somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম আলো থেকে পদত্যাগে বাধ্য আসিফ এবং একটি দরখাস্থ....

১০ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক প্রথম আলো পোড়ানোর দায়ে কর্তৃপক্ষের নেয়া সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে পদত্যাগ করেছেন দৈনিকটির এক সাংবাদিক।


পদত্যাগকারী সাংবাদিক আলী আসিফ দৈনিক প্রথম আলোর ‘ঢাকায় থাকি’ পাতার অ্যাসাইমেন্ট রিপোর্টার হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে কর্মরত ছিলেন।
ড. ইউনূস ইস্যুতে গত ৩০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, বারাক ওবামা ও রাবার্ট ব্লেইকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিককতা বিভাগের শিক্ষার্থী পরিচালিত যোগাযোগ ইশকুল নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা।

পদত্যাগকারী আলী আসিফ ওই সংগঠনটির সভাপতি।
শিক্ষার্থীরা জানান, আসিফ কুশপুত্তুলিকা দাহ করার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ তাকে বলে “হয় যোগাযোগ ইশকুল ছাড়ো, না হয় প্রথম আলো ছাড়তে হবে।”
এরই মধ্যে আসিফ সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ফেসবুকে একটি লেখা পোস্ট করেছেন।
এতে আসিফ জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই কর্মসূচির পরদিন দৈনিক প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তাকে বলা হয়, যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতির পদ ছেড়ে প্রথম আলোতে কাজ করতে হবে।
ঢাকায় থাকি’র বিভাগীয় সম্পাদক তাকে দুটির মধ্যে যেকোন একটিকে বেছে নিতে বলেন। তাকে বলা হয় ‘হয় প্রথম আলোর চাকরি অথবা যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি।’ এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই চাকরি ছাড়লেন আলী আসিফ ।
দৈনিক প্রথম আলো সম্পাদক, মতিউর রহমানের উদ্দেশ্যে লেখা তার পদত্যাগপত্রেই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তিনি। আসিফ আলী তার দেয়া পদত্যাগপত্রর বক্তব্যও ফেসবুকে তুলে ধরেন।



নিচে পদত্যাগপত্রটি হুবুহু তুলে ধরা হলো:

বরাবর
মতিউর রহমান
সম্পাদক,
দৈনিক প্রথম আলো,
১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫।

বিষয়: অব্যাহতি প্রসঙ্গে।

জনাব,
আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী আপনার পত্রিকার রোববারের ক্রোড়পত্র ঢাকায় থাকি বিভাগে জুন ২০০৯ থেকে কাজ শুরু থেকে এ পর্যন্ত ‘ঢাকায় থাকি’ বিভাগের অন্যতম প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে অসংখ্য প্রতিবেদনের কাজ সম্পন্ন করেছি। নান্দনিক কাজের পরিবেশ এবং সহকর্মীদের সহযোগিতার কারণে আমি স্বাচ্ছন্দ্যেই কাজ করছিলাম। কিন্তু এখন আর আমার পক্ষে আপনার প্রতিষ্ঠানে কাজ করা সম্ভব নয়।

আমি আপনার স্বনামধন্য পত্রিকার কাজের দায়িত্ব থেকে কেন অব্যাহতি চাচ্ছি সেই কারণ নিচে ব্যাখ্যা করছি।

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার তাগিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকেই ছিল। গণযোগাযোগের শিক্ষার্থী হিসেবে একটি সত্যিকারের গণমাধ্যমের স্বপ্ন বরাবরই দেখতাম। যেখানে প্রকৃতপক্ষেই গণমানুষের কথা লেখা হবে। শ্রেণীমাধ্যম নয়, গণমাধ্যমের চর্চা কিভাবে বাংলাদেশে সম্ভব এই ব্রত শুরু থেকেই ছিল।

সেই উদ্দেশ্যে যোগাযোগ চর্চা এবং গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ লক্ষ্য নিয়ে সহপাঠী এবং বন্ধুরা সম্মিলিতভাবে যোগাযোগ ইশকুল নামের একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলাম পয়লা সেপ্টেম্বর ২০০৮। সংগঠনের সদস্যদের পছন্দে যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম। শুরু থেকে এ পর্যন্ত যোগাযোগ ইশকুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু সফল কর্মসূচির আয়োজন করেছে। দৈনিক প্রথম আলোসহ দেশের প্রায় সব কয়টি গণমাধ্যম কর্মসূচির খবর ছাপিয়ে আমাদের কাজে সহযোহিতা করেছে। সর্বশেষ ৩০ মার্চ, ২০১১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং বারাক ওবামা ও রাবার্ট ব্লেকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে যোগাযোগ ইশকুলের সদস্যরা। গণমাধ্যমের কল্যাণে বিষয়টা নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়।

এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। যোগাযোগ ইশকুলের অন্যান্য কর্মসূচির মতো সর্বশেষ কর্মসূচিতেও আমার সম্মতি ছিল। তবে, ব্যাক্তিগতভাবে প্রথম আলোর নিয়মিত বেতনভুক্ত কর্মী হওয়ার কারণে ৩০ মার্চ ২০১১ এর কর্মসূচিতে আমি সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। মাইক হাতে নিয়ে বক্তৃতা দিতে পারিনি। ম্যাচের কাঠি জ্বেলে পোড়াতে পারিনি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, বারাক ওবামা এবং রবার্ট ব্লেকের কুশপুত্তলিকা। কেবলই দর্শক হয়ে চেয়ে চেয়ে দেখেছি।

তারপরও, কর্মসূচির পরদিন দৈনিক প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আমাকে বলা হয়, যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতির পদ ছেড়ে প্রথম আলোতে কাজ করতে হবে। আমার বিভাগীয় সম্পাদক আমাকে দুটির মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে বলেন। আমাকে বলা হয়, হয় প্রথম আলোর চাকরি অথবা যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি।

আমি যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি হয়েই থাকতে চাই। আমি পেটের দায়ে আমার স্বপ্ন বিক্রি করতে পারি না। তাই আমি আপনার প্রথম আলো ছেড়ে দিচ্ছি। আপনাদের কারো প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই জানিয়ে আমি আমার কর্ম থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি।

আলী আসিফ
অ্যাসাইনমেন্ট রিপোর্টার
ঢাকায় থাকি
দৈনিক প্রথম আলো
১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ
কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫।
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×