এইটা ঠিক স্ক্রু ড্রাইভার টাইপ ধাঁধা না। এইটারে বলতে পারেন উপস্থিত বুদ্ধি পরীক্ষা। কয়দিন আগে রিমঝিম বর্ষার একটা পোষ্ট দেখছিলাম এই টাইপের। ওই পোষ্টটা দেইখাই আমার এইটার কথা মনে পইরা গেছিলো। ভাবতেছিলাম স্ক্রুড্রাইভারে না ঢুকাইয়া নরমাল একটা পোষ্ট আকারে দিয়া দিমু। আবার ক্যান যেন মনে হইলো স্ক্রু ড্রাইভার আকারে দিলেই ভালো হয়। তাই আরেকটা স্ক্রুড্রাইভার আকারেই দিলাম...
বদ স্বভাব। কি করুম কন? না প্যাচাইয়া কিছু কইতে পারিনা...
মনে করেন, আপ্নে অতিব সুন্দরী রমনী। এতই সুন্দরী যে আপ্নের এলাকার সকল যুবক আপ্নের দেওয়ানা হইয়া আছে। আপ্নের মা নাই। আপন বলতে আছে কেবল আপনার আব্বাজান। তার লাইগাই এলাকার বখাইট্টা পোলাপান আপ্নেরে কিছু কইতে সাহস পায় না। আপ্নের বাবা একজন ব্যবসায়ী। সে ব্যবসা করার জন্য এক মহাজন থেইকা প্রচুর ট্যাকা লোন নিছে। কিন্তু আপ্নের মা মারা যাওয়ার কারনে ব্যবসাপাতি ফালাইয়া মন খারাপ কইরা বইসা থাকতো, ফলে ব্যবসায় খাইলো বিশাল ধরা...
এইবার সেই মহাজনের একটু পরিচয় দেই...
মহাজন মহা ত্যাদড় পাব্লিক। সবাই জানে মহাজন খারাপ লোক। তার প্রচুর ট্যাকা পয়সা আছে। তাই ফুর্তি ফার্তাও করে প্রচুর। মদ গাঞ্জা তো আছেই। বাজে পাড়ায় নিয়মিত যাতায়াত করে। আর তার চেহেরা খানও মাশাল্লা তার স্বভাবের মতই খারাপ। মহাজনরে খ্যাপাইয়া কেউ আইজ পর্যন্ত রেহাই পায়নাই। তাই কেউ তারে ঘাটাইতে সাহস পায়না। সে অলরেডি তিনডা বিয়া করছে। এখন তার নজর আপ্নের দিকে...
যাই হোক, আসল কথায় আসি। আপ্নের বাবা মহাজন থেইকা যে ট্যাকা নিছিলো, তা ফেরত দেওনের সময় পার হইয়া গেছে। আপ্নের বাবা দিমু দিমু কইরা বহুত দিন পার করছে। এখন তো মহাজন পাইছে চান্স। আপ্নেরে নিজের চাইর নম্বর খানম বানানোর বদ মতলব তার মাথায়। আপ্নের বাবারে সে একটা প্রস্তাব দিলো। কইলো, তার লগে আপ্নের বিয়া দিলে মহাজন ট্যাকার কথা ভুইলা যাইবো। উলটা ট্যাকা লাগলে আরো ট্যাকা দিবো। আপ্নের বাবাতো জাইনা শুইনা আপ্নেরে তার হাতে তুইলা দিতে পারেনা। তাই সে প্রস্তাব ফিরাইয়া দিলো। এইবার মহাজন খেইপা গেল...
মহাজন এলাকার মুরুব্বীদের ডাইকা আইনা একটা সালিশ বসাইলো। সালিসে সিদ্ধান্ত হইলো, আইজকা দিনের মধ্যে ট্যাকা শোধ না করতে পারলে আপ্নের বাবারে পুলিশে দিবো। আর আপ্নের বাবার ঘর, জমি সবই বন্দক দেয়া। বাড়ি বিক্রি কইরা যে ট্যাকা শোধ দিবো সেই উপায়ও নাই। আর আপ্নের বাবারে জেলে দিলে আপ্নের নিরাপত্তার কি হইবো!!!
সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মহাজন উইঠা দাঁড়াইয়া সবার সামনেই কইলো, “ আমি দিল দরিয়া মানুষ। তাই আমি উনারে একটা সুযোগ দিছিলাম। উনি সেইটা লয় নাই। এখন আমি উনারে আরেকটা সুযোগ দিমু। এলাকার মুরুব্বীরা আছেন। আপ্নারা সাক্ষী থাইকেন।“
তার সুযোগটা এরকম...
সে (মহাজন) দুইটা ইটের টুকরা নিবো, একটা লাল অপরটা কালো। ইটের টুকরা দুইটা সে একটা থলের মধ্যে রাখবো। আপ্নে থলে থেইকা না দেইখা একটা ইটের টুকরা তুলবেন। ইটের টুকরাটা যদি লাল হয়, তাইলে মহাজন আপ্নের বাবার ধার মাফ কইরা দিবো। আপ্নেরেও ছাইড়া দিবো। মানে আপ্নেরে মহাজনরে আর বিয়া করতে হইবো না। কিন্তুক যদি কালো টুকরা উঠে, তাইলে মহাজনরে আপ্নের বিয়া করা লাগবো। আর আপ্নের বাবার দেনাও শোধ দেওন লাগবো না।
আপ্নে বুঝলেন আপ্নের রেহাই নাই। সুযোগ না নিলে আপ্নের বাবারে জেলে যাইতে হইবো। সুযোগটা নিলে যেহেতু বাঁইচা যাওনের একটা চান্স আছে। তাই আপ্নে ঠিক করলেন, সুযোগটা নিবেন।
মহাজন শয়তানি মার্কা একটা হাসি দিয়া মাটি থেইকা দুইটা ইটের টুকরা তুইলা নিয়া একটা থলির মইধ্যে রাখলো। কিন্তু সে একটা দুই নম্বরি করলো। সে একটা লাল, একটা কালো ইটের বদলে দুইটাই কালো ইট নিলো। এইটা সবার চোখ এড়াইয়া গেলো কিন্তু আপ্নের চোখে ঠিকই ধরা পড়লো। আপ্নে কিছু কইতে পারলেন না, পাছে মহাজন খেইপা গিয়া আপ্নের বাবার কোনো ক্ষতি করে...
এখন আপ্নে কি করবেন???
একটা ইট তুললে সেইটা অবশ্যই কালো হবে, মানে মহাজনরে আপ্নের বিয়া করন লাগবো।
যদি কোনো ইট তুলতে অস্বীকৃতি জানান তাইলে আপ্নের বাবার জেলে যাওয়া ঠেকানোর আর কোনো পথ থাকবোনা।
যদি মহাজনের দুইনম্বরি ফাঁস কইরা দেন, তাইলে মহাজন কইতে পারে, “থাউক, তোমার বাপ জেলেই যাক।”
ক্যাম্নে বাঁচবেন???
এইটার সন্তোষজনক সমাধান কি হইতে পারে???
পুরান জিনিস...
স্ক্রুড্রাইভার-১
স্ক্রুড্রাইভার-২
স্ক্রুড্রাইভার-৩
স্ক্রুড্রাইভার-৪
স্ক্রুড্রাইভার-৫
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৩:৪৪