দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের রাষ্ট্রপতি হওয়ার শর্তে স্বেচ্ছায় আটক হয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। একদিনের জন্য হলেও তিনি রাষ্ট্রপতি হতে চান। এমনকী সিএমএইচে থাকা অবস্থায় আগের সিদ্ধান্তে অনড় ও সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ দেওয়ার শর্ত দেন তিনি। কেননা দলের ইমেজ ধরে রাখতে এরশাদকে এ কৌশল অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু আটক করার সময় তার সঙ্গে ভালো আচরণ করা হয়নি বলে নিকটজনদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এরশাদ। অতিবিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ৩ ডিসেম্বর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরপর চলতে থাকে একের পর এক নাটক। নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর ২৬ ঘণ্টা আত্মগোপনে থাকেন তিনি। এর পর বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় ফেরেন বিকাল ৩টায়। এ সময় বাসার নিচে এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিপরিষদ থেকে জাপা নেতারা পদত্যাগ করবেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারেরও ঘোষণা দেন তিনি।
সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়। চলতে থাকে শর্ত আর আসন নিয়ে দরকষাকষি। একপর্যায়ে রাষ্ট্রপতি হওয়ার শর্তে এরশাদ রাজি হন। তবে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিলে দলের ইমেজ নষ্ট হতে পারে আশঙ্কায় এরশাদ স্বেচ্ছায় আটক হয়ে সিএমএইচে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন। হাসপাতালে থেকে নির্বাচনবর্জনের পক্ষে বিবৃতি ও সরকারের সমালোচনা করারও শর্ত দেন তিনি। এরশাদের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী ১২ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৪০ মিনিটে প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসা থেকে আটক করে তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। এদিকে এরশাদ আটক হওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে জাপায়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়েও দলে দ্বিধাবিভক্তি দেখা দিয়েছে। এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ বলছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে জাতীয় পার্টি। আবার এরশাদের ভাই প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের বলছেন, এরশাদ তার সিদ্ধান্তে অনড়; একতরফা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না জাতীয় পার্টি। এ নিয়ে জাতীয় পার্টিতে আবারও ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।