কিন্তু কারো ক্লান্তি নেই এতটুকু। ব্রীজ পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নিউ ইয়র্ক সিটি কলেজ অফ টেকনোলজীর উল্টোদিকে একটা ছোট পার্কমত, ওখানে বসার চমৎকার ব্যাবস্থা আছে। সম্ভবতঃ কিংস কাউন্টি সুপ্রীম কোর্টের সামনে। রিল্যাক্স করতে করতে বেলাল চলে এলো গাড়ী নিয়ে। আমরা ফিরে গেলাম বাসায়। বাসা ওশেন পার্কওয়েতে। ওই এলাকায় প্রচুর দেশী থাকেন (আমার বাড়ী ফেনী)। তাঁরা বলেন 'হোঁসেন পার্ক'। চন্দ্রবিন্দু মিস্ নাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০২৩ রাত ৮:৫৪
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামপন্থী রাজনীতির বয়ান এবং জামাতের গাজওয়াতুল হিন্দ-এর প্রস্তুতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০


গোরা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ নিজে ব্রাহ্ম হয়েও, ব্রাহ্ম সমাজের আদর্শের বিপরীতে "গোরা" নামে একটি চরিত্র তৈরি করেন। গোরা খুব কট্টরপন্থী হিন্দু যুবক। হিন্দু পরিচয়ে বড় হলেও, আসলে সে আইরিশ পিতা-মাতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি নেই, তাই শূন্য লাগে

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৬

তোমার চলে যাওয়ার পর
ঘরে আর আলো জ্বালাই না,
অন্ধকারে নিজের মতো করে
সবকিছু চিনে নেই।

জানো, আজ সকালে চা বানাতে গিয়ে দেখলাম
চিনি শেষ,
ভাবলাম ঠিক আছে,
মিষ্টি না থাকলেও চা হয়।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ
তোমার মতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি

লিখেছেন মুনতাসির, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯

অনেকেই বলেন, ৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি। এই কথাটার সূত্র ধরেই এগোনো যায়। ৫ আগস্টের পর আমাদের কোন কোন পরিবর্তন এসেছে, সেটাই আগে দেখা দরকার। হিসাব করে দেখলাম, বলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×