somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাপিত জীবনের কথকতা-৮

১৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। আজ থেকে পনেরো বছর আগে ২০ ০ ৫ সালের ১ ৭ ই অগাস্ট সারাদেশের ৬৩ টি জেলায় একসাথে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল , তখন এখনকার মত এতো বেশি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আর সংবাদপত্র ছিলোনা । মোবাইল এর জমজমাট অবস্থা তখন কেবলমাত্র শুরু হয়েছিল , কিন্তু তারপরেও সারাদেশে খবর পৌঁছে যেতে সময় লাগেনি । আমার মনে আছে আমি তখন সবে এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির কোচিং করছিলাম , সেই প্রয়োজনেই প্রতিদিন ফার্মগেট এলাকায় যেতে হতো । তখন রেজাল্ট পাবলিশড হয়নি , আমাদের কোচিং সেন্টারের খুব কাছেই বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল , এক ভয়াবহ আতংকের মধ্যে আমরা দ্রুত ক্লাস শেষ করে তাড়াহুড়া করে বাসায় এসে পৌঁছাই, এই ঘটনার কয়েকমাস পর বরিশালে আদালত চত্বরে হামলায় দু জন বিচারপতি নিহত হন । তারপর আবারো একই কায়দায় আদালত চত্বরে হামলায় আরো বেশ কিছু মানুষ নিহত হয় । ওই বছরটা খুব কঠিন একটা সময় গিয়েছিলো , সত্যি ভয়াবহ একটা সময় পার করে এসেছি আমরা।

২। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পঁয়তাল্লিশ বছর পার হয়ে গেছে । বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দীর্ঘ একুশ বছর পর আওয়ামীলীগ দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে । পরে আবার সাত বছর বিরতিতে ২ ০ ০ ৮ সালের নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতাসীন হয় রাষ্ট্রক্ষমতায় । সেই থেকে আওয়ামীলীগ দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছে। কিন্তু এতদসময়কালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড নিয়ে কোনো সুপরিকল্পিত কিংবা সুবিন্যস্ত গবেষণা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক নামে একটি পদ তৈরী করা আছে বটে কিন্তু কোনো বৃহৎ আঙ্গিকে গবেষণা এখনো প্রতীয়মান হয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড এই উপমহাদেশের ইতিহাসে বর্বরোচিত ঘটনা গুলোর মধ্যে একটি। এর মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের কাঠামো পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের প্রভাব যেমন ছিল রাজনৈতিক তেমনি সামাজিক। আমার মনে হয় বিভিন্ন আঙ্গিকে এই হত্যাকাণ্ডের উপর একাধিক গবেষণা হওয়া উচিত । এবং তা হওয়া উচিত এমফিল কিংবা পিএইচডি লেভেলে । একনাগাড়ে নিবিড়ভাবে কোনো বিশিষ্ট অধ্যাপক কম ঐতিহাসিকের সুপারভিশন কয়েকজন ছাত্র বেশ কয়েক বছর ধরে গবেষণা করলে বহু তত্ত্ব ও উপাত্ত বের হয়ে আসবে যার মধ্যে দিয়ে উন্মোচিত হবে এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা , এর সাথে সরাসরি ও নেপথ্যের লোকজনের সংযোগ , বিদেশী শক্তির ইন্ধন , হত্যাকান্ড সংগঠন ও হত্যা পরবর্তী বাংলাদেশের গতিধারা বদলে দেয়া ও যারা এর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন তাদের কথা।

৩। বাংলাদেশের ইতিহাসে যতগুলো সরকার ক্ষমতাসীন ছিল তার মধ্যে সবচাইতে যুগান্তকারী সময়কাল হিসেবে ধরা যায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথম শাসনামলের সময়কালটা ( ১ ৯ ৯ ৬ -২ ০ ০ ১ । সেই সময় দেশের প্রভূত উন্নয়নের সাথে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা ছিল তা হচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা খুবই সহজ ছিল , জিনিসপত্রের দাম ছিল একেবারেই হাতের নাগালে , ওই সময়ককালেই চালের দাম কেজিতে ১ ০ টাকা চলে এসেছিলো যা এখনো মানুষের মুখে ফেরে ১ ০ টাকা কেজি চাল !!! সয়াবিন তেলের দাম ছিল ২ ৬ টাকা লিটার। অনেক বড় বন্যা পরিস্থিতির পরেও দেশের অর্থনৈতিওক অবস্থা ভালো ছিল । সেই সময় মন্ত্রিসভায় শাহ এ এম এস কিবরিয়া , এ এস এইচ কে সাদেক সহ অনেক গুণী ব্যাক্তির উপস্থিতি ছিল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ওই শাসনামলের শেষে শেখ হাসিনা স্বইচ্ছায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল , বাংলাদেশে ইতিপূর্বে কখনো শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তর হয়নি। সেক্ষেত্রে শেখ হাসিনা ইতিহাস তৈরী করেছিলেন। আমার মতে উনার জীবনের সেরা অর্জনগুলোর মধ্যে এটি একটি যে সমস্ত লোভ লালসার উর্ধে উঠে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর।

৪।


উপরের বিজ্ঞাপনটা ১৯৭৯ সালের একটি বিজ্ঞাপন। হটাৎ ফেসবুকে বিজ্ঞাপনটি চোখে পড়লো। এতে দেখা যায় ১৯৭৯ সালে জিগাতলায় জমির দাম কত সস্তা ছিল। এতে দেখা যায় প্রতি কাঠা প্রতি জমির দাম ছিল ৬,৫ ০ ০ /= টাকা। তাও আবার তিন কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য। তখন নবম গ্রেডের একজন কর্মকর্তার মাসিক বেতন ছিল ৭৫০ /= টাকা। মাসের বেতন থেকে ৩ ০ ০ /= করে বাঁচালে দুই বছরের টাকা জমিয়ে প্লট কেনা তার পক্ষে সম্ভব ছিল। এখন জিগাতলায় প্লটের দাম কাঠাপ্রতি কোটি টাকার ও বেশি , একজন কর্মকর্তা তার মাসের পুরো টাকা জমিও দশ বছরে তার পক্ষে প্লট কেনা সম্ভব হয় না , যদি সে কিনা সৎ থাকে। অসৎ হলে কথা ভিন্ন। কিন্তু ১ ৯ ৭ ৯ সালে সৎ ভাবে জীবনযাপন করেই সেটা সম্ভব ছিল। জীবনযাত্রার মান কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে !!!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৩৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×