ছবি: Click This Link
শিল্পকলা একাডেমিতে একবার পুরনো সাদাকালো একটি সিনেমা দেখেছিলাম। নাম ঠিক মনে পড়ছে না। বিখ্যাত একটি গান আছে সেখানে, সাতটি রঙের মাঝে আমি মিল খুঁজে না পাই, জানিনাতো কেমন করে কি দিয়ে সাজাই। যতোদূর মনে পড়ে, সিনেমার নামও রঙ দিয়ে কিছু একটা ছিলো। নায়ক নায়িকা আজিম ও শর্মিলি আহমেদ। সেখানে প্রথমবার তরুণী শর্মিলি আহমেদের অভিনয় দেখি। খুব সম্ভবত ওতে টিন এজ অতিক্রম করেননি। এর আগে সিনেমা নাটকে ঢের অভিনয় দেখেছিলাম। কিন্তু সেগুলো সব দাদি নানি মা খালার ভূমিকায়। দক্ষ অভিনেত্রী নিঃসন্দেহে। প্রচুর কাজ করেছেন। সেই সাদাকালো ছবিতে প্রথমবার তরুণী শর্মিলি আহমেদকে দেখে প্রেক্ষাগৃহে খানিকটা চমকে উঠেছিলাম বললে অতিশয়োক্তি হবে না। আকর্ষণীয় একহারা গড়ন। পরিপাটি শাড়িতে বেশ স্মার্ট দেখাচ্ছিলো। সমসাময়িক অন্যান্য নায়িকাদের মতো দুর্ধর্ষ সুন্দরী তিনি তখনও ছিলেন না। হে হে হে। কিন্তু সিনেমায় কিশোরী বা সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণ তরুণী শর্মিলি আহমেদকে দেখেছিলাম। নিটোল দীর্ঘকায় শরীর। টানা টানা চোখ। গালে তিল।
শর্মিলি আহমেদ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। দীর্ঘ সময় অসুস্থ ছিলেন। অনেকদিন কোথাও দেখি না। সিনেমা নাটক অনুষ্ঠান সাক্ষাৎকার কোথাও নেই। আজ জানলাম, ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তার অভিনয় বাচনভঙ্গি ভালো লাগতো। দুয়েকবার টিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আলাপচারিতায় দেখেছি, অমায়িক বন্ধুবাৎসল হাসিখুশি। জানি না আর কি লিখবো! লেখার তেমন কিছু নেই আসলে। তাকে কখনও সরাসরি দেখার সৌভাগ্য হয়নি। এ সুযোগে বরং মজার একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। শর্মিলি আহমেদের ছোটো বোন ওয়াহিদা মল্লিক জলি। তিনিও অভিনয় করেন। বোনের স্বামী রহমত আলী। তিনিও স্বনামে বিখ্যাত অভিনেতা। বহুদিন আগে একবার এয়ারপোর্টে ভলভো বাসের টিকিট কাটতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, পাশে রহমত আলী দাঁড়িয়ে। ‘আরে আঙ্কেল! আপনি রহমত আলী না! টিভিতে বহুবার দেখেছি।’ উচ্ছাস প্রকাশ না করে পারলাম না। ‘হ্যা বাবা, আমিই রহমত আলী। ভালো আছো?’ স্মিত হেসে বলেছিলেন। অমায়িক সজ্জন মানুষ। উভয়ের বাস ধরার তাড়ায় আর কথা হয়নি। যাই হোক, শর্মিলি আহমেদের আত্মার পারলৌকিক শান্তি কামনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:২২