গত শনিবারে আমার নানু পাড়ি জমিয়েছে না ফেরার দেশে। অথছ এর আগের শুক্রবারেও নানু আমাকে তার বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে আদর করেছেন। সেই কিনা কাউকে কিছু না বলে উপারে চলে গেল। নিজ হাতে নানুকে কবিরে শুয়িয়ে দিয়ে আসলাম।
চাকুরী পাওয়ার পর এইটাই ছিল আমার প্রথম ঈদ। ঈদে সবাইকে কিছু না কিছু কিনে দিয়েছি। নানুকে দিয়েছি শাড়ি। নানু ঈদের দিন আমার শাড়িটিই পরেছেনে। শাড়ি পরে আমার জন্য দুরাকাত নফল নামাজ পড়ে দোয়া করেছেন। আমি আর আমার ভাইয়া নানা নানুর কাছ থেকে যে পরিমান আদর পেয়েছি তা আমার আর কোন কাজনরা পায়নি পাবেও না। ছোট বেলা থেকেই নানু আমাদের দুভাই কে ডাকত "হাসান আর হোসেন" নামে। আমারা দুই ভাই নাকি তার কাছে তার "হাসান আর হোসেন"। আর কেউ আমাদের এই নামে ডাকবেনা।নানুর বাড়িতে আর কেউ হয়ত বা নানুর মত খোঁজ নিবে না।
কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হল নানুকে যখন আমি খাটুনির মধ্যে শোয়া অবস্থায় দেখি চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা পানি পড়েছে।এরপর নিজে খাটলি কাঁধে করে কবরস্থানে নিয়ে গেলাম, নিজ হাতে কবরে নামালাম আমার একটুকু ও কষ্ট হয়নি। পরদিন সকাল বেলা অঝর ধারায় বৃষ্টি ঝরেছে....
রাতের বেলায় যখন একাকি হাটছিলাম নানুর কবর জিয়ারত করে তখন দেখি শুধুমাত্র একটা জোনকী পোকা আমার আশেপাশে ঘুরছে কিছু সময়ের জন্য। অনেক খুঁজেও আরেকটা জোনাকী পোকা আবিষ্কার করতে পারিনি।
নানু মারা যাবার দুইদিন পরই আমি ঢাকায় চলে আসি। মাত্র ৬মাস আগেই নানু আমাদের বাসা থেকে গিয়েছিলেন। টাকা ১বছর তিনি আমাদের বাসাতেই ছিলেন। সোমবার থেকে আজ পর্যন্ত আমি বাসায় একা, এখনো কেউ আসেনি , কাল সবাই আসবে। একাকী ঘরে আমি নানুকে খুঁজি কিন্তু পাইনা।
নানু আমি তোমাকে কোলাহলমুন্ত পরিবেশে একাকী দেখতে চায়। দেখতে চায় তেমনটি যেমনটি একটি শিশুকে তার মা আগলে রাখে, তেমনি করে তোমাকেও যেন ওপারে আল্লহ আগলে রাখে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




