somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ একটি অ্যালবিনো গোখরোর শ্বেত সর্পিলতা

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই শহরের মানুষ; মৃত কাউকে কবর থেকে উঠে এসে সিগারেট ধরাতে দেখলেও অবাক হবে না। হতে পারে তারা অবাক হতে ভুলে গেছে অথবা মৃত মানুষের সিগারেট ফুঁকতে পারার সম্ভাবনাকে তারা সাভাবিক হিসাবেই ধরে নিয়েছে। এই অবাক হতে পারার অপরাগতা বা ভায়াবহ নিস্পৃহতার শেঁকড় সন্ধানে মাওলাকে ব্রতি হতে দেখা যায় না। খিলখেত ওভারব্রিজের সিঁড়ি সংলগ্ন স্থবির ফুটপাথে অগছালো দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে, তাকে মাড়িয়ে-থেঁতলিয়ে চলে যাওয়া এইসব জিন্দালাশের বৈচিত্রহীন প্রবাহের দিকে তাকিয়ে মাওলার বিবষিমা লাগে। তার ঘাড়, বগল পেঁচিয়ে ঝুলতে থাকা সাদা কাপড়ের পোঁটলাটা পিঠে অস্বস্তিকর গুতো দিলে, পোঁটলাটাকে জুত মতো রাখতে তাকে বেগ পেতে হয়। ভ্রাম্যমান জুতো-স্যান্ডেল আর সেকেন্ডহ্যান্ড কাপড়চোপড়ের দোকান পেরিয়ে সে একটু ফাঁকা মতো জায়গা তালাশ করে এবং চওড়া ছাতার নিচে জমিয়ে বসে থাকা বাসের কাউন্টারের কৌশলি টিকেট বিক্রেতাদের ছাড়িয়ে, ফুটপাথের বাঁক নেয়ার যায়গাটা সে কিছুটা ভিড়শুন্য পেয়েও যায়।উরুসন্ধির দুর্লংঘ্য ভাঁজে দীর্ঘদিনের পোষা নাছোড়বান্দা দাঁদ হঠাৎ মাথাচাঁড়া দিয়ে উঠলে, সাদা কাপড়ে মোড়া পোঁটলাটা ফুটপাতে রেখে বাম হাত প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে বেঁকে-চুরে চুলকানো ছড়া মাওলার আর কোন গতি থাকে না। পোষ্য দাঁদের খামচাখামচি মাওলাকে চোখ মোঁদা আবেশে ডুবিয়ে বেমাক্কা বালক বেলার স্বমেহন কালের কথা মনে করিয়ে দেয়।বাঁ হাতের কারসাজি থেকে নিজেকে মুক্ত করে মাওলা সাদা কাপড়ে মোড়া পোঁটলার গিটে একটা ফু দিয়ে জট খুলতে নিবিস্ট হয়। প্রথমে ঝোলা থেকে সে ভাঁজ করা একটা লালসালুর চাদর বের করে ও আবেশে প্রায় মুঁদে আশা চোখের পাতায় ৩ বার ছোঁয়ায়। কুকুর বা বেড়ালের শুকনা বিস্ঠা, সিগারেটের পিস্ট ফিল্টার, একতৃতীয়াংশ চকলেট সহ একটি মোড়কের উপর লালসালর চাদর বিছিয়ে বেওয়ারিশ ফুটপাথের আব্রু কিছুটা রক্ষিত হয়েছে ভেবে মাওলা এবার পোঁটলার আরো গভিরে তলিয়ে যায়। চোয়াল ভাংগা খুলি, রহুচন্ডালের হাড়, ধনেশ পাখির কংকাল, গ্রন্থিল শেঁকড়ের গোলকধাঁধা নিয়ে নাম না জানা একটি গাছের নিম্নাংগ, ৩ স্তন বিশিস্ট নারীর টপলেস ছবি সম্বলিত একটি বই ইত্যাদি একের পর এক লালসালু চাদরের উপর সাজিয়ে রাখে মাওলা। সব শেষে সে একটি কাঠের বাক্স বের করে এবং বাক্সটি দু'হাতে উঁচু করে ধরে তার বলিরেখা ও আঁচিল সমৃদ্ধ কপালে ভক্তি ভরে ধরে রাখে কিছুক্ষন, এই সময় তার হলদে ঘোলা চোখের পলক বন্ধই থাকে তিরতিরে কাঁপন নিয়ে। তারপর লম্বা একটা দম নিয়ে মাওলা একটা বিজাতিয় চিৎকার দিয়ে ঘটনাবহুল আরেকটি দিনের শুরু করে।
" এই যে বাল-বাচ্চারা সইরা যাও, এইটা বড়োগো মজমা!" মাওলা দর্শকদের বয়্সীমা নির্ধান করে দিলেও পরোয়া করে না দর্শক সারিতে কারা কারা আছে। তার কথার তোড়ে মৃত রহুচন্ডাল কামরুপকামাখ্যা থেকে পুনরুত্থিত হয়ে খিলখেতের জনবহুল ফুটপাথে গনমানুষের ধ্বজভংগ-ধাতুতারল্য-দ্রুত পতন ইত্যাদি জটিল রোগের সরল সমাধান হয়ে ঘুরতে থাকে। মাওলাকে ঘিরে ফেনিয়ে ওঠা বৃত্তটা ভারি হতে থাকলে; সে লালসালুর উপর সাজিয়ে রাখা রহস্যময় বস্তুগুলোর সাথে জমায়েত মানুষের ঔৎসুক্যের জারিত রস আরো ঘন হতে দেয়। সে একে একে চোয়াল ভাংগা খুলি, রহুচন্ডালের হাড় ও ধনেশ পাখির কংকাল এর পরাবাস্তবতা জমায়েত এর নিস্কম্প চোখে সফল ভাবে পুরে দেয় এবং তাদের নিস্তরংগ যাপনের প্রায় শুকিয়ে আসা ধমণীতে এগুলো কিভাবে প্রানের যোগান দেবে; তার ফিরিস্তি বয়ান করে।

"আর এইযে শিকড়ডা দেখতেছেন, এইডা পৃথিবীর প্রথম গাছের শিকড়!" কথাটা জমায়েতের দিকে ছুড়ে দিয়ে মাওলা অপেক্ষা করে। ওরা হয়ত একটু নড়ে চড়ে দাঁড়াবে, সরু চোখে প্রথম গাছের শিকড়টাকে পরখ করতে চাইবে, নিদেন পক্ষে অবিশ্বাসে ঠোঁট বাকিয়ে হাসবে অস্ফুট; কিন্ত ওরা মূক ও বধিরই থাকে। মাওলা প্রথম গাছের শিকড়ের সাথে স্বর্গিয় ফল ও প্রথম পাপের একটি যোগসাজশ প্রতিস্ঠা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয় যখন জমায়েতের চোখের সমস্টি নিস্পলকই থেকে যায়। হতাশ মাওলার পোষ্য দাঁদ হঠাৎ মাথা চাড়া দিয়ে ওকে খানিকটা বিব্রত করে ফলে জমায়েতের উপর ঘনিভুত ক্ষোভ কিছুটা প্রশোমিত হওয়ার অবকাশ পায়। হতাশা ও রাগ শেষ পর্যন্ত ভয়ে পরিনত হয় যখন মাওলা আঁচ পায়, বউনি না হলে সারাটা দিন তার মাঠে মারা যাবে। দুপুরের খাবার, চা-সিগারেটের খরচা; নিদেন পক্ষে বাদ সন্ধ্যা গাঁজার দুটো পোটলার বন্দবস্ত করতে না পারার সম্ভাবনা তাকে পীড়িত করে এবং এই পীড়নের হাত থেকে সাময়িক রেহাই পেতে সে কাঠের বাক্সটা হাতে তুলে নেয়।

"যে সাপটা এখন আপনেরা দেখবেন; এমুন সাপ আপনার আমার বাপ দাদারাও দেখে নাই!" সে কাঠের বাক্সে তিনটে টোকা দিয়ে নিরাসক্ত জমায়েতের উদ্দেশ্যে বয়ান শুরু করে। এই সাপের আদি নিবাস কোথায়? কেউ জনে না। এমন কি উপমহাদেশের বাঘা বাঘা সব ওঝা, বেদের কাছেও সে এক দুর্গেও রহস্য হয়েই আছে। সাপটির উৎপত্তি-বিকাশ ও জাতগুস্টির ঠিকুজি; মাওলা তো কোন বাল, স্বয়ং রহুচন্ডালেরও অজানা ছিল। হ্যা, তাকে গোখরা-গহামা-কালসাপ যাই বলো না কেন; সবার মতোই ফনা তোলে, ফনার পেছনে পবিত্র খড়মের জখমও আছে দুটো। উঁহু, এই সাপ কাউকে কামড়াইতে জানে না। মাওলা সাপের বিষদাঁত তুলে ফেলে ধোঁকা দিচ্ছে? এমন বেজন্মা সৌখিন সাপুড়ে সে নয়, রহুচন্ডালের রক্ত বইছে তার গায়ে।

"তয় ভাইসাব, এই মাওলার গালে দুইটা চড় দিয়ে কইতে পারেন, কী বালের সাপ তুমার বাইদা? কি কামে লাগে এই সাপ? আমি কি কই ভাইসাব; নিজের চোক্ষে দ্যাখেন"
মাওলা বাক্সের ঢাকনা খোলে কোন নাটকিয়তা ছাড়াই, আলগোছে বের করে একটি সাদা গোখরো। মেটে, বাদামি বা কালো রংগের গোখরোর বিবিধ জাতের বিপরিতে সাদা সাপটা ধাঁধার মতো ঝুলতে থাকে। সাদা থেকে উজ্জল সাদা এবং ক্রমশ তার তিব্রতায় খিলক্ষেত তার উজ্বলতা হারাতে থাকে। মাওলার শিরাওঠা কালো হাতে সাদা সর্পিলতা জমায়েতের নিরাসক্ত চোখে এই প্রথম কিছুটা কাঁপন তুলতে সমর্থ হয় এবং এটা মাওলাকে সাহসী করে তোলে। গেল হপ্তায় সাভারের সাপ হাটে অল্প কটা টাকা খরচ করে সাপটাকে কিনেছিল সে। বলা ভাল কিনতে বাধ্য হয়েছিল। গোখরো, চন্দ্রবোড়া বা রাজগোখরো কেনার মতো টাকা ছিল না ওর; পকেটের এই দুরাবস্থা আঁচ করে অর্ধেক দামে এই সাদা গোখরোটা গছিয়ে দিয়েছিল এক সাপুড়ে।
"দ্যাখ বাপু, সবাই কি ভালো সাপের কদর বুঝে? গায়ে রং নাই, মুখে দাঁত নাই বইলা কি এই জাত সাপের কুন ক্ষমতা নাই? আল্লাই ওর রং দেই নাই, দাঁত দেই নাই, কিন্ত কিছু একটা দিছে; যেইটা বুঝা সব বাইদার কাম না। নিয়া যাও, লোকে খাইবো। হাজারটা কালা মাইনষের ভিড়ে একটা সাদা মানুষ দেখলে ব্যাকতে দুইবার তাকাই কিনা কও?" সেই বুড়ো সাপের ব্যাপরির কথাগুলো খানিকটা ফলে যাচ্ছে দেখে মাওলা আরো শিল্পিত হয়ে ওঠে। বেদেদের সাপ খেলানো প্রাচিন গান তার ফ্যাসফেসে কন্ঠ ছড়িয়ে যায় খিলক্ষেত ওভার ব্রিজ ছাড়িয়ে আরো দুরে; ফলে জমায়েতের ঘনত্ত বাড়তে থাকে। নিস্তরংগ-নিরাসক্ত মানুষেরা পায়ের ভর বদল করে অন্য পায়ে চালান করে তাদের ক্লান্তিকর, একঘেয়ে সময়ের আরো কিছুটা মাওলার জন্য বরাদ্দ করে। সাপটার ফোলানো ফণা বাতাসে দোল খায়, জমায়েতের চোখগুলোও দোলে। দাঁতহীন মুখের ব্যাপ্তিতে কেউ কেউ বোকাটে হাসি আবিস্কার করলে মাওলার ঘনিভুত ভয় তরল হতে থাকে।

"এখন কইতে পারেন; ও বাইদা, এই সাদা মরার লাহান হাপ দিয়া কাম কি? দাঁতও তো নাই যে ভয় পাইতাম! তাইলে? আমি কি কই হুনেন ভাইজান, এই সাপ আপনার অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের উপর কিলবিলাইয়া হাঁটতে পারে, আপনারে জানান দিতে পারে কি হারায়ে পাগল হইছেন আপনি কিন্ত তা আপনার অধরা, আপনে নিজেও জানেন না! এ ভাই, কতো টাকা পয়সার গোয়া মারা দিসেন আগারে পাগারে, এই কুদরতি সাপের সামনে ১০ টা টাকা ধরেন, সে যদি মনে ধইরা আপনের টাকা বা আপনেরে একটু ছুইয়া দেয়, আপনার সব কামনা পুর্ন হইবো। না ভাই, এই সাপ সবারে ছুইবো না, যারে অর মনে ধরবো তার ট্যাকারে জিভ দিয়া ছুইয়া দিব,ব্যস বিশ্বাস নিয়া চইলা যাইবেন, আপনার মোনস্কামনা পুর্ন হইবো!"

মাওলা একটু দম নেয়, সে জানে একটা-দুটো ধাতব মুদ্রা বা বহুল ব্যবহৃত একটি নোটের খসে পড়া প্ররোচিত করতে পারে অনেককে। অকাল পৌঢ়ত্ব প্রাপ্ত একজন যার মুখের মানচিত্রের বলিরেখায় ক্লেদ ও ক্লান্তির প্রবাহ; সে একটি বিমর্ষ দশ টাকার নোট এগিয়ে দেয়। মাওলা মা মনশার দোহায় দিয়ে মিনতি জানায় সাদা সাপকে এবং এ সংক্রান্ত আরেকটি প্রাচিন গান তার গলা ছিড়ে বিদ্ধ করে জমায়েতকে। সাপটি তার চেরা লালচে জিভ দিয়ে দশ টাকার নোটটি ছুঁয়ে দিলে মাওলা চিৎকার করে তাগাদা দেয় অকাল পৌঢ়ত্ব প্রাপ্ত লোকটিকে সত্বর তার মনোকামনা প্রকাশের জন্য। প্রায় শোনা যায়না এমন কয়েকটি শব্দ বাক্যে রুপান্তরিত হওয়ার আগেই হারিয়ে যায় লোকটির কন্ঠ থেকে। সে হয়তো অনেক দিন কোন কথা বলে না বা বহুদিনের নির্লিপ্ততা তাকে শব্দহীন করে দিচ্ছে ক্রমশ। তবে মাওলা তার ইচ্ছার তর্জমা পৌছে দেই সাদা সাপের কাছে।

"এই ভিন জগতের সাপ, এই ভাইয়ের কথা শুইনা রাখ, খাস দিলের দশ টাকা কবুল কর! ভাইয়ের নতুন বছর শুরু হইছে বাচ্চাগো স্কুলের বেতন বাড়ানো দিয়া, বাচ্চাগো বেতন তার মাসের বেতনের চায়া বেশি হয়া, হে এখন বাচ্চাগো খাওয়াইবো নাকি পড়াইবো? তুই এই মুস্কিল আসান কর! উপস্থিত ভাই্য়েরা আমার, এই সাপ দিনের প্রথম ইচ্ছা পুরন করছে, এই ভাই তার ফল পাইবো খুব তাড়াতাড়ি। আর কেউ আছেন, নিজের ইচ্ছারে পুরন করতে চান?"
এবার কিছু মুদ্রা ঝরে পড়ে ফুটপাথে, কেউ কেউ এগিয়ে দেয় তাদের নিস্কম্প হাত, সাপটা তার লালচে চেরা জিভ দিয়ে কাউকে কাউকে ছুয়ে দেয় বা দেয় না। মুদ্রা দানকারীরা বিড় বিড় করে তাদের ইচ্ছার কথা জানায়। কেউ বলে; তার বড়ো ভাইকে তুলে নিয়ে গেছে কালো পোষাকের লোকেরা চোখে কালো কাপড় বেধে, মাস তিনেক আগে। অথচ কলো বা খাকি কোন পোষাকের দপ্তরই হদিশ দিতে পারছে না। আবার কারো ফেসবুকের ফেক প্রোফাইল থেকে কোন এক মহামানবের অলৌকিক নগ্নতা ভাইরাল করে দিয়েছে কে বা কারা, ফলে তাদের ঘরবাড়ি জ্বলে-পুড়ে শ্বশান হয়ে গেছে, তাদের উপাসনালয় গুড়িয়ে গেছে ও প্রতিমার মাটির স্তণ ও যোনি ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। সে অস্ফুটে আরো জানায়; এটা শুধু মাটির প্রতিমাতেই সিমাবদ্ধ ছিল না ফলে তারা তাদের মা-বউ, প্রাপ্ত বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের পার্শ্ববর্তি দেশে; তাদের অনেক অনেক দুর সম্পর্কের কোন আত্তিয়ের কৃপায় রেখে এসেছে। বাড়ির যুবক ছেলেদের অনেক আগেই নিয়ে গেছে খাকি পোষাকের লোকজন। তথ্য-প্রযুক্তি আইনের প্যাঁচ খুলতে খাকি পোষাকের চা-মিস্টির খরচ হাজার পন্চাশেক টাকা সন্তর্পনে এক সন্ধ্যায় দালালের কাছে সফল হস্তান্তরের সময় তাকে শুনতে হয়েছে "নাম ল্যাখতে পারে না, আবার হালা মালাউন দ্যাখো ফেসবুক চোদায়! হায়রে ডিজিটাল বাংলাদেশ!" "মালাউন" শব্দটা জমায়েতের কোন একজনের কানে বাড়ি মারলে; সে পকেট হাতড়ে কোঁচকানো দশ টাকার নোট বের করে মাওলার দিকে বাড়িয়ে দেয়। কোন এক মন্ত্রি বা উপমন্ত্রি জনসম্মুখে অভিমান ও আদর বশতঃ এক বিশেষ সম্প্রদায়কে "মালাউন" ডাকায় সে চমৎকৃত হয়েছে এবং তার নামের পুর্বে "মালাউন" শব্দটা বসাতে ইচ্ছা প্রকাশ করে। সুবহে সাদেকের ওয়াক্তে ঘর ছেড়েছে কিশোর ছেলে, খোঁজ মিলছে না কোথাও, এ্যান্টি টেরোরিস্ট ইউনিটের লোকজন ছেলের কম্পিউটার জব্দ করেছে। বাবা ছুড়ে দিল দশ টাকা। আগুনে পোড়া বা ধসে পড়া গার্মেন্টস থেকে ফিরে আসেনি বোন। ভাই ছুড়ে দিল দশ টাকা। চাপাতির কোপে ছিন্নভিন্ন মাথা-ঘাড় নিয়ে পড়ে আছে প্রিয় শিক্ষক। ছাত্র ছুঁড়ে দিল দশ টাকা। ধর্সন পরবর্তি ট্রমা ফুরোবার আগেই মাথায় আঘাত নিয়ে দশ দিন কোমায় দশ বছরের একটি মেয়ে, তার দ্রুত আরোগ্য কামনায় কেউ একজন ছুড়ে দিল দুটি মু্দ্রা। যুগপৎ টাকা-ধাতব মুদ্রা ও অগুনিত মানুষের নোংরা, অবসন্ন হাতে জিভ ছোঁয়াতে ছোঁয়াতে সাপটির লালচে চেরা জিভ কালো হতে থাকে। দশ টাকার নোট ও বিবিধ অংকের মুদ্রায় খিলক্ষেতের ফুটপাথ ডুবে গেলে মাওলা দেখে সাপটার শুভ্রতা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। মাওলার কালো হাত ও কব্জি পেঁচিয়ে বুড়ো আংগুল ও তর্জনির ফাকে নির্জিব ঝুলতে থাকে সাপটা, তা দেখে টোকাই শ্রেনীভুক্ত এক ছেলে সমশ্রেনীর আরেক জনকে বলে "ঐ দ্যাখসোস, সাদা ল্যাওড়ার মতো ঝুলতাসে!" সাদা ন্যাতানো শিশ্নের সাথে সাপের মাথার এহেন তুলনায় মাওলা হিংস্র হয়ে ওঠে ও অভিসম্পাত দেয় তবে টোকাই শ্রেনীভুক্ত ছেলেগুলোর উপর এর কোন আছর পড়ে না কারন ওদের কাছে ইচ্ছে পুরনের দশটি টাকা নেই। মাওলা জমায়েতের কাছে মজমার সমাপ্তি প্রার্থনা করে। সবার ইচ্ছেপুরনের দায় নিয়ে সাপটি তার অলৌকিক রং হারাচ্ছে এই আশংকায় মাওলা তাড়াতাড়ি বাক্সবন্দি করে সাপটাকে। ফুটপাথ থেকে টাকা-পয়সা কুড়িয়ে নেয়ার অবসরে সে জানায়, যাদের হাত বা টাকা সাপটি ছুঁয়ে দিয়েছে; তাদের ইচ্ছে পুরন না হলে এই টাকা আর টাকা থাকবে না শুকনো পাতা অথবা ময়লা কাগজে পরিনত হবে। মাওলার বহুল ব্যবহৃত পোটলা জমায়েতের ইচ্ছে-পুরন হাদিয়ার ভারে ন্যুব্জ তবে এই ভার বহনে তার কোন কস্ট হয়না। প্রায় মরে আসা বিকেল মাওলার কাঁধে সওয়ার হলে; সে রেললাইন ধরে হাঁটতে থাকে। কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে কোন এক ভ্রাম্যমান গাঁজা বিক্রেতা তালাশের সময় সে খেয়াল করে কেউ একজন "উস্তাদ" বলে ডাকছে। সাধারনত সেই সবসময় "ওস্তাদ" বলে ডেকে এসেছে গুরুস্থানিয় বেদে বা সাপুড়েদের; যাদের কাছে তার সাপ ধরা, বিষদাঁত ভাংগা এবং বুজরুকির একশো একটা কলা'র হাতেখড়ি, ফলে সে ধরেই নেয় এই সম্মধনের উদ্দেশ্য সে নয়। আরো কয়েকবার "উস্তাদ" ডাক এবং তার কাঁধে ঝোলানো পোটলায় হালকা টান পড়লে সে পেছন ফিরে তাকায় এবং আবিস্কার করে বছর বিশেকের শুকনো এক ছোকরা; ব্রুন অধ্যুসিত কালো গালে টোল ফেলে হাসছে। মাওলা তাকে চিনতে পারে এবং চিনতে পারার সাথে সাথে কিছুটা অসস্তিতে পড়ে যায়, খানিক পরে সেই অসস্তি রাগে পরিনত হয়ে "খানকির পোলা" গাল হয়ে বিস্ফরিত হয়। ছোকরা মাস তিনেক ওর শিক্ষানবীশ ছিল, মজমা শুরুর আগে জমায়েতকে প্রলুব্ধ করতে বিবিধ ও বিচিত্র অংগভংগি বা হাঁকডাক করা, মজমার প্রধান আকর্ষনগুলি ক্রমিক অনুযায়ি সাজিয়ে রাখা, হপ্তায় দুদিন সাপ-বেজির খাবার দেয়া এগুলোই ছিল ওর কাজ। আকালের দিনে টাকা সল্পতা হেতু ভ্রাম্যমান বেশ্যারা মুখ ফিরিয়ে নিলে; মাঝে মধ্যে এই ছোকরার উপর উপগত হওয়াও যেত। কিন্ত বাইনচোৎটা এক শীতের সকালে মাওলার দুটো সাপ ও বেজি নিয়ে উধাও হয়ে যায়। মাওলা ছোকরার চিমশে ঘাড় ধরতে গেলে কাধে ঝোলানো পোটলাটা বাগড়া দেয়, পোটলা সামলানো ও ছোকরার চিমশে ঘাড়টা ধরা; দুটোই মাওলার কাছে গুরুত্তপুর্ন হয়ে উঠলে ও কিছুটা বেশামাল হয়ে পড়ে এবং এই বেশামাল ভাব কাটাতেই আরো কয়েকপ্রস্থ গালাগাল করে; "মাদারচোৎ, মাওলা সাপুইড়ার সাপ চুরি কইরা তুমি সাপুইড়া হইবা? ল, খাড়া, তর গুয়া মাইরা খাল না বানাইলে আমি মাওলা না!" ছোকরা তার ব্রুন অধ্যুসিত গালে আবার টোল ফেলে বলে; "উস্তাদ, আমি আপনের হাপ না নিয়া গেলে কি আপনি এই সাদা হাপটা পাইতেন? আপনার আইজকার মজমায় আমি আছিলাম ভিড়ের ভিত্রে, দেখছি তো ঐ হাপ কি করছে! আমারে একটা ধন্যবাদ দেন!" মাওলা চেতে ওঠে; "খানকির পোলা তরে যদি দেখছি রেললাইন বস্তির আশে পাশে, তর বিচি কাইটা এই সাপকে খাওয়ামু আমি!" ছোকরা আবার হাসে, বলে; "উস্তাদ, আমারে আপনের সাথে নেন। এইবার আর পালামু না।" মাওলা এবার পোটলাটা কাঁধ থেকে নামিয়ে মারমুখো হয়, জোর করে মাথায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে বিগত দিনের ছোকরার উপর উপগত হওয়ার স্মৃতি, কিন্ত ছোকরা হাসি মুখে সরে যায় ওর নাগাল থেকে। বলে; আবার আসবে সে মাওলার কাছে, এই সময় তার মতো সহকারীর খুব দরকার মাওলার।
রেললাইনের ধারে সদ্য গজিয়ে ওঠা বস্তির এক খুপড়িতে ঢোকার আগে আশে পাশের মুদি দোকানে ফাঁদে পড়া ইঁদুরের তালাশ করে মাওলা এবং পেয়েও যায়, বিনে পয়সায় সাপের খাবারের সংস্থান করতে পেরে ছোকরার উপর ক্ষোভের কিছুটা উপশম হয়। খুপড়িতে ঢুকে হুড়কোহীন দরজা ভেজানোর সময় সে মনস্থির করে; এখানে আর নয়। অন্ধকার খুপড়িতে সে সন্তর্পনে সাপটার বাক্স খোলে, দেখে কুন্ডলি পাকিয়ে নির্জিব পড়ে আছে সাপটা। তবে বাক্স খোলার সাথে সাথে ঘরটা আলোকিত হয়ে ওঠে। সাদার তিব্রতা ফিরে আসছে আবার, আধো অন্ধকারেও পস্ট ওর লালচে চেরা জিভের ঝিলিক! সাপটা বাক্সবন্দি করে সে এবার টাকা-পয়সার হিসাবে বসে এবং কিছুক্ষনের মধ্যে আবিস্কার করে, এতো টাকা এই জীবনে একসাথে কখনই কামাই করেনি সে! টাকা-পয়সা ও সাপের বাক্স আবার পোটলা বন্দি করে খুপড়ি ছাড়ে মাওলা। সাদা সাপের লালচে চেরা জিভের ছোঁয়ায় মানুষের ইচ্ছে পুরনের গল্প গ্রাস করে শহর। বাচ্চাদের হঠাৎ বেতন বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়া অকাল পৌঢ়ত্ব প্রাপ্ত লোকটি সাপের ছোঁয়া প্রাপ্তি পরে দেখে; তার বাচ্চাদের বই-খাতা থেকে সব অক্ষর উধাও হয়ে গেছে, লোকটির উৎকন্ঠিত ঘোলাটে চোখ উজ্জল হয়ে ওঠে। যারা মাটি ও মাংশের প্রতিমাদের আব্রু নিয়ে শংকিত ছিল, উপাসনালয়ের অপমানে মর্মাহত ছিল, সাপের ছোঁয়ার পরদিন ঘুম থেকে উঠে দেখে; তাদের খৎনা হয়ে গেছে। কাটা শিশ্নে অলৌকিক রক্ত দেখে তারা হাফ ছেড়ে বাঁচে। বাড়ি ছাড়া কিশোর ছেলেটি জংগি বিরোধী অভিজানে মাথায় অসংখ্য গুলিবিদ্ধ হয়ে তার বাবার কাছে ফিরে আসে। ধর্সন পরবর্তি হামলায় কোমায় থাকা মেয়েটি স্মৃতিহীন হয়ে জেগে ওঠে। ঢাকা শহরে বিস্মৃতপ্রায় সাপ-শিল্প আবার জীবিত হয়ে ওঠে যখন মাওলা তার সাদা সাপের শ্বেত শুভ্রতা ধানমন্ডি-গুলশান-বনানীর এলিট রাস্তা থেকে জনবহুল ফারমগেট-মতিঝিল; এমনকি মফস্বলি গন্ধ ঝেড়ে মুছে উঠতে চাওয়া গাজিপুর-সাভার পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়। দেশি জায়ান্ট থেকে শুরু করে বহুজাতিক কর্পোরেটগুলোও মাঝে মাঝে মাওলাকে ডেকে নেয় তাদের ইয়ারলি বিজনেস রিভিউ প্রোগ্রামে। কড়কড়ে হাজার টাকার নৈবেদ্য সাপের সামনে ধরে তারা মানত করে; এ বছর ট্যাক্স অর্ডিন্যান্স যেন তাদের অনুকুলে থাকে, তাজরিন-রানা প্লাজা পরবর্তি ঘটনায় বায়ারদের উদ্ভট দাবিগুলো যেন বাস্তবায়নের প্রয়োজন না পড়ে; নিদেনপক্ষে ট্রেড ইউননিয়নের হ্যাপা যেন পোহাতে না হয়! রাজনৈতিক নেতাদের অন্দরমহলেও ডাক পড়ে মাওলার। একপক্ষ; নির্বাচনহীন দীর্ঘতমকালের আশু সমাপ্তি প্রার্থনায় প্রায় নতজানু হয়ে পড়ে তো আরেকপক্ষ; এই সময়টা যেন অনন্তকাল ধরে চলতে থাকে; তার প্রার্থনায় সাপটার একটু আনুকুল্য পেতে হাটুগেঁড়ে বসে। সবার ইচ্ছেপুরনের হাদিয়া মাওলার শুকনো শরীরে মেদ-মাংশ হয়ে জমতে থাকলে সে এবার একটু থিতু হতে চায়, বংশ-পরম্পরায় বহন করা জিপসি জীবনের দাঁড়ি টানতে সে এক বহুতল বিপনি-বিতানের ১৪ তলায় স্থায়ি চেম্বার এর পত্তন করে। উচ্চশিক্ষিত প্রায় দু'কোটি বেকার এর মধ্য থেকে সে স্বল্প বেতনে এক জনকে নিয়োগ দেয়। সাদা সাপের সাফল্যগাঁথা ও উপকৃত বিভিন্ন মানুষের টেস্টিমনির পেপার কাটিং অভ্যর্থনা কক্ষে যত্নের সাথে সাঁটিয়ে রাখে ছেলেটা, একটা ফেসবুক পেজও খোলে এবং চকচকে চোখে মাওলাকে জানায়; মাত্র এক হপ্তায় এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে লাইক। ওকে দেখে মাওলার স্মৃতিতে ব্রুন অধ্যুসিত মুখের চিমশে ছোকরা হানা দেয় মাঝে মাঝে। ছেলেটার সুগঠিত পশ্চাৎদ্দেশ তাকে কিছুটা উত্তেজিত করলেও, সাদা সাপটার নিরাপত্তাহেতু সে নিজেকে নিবৃত্ত করে। সাদা-কালো-জলপায় পোষাকের লোকজন প্রায় খোঁজ নেয় সাপটার, মাওলার ভয় হয়; রাষ্ট্রিয় প্রয়োজনে আবার না সাপটা বাজেয়াপ্ত করে ফেলে তারা! মাওলা অবশ্য বিকল্প একটা ভেবে রেখেছে। ওর পুর্বপুরুষেরা অনেকেই বিষধর সাপ জ্যান্ত খেয়ে ফেলতো চিবিয়ে সাথে ঐ সাপের যাবতিয় ক্ষমতা ও খিপ্রতা। মাওলা অনুভব করে তার কালো শরীরে প্রতিটি কোষ শুভ্রতায় আক্রান্ত হচ্ছে, শ্বেত সর্পিলতা ওর শিরা-উপশিরায় আলতো বয়ে যাচ্ছে ইচ্ছাপুরনের মন্ত্র নিয়ে!


গল্পটি ছোট কাগজ "রাঢ় বংগে" প্রকাশিত। ২০১৪-১৫
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×