তোমাকে নিয়ে চাইলেই ১০০০ শব্দের একটা গল্প লেখা যায়, কিন্তু কি জানো তোমার সাথে আমার গল্পের সংখ্যা একটায় সিমাবদ্ধ রাখা একটু অন্যায় বটে। খুচরা গুলোই লিখি আগে কেমন? শব্দের ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা আমার বিআরটিসির ডাবল ডেকার মনের ৩২ নম্বর সিটে মাঝে মধ্যে ভ্যাপসা গরমেও কুম্ভকর্ণ ঘুম দিয়ে ফেলি চিড়ে চ্যাপ্টা আবেগে। তোমায় নিয়ে কিছু একটা চাইলেই লিখতে পারি সেটা একটা গল্প নয় অনেক গুলো।
লিখতে ইচ্ছে করছে তাই লিখে ফেললাম কিছু একটা মনে করো এটা খোলা চিঠি তোমার উদ্দেশ্যে।
মনে পড়ে সেদিন যেদিন একা জীবনে খুব বাজে অনুভূতি নিয়েই ডেটিং সাইটে এ্যাকাউন্ট খুলেছিলাম। যে আমি ভেবেছিলাম ভার্চুয়াল রিলেশনশিপ মানেই নিজেকে ধোকা দেওয়া। নিজেকে পরাজিত মনে হওয়াটা বেশিক্ষন দির্ঘস্থায়ী হতে দাওনি বলে ধন্যবাদ। একটা আর পাঁচটা বিকালের মতো সেদিনের বিকাল আসার কোনো বিকল্প ছিলোনা হয়তো। রোজগার মিষ্টি বাটার বানটাও খেতে খুব খারাপ নোনতা লাগছিলো, তখই তুমি এসে ধরা দিলে আমার মনের জালে।
-হাই…
-হ্যালো…
-আপনার নামটা ?
-জুনাইনা হাবিবা।।
-পড়াশোনা কিসে করেছেন?
-ঢাকা মহিলা কলেজ…
-আর সাবজেক্ট?
- ইকোনোমিক্স
আর সব স্বাভাবিক ভাবে চলে গেলেও তুমি ডাইনোসর মনটা টেনে নিলে তোমার মনের মায়াতে। জং পড়ে ক্ষয়ে যাওয়া মনটা হুট করেই নেচে ওঠেনি। তুমি বললে আমি সম্পর্কের দায়ীত্ব নিতে চাই। বিশ্বাস করো আমি তখন এই ঘুনে খাওয়া এই সমাজের বিপরীত এক চিত্র দেখতে পেলাম যা তোমায় স্পর্শ করেনি তখনো। ভুলে গেলাম টিভি চ্যানেল, খবরের পাতা ভুলে গেলাম হতাশার তৈল চিত্র ভুলে গেলাম রঙচটা জিন্সের রঙ আরও…আরও…।
মেয়েরা জাদুকর ওদের মধ্যে মায়া দিয়ে বেধে রাখার ক্ষমতা আছে। সেই যাদু-মন্ত্রে বিসম্ভব নাকানি-চুবানি খেয়ে প্রেমে পড়লাম কিছুদিন পরই। সমাজ, সংসার বা দেশের অর্থনিতীর চিত্রে হতাশার লেশ ছিলো না এই ইকোনমিস্টের মধ্যে। ছিলো না আর ১০ টা মেয়ের মতো অবসেশন। তুমি দুহাত ভরে মায়া দিয়েছো আমিও নিয়ে কার্পণ্য করিনি একটুও। আমি বেহায়া বইকি এই বিষয়ে।
দোয়াতে কালি ভরে রেখেছিলাম প্রেম কাব্য লিখবো, সে আর হয়ে ওঠেনি। আসলে উপযুক্ত হয়নি সময় আর মেঘযুক্ত আকাশ। আমাদের গল্পের মধ্যের ৯ মাস পার করে ফেলেছি তোমার পুরোনো গল্পের রাজ্জাক-কবরী জুটির মতো টের পাইনি।
এর মধ্যের রোদ আর বৃষ্টি বা ঝড় এলো মেলো করে দিতে চেয়েছে আকড়ে ছিলাম দুজন দুজনে। তোমাকে আলাদা রাখতে চেয়েছে কালো সময়, পারেনি। আমরা এক হতে চেয়েছি যেন অনেক বছর আগেই। প্রেম কাব্য এখন মনে হয় ঠিক লিখতে পারছি।
বৃষ্টি-বিলাসে এখনো অনেকটা বাকি। ছোট এ জীবনে অপূর্ণতা পূর্ণতা হয়ে ইয়ার ফোনে বাজতে থাকে ওয়ার-ফেজের গানের সাথে। আমিও প্রেমে পড়ি রোজ তোমার মায়া মাখানো কন্ঠে। তোমায় গেয়ে শোনাই ‘তোমার জন্য নিলচে তারার একটুখানি আলো।‘ তুমি কি রোজ প্রেমে পড়ো আমার?
ইট-পাথরের এই শহরে সবাই যখন আকড়ে থাকে হিংসার তীব্র উত্তাপে গলে যাওয়া পিচের সাথে। আমরা মুক্তির স্বাদ নিয়ে উড়ে বেড়াই ইকারুসের ডানা ঝাপটে রূপ কথার আকাশে। মিথ্যে কথার এ শহর আমাদের ধরতে পারেনি। আমরা পালিয়ে যাবো নিজেদের আপন ঠিকানায়। অনেকটা পথ চলতে হবে জানোতো এ শহর আমাদের নয়?
--কাল্পনিক
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১২:৫৩