...মুসলিম বিশ্বে এরদোগানই একমাত্র নেতা যিনি সর্বপ্রথম তুরস্কের জাতীয় সংসদে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজকে ভাষণ দেয়ার সুযোগ করে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন।
...১৯৯৮ সালে তুরস্ক ও ইসরাইল যৌথভাবে অস্ত্র উৎপাদনের জন্য ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করে।
...এছাড়া, ৯০ কোটি ডলারের সামরিক চুক্তির আওতায় তুরস্কের এফ-৪ ফ্যান্টম এবং এফ-৫ জঙ্গিবিমান আধুনিকায়ন করে দেবে ইসরাইল। ৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার চুক্তির আওতায় তুরস্কের ১৭০টি এম৬০এ১ ট্যাংক আপগ্রেড করার কথা। ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য পোপেইয়ে-২ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য ১৫ কোটি ডলার ও হেরন ড্রোন তৈরির জন্য ১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারের চুক্তি রয়েছে।
...এরদোগানকে ক্ষমতায় পেয়ে ইসরাইলের নেতারা খুশি হয়ে ২০০৪ সালে তাকে Jewish World congress এর পক্ষ থেকে Profile of courage পুরস্কার প্রদান করা হয়।
...প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৫ সালে এরদোগান বিশাল বাণিজ্য প্রতিনিধিদল নিয়ে দু’দিনব্যাপী ইসরাইল সফর করেন। সে সময় তিনি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন ও প্রেসিডেন্ট মোশে কাটসাবের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। এ সফরেই এরদোগান বলেন- “ইরানের পরমাণু প্রকল্প শুধু ইসরাইলের জন্য হুমকি নয় বরং সারাবিশ্বের জন্য হুমকি।.....তার দলকে ইহুদিবাদবিরোধী বলে বিবেচনা করা হচ্ছে যা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।”
...২০০৬ সালের ২২ ডিসেম্বর তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এরদোগানের সঙ্গে ইসরাইলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট সাক্ষাৎ করেন। এর পাঁচ দিন পর ইসরাইল গাজায় আগ্রাসন চালায়।
...সম্প্রতি তুরস্কে ইসরাইলি পণ্যের রপ্তানি বেড়ে ২০১৩ সালে ৪৯০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১২ সালে ছিল ৩৫০ কোটি ডলারের বাণিজ্য।
...ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের পর্যটন সম্পর্কও অতিশয় গাঢ়। ইসরাইলের পর্যটন কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুসারে- ২০০৮ সালে গাজা যুদ্ধের আগে ইসরাইল থেকে ৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ তুরস্কে অবকাশযাপন করেছে।
...২০১০ সালে ইসরাইলের মাউন্ট কারমেল ফরেস্টে আগুন লাগলে তা নেভানোর জন্য যেসব দেশ সবার আগে সহযোগিতা পাঠিয়েছিল তার মধ্যে তুরস্ক একটি। সে সময় তুরস্ক দুটি ফায়ারফাইটিং বিমান পাঠিয়েছিল।...২০১১ সালের ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতির পর ইসরাইলও তুরস্কে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী পাঠায়।
...২০১৪ সালে ২০ বছর মেয়াদি চুক্তির আওতায় তুরস্ক ইসরাইলকে বছরে ৫০ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি সরবরাহ করার প্রতিশ্র“তি দেয়। পরে এ চুক্তিতে পরিবর্তন এনে তুরস্ক ইসরাইলকে পাইপলাইনের সাহায্যে পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা করে।
...২০১৪ সালের জুলাই মাসে ইসরাইল গাজা আগ্রাসন শুরু করে... সে সময় ইসরাইলের বহু রিজার্ভ সেনা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবকাশযাপন করছিল। তাদের জরুরি ভিত্তিতে দেশে তলব করা হয়। অন্যদিকে হামাসের রকেট হামলার কারণে ইউরোপের দেশগুলো কয়েকদিনের জন্য ইসরাইলে বিমানের ফ্লাইট স্থগিত করে। এ অবস্থায় ইউরোপের দেশগুলোতে অবকাশযাপনে যাওয়া সেনারা তুরস্কে এসে জড়ো হয় এবং তুর্কি বিমান তাদের ইসরাইলে পৌঁছে দেয়।
...গাজা আগ্রাসনের আগ্রাসনের সময় এরদোগান গাজার শিশুদের চিকিৎসার ভার নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন কিন্তু পরে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, যুদ্ধের সময় গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ধ্বংস হলে তুরস্ক গাজায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যন্ত্রপাতি পাঠাতে ইসরাইলের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। ইসরাইল সে অনুমতি দিয়ে নিজের ‘বোকামি’ প্রমাণ করেনি।
...তুরস্ক ও ইসরাইল বছরে আটবার পাইলট প্রশিক্ষণ বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনা করে।
...রাজধানী আঙ্কারায় ৫০ একর এলাকাজুড়ে ৩৫ কোটি ডলার খরচ করে যে পিউর হোয়াইট প্যালেস বানানো হয়েছে ...পরে সেটাকে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে পরিণত করেছেন এরদোগান। সরকারি সম্পত্তিতে এ প্যালেস বানানোর বিরুদ্ধে আদালত কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা না মেনে প্রাসাদ তৈরির কাজ অব্যাহত ছিল।
...তিনি মুসলিম বিশ্বের বিরাট জনগোষ্ঠীর কাছে ইসলামপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত আবার পশ্চিমাদের কাছে মডারেট নেতা হিসেবে বড়ই ‘কাছের ব্যক্তি’।
...............................................................................................
এই তথ্য এবারের সাপ্তাহিক ২৯-১০-২০১৫ সংখ্যার । পুরো প্রবন্ধ পড়ার ধৈর্য আর হয় নি। তাই সাইঁজির গানটায় একটু মনোযোগ দিতে চেষ্টা করছি..
জাত গেল জাত গেল বলে একি আজব কারখানা
সত্য কাজে কেউ নয় রাজি সব দেখি তা না না না
গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায় তাতে ধর্মের কী ক্ষতি হয়
লালন বলে জাত কারে কয় এই ভ্রমও তো গেল না...