somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন একটা মানবিক গল্প পড়ি। কিছু শিখি।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিয়ে বাড়ী।
চারিদিকে জমকালো সাজ্বসজ্জা।
বিশাল খানা-দানার আয়োজন।
পাশের বাড়ীর নেড়ী কুকুরটা তার আদরের দুই বাচচাকে নিয়ে মাঝে মাঝে ও বাড়ীতে যাচ্ছে আর সামান্য যা কিছু পাচ্ছে ছোট ছেলে-মেয়েদের ইটের আঘাত বা লাঠির বাড়ী হজম করে পেটে ঢুকাচ্ছে। আবার এসে নিজ অভিভাবকের বাড়ীর আম গাছের নীচে শুয়ে একটু ক্লান্তি দুর করছে। অপেক্ষায় আছে কখন খাওয়া দাওয়া শুরু হয়।
দুপুরে যথাসময়ে বাড়ী ভর্তি হয়ে গেল মেহমানে।
খাবার পালা শুরু হয়ে গেল।
এসব দেখে কুকুরের বাচ্চা দুটো বারবার তার মাকে বলতে লাগল, ওমা চল না ও বাড়ীতে।
মার ক্লান্তিটা কাটছিল না।
এই যাচ্ছি-যাব বলে সময় পার করছিল।
কিন্তু বাচ্চা দুটোর আর দেরি সহ্য হল না। তারা রওনা হল।
বেচারী মা কুকুরটা বাধ্য হয়ে পিছু পিছু ছুটল। আদরের সন্তানদের নিরাপদে আগলে রাখার জন্য।
হরেক রকম রাজকীয় খাবার, মনমাতানো লোভনীয় সুগন্ধ।
যে যতটুকু পারে সে তারচেয়ে বেশী নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করছে।
কেউ খাচ্চে, কেউবা আবার নষ্ট করছে। নষ্ট খাবার একটু দুরে নিয়ে কাজের লোকরা ফেলে আসছে।
আশে পাশের অনেক গুলো স্ব-জাতী ইতিমধ্যে সেখানে হাজির হয়েছে।
তাদের সাথে কামড়াকামড়ি করে ভাগ করে খাবার গুলো খাওয়া শুরু করল।
বাচ্চাদুটোর কিছুক্ষনের মধ্যে পেট ভরে গেল। সাধ্যের চেয়ে একটু বেশী খেয়েছে তারা।
এখন তাদের বিশ্রাম দরকার।
বারবার মাকে বলছে , মাগো চল যাই।
কিন্তু মা কুকুরটার পেট ভরলে ও চোখ ভরে নি।
সে সামন্য খাচ্ছে আর ঘুরছে। তার চিন্তা সব সময় এত ভাল খাবার পাওয়া যায় না। তাছাড়া বাচ্চাদের দুধ খাওয়াতে গেলে তার আবার তাড়াতাড়ী ক্ষুধা লেগে যাবে।
কিছুক্ষনের মধ্যে বিয়ে বাড়ীর খাওয়া পর্ব শেষ।
এত গুলো কুকুরের ভীড়ে আশে পাশে আর খাবার খুজে পাচ্ছেনা।
বাচ্চা গুলো আবার ও বলছে , মাগো চল যাই।
মা কুকুরটা সেই আগের মতই বলল, চল এইতো যাই।
মা কুকুরটা তারপর ও এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাধ্যহয়ে বাচ্চা দুটো মাকে রেখেই বাড়ীর পথে রওনা দিল।
আম গাছের নীচে এসে মনের আনন্দে বিশ্রাম নিচ্ছে।
কিছুক্ষন বাদে দেখল তাদের মা ডান পা বুকের কাছে ভাজ করে তিন পায়ে ভর দিয়ে অনেক কষ্ট করে খুড়িয়ে খুড়িয়ে আসছে।
বাচচা দুটো উঠে বসল। মা কাছে আসলে দেখল মায়ের পা ভেংগে গেছে। দুচোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। ব্যাথাতে কাতর। বাচ্চা দুটো মায়ের কষ্ট দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারল না।
কান্নাভরা কন্ঠে মাকে বলল, কি করে এমন হল মা?
মা প্রথমে বলতে চাইনি।
কিন্তু বাচ্চাদের পিড়াপীড়ি তে বলল, ঘুরতে ঘুরতে রান্নার পাতিলের নিকট চলে গেছি, অনেক খাবার দেখে লোভটা সামলাতে পারলাম না। এদিক ওদিক চেয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে পাতিলের মধ্যে মুখ দিয়ে খাওয়া শুরু করি। আচমকা কোথা থেকে একলোক এসে হাতের মুগুর লাঠি দিয়ে পায়ে আঘাত করল।
বাচ্চা দুটো সব শুনে বলল, মা তোমাকে না আমরা কতবার ডাকলাম, তুমিতো আসলে না। সময় মত আসলে এতবড় আঘাতটা পেতেনা।
মা চুপ করে রইল। ব্যাথায় ছটফট করতে লাগল।
মনে মনে বলল, আমার পাওনা টা না নিয়ে আমি আসি কিভাবে?

বাচ্চা দুটো আবার বলল, মা তুমি কেন লোক টিকে কামড়ে দিলে না?
মা কুকুরটা তখন ও নিঃচুপ!!!!

উত্তম ও অধম কবিতার কবি বেঁচে থাকলে হয়তো আফসোস করে কুকুরের কষ্ট দেখে কুকুরের ভাষায় বাচ্চাদের সান্তনা দিত এই লিখে যে,
"মানুষের কাজ মানুষ করেছে, আঘাত করেছে পায়
তাই বলে কি মানুষ কে কামড়ানো কুকুরের শোভা পায়?"


প্রিয় ব্লগার ভাই ও বোনেরা, গল্পটা পড়ে আপনার দৃষ্টিতে যদি কোন শিক্ষনীয় বিষয় থাকে, সেটাই গল্পের শিক্ষনীয় বিষয়।


৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×