somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোঃ আসিফ আমান আপন
আসসালামুয়ালাইকুম,ধন্যবাদ আমাকে ভিজিট করার জন্য। আমি বর্তমানে পড়াশোনা করছি নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনলজি, খুলনাতে। আমি একজন কোম্পিউটার সাইন্সের স্টুডেন্ট। অনেকদিন থেকে লেখার তগিদ থেকে লেখা শুরু করছি। জানি না লেখা কেমন লিখি, তবে লিখতে ভালো উপভোগ করি

নিরুত্তাপের দ্বিতীয় পাতা

০১ লা জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ধারাবাহিক গল্প......
গল্পটির চরিত্র গুলো বাস্তব হলেও গল্পটি ইন্সপায়ার্ড।



সাবিত এখনো বেশ ঘোরের মধ্যে আছে কি হচ্ছে তার সাথে কিছু বুঝে উঠতে পারছে না। মানে আপসাইড ডাউন-সামাজিকিকরন প্রকল্প বা গেম কি চলছে এই গুলো। এগুলো ভাবতে গিয়ে এনাউন্সমেন্টের বেশ কিছু কথা শুনতে পারেনি সে। যাক ব্রিফিং কে করলো বা কেন তা বিশেষ বুঝে ওঠার আগেই যেন মুহূর্তে সব চেঞ্জ হতে শুরু করলো। তাকিয়ে দেখা ছাড়া কি করা যায় সাবিত জানে না। সবুজ ঘাসের মাঠ কেন জানি খুলে গেলো নিমিষে সবাই পড়ে যেতে লাগলো। কতো পর জ্ঞান ফিরেছে সাবিত জানে না। একটা আলাদা রিমোট আইল্যান্ডে সবাইকে সারি বেধে শুইয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ উঠে কি হচ্ছে বোঝার জন্য দূরে তাকিয়ে আছে আর বেশিরভাগই এখনো ঘুমে আছে।
সাবিত সবার আগে যা অনুভব করলো তা হোলো ক্ষিদা মারাত্বক ক্ষুধা তাকে পেয়ে বসেছে অথচ সে জানেই না কি খাবে। চারপাশে তাকিয়ে কিছু আন্দাজ করার মতো আইকিউ যেহেতু ডেভেলপ হয়নি চোঁখ দিয়ে ঠাওর করে উঠতে পারলো না সাবিত। এর মধ্যে প্রায় সবাই উঠে পড়েছে এবং সবারই একই সমস্যা ক্ষুধা।
কেউ একজন গুনছিলো মানুষের সংখ্যা কতো গুনে পাওয়া গেলো ২০০ জন সাবিতের সামনে লোকটা দাঁড়িয়ে কাজ করায় সে এই সম্পর্কে ধারনা পেয়ে গেলো। যতোদূর বোঝা গেলো এই দ্বিপে যারা আছেন তাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের ভেতরেই এটাও সাবিত জেনে নিলো কোন মানুষের কোলাহলেই। লোকটা যে সামনে দাঁড়িয়ে সে বাংলায় কথা বলায় তার সাথে কথা বলা সহজ। কিন্তু সাবিতের ইন্ট্রোভার্ট লাইফস্টাইল তাকে এই জিনিসটা থেকে বরাবর আলাদা রেখেছে। তাই সে কিছু সময় নিলো কিন্তু কিছু সময় পরে সে বুঝলো তার ক্ষুধা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে এবং তাকে কথা বলতেই হবে। লোকটির কাছে সাবিত নিজেই গেলো কথা বলার জন্য। কিন্তু কথা বলার পর সাবিত যা বুঝলো যে লোকটি বেশ চটপটে ও বুদ্ধিমান। কিন্তু কিছু আগে যখন ব্রিফ করা হচ্ছিলো তখন বলা হয়েছিলো যে এখানে যারা এসেছে তারা জীবনে ব্যর্থ তাহলে এই লোক এখানে কি করছে বুঝে ওঠার অবকাশ না দিয়ে লোকটি বললো তোমার কি ক্ষুধা লেগেছে? সাবিত মাথা নাড়লো নিঃশঙ্কচে। মানুষ হয়তো এমনই একটু আন্তরিকতা যথেষ্ঠ ঘনিষ্ঠতার জন্য। লোকটি সাবিতকে নিয়ে গেলো সাগরের কাছে আর বললো আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ওরা চায় আমরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করার উপায় ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করি। দেখো যেহেতু এটা একটা গেম এবং নিউরো কানেক্টর দিয়ে কম্পিউটারে কানেক্টেড আমাদের ক্ষিধার অনুভূতি মনস্তাত্তিক। এখানে আমরা যদি যোগাড় করে খাই তাহলেই হয়তো এই অনুভূতির নিরাসন সম্ভব। দেখো দ্বিপে মানুষ বেঁচে থাকে খাবার আহরন করে আমাদেরও তাই করতে হবে। সাবিত বুঝলো সব কিন্তু মাথা নাড়া ছাড়া তার যেন আর কিছুই বলার নেই।
হঠাৎ একটা ঠাই করে শব্দ হতেই ঘুরে তাকিয়ে ওরা দেখলো সাদা বালির নিচে কিছু আরমস পুতে রাখা আছে যা অনেকেই হাতে নিয়ে নিয়েছে। এটা হাতে পেয়েই একটা মধ্যবয়স্ক যুবক ঘোড়া টেনে নিজের ভবলিলা সাঙ্গ করেছে। কেউ কেউ আরমস গুলো নিজের কাছে রেখে দিচ্ছে। লোকটিকে বিচলিত মনে হচ্ছে না। সাবিতের খেয়াল করার কথা ছিলো না তবুও খেয়াল করলো এখানে মানুষের মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে কার্যকারন আবার অনেকেই খুব ফুরফুরে। সে বললো তুমি ম্যাট্রিক্স দেখে থাকলে বুঝতে এই লোকটি ভার্চুয়াল জগতে শুধু মারা যাচ্ছে না সিস্টেম এদেরকে বাস্তবে মেরে ফেলছে। ব্রেইনকে শক দেওয়া হয় হৃৎপিণ্ডও সংকুচিত ও প্রসারিত হয় বৈদ্যুতিক সংকেত পেয়ে। সেই সংকেত যদি সময়মতো না পায়, তাহলে হৃৎপিণ্ড পাম্প করবে না, রক্ত চলাচল থেমে যাবে। আবার উলটা-পালটা সংকেত পেলে হৃৎপিণ্ড উলটা-পালটা পাম্প করা শুরু করবে। ফলাফল—হার্ট অ্যাটাক ও মৃত্যু। ভয়ে সাবিতের গা গুলিয়ে উঠলো কাঁটা দিলো শরীরে। এই সব বুধিমান মানুষ গুলো কেন এখানে তা কি উকি দিলো সাবিতের মনে?
দিলো হয়তো.........

১৫ দিন পর.........
লোকটির নাম সোহেল কারওয়ান বাজার বাড়ি একটা ছোট খাটো ফার্মে কাজ করে। এ কদিনে সাবিত এতোটুকু জানতে পেরেছে। এবং যুটেছে বেশ কিছু পরিচিত মুখ আরেফিন, অর্নব, আলাউদ্দিন এদের মধ্যে আলাউদ্দিন বয়সে সবার বড়। সবাই এনাকে ভাই বলে ডাকে আর বাকি সবাইকে তুমি সম্বোধন করে। খাবারের জন্য ওরা নারকেল গাছ আর সুমূদ্রের মাছের উপর নির্ভরশীল। এতো গুলো লোকের ভেতর সোহেল, অর্নব একটু আলাদা আর ভালো বুদ্ধিমান ওরা সমস্যা সমাধানের জন্য খুব ভালো বুদ্ধির প্রয়োগ জানে এমন পরিবেশে এসেও। পানির সমস্যা এখানে সব থেকে বেশি ওরা সেটারও ব্যাবস্থা করেছে বৃষ্টির পানি ধরে আর সাগরের লোনা পানি বাষ্পিভবনের মাধ্যমে। সাবিত আস্তে আস্তে তার মাঝে কিছু পরিবর্তন লখ্য করছে তার যে জড়তা ভাব সেটা কেমন দূর হচ্ছে। যদিও কষ্ট হচ্ছে আগেও হয়েছে তবে এটা যে তাকে আত্মপ্রত্যয়ই করছে তা সে বুঝতে পারলো। যদিও রোগা পাতলা শরীরে যেন কদিনের ধকল স্পষ্ট।
৩০ দিন পর……
খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিতে শুরু করেছিলো ২৫ দিনের মাথায়। যে সকল উৎস হতে খাবার পাওয়া যাচ্ছিলো তা শেষ। সবাই খাদ্য সংকটে হাহাকার করা শুরু করে দিয়েছে। সোহেল আর অর্ণবও এক্ষেত্রে বুদ্ধি দিয়ে কিছু সমাধান করতে পারছে না যেমন পারছে না এ দ্বিপের কেউ।
এদিকে কেউ জানে না কি করতে হবে বা কতোদিন এখানে থাকতে হবে। চরম হতাশায় মাথায় গুলি চালিয়ে দিলো কেউ কেউ। মোট ৫ জন ৩০ তম দিনে সুইসাইড করলো এবং বাস্তবিক ভাবেই তারা লুটিয়ে পড়লো মাটিতে। প্রথম দিনে যে সুইসাইড করেছিলো তার দেহ পুতে দেওয়া হয়েছিলো বালির মধ্যে কিন্তু ৩১ তম দিনে এসে ক্ষুধার যন্ত্রনা সহ্য না করতে পেরে গত দিনের পুতে রাখা মৃতদেহ খুড়ে বের করে খাওয়া শুরু করে দিলো।
এগুলো দেখে আর সহ্য করতে পারছিলো না, সাবিত বমি করে লুটিয়ে পড়লো মাটিতে। দিন রাত যেমন আসে পৃথিবীতে এখানেও তেমন। রাতে জ্বরে কাহিল সাবিত আর কেউ কেউ লোলুপ দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে সাবিতের দিকে।
৪০ তম দিন……
এদিন একজন অন্যজনকে গুলি করা শুরু করলো সাবিত আর তার গ্রুপের সবাই পালিয়ে বনের মধ্যে আশ্রয় নিলো। তবে এমনটা অনেকেই করেছে বুঝে সোহেল বললো আমাদের পাহাড়ে যেতে হবে। পুরো দ্বিপটা অনেক বড় তাই কদিনে সম্পূর্নটা না দেখা হলেও খাবারের সন্ধানে এখানে আগেও এসেছে সোহেল ওদেরকে যা বললো। তার কথা শুনে সবাই সোহেলের পিছু নিলো। সোহেল বললো হাঙ্গার গেমস খেলছে সরকার আমাদের সাথে। সাবিত সারা জীবন যা করেছে তা হলো গেমস খেলা কিন্তু হাঙ্গার গেমস কোন গেম তা মনে করতে পারলো না সে। হয়তো চাইলোও না কারন এর মধ্যে সে ডিমেনশিয়া ও হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত। বনের মধ্যে দিয়ে ক্ষুধার যন্ত্রনার মধ্যে তারা হাজির হলো একটি বড় পাহাড়ে যেখানে একটা সুড়ঙ্গ চলে গেছে পাহাড় ভেদ করে। কাছেই যেন গুলির আওয়াজ শোনা গেলো। সোহেলের হাতেও আরমস আছে তার হাতে বেরেটা এম নাইন। তড়িঘড়ি করে সেটা বের করে ম্যাগজিনটা চেক করে নিলো সে। সবাই তড়িঘড়ি করে ঢুকলো সুড়ঙ্গে। ………………(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:১৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×