ছবি: গুগল থেকে
**ঈদে মিল্লাদুন নবী** এবং **ঈদে সিরাতুন নবী** পালনের বিষয়টি ইসলামে বিতর্কিত। ইসলামের মূল ভিত্তি হলো কুরআন এবং হাদিস। এই উৎসবগুলো কুরআন বা সহীহ হাদিসে উল্লেখ নেই, তাই এদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন ফিকহের পণ্ডিতদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।
ঈদে মিল্লাদুন নবী:
ঈদে মিল্লাদুন নবী (মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মবার্ষিকী উদযাপন) অনেক মুসলিম দেশ ও সমাজে পালিত হয়। তবে এ বিষয়ে ইসলামের বিভিন্ন মতবাদে ভিন্নমত দেখা যায়:
১। সমর্থনকারীরা:
- তারা মনে করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম এবং জীবন সম্পর্কে স্মরণ করা এবং তাঁর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা প্রশংসনীয়। যারা এ উদযাপনকে সমর্থন করেন, তারা বলেন যে, মিল্লাদ উদযাপন রাসূল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ এবং তাঁর জীবনের শিক্ষা স্মরণ করানো।
- এক্ষেত্রে, উদযাপনের ধরন ইসলামী নীতিমালার মধ্যে থাকতে হবে, যেন বিদআত (ধর্মে নতুন কিছু সংযোজন) না হয়।
২। বিরোধীরা:
- বিরোধীরা মনে করেন যে, ঈদে মিল্লাদুন নবী উদযাপন ইসলামে বিদআত, কারণ এটি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবী বা পরবর্তী প্রজন্ম দ্বারা পালন করা হয়নি।
- ইসলামের মূল শিক্ষায় যা নেই, তা সংযোজন করা বিদআত হিসেবে গণ্য হয়, এবং তারা যুক্তি দেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে বা সাহাবারা এ ধরনের কোনো উদযাপন করেননি, তাই এটি ইসলামের অংশ নয়।
ঈদে সিরাতুন নবী:
- ঈদে সিরাতুন নবী** রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনী নিয়ে আলোচনা এবং তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য পালিত হয়। যারা এই উৎসব পালন করেন, তারা মনে করেন যে এটি রাসূল (সা.)-এর জীবনী সম্পর্কে মুসলিমদের সচেতন করার একটি ভালো উপায়।
- তবে বিরোধীরা এটিকেও বিদআত হিসেবে দেখে, কারণ এটি কোনোভাবে ইসলামি উৎসব হিসেবে নির্ধারিত নয়।
ইসলামের মূল শিক্ষা:
কুরআন ও সহীহ হাদিস অনুসারে, ইসলামে নির্ধারিত দুইটি ঈদ আছে:
১। ঈদুল ফিতর: রমজানের শেষে উদযাপন।
২। ঈদুল আযহা: হজ্ব ও কুরবানীর স্মৃতি ধরে রাখা।
অন্যান্য যে কোনো নতুন উৎসব পালনের বিষয়ে ইসলামের কঠোর দিকনির্দেশনা রয়েছে, বিশেষ করে যদি তা ধর্মীয় চেতনার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়। ইসলামি স্কলাররা মনে করেন যে, নতুন কিছু উদযাপন বা ধর্মীয় আচার পালনের সময় সঠিকভাবে যাচাই করতে হবে তা কুরআন ও হাদিসে অনুমোদিত কিনা।
মোদ্দা কথা:
ঈদে মিল্লাদুন নবী ও ঈদে সিরাতুন নবী উদযাপন করা ইসলামের মৌলিক বিধান অনুসারে অনুমোদিত নয় বলে অনেকে মনে করেন। তবে এটি নির্ভর করে কারা কোন মতাদর্শ অনুসরণ করছে এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:১৫