কোশিক । ছেলে বেলা থেকেই কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক । মা বাবার তৃতীয় এবং শেষ সন্তান। তাই কোন কিছুতেই আদরের ঘাটতি ছিল না। শুধু ঘাটতি ছিল কোলাহলময় পরিবেশের ঘাটতি ছিল অনেক গুলো সম্পর্কের। কোশিক এখন একটা বিদেশী কম্পানীতে চাকুরি করছে।
রিতু । মা বাবার এক মাত্র মেয়ে। আদরের কিন্তু সব সময় বড় হয়েছে বন্ধুদের মাঝে। বন্ধুদের সাথে এত বেশী সময় ছিল যে মা বাবার সাথে ও এত সময় কাটানো হয়নি। রিতুর মা বাবা দুজনই খুবই ব্যস্ত। বাবা ব্যবসা করেন আর মা সমাজ সেবা। যদিও তিনি তার এক মাত্র মেয়েকে সেবা করার সুযোগ পান না।
রিতু মাত্রই পড়ালিখা শেষ করে বিভিন্ন জায়গায় সিভি দিচ্ছে চাকুরীর জন্য। কিন্তু কোথাও সে তার বাবার পরিচয় দিচ্ছে না, শুধু বাবার নাম লিখে দিচ্ছে।এমন কি বাবার পরিচিত কোথাও যাচ্ছে ও না।সে নিজের যোগ্যতায় চাকরী পেতে চাচ্ছে।
এমনি ভাবে রিতুর একটা সিভি এসে পড়ে কোশিক এর হাতে। সিভিতে রিতুর ছবি দেখেই আর রিতুর বাবার নাম দেখেই কোশিক তাকে চিনতে পারে। কোশিক একবার রিতুদের বাসায় গিয়েছিল যখন সে একটা পাক্ষিক এ পাটটাইম চাকরি করত পড়ালিখার পাশাপাশি।
কোশিক রিতুকে চেনার পর ও কিছুই বলেনি। যথারিতি রিতুকে একদিন ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হল। রিতু ইন্টারভিউ ও দিল। কিন্তু সে তার বাবা একজন সাধারন মানুষ হিসেবে বলে।
রিতুর চাকুরী হয়ে যায় কোশিক এর অফিসে। নিজের যোগ্যতা প্রমান কারার জন্য রিতুর একাগ্রচেষ্টা কোশিক এর মনে দাগ কাটে।
কোশিক আর রিতু দীর্ঘ ২ বছর একই অফিসে চাকরি করার পর রিতু চাকুরী ছেড়ে অন্য একটা কম্পানীতে জয়েন করেছে। তাও মাস ছয়েক হয়েছে । কিন্তু কোশিক কখোনো বলে উঠতে পারেনি সে রিতুকে পছন্দ করে।
এক ছুটির দিনে কোশিক একটা রেস্টুরেন্ট এ গেল ডিনার করার জন্য। ডিনারের শেষের দিকে ৭-১০ জন এর একটা গ্রুপ ডুকল রেস্টুরেন্ট এ। কোশিক রিতু দেখেই চিনে ফেল্ল। কিন্তু সে কি রিতুর সাথে কথা বলবে কি বলবে না এই ভাবনায় পড়ে গেল।
রিতু তার বন্ধুদের নিয়ে হো হুল্লুর এ মেতে উঠল। তাদের মাঝে কেউ কেউ আবার স্মোকিং জোন এ গিয়ে স্মোক করে আসছে। আর এই পালে যোগ হল রিতু নিজেও। রিতুকে অনেক উচ্ছসিত দেখাচ্চিল।
কোশিক এইটুকু বুঝতে পারছিল এখন রিতুর সাথে কথা বলা যাবে না, রিতু অস্বস্তি বোধ করবে। কোশিক ও ভাবতে পারেনি রিতু এই ধরনের হতে পারে। তাকে আজ পুরো ভিন্ন লাগছে , তাকে কোন ভাবেই গত ২ বছরের সাথে মেলাতে পারছিল না।
রিতুর উশৃঙ্খল চলাফেরা হলেও তাতে ছিলনা কোন আটিফিসিয়াল এর ছাফ। যা পুরোটাই কোমল মনে হচ্ছিল কোশিক এর কাছে। সে নিজেও শেষ কবে এই ধরনের কোমল আনন্দ করতে পেরেছে বন্ধুদের সাথে মনে করতে পারছিল না। তাই তার অপছন্দের হলেও রিতুর সাথে পুরোনো সম্পর্কের জের ধরে কথা বলা থেকে বিরত থাকল। আর অনেকটা টা নিরব আর নি:স্তব্ধতায় ঐখান থেকে পালায়ন করল।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




