somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেহেরজান ঃ অবমাননায় নারী ও ছাত্র ইউনিয়ন

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত ‘মেহেরজান’ সিনেমাটি নিয়ে নানান মহলে চলছে বিতর্ক। কেউ পক্ষে কেউ বিপক্ষে। আমার কাছে মনে হয়েছে ব্লগে অনেকে অনেক ভারি ভারি মন্তব্য করে বসেছেন। অনেকে বলেছেন, এখনি সরকারের উচিত ছবিটি নিষিদ্ধ করা। আমার কাছে সন্দেহ হয়, যারা এমন মন্তব্য করেছেন তারা আদেও ছবিটি দেখেছেন কিনা ?
অনেক বিজ্ঞ মানুষ এ বিষয়ে লিখেছেন। ছবিটির প্রিমিয়ার শো আমারো দেখার সুযোগ হয়েছিল। আমি শুধু এটুকু বলবো, ছবিটির যেখানেই প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে তার উত্তর পাশাপাশি রয়েছে। যেমন নানাজানের ভুমিকা, তার বক্তব্যের শুরুতে অস্পষ্ট ছিল। কিন্তু পরে স্পষ্ট হয়েছে। সিনেমা টি দেখার পরে নানাজানকে দেশদ্রহী বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধের মানুষ বলাটা যুক্তিযুক্ত হবে না।
ভিক্টর ব্যানার্জির বক্তব্যের মাধ্যমে তার ইচ্ছা এবং মানুষের প্রতি তার ভালবাসা প্রমান করেছ্।ে যারা গ্রামের রক্ষনশীল পরিবারের মানুষ তারা বুঝবেন। আমাদের সমাজে নানাজানের মত মানুষ অনেক রয়েছেন। যারা সর্বচ্চো আপোষ করে শান্তি চাই।
নানাজান চরিত্রটি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আরো আগে মাটির ময়না সিনেমায় জয়ন্ত চট্্েরাপাধ্যায় এর চরিত্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠানো দরকার ছিলো। এ দুটি চরিত্র আমার কাছে অনেকটা এক মনে হয়েছে। আমি মনে করি তার আর দরকার নাই। আসলে আমাদের সমাজের মানুষগুলো এমনি। তারা সহজ সরল ও শান্তি প্রিয়।
যারা সরাসরি গ্রামের রক্ষনশীল পরিবার থেকে এসেছে তারা বুঝবে। এই সমাজের ঘরে ঘরে আজও দেখা যাবে এমন অনেক নানাজানকে। সিনেমাটিতে কিছু অতি কাল্পনিক ব্যাপার রয়েছে। যেমন, যুদ্ধ বিগ্রহের মাঝে একটি গ্রামে অবাধে প্রেম করে বেরাচ্ছে ওয়াসিম খান মেহেরজানকে নিয়ে। একজন পাক সেনার দ্বারা এটা করা কতটা বাস্তবিক।
‘খানেলাগা’ বিষয়টা আসলে কী ? এই শব্দটা না আনলে ভাল হতো।
ছবিটি শুধু যুদ্ধের গল্প নয়। শুধু ভালবাসার গল্প নয়। এটি যুদ্ধ ও ভাল বাসার গল্প। ব্লগ-পত্রপত্রিকা এবং প্রিমিয়ারশো থেকে যা বুঝেছি তা হলো, এখানে যুদ্ধের মধ্যে এক পরিবারের নানান ঘাত প্রতিঘাতের কথা উঠে এসেছে।
যারা ছাত্র ইউনিয়য়ন করেন বা করতেন তাদের জন্য একটা বড় হানিকর ব্যাপার ঘটেছে। নীলা পরোক্ষ ভাবে বলেছে, সে আগেই ধর্ষিত হয়েছে। এর কারণ হিসেবে দেখিয়েছে সে একজন ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী। ছাত্র ইউনিয়নের নিয়মিত কাজের এমন কোন রেকর্ড পরিচালকের কাছে আছে বলে আমার জানা নেই থাকলেও ছিনেমায় এই কথাটাকে ব্যাবহার না করলেও পারতেন।

আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি নানাজানের চরিত্রের মাঝে আমাদের দেশের রক্ষনশীল নিরীহ মানুষের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। এখানে অন্য কিছু খোজার চেষ্টা নিছক হবে। একাত্তরে খান সেনারা যে হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ যা যা করেছে তা দেখানো হয়েছে এ ছবিতে। সমস্যা টি এসেছে একটি মেয়ে কি করে একটি বেলুচ সেনার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরেছিল। ছবির পরিচালক এ গল্পের একটি বাস্তব ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যেটা আজ প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে।
বাংলাদেশে যুদ্ধরত পাকিস্তানী এক সেনাসদস্য নিজ দল ত্যাগ করে বাঙালিদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন। রক্ষা করেছেন এক বাঙালি নারীকে ধর্ষণের হাত থেকে। একজন গ্রামের কিশোরীর কাছে একটি সুশ্রি, জীবন ও মান বাঁচানো মানুষটি প্রিয় মানুষ হতেই পারে। একজন মেয়ে একটি ছেলেকে ভালবেসেছে। তাই বলে আমাদের সমাজ তো তাকে মেনে নেয়নি। এমনকি মেহেরজানের পরিবার সেটা করে নি। সমাজের মানুষ ওয়াসিম খানকে হত্যা করতে এসেছে। পরিবার সমাজ কেউ তাকে মেনে নেয়নি।
আমাদের সর্বপরি মনে রাখা দরকার ছিল এটা একটি গল্প। একজনের একান্ত ব্যাক্তিগত গল্প। একজন তার ডাইরী খুলে খুলে কথাগুলো বলেছেন। এটা কোন ভাবেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি হতে পারে না।
কিছু সত্য কথা হইতো এখানে রয়েছে। যা অনেকের গাঁয়ে লাগতে পারে। আমি বলব, তার সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কিসের সম্পর্ক। যারা ছবিটি দেখেছেন তারা মন্তব্য করবেন।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:০৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×