১ লা বৈশাখের ঐ জঘন্য ঘটনা ঘটার পরে অনেকের অনেক রকম মন্তব্য দেখলাম/দেখছি। বেশির ভাগ লোক মেয়েদের দোষারোপ করছে। তাদের বক্তব্য মেয়েরা যদি হিজাব পরতো তাহলে তাদের এমন নির্যাতিত হতে হত না। আচ্ছা মেয়েরা হিজাব পরলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আমরা মাঝে মাঝেই বিভিন্ন স্কুল/ কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের ছাত্রীদের উপরে যৌন নির্যাতনের কথা শুনে থাকি। তর্কের খাতিরে মানলাম সেই সব ছাত্রীরা হিজাব পরেনা তাই তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ভাই পত্রিকা পড়তে গিয়ে হয়তো খেয়াল করেছেন “সোনারগাঁয়ে ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার”। এই যে তার লিংক Click This Link
আচ্ছা মেয়েরা নাহয় হিজাব পরেনি তাই তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কিন্তু এই ছেলেটা কি দোষ করল?
আচ্ছা যান আরেকটা উদাহরণ দিই “ছাগল ধর্ষণ”...... এই যে ভিডিও লিংক https://www.youtube.com/watch?v=x5_aj3iio0I
আচ্ছা এবার কি আপনি তাহলে ছাগলকেও হিজাব/ বোরখা পরাবেন? আপনি এবার বলবেন প্রত্যেক সমাজেই কিছু কুলাঙ্গার থাকে তাই তারা এটা করেছে। হ্যা ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন। প্রত্যেক সমাজেই কিছু কুপাঙ্গার থাকে। আর কিছু কুলাঙ্গার সেই দিনের ঐ ঘটনা ঘটিয়েছে।
হিজাবের কথা আসলে সব সময় মেয়েদের কথা আসে। আচ্ছা আপনি জানেন কি ছেলেদেরও হিজাবের বিষয়ে বলা হয়েছে। এবং আপনি শুনে আশ্চর্য হবেন মেয়েদের আগে পবিত্র কুরআনে ছেলেদের হিজাব সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেছেন। কি বিশ্বাস হচ্ছে না তাহলে নিচের আয়াত গুলো দেখুন।
সুরা নূরের ৩০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ্ বলেছেন-
"মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে।"
এর পরের আয়াত অর্থাৎ সুরা নূরের ৩১ নম্বর আয়াত মহান আল্লাহ্ নাযিল করেছেন নারীদের পর্দার জন্য।
এখন কোন পুরুষের চোখ যদি কোন নারীর সৌন্দর্য দর্শন করার অনুমতি পায় , তাহলে তাহল একমাত্র নিজের স্ত্রীর। একজন পুরুষের জন্য নিজ স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন নারীর চেহারার সৌন্দর্য দেখা বা অন্য কোন নারীর দেহ আকৃতি অন্তরে অনুভব করা 'হারাম' ।
এ সম্পর্কে মহানবী [স:] বলেছেন , যদি কোন মহিলার দিকে হঠাৎ নজর পড়ে যায় , তাৎক্ষণিক দৃষ্টি সরিয়ে নেবে এবং তার দিকে আর দ্বিতীয়বার তাকাবে না।
আল্লাহ পবিত্র কুরানের সুরা আন-নুরের ৩০নং আয়াতে নারীদের পর্দার ব্যাপারে নিষেধ করার আগে পুরুষের চোখের পর্দা হেফাজত করার নির্দেশ দিয়েছেন । কেউ যখন তা জেনেও এই নিষেধ মান্য করা থেকে নিজেকে দূরে রাখলো না তখন সে যেন কুরআনে আল্লাহ প্রদত্ত নির্দেশ কে অবজ্ঞা করল।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ বলেছেনঃ এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যারাই আমার আয়াত সমুহকে অবজ্ঞা করবে, আমি তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আমি সেখানে নতুন চামড়া দিব, যাতে তারা আযাব পূর্ণভাবে আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী। (সুরা আন নিসাঃ ৫৬)
আপনি পবিত্র কোরআন বিশ্বাস করেন বলেই তো মেয়েদের হিজাব নিয়ে এত লেকচার দিচ্ছেন। তাহলে আগে নিজে হিজাব ঠিকমত পালন করুন। তারপরে মেয়েদের হিজাব নিয়ে কথা বলেন।