somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্যার সাঃ উঃ জাঃ মোহাম্মদ মোর্শেদুল কুতুব চৌধুরী মজনুর সাড়া জাগানো ১ম উপন্যাস

১২ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







ভালোবাসার রোদ বৃষ্টি -

বিস্তারিত এখান থেকে পড়ে নিন

----------সাঃ উঃ জাঃ মোহাম্মদ মোর্শেদুল কুতুব চৌধুরী মজনু,











প্রচ্ছদ:- চিত্রশিল্পী এম.এম. চৌধুরী


এ গ্রন্থ গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কপিরাইট আইনের আওতায় নিবন্ধনকৃত।ঔপন্যাসিকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এ বইয়ের কোন অংশ হুবহুু বা আংশিক পরিবর্তন করে প্রকাশ বা প্রচার কিংবা চিত্রনাট্য তৈরী করা দন্ডনীয় অপরাধ।

স্বত্ত:- ঔপন্যাসিক কতৃক সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত।













ইন্ডয়িার ব্যাঙ্গালোর শহর, যেন শিল্পীর আঁকা কোন ছবি। সে ছবির বুক চিরে নদীর মতো এঁেক বেঁকে নীরবে চলে গেছে এর রাস্তা ঘাট। সে রাস্তার দু’ধারে মুর্তির মতো দন্ডায়মান দালানের সারি, যেন শহরের পাহারার দায়িত্বের ভার আর কাউকে দিতে নারাজ। দালানের পেছনে আকাশ চুম্বী পাথরের পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে শোভা বর্ধনকারী রকমারি গাছের নিবিড় অরণ্য। রাস্তার দু’ধারে লাল-হলুদ ফুল বাগানের সারি। সে আকাঁবাঁকা মসৃণ রাস্তায় বিরামহীন গাড়ি চলার শহর ব্যাঙ্গালোর।শর্ট ড্রেসের তিলোত্তমারা হুড়োহুড়ি করে রাস্তা পারাপারের দৃশ্যের শহর ব্যাঙ্গালোর। উন্মনা হয়ে কদম বাড়ালেই রূপযৌবনা কোন যুবতীর সাথে ধাক্কা খেয়ে রোমাঞ্চিত হবার শহর ব্যাঙ্গালোর। চলন্ত লিফ্টে চেনা কোনো দিব্যাঙ্গনার উষ্ণ ঠোঁেট কিস বসিয়ে তৃষ্ণা মেটাবার শহর ব্যাঙ্গালোর। ব্যাঙ্গালোর দুপুরের পুকুরের মতো কখনো রোদে চিক্মিক্ করে, কখনো সর্পিলাকার ট্রেন চলার মতো ঝন্ঝন্ শব্দের বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে যায়, কখনো বরফ সাদা কুয়াশায় ঘুমিয়ে পড়ে, কখনো পাহাড়-চূড়া ও মেঘরাশি একাকার হয়ে মুগ্ধ করে কবি-শিল্পীদের।
আজ সকালে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল। তাই, সদ্যস্নাত নারীর চুল হতে যেভাবে ফোটায় ফোটায় পানি ঝরে, সেভাবে টুপটাপ পানি ঝরা গাছের নিচ দিয়ে সরকারী বাসখানি এগিয়ে চলছে, বিড়ালের মতো নরোম পায়ে দ্রুত গতিতে।
ততণে রাস্তার পাশের সাইনবোর্ড গুলো যেন উঁকি দিয়ে বলছে “কী? আমাকে চেননা নাকি? আমি ব্যাঙ্গালোরের ম্যাজিষ্ট্রীক।”
তখন গাছের ডালের ভেতর দিয়ে সূর্য উঁকি দিয়ে যেন আমাকে বলছে “আজো বসে আছো কেন? ওদিকে বাস, স্টেশানে পৌঁছতে আর দেরি নেই। ঠান্ডায় কুঁজো হবার পালা শেষ। ওঠো, বেরিয়ে এসো, তোমাকে উষ্ণ করে দিই।”
শ’খানেক প্লাটফর্মের মধ্য থেকে নিজের প্লাটফর্মটি বেছে নিয়ে বাস থামল। হুড় হুড় করে যাত্রীরা নামছে। আমিও নামার জন্যে এগুচ্ছি। কিছুটা যাবার পর, আমার সামনে বিশাল দেহের এক বৃদ্ধা দু’সিটের মধ্যে আঁটকে পড়ায় আমাকে হঠাৎ থামতে হলো। তখন পেছনের এক নাম নাজানা অচেনা সুন্দরী গাছ হতে ঝড়ে পড়া ফুলের মতো নরোম করে দ্রুত গতিতে আমার পেছনে এসে ল্যাপ্টে গেল। ওর নিজেকে সামলে নিতে সময় লাগল অনেকণ। তবে “সরি” বলতে ভুললো না। গাড়ি থেকে নেমে মোবাইলটা হাঁটুর দিকের পকেটে রেখে ব্যাগ হাতড়ে পেপার কাটিংটা বের করে ভার্সিটির ঠিকানাটা একবার দেখে নিলাম।এতোদিন মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে এমফিল-এ ভর্তি হবার কথা-বার্তা পাঁকা করেছিলাম। আজ মার্কসীট গুলো সাবমিট করে এ বিশাল ভার্সিটিতে পড়ার হিজিবিজি পথটা সহজ করে নেব। আজ যদি ফরেইনার না হয়ে ইন্ডিয়ান হতাম, তবে কেবল ছয় হাজার ডলার ডোনেশান জমা দিলে এ্যাডমিশান কনফার্ম হয়ে যেত। বিশ হাজার ডলার জমা দিতে হতো না। পেপার কাটিংটা ব্যাগের ভেতর রেখে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চারপাশে তাকালাম, দেখলাম- সাজানো গোছানো শহর। রাস্তার দু’ধারে উঁচু উঁচু সুন্দর নাম না জানা অচেনা কিছু গাছের হাস্যোজ্জ্বল চেহারা, যাদের ডালপালা গুলো নারীর মনের মতো দুলছে। অদূরে ঘনবন। মাঝে মাঝে ডালপালার ভেতর দিয়ে ঝিক্মিক্ আভায় সূর্য উঁকি দেয়। তার-ই নিচ দিয়ে রাস্তায় তীরের গতিতে চলমান গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। হাঁটতে হাঁটতে সামনে কিছুদূর এগিয়ে যাবার পর দেখলাম-কয়েক’শ ধাপের বিশাল একখানা সিড়ি।
নামার সময় মনে হলো-হরিণের মতো তিড়িং বিড়িং করে পাহাড়ের গাঁ বেয়ে নামছি। নেমে দেখলাম, আরেকটা শহরের শুরু। তবে এ শহরের দালান গুলো ঘেষাঘেষি করে দাঁড় করানো। যেন, পথচারীদের আঁড় চোখে দেখার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। চলতে চলতে মধ্যবয়সী একজনকে জিজ্ঞেস করতে-ই ইশারায় বুঝালেন-“আরো সামনে কিছুদুর এগিয়ে যেতে হবে।” শুনে কান্তি বেড়ে গেল শতগুণ। বোধ হয় ভদ্রলোক আদলের ভদ্দর নোকটি মোটামুটি ইংলিশ বুঝলেও বলতে পারেন না।
চলতে চলতে সামনে ইংরেজী জানা কাউকে জিজ্ঞেস করার জন্য পাওয়া যাবে কিনা ভাবছি। তখন সামনে ভোরের সূর্যের মতো উদিত হতে দেখলাম- আমার সমবয়সী সুন্দরী এক মেয়েকে। মেয়ে বললে ভুল হবে। মেয়েতো নয়, ঠিক যেন নীলচোখা কোনো পরী। সে নীল চোখের দৃষ্টিতে যেন শ’খানেক গল্পের ঝুড়ি। এমন আকাশ নীল চোখ, এমন মায়াবী মুখ, এমন সুন্দরী কোনো মেয়ে, জীবনে কখনো কোথাও দেখেছি বলে মনে হয় না। ওর দৃষ্টিতে আঘাত হেনে বিনীত ভাবে বললাম -“এক্সকিউজ মি, ডু ইয়্যু নো(উ) (হ)অয়্যার ইজ দ্যা সপ্তগিরি মনিপাল ই(উ)নিভার্সিটি?”
প্রশ্ন শুনে চোখ তুলে তাকালো। মেয়েরা পূর্ব-পরিচিতদের সাথে দেখা হলে যেভাবে হাসি মুখে কথা বলে, অনেকটা সেভাবে হেসে ইংলিশে যা বললো, বাংলায় তার অর্থ দাঁড়ায়-“ঠিক আমার নাক বরাবর সোজা আমার পেছন দিকে একটু তাকান, তাহলে-ই পেয়ে যাবেন।” বলে ফিক্ করে হাসলো। ওর এমন জবাব শুনে আমি থ’ হারিয়ে ফেলেছি। কারণ, এমন কলকন্ঠী চিত্তহারী মেয়ে যেমন আগে কখনো দেখিনি, তেমনি এমন ভিন্নধর্মী জবাবও কারো মুখে কখনো শুনিনি।
ফর্মালিটি রার্থে জানালাম “থ্যাংকস”।
ও তখন “ইয়্যু (ও)য়েলকাম” বলে আবারও একগাল হেসে ওর পথে পা বাড়াল। থ’ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে সুহাসিনীর যাওয়াটা দেখছি। “আজব মেয়েতো!!!”
হাঁটতে হাঁটতে ওর মুখে এতো হাসির কারণ খুঁজতে গিয়ে বুঝতে পারলাম- ও এতো হেসে আমাকে বুঝাতে চেয়েছে-“তোমার নাকের ডগায় ভার্সিটি, আর আমাকে কিনা জিজ্ঞেস করছ- ভার্সিটিটা কোথায় ? বোকা কোথাকার!!! ’’
সেদিন ভার্সিটিতে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে রুমে ফেরার পর থেকে মনটা কেমন যেন উসখুস করছে। বারেবারে দু’টি আকাশ নীল চোখ মনের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে।
যদি এ’জীবনে ওকে আরেকবার, কেবল আরেকবার দেখার সুযোগ পেতাম! এ জীবন ধন্য হয়ে যেত। কিন্তু ইন্ডিয়ার একশত বিশ কোটি মানুষের ভিড়ে ওকে খোঁজে পাওয়া অত সহজ নয়।
পরদিন, ডোনেশান জমা দিয়ে ভর্তি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাজ সেরে কাসে এটেন্ড করতে গিয়ে দরজার নিকটে এসে দাঁড়ালাম। ভাবছিলাম, সামনে দিয়ে এতো ছেলেমেয়ে আসা-যাওয়া করছে, কিন্তু সে মেয়েটির কোনো হদিস নেই কেন? তবে, মন বলছে-একদিন না একদিন ওর সাথে আমার দেখা হবেই।
ততণে কাস টিচারের অনুমতি পেয়ে কাসে ঢুকে পড়লাম। কাসে মেয়েরা সংখ্যায় নয়, আমিসহ ছেলেরাও সংখ্যায় নয়। সবাই আমাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। দেখতে দেখতে র্ফাস্ট বেঞ্চের ছেলেরা তাদের পাশে বসতে জায়গা করে দিল। কিছুণের মধ্যে লেকচারের প্রতি মনোযোগী হবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু বুঝার কোন সাধ্য নেই, এমন ভাব চোখেমুখে ফুটে উঠায় কাসটিচার জিজ্ঞেস করলেন-“আর ইয়্যু এ নি(উ) কামার?”
-“ইয়া স্যার।”
-“প্লীজ গি(ভ) ইয়্যুর ইন্ট্রুডাকশান।”
দাঁড়ালাম, চারপাশে একবার চোখ বুলালাম। কাসের সবার দৃষ্টি তখন আমার দিকে অভিনিবিষ্ট। বলতে শুরু করলামÑ“হাই এভরিবডি, গুড মর্নিং। আ(ই) এম মিষ্টার এম এম চৌধুরী। আ(ই) এম এ্যা বাংলাদেশী ন্যাশনাল। ই(য়ে)স্টার ডে আ(ই) হ্যাড্ এড্মিটেড ইন দিস ইউনিভার্সিটি। এন্ড আই (এ)ম নট (অ)নলি এ স্টুডেন্ট, বাট (অ)লসো আ(ই) এম এন আটির্স্ট, সিঙ্গার এ্যান্ড ড্যান্সার’’
পরপরই চারদিকে আতঁশবাজির শব্দের মতো অসংখ্য করতালির শব্দ হলো। কাসটিচার আমাকে “থ্যাংক্স” জানিয়ে হ্যান্ডশেক করে চলে গেলেন। এরপর এক এক করে আমার বেঞ্চের চারজনও পেছনের বেঞ্চের চারজন হ্যান্ডশেক করে নামধাম বললো। জবাবে তাদের “নাইচ টু মিট ইয়্যু।” বলে বসতে যাচ্ছিলাম। তখন দেখলাম-মেয়েদের অনেকে কৌতুহল ভরা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
তারপরও আমি তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে না দিয়ে বসে পড়লাম। তাই তাদের কারো সাথে হ্যান্ডশেক করা হয়নি। তবে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার সময় হঠাৎ মনে হয়েছে, তাদের মধ্যে এমন একজন আছে, যে আমার চেনা-জানা। তাই আবার তাকাঁলাম। দেখে বিজলীর মতো চমকে উঠলাম। দেখলাম, তাদের মাঝে সে মেয়েটিও আছে, যাকে গতকাল “ভার্সিটি টা কোথায়?” জিজ্ঞেস করার পর থেকে আরেকবার দর্শনের তৃষ্ণায় সারা-রাত কাতর ছিলাম। সে চিত্তহারী নীলচোখা পরী। ওকে কাসে দেখতে পেয়ে এক ঝাপটা জলের ছিটা পড়ার মতো মনের ভেতর ছড়িয়ে পড়ল এক অপরূপ সৌরভ, হৃদয়ে বয়ে গেল-বেলাভূমির সমীরণের মতো অপূর্ব এক আনন্দ হিল্লোল। মুহুর্তেই হৃদয়ে শুরু হয়ে গেল ধমাধম হাতুড়ি পেটানো। ওর দিকে তাকাতেই দেখলাম-ওর মুখে স্নিগ্ধ হাসি। তাই মৃদু হেসে হাতের ইশারায় ওকে “হাই” জানালাম। ও ও হাত নেড়ে “হ্যালো” জানালো। ওর সাথে আমার এই “হাই-হ্যালো”র খুশির স্্েরাত কাসে আমাকে আনমনা করল অনেকবার ও ভাসিয়ে নিয়ে গেল অনেক দূর।
তাই, পরদিন থেকে আমি কাসের রিগুলার স্টুডেন্ট। কাসে যাবার পথে দেখা হলে কাসের অন্যান্য সহপাঠীরা যেমন “হাই” কিংবা “গুডমর্নিং” বলে উইশ করে, তেমনি দেখা হলে নীল চোখা পরীটিও ঠিক তাই করে। তার চেয়ে বাড়িয়ে কিছু করে না। আমিও কোনদিন হাত বাড়িয়ে দিয়ে হ্যান্ডশেক করে নামধাম জেনে নিয়ে ফ্রেন্ডশীপের েেত্র আরো একধাপ এগিয়ে যাবার চেষ্টা করিনি। কিন্তু ওকে দেখলেই মনটা উসখুস করে, নিরালায় ডেকে কিছু বলতে ইচ্ছে করে। যেন শুধু কিছু নয়, অনেক কিছু। পাছে আবার ভয়ও হয়। আমার ডাকে নিরালায় কেন যাবে সে? সেকি আমার বিয়ে করা বৌ? বুঝে উঠতে পারছিনা, ঝড়ো হাওয়ায় নড়ে উঠা গাছের ডালের মতো মনটা আমাকে এভাবে নাড়ছে কেন? মনে মনে ঠিক করলাম, দেখা হলেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে হ্যান্ডশেক করব।“কেমন আছো” জিজ্ঞেস করব। নামধাম জেনে নেব। ইত্যাদি--------ইত্যাদি। কিন্তু শেষমেষ আর কিছুই করা হয় না। প্রতিদিনের মতো ওর দেয়া “হাই”এর জবাবে “হ্যালো” বলে ভদ্র লোকের মতো নীরবে চলে যাই। কিন্তু ইচ্ছে করে- আরেকটু বেশি সময় ধরে ওর সামনে থাকতে। ওর সাথে আরেকটু বাড়িয়ে কথা বলতে। বন্ধুত্ব কি সূর্যের আলো, না চাইতেই পেয়ে যাবো
কিন্তু অন্যদিকে, আমারও কিছু করার নেই। কারণ, ও আমাকে দেখলে হাসিমুখে কেবল “হাই”টা জানায়, তারপর জবাব শুনে নীরবে চলে যায়। তাই, এভাবে দিনের পর দিন আমাদের মধ্যকার “হাই” আর “হ্যালো” টা আমাদের দু’জনের বলা ও শুনার দায়িত্বে পরিনত হয় ও তা অনেক দিন ধরে আমাদের মাঝে চলতে থাকে। এভাবে আরো কিছুদিন পার হবার পর একদিন দেখলাম, সে প্রয়দর্শিনী নীল চোখা পরীর সাথে নীলচোখা পরীর মতন চোখ ধাঁধানো সুন্দর আরেকজন। তবে ওর চোখের মণি কালো। কিন্তু দেখতে সীমাহীন দারুণ।
কাসের অন্যান্য মেয়েরা দেখতে সুদর্শনা হলেও এ দুজনের পাশে এসে দাঁড়ালে, ওদের ম্লান দেখায়। সেসব মেয়েদের ভিড়ে এ দুজনকে দেখলে মনে হয়, তিমির রাতের কালো আকাশে জ্বাজল্যমান দু’টি উজ্জ্বল নত্র কিংবা একটি গাছের অনেক কলির মাঝে পুর্ণাবয়বে প্রস্ফুটিত দু’টি রক্ত জবা কিংবা হাতের দশটি আঙ্গুলের মাঝে আংটি পরানো দুটি আঙ্গুল কিংবা বিশাল হালকা নীল আকাশের বুকে লাল আভা মেশানো ২টি খন্ড মেঘ কিংবা বিশাল পুকুরে অনেক পদ্মের মাঝে সদ্য ফোটা দুটি পদ্ম কিংবা তাদের তুলনা কেবল তারাই, তাদের সাথে আর কারো তুলনা চলে না।
এরপর, একদিন ঘনিয়ে এলো সান ডে, এখানকার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। যেন দম ফেলার সুযোগ পেলাম। ভার্সিটির নিকটে পছন্দের বাসা খোঁজে পেতে ও সে বাসায় জিনিস পত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে আরো দু’দিন সময় নষ্ট হলো। দু’দিন কাস কামাই করে তৃতীয় দিন সকালে কাসে এসে জানতে পারলাম-গত মান ডে থেকে ল্যাব কাস শুরু হয়ে গেছে। আজ প্রথম পিরিয়ডে ছিল এনজাইমোলজীর কাস। কাস শেষে আনান্ড নামের এক বন্ধু বললো-“কেয়া জ্বি! কিঁউ ইতনা দিন কাসমে নেহি আয়া? তুমকো পাতা হ্যায় কেয়া-দু’ল্যাব কাস চলা গিয়া। কালছে রিগুলার কাসমে আউনা জ্বী। প্রেকটিক্যাল কাস মিস নেহি করনা।”
ততণে দেখলাম- আশেপাশের অন্যান্যরা ব্যাগ হাতে নিয়ে ওঠে দাঁিড়য়েছে। আনান্ড বললো “এ পিরিয়ড মে ল্যাব কাস হ্যায়, চলো জ্বী ল্যাব কাস মে।”
পরপরই দেখলাম ব্যাগ হাতে নিয়ে সবাই ছুটছে। তাদের অনুসরণ করে আনান্ডের সাথে কথা বলতে বলতে ব্যালকনি দিয়ে এগুচ্ছি। ব্যালকনির গা বেয়ে নিচ থেকে উপরে উঠে আসা ফুল গাছের ফুল হতে একটা হাল্কা মিষ্টি সৌরভ নাকে এসে লাগছে। চলতে চলতে গন্তব্যে এসে দেখলাম, খুব সুন্দর একটা রুম। মেঝেতে লাল গালিচা। কাঁচের জানালায় শুভ্র পর্দা। অন্য ধরনের এক শুভ্র দীপ্তির খেলা পুরো রুমে জুড়ে। এ-ই আমাদের ল্যাব। এটার শেষ প্রান্তে কাচেঁর চারটি বড় সাইজের আলমিরা, দেখতে দারুণ। ভেতরে নানান যন্ত্রপাতি, টেষ্টটিউব ও লিকুইড হরমোনের বীকারের সারি। চারপাশে চামেলী ফুলের সুবাসের মতো কোন রুম ¯েপ্রর সৌরভ। রুমটার বুকের মাঝে নানান নকশাঁয় সজ্জিত নয়টি টেবিল। সবক’টি টেবিলে পৃথক লাইটিং ব্যবস্থা ও সবক’টি টেবিলের উপর বিভিন্ন সাইজের খালি টেষ্টটিউব ও বিভিন্ন রঙ্গের জলীয় দ্রবণের বোতল।
আমাদের কাসে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা আমি সহ উনিশ জন। দশ জন মেয়ের জন্য পাঁচটা টেবিল। ৯ জন ছেলের মধ্যে আমি ছাড়া বাকি যে আটজন গত ল্যাব কাসে উপস্থিত ছিল, তাদের জন্যে চারটি টেবিল। তার মানে, আঠারো জনের ব্যবস্থা নয়টা টেবিলে হয়ে যাচ্ছে। বাকি এই আমি গতকাসে অনুপস্থিত ছিলাম বলে আমার জন্যে কোনো টেবিল নেই। কাসে ছাত্র ভর্তি হবার জন্য যে আরেকটি আসন খালি ছিল, সেটাতে কেউ ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত ল্যাবে আমার সাথে জুটি বাঁধবারও কেউ নেই। ভাবতে ভাবতে দরজার পাশের টেবিলের নিকটে এসে দাঁড়ালাম। দেখলাম, পাশের টেবিলে চারজন মেয়ে দাড়িয়ে গল্প-গুজব করছে। সেখান থেকে ব্যাগ হাতে নিয়ে নীল চোখা পরী আমার টেবিলের দিকে সবিনয়ে এগিয়ে এসে মুখে মৃদু হাসির রেখা ফুটিয়ে বিনীতভাবে বললো “হাই গুডমর্নিং, ইট্’স মি রোজরেগেনেহেম স্যাগেল্স শোর্নে।” বলে অকস্মাৎ হাত বাড়িয়ে দিল। আমি তো অবাক। যা আমাকে দিয়ে হয়নি, তা ওকে করতে দেখে। বোধহয় ও বুঝে গেছে, ও নিজে এভাবে চুপ করে থাকলে আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না। “সাহসী মেয়ে।”
ফর্মালিটি রার্থে আমিও হাত বাড়িয়ে দিলাম। হ্যান্ডশেক করলাম। খুব নরোম হাত। ফুলের পাপড়ির মতো নরোম। বললাম-“ইয়া গুড মর্নিং , আই’ম এম এম চৌধুরী।”
স্যাঃ-“পারড্ন মী। ফুলফর্ম প্লিজ।”
চৌঃ-“ফুল ফর্ম ইজ- মোহাম্মদ মীরহাদিয়ুন চৌধুরী।”
স্যাঃ-“ দ্যাট্স মীন ইয়্যু আ(র) মুসলিম?”
চৌঃ-“ইয়া,ইয়্যু?”
স্যাঃ-“র্স্মাট গাই, মী টু মুসলিম।”
ও মুসলিম শুনে ও ওর বহু প্রত্যাশিত নামটি জানতে পেরে খুশিতে আহাদিত হয়ে “ওয়াও নাইচ টু মিট ইয়্যু” বলে আবার হাত বাড়িয়ে দিয়ে স্যাগেল্স শোর্নের সাথে হ্যান্ডশেক করলাম। ও তখন রহস্যের হাসি হেসে জিজ্ঞেস করল-“ ইয়্যু আ(র) ফ্রম হুইচ প্লেইচ?”
ততণে কাসের অন্য সুন্দরীটি স্যাগেল্স শোর্নের পাশে এসে দাড়িঁয়েছে। আমি স্যাগেল্স শোর্নের প্রশ্নের জবাবে জানালাম-“আই (এ)ম ফ্রম বাংলাদেশ।”
তখন স্যাগেল্স শোর্নের পাশের সুন্দরী বলে উঠল-“ওয়াও বাংলাদেশ!”
আমি জানালাম-“ইয়া”।
তখন নাম না জানা সুন্দরীটি বললো-“বাংলাদেশ ইজ আওয়ার নাইবা(র) কান্ট্রি।”
প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম-“দ্যাটস মিন ইয়্যু আ(র) ইন্ডিয়ান?”
ও বললো-“ইয়া এক্সাক্টলি। বাট স্যাগেল্স ইজ ফ্রম রাশিয়া।” মনে মনে বললাম-“তাইতো দেখতে ও এতো সুন্দর, এতো সহজ সরল ও এতো এ্যাডভান্স।” নাম না জানা সুন্দরীর উদ্দেশ্যে বললাম-“মে আই নো ইয়্যুর ন্যাম?”
সাঃ-“অফ কোর্স, মাই ন্যাম ইজ সাঞ্জি মিশিরজীর। ইয়্যুর ন্যাম প্লীজ।”
স্যাগেল্স আমার হয়ে জানালো-“হিজ নেমিজ এম এম চৌধুরী। ইয়্যু ক্যান কল হিম মিস্টার চৌধুরী।”
তিনজনের মুখে হাসির সামান্য ঢেউ খেলে গেল। তখন সাঞ্জিকে ও কোন ধর্মের অনুসারী জিজ্ঞেস করতেই সাঞ্জি মিশিরজীর জানালো-“আই’ম ফ্রম হিন্দু ব্রাহ্মণ ফ্যামলি।’’ এরপর সাঞ্জি মিশিরজীর হাত বাড়িয়ে দিয়ে হ্যান্ডশেক করে বললো - “নাইচ টু মিট ইয়্যু।”
-“সেম টু ইয়্যু।”
-“থ্যাংকস।”
-“নো ম্যানশান, ইয়্যু আ(র) ওয়েলকাম।”
ঠিক তখনি ফরমাল ড্রেসের উপর এ্যাপ্রোন পরিহিত এক ভদ্রলোক ল্যাব কাসে ঢুকে চশমার ফাঁক দিয়ে একবার আঁড়চোখে সবাইকে দেখে নিলেন। পুরো রুম জুড়ে স্তব্ধতা নেমে এলো। সঞ্জি মিশিরজীর হিন্দিতে বললো-তিনি আমাদের ল্যাব ডেমোনেস্ট্রেটর।” সাঞ্জি মিশিরজীর ও স্যাগেল্স শোর্নের উদ্দেশ্যে হিন্দিতে বললাম-“কিন্তু তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে- তিনি কোনো এক কালে গান্ধীজির দাদা ছিলেন।”
আমার কথা শুনে ওরা খিল্ খিল্ করে হেসে উঠল, বললো-“ইয়্যু আ(র) সু ফানী গাই।”
জবাবে “থ্যাংক্স” বলে আমি ডেমোনেস্ট্রেটর স্যারের চোখে পড়লাম। উনি চশমার ফাঁক দিয়ে বিস্ফোরিত নেত্রে আমার দিকে তাকালেন। আমি ভয়ে জড়সড় হলাম। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন আমার দিকে, যেন একটা অজগর ফণা তুলেই এগিয়ে আসছে। এসে থামলেন, গম্ভীর স্বরে বললেন-“ আ(ই) থিংক ইয়্যু আ(র) এ্যা নিউ কামা(র) এ্যান্ড দি(স)(ই)জ ইয়্যুর ফার্স্ট ল্যাব কাস। ইফ্ এনসার ইজ ইয়েস, দ্যান ফ্রম টুমরো ইয়্যু হ্যব টু ব্রীং ইয়্যুর ইউনিফর্ম। আদা(র)ওয়াইজ ইয়্যু কান্ট এন্টা(র) ইনসাইড অফ্ দিজ ল্যাব কাস। অকে? ইয়্যু(র) ইন্ট্রুডাকশান প্লিজ।”
ইন্ট্রুডাকশান শুনার পর তিনি সাঞ্জি ও স্যাগেলস্রে দিকে তাকালেন। ইংলিশে বললেন-“এক টেবিলে তোমরা তো তিনজন। তোমাদের দুজনের কারো কি কোনো অসুবিধে হবে?” ওরা হিন্দিতে জবাব দিল-“না স্যার, আমাদের কোনো অসুবিধে হবে না।” এরপর ডেমোনেষ্ট্রেটর স্যারের সামনে স্যাগেল্স আমাকে (ইংলিশে) জিজ্ঞেস করল-“আমাদের সাথে এক টেবিলে এক্সপেরিম্যান্ট করতে তোমার কি কোনো আপত্তি আছে?”
সানন্দে জানালাম-“আমার কোনো আপত্তি নেই।”
আমাদের তিনজনের প্রত্যেকের জবাব শুনে ডেমোনেষ্ট্রেটর স্যার লেজ গুটিয়ে চলে যাবার মতো চলে গেলেন। মনের ভেতর স্বস্তির ঠান্ডা হাওয়া নেমে এলো, এ দুজনকে ছেড়ে অন্য টেবিলে যেতে হয়নি বলে।
হঠাৎ আনমনা হয়ে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকালাম। চোখে পড়লো- খাঁ খাঁ রোদের ঝিম ঝিম দুপুর। কৃষ্ণচূড়ার ডালপালা ভরে গেছে লালের সমারোহে। অদূরে মহুয়া, শাল ও বটপিপুলের বন। তারই বাম থেকে ডান দিকে সুদীর্ঘ একটা আবছা পাহাড়ের খেই হারান রেখা। ভালো করে তাকালে কেবল শিল্পীদের চোখে ধরা পড়বে, সেখান থেকে সবুজ পাহাড়ের শুরু। সেসব পাহাড়ের মাথায় ছোট-বড় গাছের আস্তরন। তাই, পাহাড়ের মাথা দেখা যায়না। শিল্পীর চোখে দৃশ্যটা দারুন।
আনমনা ভাব কেটে গেলে ওদের দুজনের দিকে তাকাতে গিয়ে দেখলাম- স্যাগেলস কনুইয়ের গুতো দিয়ে সাঞ্জিকে আমার দিকে তাকাতে বলছে। সাঞ্জি নুইয়ে স্কেল দিয়ে খাতায় লাইন আঁকছিল। এবার মাথা তুলে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইংলিশে যা বললো, বাংলায় তার অর্থ দাঁড়ায়-“প্রথমদিন থেকে সবক’টি বিষয়ের ল্যাব কাসে আমরা দুজন জুটি বেঁধে এক সাথে এক টেবিলে কাজ করে আসছি। তুমিও কি আজকের মতো পরবর্তী সব কাসে আমাদের সাথে থাকবে? তাহলে না পাওয়া এক্স পেরীম্যান্ট গুলো করার কাজে, আমরা তোমাকে সাহায্য করব।”
না চাইতেই সাহায্য করবে শুনে, মনের সিঁড়ি বেয়ে ওদের দু’জনের প্রতি এক অন্য ধরনের কৃতজ্ঞতা নেমে এলো। কারণ, এ ধরনের প্রস্তাব কিংবা সাহায্যের আশ্বাস ইতিপূর্বে আমার বন্ধুদের কেউ আমাকে দেয়নি। তাই ওদেরকে “থ্যাংক্স থাকব” বলার পূর্বে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলাম-“ কেন এদের টেবিলে থাকব না।”
ওদের টেবিলে থাকব বলায়, সাঞ্জির বাড়িয়ে দেয়া দু’হাতে স্যাগেল্স চাপড় মেরে খুশির বহিঃ প্রকাশ করলো।
কিন্তু এর ঠিক পরদিন ঘটালাম অঘটনটা। ভুলে গিয়েছিলাম, ওদের কাছে দেয়া কথাটা রাখতে। আনান্ডের টেবিলের মোহিত প্রাসাদ ছিল অনুপস্থিত। তাই আমি ভুলোমনা আনান্ডের অনুরোধে তাকে সঙ্গ দিতে ল্যাব করতে গিয়েছিলাম, তার টেবিলে। তবে যাবার পর পরই মনের ভেতর একটা অপরাধ বোধ জন্ম নিয়েছিল। যখন দেখলাম-বলিহারি, বরারোহা, বিধূবধন প্রিয়দর্শিনী স্যাগেল্স শোর্নে ইশারায় আমায় ডাকছে। ওর ডাকে কি না গিয়ে পারি !!!
তাছাড়া, এ আনান্ড গতকাল আমাকে তার টেবিলে ল্যাব করতে ডাকেনি। মোহিত থাকলে আজও ডাকত না। তাই আমার উচিত, স্যাগেলসের টেবিলে গিয়ে ল্যাব করা। কিন্তু তখন আমাকে স্যাগেলস্দের টেবিলের দিকে যেতে দেখে পাশের টেবিলের দু’জন ছেলে বাজে মন্তব্য করে হেসে ওঠায় থামতে হলো, যাওয়া আর হলো না। তখন ইচ্ছে করছিল, পাশের টেবিলের দুজনের গালে প্রচন্ড জোরে দু'টো থাপ্পড় বসায়। কিন্তু, এদেশে থাকার ভিসা ক্যান্সেল হবার ভয়ে দপ্ করে জ্বলে ওঠা আগুন ধীরে ধীরে নিভিয়ে রাখতে হলো। পরদিন ল্যাব ছিল তৃতীয় ও পঞ্চম পিরিয়ডে। দ্বিতীয় পিরিয়ড শেষে সাঞ্জি আমাকে কি যেন বলতে চেয়ে থেমে গেছে। তৃতীয় পিরিয়ডের ল্যাবে ওদের দুজন আমার সাথে নিজ থেকে কোনো কথা বলেনি। কিন্তু পঞ্চম পিরিয়ডে আমার উপর থেকে কালো মেঘের ছায়া সরে যাওয়ার একটা অদৃশ্য হাওয়া নেমে আসার আভাস পেলাম, যখন সাঞ্জি এক্সপেরীম্যান্টের খাতায় কলম চালাতে চালাতে ব্যস্ততার মাঝে (ইংলিশে) জিজ্ঞেস করলো-“তুমি যে হুন্ডায় করে কাসে আস, সে হুন্ডাটা কার?”
প্রত্যাশিত প্রসঙ্গের বাইরে প্রশ্ন করায় স্বভাবত একটু অবাক হলেও দৃঢ় কন্ঠে বললাম-“সেটা আমার।”
সাঃ-“কখন কিনেছিলে?”
চৌঃ-“আজ হতে দু’বছর আগে।”
সাঃ-“তারপরও দেখতে এতো নতুন কেন? ”
চৌঃ-“বোধ হয় সেটা আমার বলে।”
হাসার কথাতেও সাঞ্জি হাসলো না বরং চুপচাপ থেকে জিজ্ঞেস করলো-
“আচ্ছা কাল আমাদের সাথে ল্যাব করোনি কেন?”
চৌঃ-“আমি তোমাদের টেবিলে ল্যাব করতে আসছিলাম, কিন্তু পথিমধ্যে আনান্ডের অনুরোধ উপো করতে না পেরে ওর টেবিলে চলে গিয়েছিলাম। ”
সাঃ-“সে না হয় বুঝলাম। কিন্তু তারপরও যখন স্যা ইশারায় তোমায় ডাকল, তখন স্যাকে বলেছি-“ওকে ডেকোনা, ও আসবে না।” কিন্তু স্যা দৃঢ় কন্ঠে বলেছিল-“ওর ডাকে তুমি আসবে, আর যদি না আস, তবে তোমার সাথে আর কোনোদিন কথা বলবে না।”এদিকে হলো কি,ওর ডাকে তুমি আসনি। তাই, ও আমার কাছে হেরে গিয়ে তোমার উপর রেগে আছে। এবার কি করবার করো।”
রোজরেগেনেহেম স্যাগেল্স শোর্নের দিকে তাকালাম। দেখলাম ওর বিধুবদন মুখখানি কেমন যেন বিটকেল, বিমনা। মনে মনে বললাম-আমার উপর যখন রেগেছে, তখন আমাকেই ওর রাগ ভাঙ্গাতে হবে। না হয় আজকের মতো কোনোদিন আমাদের তিনজনের কারো চেহারায়-কাজে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবেনা। আমার হৃদয়ের বারোটা বেঁজে যাবে।
স্যাগেলস ততণে টেস্টটিউব চোখের সমান্তরাল হতে নামিয়ে কলম হাতে নিয়ে এক্সপেরীম্যান্টের খাতায় প্রাপ্ত লণ লিখছে। এরপর দ্রবণ পূর্ব টেষ্টটিউবটি হাতে নেয় সাঞ্জি। ও পর্যবেণ করার পর আমি ওর হাত থেকে টেস্টটিউবটি নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখে স্ট্যান্ড রেখে দিয়ে প্রিয়দর্শিনী স্যাগেলসের হাত থেকে কলমটি ছোঁ মেরে কেড়ে নিয়ে বললাম-“ফ্রেন্ড আ(ই) এম রিয়েলী সরি ফ(র) মাই ইয়েস্টা(র) ডে’স মিসটেক।’’ তখন ও মাথা না তুলে খাতার উপর যেভাবে হাত রেখেছিল, সেভাবে রেখে দিয়ে জবাব দিল “ইটস্ অকে ম্যান।’’ ওর জবাব শুনে অবাক হলাম। এ যেন ঠোঁটে হাসি, অন্তরে কান্না রাশি রাশি।
চৌঃ-“দ্যান (হো)ওয়াই আর ইয়্যু নট টকিং প্রপা(র)লি উ(ই)থ্ মি।”
স্যাঃ-“(হো)ও টুল্ড?”
চৌঃ-“সাঞ্জি (ই)জ টেলিং।”
স্যাঃ-“শী (ই)জ এ্যা লায়া(র), ডোন্ট বিলীব হা(র)।” বলতে বলতে পেন্সিল দিয়ে লিখতে শুরু করেছে। সাঞ্জি স্যাগেল্সের কথা শুনে হাসছে। আমি আমার কলমটা স্যাগেল্সের দিকে এগিয়ে দিয়ে ওর খাতার উপর রাখলাম। কিন্তু ও সেটা ধরেও দেখল না। তখন ওর হাত থেকে ওর পেন্সিলটা কেড়ে নিয়ে বললাম-“(হো)ওয়াত হ্যাপেন্ড মাই ডিয়ার।”
স্যাঃ-“নাথিং ম্যান (মাথা না তুলে)।”
চৌঃ-“(হো)ওয়েন উ(ই)ল ইয়্যু টক উ(ই)থ মি প্রপা(র)লি? ”
স্যাঃ-“ফ্রম টুম্রো।”
চৌঃ-“(হো)ওয়াই নট ফ্রম টুডে?”
স্যাঃ-“বিকজ আ(ই) ওয়ান্ট টু পানিশ ইয়্যু ফ(র) ইয়েস্টা(র) ডে’স মিসটেক।”
চৌঃ-“ইজ ইট!”
স্যাঃ-“ইয়া, (হো)ওয়াই নট?” বলে ঝৎ করে মাথা তুলে আমার দিকে তাকালো একবার। এমন ভাবে তাকালো, যেন একেবারে আমার ভেতরটা পর্যন্ত দেখে নেবে। তাই কেপেঁ উঠলাম। তারপর, আমিও সাহসের তোয়ালে দিয়ে মনকে মুছে নিয়ে তাকালাম ওর চোখের দিকে। আমিও দেখে নিতে চাই-ওর ভেতরের শেষ প্রাপ্ত অবধি। কী এমন আছে ওর কাছে! কেন ওকে এতো দারুণ লাগে? কেন ওর উপস্থিতি হৃদয়ে ঝড় তুলে, আমার সবকিছু উলট পালট করে দেয়? কেন ওর নীরবতা, হৃদয়ের দুঃখ সহ্যের সীমা ভেঙ্গে দেয়, কান্না নামে?
** ততণে আমার বুকের ভেতর বাদ্যের ঢাং ঢাং বাঁজনা বাঁজা শুরু হয়ে গেছে। তারপরও দৃষ্টি না সরিয়ে তাকিয়ে রইলাম-ওর নীল চোখের দিকে। দেখলাম, ওর নীল চোখ জ্বল্ জ্বল্ করছে। মনে হলো- ওর নীল চোখ যেন নীল চোখ নয়, যেন গভীর নীল সাগর। যে সাগরের পানির দিকে অপলক চেয়ে থেকে, খোঁজে চলেছি কোনো হারিয়ে যাওয়া ঘটনা। যে ঘটনার নায়ক আমি, নায়িকা সে। পড়ন্ত বিকেল, নরোম সবুজ ঘাস। সে ঘাসের উপর বসে অনন্ত কাল ধরে আমরা দু’জন, সাগরের পানিতে ভাসিয়েছি আমাদের দু’জনের প্রতিচ্ছবি। দুজনের বেঁচে থাকার স্বপ্ন, দুজনের ভালোলাগা, দুজনের ভালোবাসা। প্রতিচ্ছবি গুলো ভেসে ভেসে পরতে পরতে মিশে গেছে অনন্ত কাল ধরে সে নীল সাগরের পানির স্রোতে। সেই মিশে যাওয়া প্রতিচ্ছবি গুলো বোধ হয় জমে আছে ওর চোখের গভীর নীল-এ।**
বিজলীর মতো তড়িৎ গতিতে অর্থহীন কীসব ভাবনা যেন আমার মনের সমস্ত আকাশ জুড়ে খেলে গেল। আনমনা ভাব কেটে যাবার পর দেখলাম, চারপাশের সবকিছু ঠিকঠাক আছে। স্যাগেল্সকে দেখলাম আমার কলম দিয়ে সুন্দর করে লিখতে, দেখে মনে হলো- ওর লেখা প্রতিটা বর্ন যেন আকাশের এক একটি তাঁরার চেয়েও বেশি উজ্জ্বল শুভ্র দ্যুতি ছড়াচ্ছে। তাই নিজের অজান্তে বলে উঠলাম-“সু নাইচ” স্যাগেল্স চেহারায় গম্ভীর ভাব ফুটিয়ে তুলে জিজ্ঞেস করলো-“(হো)ওয়াত ইজ নাইচ?”
চৌঃ-“ইয়্যু, ইয়্যুর হ্যান্ড এ্যান্ড ইয়্যুর হ্যান্ড রাইটিং।”
ও তখন অভিভূত হয়ে বোকার মতো আমার দিকে তাকালে, ওর চোখে আমার চোখ পড়লো। মনের অজান্তে চোখের একটা ইশারা ওর দিকে ছুড়ে দিলাম। সে ইশারায় ওর মুখ হঠাৎ করে শুকিয়ে গেছে। কপালে জমেছে বিন্দু বিন্দু ঘাম। থর থর করে কেঁপে উঠেছে ওর দু’ঠোঁট। ওর গভীর ভাষার চোখ দুটোতে ফুটে উঠেছে রাজ্যের শংকা। বুঝতে পারিনি ,আমার সে ইশারায় কি অমন ছিল?
চোখ বুজে আকাশ দিগন্ত কিছুই ভাববার আগে সাঞ্জি আমাদের দুজনের দিকে চেয়ে থেকে বলে উঠলো-“ফিল্ম কা কাহানী শুরু হুগেয়ী মামু।”
ততণে লজ্জায় শংকায় আমিও ঘেমে উঠেছি। অনেকণ চোখ তুলে ওদের দুজনের কারো দিকে তাকাতে পারিনি। পরণে মনে মনে বললাম-“যাহ শালার, বাংলার পতাকা উড়িয়ে দিয়েছি আকাশে। সেটা পত্ পত্ করে উড়ছে উড়–ক। আমি জনম জনম ধরে দু'চোখ ভরে দেখব। এই না হলে আমি বাঙ্গালী!!! ”
পরদিন ছিল রবিবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এদিন, স্বভাবত সকালের রাস্তা-ঘাট ফাঁকা থাকে। বিকেলে নামে মানুষ ও গাড়ির ঢল। চাকুরীজীবীরা পরিবার পরিজন নিয়ে শো’ দেখে। ঘুরে ফেরে। পরিবার পরিজনের সাথে সময়টা উজাড় করে। যাদের পরিবার পরিজন নেই, তারা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরাফেরা করে। আমি তাদের উল্টো। সারাদিন না হয় বিছানায় নি®প্রাণ, না হয় ক্যানভাসে রং বিলাবার মাঝি। কিন্তু অন্যদিনের মতো, আজ আমার চোখে ঘুম নেই, ছবি আঁকাতেও মন নেই। রাস্তার ধারের দোকান পাটের মতো চুপচাপ শুয়ে আছি বিছানায়। মাথার ভেতর শ’খানেক চিন্তা ভোঁ ভোঁ করছে মৌমাছির মতো। সমস্ত চিন্তা জুড়ে আছে আকাশ-সাগরের নীল চোখা নারী, স্বাস্থ্য নিটোল বর্ষা বিভোর দেহবল্লবী পরী স্যাগেল্স শোর্নে। ইচ্ছে করছে-ওর হোস্টেলে ছুটে যায়, দেয়াল ভেঙ্গে ঢুকে পড়ি, ওর মুখটা বুকের মাঝে চেপে ধরি।
এতো রূপ, এতো রং, এতো আকর্ষণ কোনো কালে কোথাও আমার চোখে পড়েছিল কিনা সন্দেহ। পরদিন ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে আকাশ-কুসুম ভাবতে ভাবতে উপরে উঠার পথে দেখলাম-সাঞ্জি ও স্যাগেল্স সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসছে। বুক জুড়ে প্রজাপতির ডানা জাপটানোর তালে ঢাং ঢাং বাঁজনা বাঁজা শুরু। দেখা হতেই হাত উঁচিয়ে “হাই” দিলাম। ওরা দু’জন “হ্যালো” বলতে বলতে এগিয়ে এসে এমনভাবে শক্ত করে হাত চেপে ধরে হ্যান্ডশেক করলো, যেন ওদের সাথে গত কয়েক বছর ধরে দেখা হয়নি, অথচ দেখা হয়নি মাত্র একদিন। ওদের এমন আন্তরিকতা পূর্ণ আচরণ আমাকে মুগ্ধ করলো এবং যে অভিমানী স্যাগেল্স গত পরশু আমার সাথে ঠিকমত কথা বলেনি, আজ আমাকে কাছে পেয়ে অন্য ধরনের খুশি খুশি লাজুক ভাব ওর চেহারার মাঝে রং ধনুর সাত রং এর মতো ছড়িয়ে পড়েছে, আসলে দুটো মনের মাঝে মিল হলে এমনই হয়। এরপর সাঞ্জি আমাকে একপাশে টেনে নিয়ে গিয়ে কিছু বলতে চাইলে স্যাগেল্স বার বার বাধা দিল। কিছুই বুঝতে না পেরে চুপচাপ ওদের তামাশা দেখছি-হাসছি। স্যাগেল্সের চোখে-মুখে কেমন যেন লজ্জার ও শংকার লাল-নীল মেঘ। শেষে সাঞ্জিকে থামাতে ব্যর্থ হবার শংকায় নিরাশা বুকে চেপে দিব্যাঙ্গনা স্যাগেল্স লজ্জার মেঘে ভেসে সিঁড়ি বেয়ে নিচে চলে গেল। তা দেখে হাসিতে ঢেউ তুলে সাঞ্জি হাসলো অনেণ। আমাকে একাকী কাছে পেয়ে সাঞ্জি বললো-“কাল সারাদিন স্যা আমাকে জ্বালিয়ে মেরেছে। কাল কাস না থাকায়, তোমার সাথে আমাদের দেখা না হওয়ায়, আমাদের দুজনেরই মন কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছিল। তারমধ্যে স্যাগেল্সের ত্রৈলোক্যাধিক।”
চৌঃ-“কেন?”
সাঃ-“কেন কি গত পরশু ও তোমার সাথে রাগ করে কথা না বলে তোমাকে কষ্ট দিয়েছিল।ওর মনে হয়েছে- ও তোমাকে খুব বেশি কষ্ট দিয়েছে। যা ওর উচিত হয়নি। তুমি এতো অল্প সময়ের মধ্যে ওর এতো ভালো বন্ধু, তোমার মতো কাউকে কি এতো কষ্ট দেয়া যায় ! বলতে বলতে ওর দু'চোখ জলে ভরে গিয়েছিল। অনেণ ওকে থামাতে পারিনি। পরে হোস্টেলের অন্যান্য রুমের কয়েকজন সিনিয়র আমাদের রুমে এলে, তাঁদের সাথে হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠে, গল্প করতে করতে ওর মন ভালো হয়ে যায়।”
সাঞ্জির মুখে স্যাগেল্সের ব্যাপারে এতো কথা শুনতে শুনতে আনমনা হলাম। আমাকে কষ্ট দিয়ে অনুতপ্ত হবার কথা শুনে ভালোলাগার আতিশয্যে অনেক দূর ভেসে গেলাম। ওদের প্রতি অজানা কোন কৃতজ্ঞতায় সাঞ্জির হাত দুটো দু’হাতে চেপে ধরে বললাম-“ফ্রম টুডে বুথ অফ ইয়্যু আ(র) মাই বেষ্ট ফ্রেন্ড।” কথাটা বলার পর (নিচের) সিড়ির দিকে তাকাতে গিয়ে দেখলাম, স্যাগেলসকে ঝৎ করে সরে দাঁড়াতে। ওকে ওভাবে সরে যেতে দেখে কিছুটা সাহস করে, কিছুটা ভয়ে ভয়ে (হিন্দিতে) সাঞ্জিকে জিজ্ঞেস করলাম-“বলছিলা--ম, মাইন্ড করবে নাতো ! . . . . বলছিলাম কি, ওর সাথে কারো রিলেশান শিপ আছে কিনা?” সাঞ্জি আমার কথায় মজা পেয়ে প্রথমে চোঁখ নাচাঁলো অনেকণ ধরে। তারপর নিচের ঠোঁট চেপে ধরে দুষ্টুমীর হাসি হেসে আমাকে লজ্জায় ফেলে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো-“(হো)ওয়া . . . . ই?” পর পরই ইংলিশে বললো-“ওকে জিজ্ঞেস করে দেখতে হবে।” মুখে দুষ্টুমীর হাসি। বললাম-“না না। প্লীজ, ওকে জানাবার দরকার নেই। তোমার উপর আমার অগাধ বিশ্বাস আছে।” তখন সন্তুষ্ট চিত্তে হেসে বললো-“ডিয়ার ফ্রেন্ড, ওর সব খবর আমার নখের মাথায় । ওর সাথে কারো সম্পর্ক নেই।”
চৌঃ-“সত্যি?”
সাঃ-“হাঁ, সত্যি।”
চৌঃ-“তো এখন কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি?”
সাঃ-“লাইব্রেরীতে। ওর হাতে দুটো বই দেখোনি ? সে দুটো ফেরত দিতে।”
চৌঃ-“তাহলে ফেরত দিয়ে এসো। কাসে তোমাদের অপোয় থাকব। বাই ।”
সাঃ-“বা ---- ই” বলে চলে গেল। ও সিড়ি থেকে মুছে যাবার পর খুশিতে উপরের দিকে একটা লাফ দিলাম।-“যাহ্ শালার, স্রোত দেখছি অনুকূলেই বইছে। কাসসেরা সুন্দরী হাতের মুঠোয়।”
এসে কাসের বেঞ্চে বসলাম। মনের অজান্তে ড
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১২ রাত ১০:১৫
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×