somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অর্বাচীন পথিক
https://www.facebook.com/fresh.wayfarer nলেখার কোন অংশ লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। বানান ভুল পাওয়া যেতে পারে এর জন্য আগে থেকেই ক্ষমা চাই । ভুল বানান গুলো ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলে সেটা ঠিক করে দেওয়া হবে। (ব্লগের লিংক ফেসবুক শেয়ার করা

'Children of War' Reviews (চিল্ড্রেন অব ওয়ার)

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিটি তৈরি এবং পরিচালনা করেছেন মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রত, যিনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশি। বাংলাদেশের ফরিদপুরের ছেলে তিনি। মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রত ছবিটির প্রথমে নাম দিয়েছিলেন ‘দ্য বাস্টার্ড চাইল্ড’ এবং ‘বাস্টার্ড’ শব্দটি থাকায় ভারতীয় সেন্সর বোর্ড এটার অনুমতি দেয়নি। পরে এই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘চিল্ড্রেন অব ওয়ার’।
এই ছবিতে মুখ্য চরিত্র গুলোতে যারা অভিনয় করেছেন তারা হলেন রাইমা সেন, ভিক্টর ব্যানার্জী, ফারুক শেখ, ইন্দ্রনীল ও ঋদ্ধি সেন।

ছবিটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। ২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর ভারতে মুক্তি পায় ছবিটা।
ছবির একেবারে প্রথমে আমাদের পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত দেখান হয়। যেটা সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছে।



ছবির শুরুর দিকে দেখানো হয়েছে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাগান্ধীর সাক্ষাতের কিছু অংশ।

এরপর দেখান হয় একজন বক্তৃতা দিচ্ছেন (যেটা কিছুটা সমসাময়িক শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আদলে। তবে গণজাগরণের বা এই আন্দোলনের মূল কারণ দেখিয়েছেন ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ)



এবং প্রশ্ন করেন সবার উদ্দেশ্য ‘জয় বাংলা ক্যান ? জয় বাঙালী না ক্যান ?’ এখানে যে ভাষা ব্যবহার করে হয়েছে সেটা কে কি ভাষা বলা হয় আমি জানি না। তবে আমার এটা বলতে পারি, এখন বাঙ্গালীরা এই ভাষায় কথা বলে না।



ছবিতে মোট চারটি বিষয় তুলে হয়; পাক সেনাদের কর্মকান্ড, বীরাঙ্গনাদের নির্যাতনের চিত্র এবং মুক্তিযদ্ধে অপারেশন এবং বাংলাদেশের মানুষের ভারতে পালিয়ে যাবার চিত্র। এবং ছবির মূল অংশ শুরু হলো শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা পত্র পাঠ করার জন্য বেতার নথি পাঠানোর মধ্য দিয়ে।



ছবির মুল কাহিনী শুরুটা একজন সাংবাদিকের বাড়িতে রাত্রে পাক বাহিনী হামলা চালায় মধ্যে দিয়ে। সাংবাদিক কে এই যুদ্ধ নিয়ে লিখতে নিষেধ করে পাকসেনারা। কিন্তু তিনি সেটা না মানায় তার সামনে তার স্ত্রী কে ধর্ষণ করা হয় এবং সেই সাংবাদিকে গুলি করা হয় যদি ও সেই সাংবাদিক বেঁচে যান এবং তিনি পরবর্তীতে মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করেন। অন্য দিকে দেখান হয় পাকবাহিনী ট্রাক ভরে ভরে বাঙালি নারীদের নিয়ে আসে এবং বয়স ভেদে আলাদা করে। এখানে দেখান হয় যাদের বয়স ৪০ এত মত তাদের কে গুলি করে হত্যা করা ইচ্ছে। তবে ইতিহাস বলে এটা সঠিক তথ্য না। ছবিতে পাকসেনাদের বলতে শোনা যায় যে তারা এই নারীদের মাঝে তাদের বীজ বপন করতে চাই যেন পরের প্রজন্ম ‘বিশুদ্ধ প্রজন্ম জন্ম নেয় এবং তারা এই দুই ভূখণ্ডের মাঝে ব্যবধান কমাতে পারে’। এই ছবিতে প্রথম বারের মত আমি দেখলাম যুদ্ধে নারী ধর্ষণের সঠিক কথাটা তুলে ধরতে। যে কোন দেশের একটি যুদ্ধে সময় নারীদের নির্যাতন করার অন্যতম কারন হচ্ছে; পরের প্রজন্ম কে ধবংস করে দেওয়া আর না হলে সেই প্রজন্ম কে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা।


অন্য দৃশ্যে দেখান হয় দুই ভাই বোন তাদের বাবা মায়ের জন্য অপেক্ষা করতে করতে একসময় নিজেরাই সামনে এগিয়ে যেতে থাকে ভারতের দিকে। তাদের শেষ গন্তব্য ভারত। কিন্তু মাঝ পথে গ্রাম কে গ্রাম মানুষ উজাড়ের দৃশ্য তাদের কে অনেক শক্ত এবং সাহসী হতে সাহায্য করে। তাদের সাথে এক গোত্রের ও দেখা যায় যেখানে হিন্দু মুসলিম কোন বিভেদ না করে এক সাথে থাকতে দেখা যায়। সেই সময় একটা নতুন বাচ্চা হবার ও ঘটনা দেখাও হয় সাথে তার নির্মম মৃত্যু ও। তবে সেই সাথে দেখান হয় বাচ্চা হবার খুশিতে সবাই গান গাইছে। এটা আমার কাছে নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক লেগেছে এবং অবাস্তব। ছবির একে বারে শেষে দেখান হয় ছোট ছেলেটি তার বোন কে নিয়ে ভারতে সীমানা পার হবার আগ মুহূর্তে পাক সেনাদের চোখে পড়ে এবং গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে বাংলাদেশের সীমানায়।

এবার আসি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে দেখান চিত্র তুলে ধরতে। এই ছবিতে দেখান হয় মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার, আলবদর ধরে নির্যাতন করে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং বাকিদের হত্যা করে ধীরে ধীরে। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করে দেখা যায় পাক সেনাদের ক্যাম্পে থাকা এক নারীকে ও। যে পাক সেনাদের গুদাম থেকে গুলি, গ্যানেড নিয়ে মাঝ রাতে নদীতে গোসলের নাম করে বেরিয়ে যায় এবং ভোর হতে না হতে ফেরত যায় ক্যাম্পে। যদি ও তাকে এই বের হবার জন্য ক্যাম্পের গেটের রাজাকারদের খুশি করতে হতো। শেষ পর্যন্ত সেই নারী ধরা পড়ে যায় এবং তাকে গুলি করে মারা হয় ক্যাম্পের সমস্ত নারীদের সামনে।



এই ছবিতে ঢাকায় গেরিলার নাম নেওয়া হয়েছে। যারা সেই যুদ্ধের সময় খুবই বলিষ্ট ভুমিকা রেখেছিল। তবে সম্পর্ণ ছবিতে যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সেই চিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারিনি আমার কাছে মনে হয়েছে।

ছবির একবারে শেষ দেখান হয় মুক্তিবাহিনীর অভিযানের সময় পাকসেনাদের ক্যাম্পে সাংবাদিক তার স্ত্রী কে খুঁজে পান তবে গর্ভের যুদ্ধ শিশু সহ। তবে তারপর ও তিনি তার স্ত্রী কে গ্রহণ করেন।
ছবির প্রথমেই যে ব্যক্তিকে দেখান হয় যিনি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তিনি সেই সাংবাদিকের নাতি।

অনেক প্যাঁচাল হল এবার আসি আসল কথায়। এই ছবি নিয়ে অনেক কথা শুনে ছিলাম তবে দেখার পর এটা আমি মনে করি যে, ছবির প্লট আমার কাছে খুব বেশি শক্ত মনে হয়নি যদি ও এটা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে, কিছু কিছু দৃশ্য খুব ভাল লেগেছে তবে মাঝে মাঝে অনেক দৃশ্য বুঝতে বেগ পেতে হয়েছে আমার। এককথায় ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে ও ছবি হবার পর ও আমার মন দাগ কাটতে পারেনি এই ছবি।
আর তাই আমার দেওয়া রেটিং ইচ্ছে- ১০ এ ৫.৫।

(আমি ছবি দেখে রিভিউ দেয় না তবে এক ছোট ভাইয়ের অনুরোধে দিলাম ;) । এখন হাত ব্যাথা করছে ছোট ভাই :P )
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০৫
৩টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×