
গল্প শব্দবিভ্রাট নিয়ে। বাস্তবে ঘটা এবং সত্য ঘটনা।
সুকুমার রায়ের গল্পে পড়েছি, "দাদা। জল পাই কোথায় বলুন তো?" প্রতিউত্তরে বলেছে "মুশকিলে ফেললেন, এখনতো জলপাই এর সময় না।তবে আম-কাঠাল হলে চলবে?"
আমার গল্প এইসব বিড়ম্বনা বা বিভ্রাট নিয়েই। একবার ক্লাসে এক ম্যাডাম জিজ্ঞাসা করলেন,"এই তোমাদের ক্লাস ক্যাপ্টেন কে?" আমার বন্ধুর সরল মনের উত্তর, "কাদের"।
ম্যাডাম খেপে গিয়ে বললেন, "ফাজলামো করো।একটা চড় দিয়ে দাত কয়টা ফেলায় দেবো।কাদের আবার? তোমাদের।"
আমার বন্ধু এইবার ভয়ে ভয়ে বললো, "ম্যাডাম, আমাদের ক্লাসের যে ছেলেটার নাম কাদের, সে হলো গিয়ে ক্লাস ক্যাপ্টেন।"
যাই হোক, বৃষ্টি বিড়ম্বনায় ফিরে আসি।
আমার বন্ধু রাজিন কোচিং এ পড়ে, কো-এডুকেশন। খুবই সিরিয়াস ধরনের ছেলে এবং শিক্ষকের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার চেষ্টা করে। ইংরেজির শিক্ষক বলেছেন, ইংরেজি বলা অভ্যাস করতে। রাজিনও শুরু করলো ইংরেজি বলা।দাঁত ভেঙ্গে যায়, তাও ইংরেজি বের হয়না।
কোচিং এ পরীক্ষা চলছিলো। বৃষ্টি নামে এক মেয়ে গোপনে পরীক্ষায় বই বের করে লিখছিলো। রাজিনের সেটা চোখে পড়লো। অন্যায় একটা কাজ চোখের সামনে হচ্ছে সেটা রাজিনের মন থেকে মেনে নিতে না পেরে চিৎকার করে নালিশ করলো,"স্যার, বৃষ্টির BOOK খোলা স্যার।"
এরপর রাজিন দেখলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার এই প্রতিবাদ শিক্ষক উদার মনে নিলোনা। বরং চড়-থাপ্পর কিল ঘুষার বৃষ্টি বর্ষণ হতে লাগলো তার উপর দিয়ে।
শেষ করব বৃষ্টি বিভ্রাট দিয়ে।
৭ম শ্রেণীতে পড়ি তখন।আমার বন্ধু নূর বক্সকে নিয়ে আমাদের ক্লাসের ইংরেজির শিক্ষক বড়ই তামাশা করেন। ক্লাসে ঢুকেই বলতেন, "ওরে নূর!! বাবা নূর!! তোর মুখখানা দেখি তো বাবা।"
ছন্দ করে বলতেন, "ওরে নূর!! তোর প্রেমে পাগল বেহেশতি হুর।" নানা ধরনের ইংরেজি অনুবাদ করতে বলতেন। নূর প্রায়ই পারতো না। নানা ভাবে হেনস্হা করতেন তখন। যেমন,"বাবা নূর! ইংরেজি করতো বাবা।"গরু ঘাস খায় আর নূর খায় গোবর"।"
একদিন স্যার ক্লাসে ঢুকে বললেন, "এই তোরা ইংরেজি কর; "বৃষ্টি পরে"।"
আমরা একেক জন একেকটা বলি।
কেউ বলে, It is raining.
কেউ বলে, Rain falls.
কেউ বলে, Rain is falling.
অবশেষে স্যার নূরকে ধরলেন, "বাবা নূর। যদি পারিস এটার ইংরেজি করতে, আমি যতদিন বেঁচে আছি আমি তোকে দুবেলা করে বিনা পয়সায় পড়িয়ে যাবো।" আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, "এই তোরা সাক্ষী থাকিস।"
নূর খানিকক্ষন চুপ করে থেকে বললো, "Bristi Reads."
স্যার কিছুক্ষণ হতভম্বের মতো তাকিয়ে রইলেন। নূরের কাছে এগিয়ে গেলেন। এরপর হাউমাউ করে চিৎকার করে উঠলেন,"বাবা নূর। আমাকে মাফ করে দে বাবা। তোর কাছে করজোরে মাফ চাচ্ছি বাবা। তুই আমার কথা ফিরিয়ে দে বাবা।"
বি.দ্র. এরপর থেকে স্যার আর পারতপক্ষে নূরকে নিয়ে কোনো তামাশা করতেন না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


