বড় বেলায় এসে ছোট বেলার কিছু কথা চুপিসারে ইমো করে দেয়।আব্বুর দেয়া ১০ টাকায় নিজেকে রাজা মনে হইত।২টাকার চাটনি, ২টাকার ঝালমুড়ি, ২টা বস্তা আইসক্রিম দুই দুই ৪ টাকা,তারপরেও ২ টাকা পকেটে ! অস্থির ব্যাপার ।এই দুই টাকায় দেখতাম নতুন ভোরের স্বপ্ন !
মনে মনে ভাবি আর হাসি। ছোট্টবেলার ৫ টাকার সাথে বড় বেলার ৫০ টাকা মিলাই। মেলে না। ছোট বেলায় অল্পতেই খুশি থাকতাম। এখন ২০ টাকার বলের সাথে ৬৫০ টাকার জার্সি মেলাই।
মেলে না।
হিসেবে সেই ২০ টাকার খুশিই অনেক বড় ছিল।
বড় যত হচ্ছি, সংসার খেলার জটিল সমীকরন গুলো ভাবুক করে দিচ্ছে।আগে পরীক্ষার পাচটা নাম্বার সময়ে মাথা ব্যাথা কারণ হয়ে দাড়াতো। আর এখন সেমিষ্টারের পরীক্ষা গুলায় নিজেরে হাজি মহসীন মনে হয়। ২ সেট ( ৭০ নাম্বার!! ) ছেড়ে দিয়ে শুকুর আলহামদুলিল্লাহ বলছি কতবার!
হেসাব কেতাব নাই !
বড় ছোট, ছোট বড় মেলাতে মেলাতে এক পর্যায়ে আমলিয়াতের কথা মনে আসে। জীবনের ২৩ টা বছর তো পেছনে ফেলে আসলাম। অর্জন কতখানি?
মনে আছে ছোট বেলায়, এশার নামাজের সুন্নত ধরার জন্য দৌড়ায় ছুটে যাইতাম। এক ওয়াক্ত নামাজ ক্বাজা মানে ২ কোটি ৮৮ লক্ষ বছর জাহান্নাম ! ভয় লাগতো !
এখন, এশার ওয়াক্ত মানে অনেক লম্বা টাইম,পড়ে নেয়াই যাবে !
ব্যস্ততার ভীড়ে অনেক সময় সুন্নতের মর্যাদা নষ্ট হয়। খেয়াল করা হয় না।
আগের জুমআর নামায ছিল দুপুর ১২.৩০ টায় মসজিদে চলে যাওয়া। আর এখন, জুমার নামাজ মানে কোন মতে, ওযু টা করে , দৌড়ের উপ্রে হুজুরের আরবী খুতবা ধরা !
কত পার্থক্য !
জীবন সান্নিধ্যের এই পর্যায়ে এসে এই পার্থক্য গুলো অনেক ভাবায়।সন্তুষ্টির লেভেল টা বড় করে দিলে , অনেক অল্পতেই সুখ মিলে যায়।আবার পরকালের ভয়, ফীলিংস টা বড়িয়ে দিলে, আমলিয়াতেও অনেক পবিত্রতা উপলব্ধি করা যায়।
আমরা বড় হই, মরিচা ধরে যায় বিবেকের দেয়ালে।
খেয়াল করা হয় না।
আমাদের ছোট বেলাই এই বেলার থেকে অনেক ভালো ছিল।
আমাদের খেয়াল করা হয় না।