***ভাই বোন বন্ধুদের অশেষ কৃতজ্ঞতা সাথে থাকার জন্য। অবশেষে শেষ কিস্তি সবিনয়ে সুহৃদগণের চরণে নিবেদন করা গেল।
বিজ্ঞাপন
জ্ঞানবৃক্ষের সঘন আশ্রয়ের আড়ালে কে ডাকে কু-উ।
কে ?
নাকি বুকের ভিতরে ? অবেলায়, অসময় রিমঝিম বরষায় উদাস বসে ছিল প্রতিশ্রুত প্রতিভু । তার উন্মুখ হৃদয় আর ও কুহুতানে বয়ে আনা ভারি বিষাদের সাথে হলো পরাগায়ন। সে তবু বসে র’ল, নিস্পন্দ। বয়ে গেল এক ঝলক মৌসুমী বাতাস। সহসাই কেঁপে উঠল সে। আপাদমস্তক। কেন, সে জানে না। দূর আকাশে ঝলকে উঠা আলোর চাবুক সশব্দে জানিয়ে দেয় চারপাশে আলোকের সাথে আছে অন্ধকার। ইতস্তত।
শীতল বাতাসে মসৃন ঘাড় তুলে অনিশ্চিত, দাঁতে দাঁত বাড়ি খায়, তবু সে বসে থাকে। কিসের আশায় ? বেলা কি রয়েছে বাকী না ডুবে গেছে ? ধরনীকে একা রেখে। কেন ? কে জানে।
ঝিঁ ঝিঁ ডাকে। ঘরে ফেরা পাখি সব এবং ঝিঁ ঝিঁ ?
না কি আরও কেউ ?
কে ?
কেনইবা ? জানেনা সে। জানবার ইচ্ছে করে না। সন্ধার আলোছায়া দ্রুত অন্ধকারের চাদরে অপসৃয়মান বৃক্ষের কোন কোন অংশ তৈরী করে বিচিত্র দৃশ্যকল্প। তার উঠতে ইচ্ছে করে না।
কিছু দূরে ঝুর ঝুর করে ঝরে পড়া বৃষ্টির কণা, অবশিষ্ট সামান্য আলো অথবা অন্য কিছু একটা কাঠামোয় পরিণত হবার চেষ্টা করে। ঘনিভুত কাঠামো দর্শনে সহসাই সে কেঁপে ওঠে। থরথর করে। মৃগী রোগীর মত। শীতে না ভয়ে সেই জানে। ধী--রে মৃদু পদেক্ষেপে। সে অস্তিত্ব উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার কাছে আসে। চাঁদের মায়াবী আলোর মত অনিশ্চিত অচেনার দিকে সে বিমূঢ় তাকিয়ে থাকে। বুকের ভিতরে অবিরাম ঢাকের বাদ্য। মেরুদন্ড বরাবর শৈত্য প্রবাহ। পেটে অস্বস্তি এবং অনত্র কিছু বিপ্লবের পূর্বাভাস। সব কিছু কম্পমান দুঠোঁটের পিছনে চেপে সে চেয়ে থাকে অপলক।
হরর কল্পনা সত্যের মত সামনে দাঁড়িয়ে দখিনা মলয়ের সুরে কন্ঠে মধু ঢেলে বলে, প্রিয়তম। সে শব্দের সাথে পরাগায়নের অনুঘোটক জাতীয় সুগন্ধে মোহিত হয় উদ্দিষ্ট। তার চারপাশ। কোন বন্ধু, বন্ধন অথবা সহমরণের সহযাত্রী কোন অর্থেই তার পাশে কেউ ছিল না তখন এবং সে অর্বাচীন।
আবার হৃদয়ের ইথারে কম্পন জাগে, প্রিয়তম। বলো, স্বাগতম।
বুকের মধ্যে একশ একটা কামানের গর্জন ছাপিয়ে কথা বলে তার ঠোঁট, স্বাগতম।
-দু’হাত বাড়ায়ে দাও।
মুগ্ধ পতঙ্গ যেমন আগুনের পুচ্ছকে প্রিয়ার যোণী ভেবে লাফ দেয় পরম আবেগে। পতাকার পিছনে কে দ্যাখেনা সে। ভুলে যায় অনন্য জলপাই গাছের কথা। আবেগে। আর দু’হাত বাড়ায়ে দেয়।
দু’হাতে রাখে হাত। নিঃশ্বাসে ষড়যন্ত্রী উষ্ণতা ছড়াতে ছড়াতে বসে পড়ে বলে সে পুনরায়, জান্, জান কে আমি ?
সে চুপ।
-একটা প্রতিশ্রুতি।
সে নিস্তব্ধ। শীতে উষ্ণতার, নিঃসঙ্গতায় সঙ্গ আর ক্লান্তিতে-প্রণোদনার।
বন্ধু ওগো, আমি উৎস অগণন প্রশ্নের।
নতুনের।
অভাবের।
তোমার।
তার সপ্রশ্ন চোখে চেয়ে সে বলে, সঙ্গ এবং শুন্যতার। চিত্তে যেথা শুন্য তুমি, আমি অংশ পূর্ণতার।
ক্রমে নিকট থেকে তারা হয় নিকটতর। পরিচিত থেকে ঘনিষ্ঠ। পড়শী থেকে আপনার। ক্রমে অস্তিত্ব তাকে আপনি আবৃত করে। তুমি যদি নগ্ন আমি আবরণ তোমার। আমি ও চোখে প্রচ্ছন্ন মহাবিশ্ব।
আমি বর্তমান।
আমি ভবিষ্য।
চিরন্তন।
তোমার পুনর্জন্মের প্রতিশ্রুতি আমি।
যে জানে না পিপাসা কি সে তার মুখে দেয় পূর্ণ কলস।
কুয়োর ব্যাঙ কে, সে শেখায় পর্যটন।
অন্ধকে চেনায় রাঢ়, বরেন্দ্র, পুন্ড্র, বঙ্গ, সমতট হয়ে বঙ্গোপসাগর।
এক পেগে যার শীত দূর অস্ত তার পুরো বোতলের পর সমস্ত স্বত্ত্বা ভেসে যাওয়া সুনামীর সাথে হলো চিরকালের পরিচয়।
প্রিয় কোন এক বা একাধিক সুরে রাত ভেসে যায়। নতুন সূর্যের নিচে উদ্ভাসিত এ্যালিসিয়া উদ্যান তার কাছে এই প্রথম কোন অচেনা অর্থহীন, অপ্রয়োজনীয় বাহুল্যে আকীর্ণ আর কোন বিশেষ প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গবিহীন বলে মনে হতে থাকে। দিন বাড়ী যায়, পাখির ডানায়। সে থাকে দু’চোখের আড়ালে।
----------------০০০০০০০০------------------
পতাকা
ডাকে কাক-কে, কে ?
বাতাস বয়।
ডাকে কোকিলেরা-কে, কে কে ?
উত্তরে রোদ্দুর আরও উজ্জ্বল। আরও কিছু উষ্ণ হয়।
অনাদি, অনন্ত এ প্রশ্ন ধ্বনিত হয়। শব্দের সৃষ্টি করে একাত্মতা জানায় যাদের মুখে আছে মুখবন্ধ। স্বচিৎকারে মুখরিত করে আকাশ ও পৃথিবী, মুখপাত্র। জৈব, অজৈব, মৌল, যৌগ, প্রবাহিত, স্থিরভব, কুশিলব, অনুষঙ্গী সকলি হাজির।
কোথা সে রচয়িতা পান্ডুলিপির ?
কোথা প্রিয় মহোদয় পরিচালক ?
কি বা কার পরিচয় মঞ্চে ?
সে জানে তা ।
সে জানে।
সে জানে।
----------০০০০০০০০০----------
আশিক রেজা