এখানে ঈশ্বর নেই। আদ্যন্ত ঈশ্বরহীন পৃথিবীর এ অন্ধ খঞ্জ গলি। পলেস্তারা খসা বয়োজীর্ণ দেয়াল দাঁড়িয়ে। রোয়াওঠা গুটিকয় দুঃস্থ কুকুর ইতিউতি। গৃহহীন লাল পোকাগুলো যথারীতি সাজাচ্ছে মিথ্যে রূপকথা। হৃষ্টপুষ্ট শাদা ঘোড়ার টমটমে চড়ে নববধূ বেশে এসেছিলো বাবার দেশ ছেড়ে। ফেরা হয়ে ওঠেনি আর। সুখসায়রে ভেসে কখন ফুরালো হাসি আর গানের বেলা!
গহীণ অরণ্যে পথ হারিয়ে বেমক্কা অতিকায় ভাল্লুকের মুখে পড়েছিলেন মহাশয়! উহু, সাহস হারায়নি এতোটুকু। উল্টো সম্মুখ সমরে আস্ত ভাল্লুকটাকেই পরাস্ত করেছিলো খালি হাতে। যুদ্ধে নিজের একটি হাতও খুইয়েছিলো বীর যোদ্ধা। ওই যে দৃশ্যমান হাতহীন ক্ষীণ একরত্তি শরীর।
কুচকুচে কালো বিশালকার হাতিকে নিছক কুকুর ছানার মতো পোষ মানিয়েছিলো আরেকজন। (সম্ভবত এখানকার সবচে’ খর্বকায় লোকটি।) আঙুলি হেলনেই ধেইধেই নাচতো হাতি। চুপ বললেই চুপ। শশশশ্!
এখানে মৃদু আলো। পাশের ল্যাম্পপোস্ট থেকে আসছে। পলেস্তারা খসা এই থুকথুকে দেয়াল সাক্ষী, মানুষের পৃথিবীর কতো না মিথ্যে রূপকথার! বাস্তবতা হলো, এর রেখা ধরে হেটে গেলে সোজা পৌছে যাবে নরকে। যেমন গিয়েছিলো তাদের পূর্বপুরুষেরা।
এখানে ঈশ্বর নেই, পৃথিবীর এ অন্ধ খঞ্জ গলিতে। ছিলো না কোনওকালে। শুধুই পলেস্তারা খসা জর্জর মলিন দেয়াল দাঁড়িয়ে, মৌন সাক্ষী, ঈশ্বরহীন পৃথিবীর মানুষের নরক যাত্রার।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৪৭