আমার গল্পের হাত ভাল নয়, তবু বন্ধুদের অনুরোধ আর মাথার ভিতরের স্বপ্ন, নিয়ে গেল কোন এক রাজ্যে! যেখানে শুধু খেলা করে খরগোশ আবার মাঝে মাঝে শৈশবের ডুব সাঁতার! আমি লিখতে বসে গেলাম, হাতের মধ্যে কলম আর মাথার মধ্যে - ডুব সাঁতারের সাথি ইন্দিবর! হঠাৎ কেন যেন ওর কথাই মনে হলো! ইন্দিবর, আঁতকে উঠলেন? ভাবার কোন কারণ নেই,আমি মিথ্যা বলছি। যাহোক,আবার শুরু করি -অনেকদিন হয় গ্রামে যাওয়া হয়নি। বাবার কথা ভেবে আর সেই ডুবসাঁতারের প্রতি দুর্বলতার বশে বর্ষা কালে বাড়ি গেলাম। সঙ্গে নিলাম যে বন্ধুদের অনুরোধে আমার গল্প লেখার হাতেখড়ি তাদের দু একজনকে আর সেই বন্ধু ইন্দিবরের সুখস্মৃতি! বর্ষার রাতে অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে আমার মন ভরে উঠছিল আর ভাব ছিলাম -বাড়ি পৌঁছে ইন্দিবর আর শহুরে বন্ধুরা মিলে শুধুই ডুবসাঁতার, কী মজা! ভাবছি আর দূরে দেখছি কতক্ষণে পৌঁছবো ঘাটে! ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখলাম মহেন দা,কিন্তু তার হাতে নেই বৈঠা,লগি,আরো দূরে তাকিয়ে বুঝলাম -ঐ বৈঠা লগি আর মহেন দার রক্তপুড়ে অনেক দূরে নিঃসীমে ইটের ভাঁটার ধোঁয়া হয়ে উড়ছে। মনটা হতাশায় নিমজ্জিত হলো! বন্ধুদের কাছে ভীষণ লজ্জা পেলাম। আমার বুকের ভেতরটা হাহা করে উঠলো সমস্ত বিশ্বসংসারের প্রতি নেমে এল ক্ষোভের গ্লানি, বন্ধুদের বুঝাতে পারব না ইন্দিবরের সাথে ডুবসাঁতারের মাহাত্ম্য! অসংখ্য লাল ইন্দিবর আর জলক্রীড়া রত সাপ,মাঝ খানে মহেন দাদার নৌকা চলছে! পরদিন সকাল থেকে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত জাফর আর সামিনের সাথে ডুবসাঁতার! এগুলো আর হবে না ভাবতেই পারছি না। তা কি হয়? কিন্তু কী করব? বন্ধু ইন্দিবর যে বেঁচে নেই! তাকে মাটি চাপা দিয়ে বেড়ে উঠেছে নতুন বন্ধুরা! এই হতাশা নিয়েই বাড়ি পৌঁছলাম, সেই ডুবসাঁতার আর হলো না!
তবে মনে বিশ্বাস রেখেছি - আমার বন্ধু যে পদ্ম ছিল তাকে আবার ফুটাব,খেলব ডুবসাঁতার, হয়তো তখন সঙ্গে থাকবে আমার উত্তরাধিকারও!