somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কান্তার সাথে একটি রাত.......

২৫ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অফিস থেকে গত দুইদিন ছুটি নিয়েছিলাম পরীক্ষার কারনে। সি এম এ মেনেজেরিয়ল লেবেল এর পরীক্ষা ছিল।প্লেন ছিল পরীক্ষা দিয়ে বন্ধুর বাসায় যাব, পরদিন শুক্রবার সারারাত মুভি দেখে কাটিয়ে দিব। যে রকম চিন্তা তার কিছুই হয়নি ।বন্ধুর সাথে মুভি দেখে রাত না কাটিয়ে তা কাটালাম কান্তার সাথে।

পুরো নাম আইরিন কান্তা। কান্তা বলেই সবাই ডাকে। পড়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ট্রিপল ই তে পরছে। মা বাবার এক মাত্র মেয়ে। বাবা একজন ইন্জিনিয়ার আর মা একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এক মাত্র মেয়ে বলে অনেকটা আদুরে ও বলা যায়। তার কোন সাধ ই আপূর্ন রাখেন নি তারা। চলাফেরাতেও ছিল যথেষ্ট স্বাধীনতা।

গত কাল টি এস সির মোড় ধরে পুট পাথ দিয়ে যখন হাঁটছিলাম বন্ধুর বাসার উদ্দেশ্যে তখনই পাশ একটি গাড়ি এসে থামল। আমি আমার মতই হাটছি । ড্রাইভার নেমে এসে আমাকে বলে আপামনি আপনাকে ডাকছে। আমি ড্রাইভার কে চিনতে পারিনি। হকচকিয়ে গেলাম। কোন আপামনি ?
জিগ্গেস করতে কান্তা বের হয়ে আসল।

এর আগে তার সাথে আমার একবারই দেখা হয়েছিল । তখনই কেমন যে কাকতালীয় ভাবে তার সাথে মোটামুটি পর্যায়ের একটা ভাল সম্পর্ক হয়ে যায়। খুব বেশী ভাল ও বলা যাবে না।যতটুকু হলে আমরা কারো উপর সামান্য তম হলে অধিকার রাখতে পারি।আবার খুব ভাল বন্ধু ও যে ছিল তাও কিন্তু না।

যাই হোক কথায় কথায় তাকে ফুসকা খাওয়ার কথা বল্লাম । সেও রাজি হয়ে গেল। দুজনে মিলে ফুসকা খেলাম। এইবার যাওয়ার পালা। কান্তা যে বাসায় থাকে ঠিক এর দুবাসা পরেই আমার বন্ধুর বাসা। একই দিকে গন্তব্য হওয়াতে কান্তা আমাকে তার গাড়িতে লিফট দিতে চাইল। যাব কি যাবনা অতসব ভাবনা না ভেবে ভাবলাম সন্ধার পরে বাসে উঠা আমার জন্য অসম্ভব একটা কাজ। যেহেতু সে নিজ থেকে দিতে চাইল যাওয়াই যাই। রাজি হয়ে গেলাম।

কান্তাদের বাসায় যখন গাড়ি থামল তখন ঘড়িতে কাটায় কাটায় রাত ৮টা। গাড়ি থেকে নামার পর কান্তা এমন ভাবে রিকোয়েস্ট করল যে এক কাপ চা খেয়ে যাওয়ার জন্য আর না করতে পারলাম না।

ড্রয়িং রুমে বসলাম কান্তা নিজ হাতে চা বানিয়ে আনল। ওর মা ও আমাদের সাথে চা খাওয়ায় যোগ দিলেন। কিচুক্ষন পর এর ঘটনা যে এমন হবে তা আমি বা কান্তা কেউ ই ভাবতে পারিনি। আসলে সব কিছু হঠা[ ই ঘটে যায়।


কান্তার আম্মু চা খেয়ে ভেতরে গেলেন। আর তখনই একটা চি[কার। কান্তা আমার সামনে থেকে দৌরে চলে গেল। আমি ভালই ভয় পেয়েছিলাম। এর পর ভেতর থেকে কান্তার কান্নার শব্দ আমার কানে ভেসে আসল।

ধীরে ধীরে কান্তার দিকে এগিয়ে গেলাম, গিয়ে দেখি কন্তার মা সেঞ্চলেস হয়ে পড়ে গেছেন আর তার মাথার পেচন এর দিক দিয়ে রক্ত ঝড়চে। বাসায় আমরা তিনজন ছাড়া আর কেউ নেই। কান্তার বাবা ও ছিলেন দেশের বাইরে।

তখন নিজের ভেতর কেমন জানি একটা দ্বাযিত্ববোধ কাজ করা শুরু করল যা আমি অঘ্যার্য করতে পারিনি। আন্টিকে নিয়ে পাশের একটা মেডিকেল এ নিয়ে গেলাম, তারা যথারিতি অনেক গুলো টেষ্ট করাতে দিলেন। আর ব্লিডিং টা ও বন্ধ করলেন। আন্টিকে আই সি ইউ তে রাখা হয়েছে। কান্তা আর আমি বাইরে বসে ছিলাম। কান্তার মুখে বিষন্নতার কালো মেঘ ক্রমেই ঘনী থেকে ঘনীভুত হচ্ছে। রাত ১২টার মধ্যে ও আন্টির সেঞ্চ আসেনি। কান্তা আর আমি এখনও আগের জায়গায় বসে আছি।

কান্তাকে খুব একা মনে হল। তার পাশে এখন আমি ছাড়া আর কেউ নেই যে তাকে সামান্যতম সান্তনা দিতে পারে। আমি কান্তার মাথায় হাত বুলাতেই সেই হাউমাউ করে কেদে উঠল। সে আমার হাত ধরে কাঁদতে শুরু করল ফুফিয়ে পুফিয়ে। তাকে তখন আমর সান্তনা দেওয়া ছাড়া কিছুই বলার ছিলনা। আমি ঠিক এখন ও বুঝলাম না সে এইভাবে কাঁদল কেন??

রাত তিনটার দিকে আন্টির জ্ঞান ফিরেছে। কান্তা শুধু ভেতরে গিয়ে একবার আন্টিকে দেকে আসছে। আমি তখনও আগের জায়গাই বসা। কান্তা যখন বের হয়ে আসল তখন তাকে অনেক প্রফুল্ল লাগছিল।

দুজনে আবার পাশাপাশি বসে গল্প করতে লাগলাম, এর মাঝেই কান্তা কয়েকবারই ঘুমের ঘোরে নুইয়ে পড়তে চাইল। তৃতীয় বারের সময় বল্লাম তুমি চাইআমার কাধে মাথা রেখে ঘুমাতে পার। আগপাচ না ভেবে সেও ঘুমিয়ে পড়ল আর আমি ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকলাম ভোরের অপেক্ষায়।

আন্টি এখন সুস্থ আছে। বাসায় চলে আসছেন.......রাতটা পর করতে চাইলাম কিভাবে পার হলো কিভাবে !!!!

তবে এই ভেবে শান্তি পাচ্ছি যে একটা পরিবার, একটা মেয়ের মুখের হাসি , তাদের বিপদের সময় তাদের পাশে থাকতে পারাটাই আমার কাছের বড় আনন্দের মনে হয়েছে।

আল্লহ যেন আমাদের সকলকে সুস্থ ভাবে বাঁচিয়ে রাখেন, সকলের জন্য এই প্রত্যাসাই রইল।



১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×