somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম প্রেম ও শেষ দেখা "

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মোবাইলে রিং হচ্ছে
অপরিচিত নাম্বার তাই তুলে
কথা বলার আগ্রহবোধ মনে করছি
না। তবে রিং করেই চলেছে এই
নিয়ে তৃতীয় দফা, তাই জরুরি
কোনো ফোন হবে ভেবে ফোন
ধরেছি অন্য প্রান্তে থেকে কিছু
বুঝার আগেই আমাকে বলে
ফেলো তুমি? তুমি একটা
স্বার্থপর, তোমার মতো মানুষের
জন্য গোটা পুরুষ জাতি কলঙ্ক
আসলে তোমরা পুরুষ জাতিটাই
খারাপ! আমি বিষ্ময়ে হয়ে
নিজেকে সামলিয়ে বলাম
হ্যাঁ,,, আর তখনই অপর পাশে ফোন
কেটে গেলো। আমি বসে বসে
ভাবতে লাগলাম ব্যাপার কি
একটি মেয়ে এইভাবে আমাকে
বল কেন? আমি ও বা কেন না বুঝে
হ্যাঁ বললাম,,, এই ভাবতে ভাবতে
আবার সেই ফোন এইবার আমি
মনে মনে কঠিন কথা বলবো বলে
ঠিক করে রাখলাম কিন্তুু
এবারের ঘটল মিষ্টি কন্ঠে বল I m
sorry এইবার আমি বললাম ঠিক
আছে। wrong number বুঝতে
পেরেছি। এই বলে আমাদের কথা
বলা শেষ। দুই তিন দিন পর যে
আমি ঘুমাতে যাবো দেখি সে
নাম্বার থেকে ফোন হ্যালো
বলতে সেই মিষ্টি কন্ঠে
মেয়েটি বলে উঠলো চিনতে
পেরেছেন,, আমি বললাম না
তবে আপনার নাম্বার চিনতে
পেরেছি কিছুদিন আগে ছোট
আলাপ হয়েছিলো আমাদের
মাঝে,, মেয়েটি বলতে শুরু
করলো আমি দিপ্তী সেই দিন
আমার পরিচিত একজনের সাথে
ঝগড়ার তালে ভুল করে আপনার
নাম্বারের ফোন চলে আসে,,
আমি বললাম এমনটা হয়ে থাকে,,
সেই দিন থেকে আমাদের মাঝে
প্রায় প্রতিদিন কথা হয়। একটা সময়
জানতে পারি দিপ্তী
মেয়েটি শাহরিয়ার নামে
ছেলের সাথে ৭ মাসের প্রেম
আর পরে ব্রেক আপ হয়ে গেছে ,,
এরপর আমাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে,,
বন্ধু হিসেবে দিপ্তী অনেক ভাল
শুরুতে মেয়েটার সম্পর্কে অনেক
কিছুই ভেবেছি পরে জানতে
পারি মেয়েটা আধুনিক যুগে
যতটুকু ভাল মেয়ে হওয়া দরকার
তারচেয়ে অনেক ভাল।
দিপ্তী 'আর আমার মাঝে ভাল
সময় কাটাতে থাকে বিভিন্ন
সময়ে আমি ওকে ও আমাকে
সাহায্য করতে থাকি, এমনই করে
আমাদের ১ বছর পেরিয়ে যায়,,,,,
একদিন হঠাৎ করে দুপুর বেলায়
দিপ্তী আমাকে ফোন করে বলে
নিচে আসো আমি বললাম মানে
কি? বল আগে নিচে এসেই
দেখনা আমি ফ্ল্যাট থেকে
নিচে এসে দেখি দিপ্তী
হালকা আকাশী রঙ্গে শাড়ি
পরে দাড়িয়ে আছে,, মেয়েটি
কি সুন্দর লাগছে প্রকৃতির সব
সুন্দরয্য এই মেয়েটিকে ঘিরে
দাড়িয়ে আছে আমি কাছে
এসে বললাম কি অদ্ভুত তুমি আমার
বাড়িতে কি করে চিনলে সে
হাসি দিয়ে বল তুমি বলেছিলে
না সুন্দর করে সেই থেকে মনে
করে করে আর তোমার পাড়ার
ছেলেদের কে জিজ্ঞাসা করে
বের করলাম,, আমি হা হয়ে
দাড়িয়ে আছি আমার মনে মনে
ভাবছি এই দিপ্তী সেই দিপ্তী
কি তাকে আমার বন্ধুর মত কেন
আজ মনে হচ্ছে না নিজে কিছুটা
লজ্জিত মনে হচ্ছে এই কি সব
ভাবছি আমি। এই কোথায়
হারিয়ে গেলে আমি ভূত নই,,
দিপ্তী,বিশ্বাস না হলে চিমটি
কেটে দেখ,, আমি নিজেকে
সামলিয়ে বললাম এসো ভিতরে
চল,, না তুমি একটা ভাল শার্ট
পরে আসতো আজ তোমাকে
নিয়ে ঘুরে বেড়াবো,, আমি
শার্ট পরে বেড়িয়ে এসে
রিক্সা নিয়ে শহরে ঘুরেফিরে
ওকে ওর বাড়ি সামনে নামিয়ে
দিয়ে আমি চলে আসার সময়
দিপ্তী আমার হাত ধরে বল,, আজ
দিনটা কি জানো আমি বললাম
না? আজ আমার জন্মদিন। আমি
অবাক হয়ে নিজেই নিজের মনকে
বললাম আরে দিপ্তী জন্মদিন
কৰে আজ অব্দি আমি জানতাম না
কখনো জিজ্ঞাসা করা হয় নি।
দিপ্তী আমাকে বললো এতে
অবাক হবার কিছুই নেই আমার
অনেক বন্ধু বান্ধবীরা এটা
জানে না আমি ইচ্ছে করেই
কাউকে বলি না, আজ আমার এই
জন্মদিনে তোমাকে একটা কথা
বলবো কিন্তুু বলা হয় না তাই এই
কাগজে লিখে রেখেছি নেও
তুমি বাড়ি গিয়ে পড়ে আমাকে
ফোন করো এই বলে দিপ্তী তার
বাড়িতে চলে গেলো। আমি
রাতে চিঠিটা নিয়ে বসলাম,,
রনি,
আমি জানি না চিঠিটা পড়ে
তুমি আমাকে কি ভাববে? অথবা
আমি আমার কথা গুলো কি করে
তোমাকে বুঝাবো হয়তো এই
চিঠিতে আমি সেই ভাবে
নিজের কথা তুলে ধরতে
পারিনি,,, তোমার মনে আছে
একদিন তুমি বললে তোমার অনেক
জ্বর আজ বেশিক্ষণ কথা বলতে
পারবে না। আমিও বুঝতে
পারছিলাম তোমার কথা বলতে
অনেক কষ্ট হচ্ছে তাই তোমাকে
ঔষধ নিতে বলে আমি ফোন
কেটে দিলাম। কিন্তুু সেই
রাতে আমি ঘুম হলো না বুকের
ভেতর কি যে কষ্ট হচ্ছিল বুঝতে
পারলাম না বার বার তোমাকে
ফোন করে জানতে ইচ্ছে হলো
তুমি কেমন আছো। দুই দিন পর
তোমার সুস্থতার কথা শুনে কি
যে ভাল লেগেছিল কি বলি
তোমায়। সেই দিন আমি বুঝে
ছিলাম আমাদের সর্ম্পক কি
আসলেই বন্ধুত্ব নাকি আমি
তোমাকে ভালবেসে
ফেলেছি? হ্যাঁ আমি তোমাকে
অনেক ভালবাসি অনেক
ভালবাসি,, অনেক বার বলতে
চেয়েও বলতে পারিনি ভয়ে?
কিন্তুু আমি আর নিজেকে ধরে
রাখতে পারছিনা রনি বিশ্বাস
করো আমি তোমাকে
ভালবেসে ফেলেছি।
চিঠি পড়ে আমি অনেকটা দুঃখ
পেলাম,, আমিও যে তোমায়
অনেক ভালবেসে ফেলেছি
সেই প্রথম দেখায় কিন্তুু না আমি
জানি এই ভালবাসার পরিনাম শুধু
দুঃখ ছাড়া কিছুই না। আমার
মতো নিম্নবিত্ত ছেলেদের
ভালবাসতে নেই,, ক্ষমা কর
আমাকে দিপ্তী সেই রাতে
আমি দিপ্তীকে ফোন করিনি,,
গত দুই দিন আমাদের মাঝে কোন
যোগাযোগ হয়নি রাতে দিপ্তী
নিজে থেকে ফোন করে
জানতে চায়,, আমি উত্তরে না
বলি? একসময় দিপ্তী কান্নায়
ভেঙে পরে আর আমাকে
বুঝানোর চেষ্টা করে কিন্তুু
আমি আমার সিন্ধান্ত থেকে
সরে দাড়াতে পারিনি,, সে
রাতে আমিও যে কান্না
করেনি সে দিপ্তী জানেনা
আমি ও যে ওকে অনেক
ভালবাসি কিন্তুু আমার পরিবার
আমার ওদের প্রতি আমার কিছু
দায়িত্ব আছে,, পরেরদিন
সকালে আমাকে ফোন করে
জানানো হয় আপনি রনি আমি
বললাম হ্যাঁ ছেলেটি ফোনে
বলো দিপ্তী আপু হাতের রগ
কেটে হাস্পাতালের ভর্তি,,
আপনি চাইলে যেতে পারেন
আমি কিছু না বুঝে ফোন কেটে
দেই। ভয়ে কিংবা লজ্জায় আমি
দিপ্তীর সাথে কিছুদিন
যোগাযোগ হয়নি একটা সময় আমি
ওর সাথে যোগাযোগ করা
চেষ্টা করি ওর ফোন বন্ধ আর
ওদের বাড়িতে গিয়েও লাভ
হয়নি এখন নাকি ওরা সেখানে
থাকে না। কোথায় আছে কেউ
কিছু জানেনা। এই ভাবে দির্ঘ্য
৪ বছর কেটে গেলো আমিও এখন
বেশ বড় হয়েছি ২৩ বছরের পা
দিয়েছি, দিপ্তী ও কি সেই
আগের মতোই আছে, তবে কিছু
পরিবর্তন হয়েছে আগের থেকে
সুন্দর হয়েছে,, ৪ মাস আগে আমি
কলেজের কাজ শেষ করে বাড়ি
ফিরবো কিছু দুর ভিরের মধ্যে
একটি মেয়ে আমার দিকে
তাকিয়ে হাসছে আর সাথে
একটি ছোট্ট মেয়ে কিছুটা
এগিয়ে দেখি দিপ্তী!
নিজের চোখে বিশ্বাস করতে
পারছিনা,, দিপ্তী তুমি? হে
আমি কেমন আছো, এইতো ভাল,
তুমি? আমি ভাল আছি আল্লাহ
এতো সুখ আমার কপালে
রেখেছে তা বুঝিনি আগে।
আমি বললাম পরীর মতো এই
মেয়েটি কে? তোমার কোলে।
দিপ্তী বললো আমার মেয়ে।
আমি মনে কিছুটা দুঃখ পেলাম
দিপ্তীর বিয়ে হয়েগেছে।
দিপ্তী বলো জানো আজ আমার
মেয়ের তিন বছর হলো আজ ওর
জন্মদিন আর আজ আমার একটা
ইচ্ছে ও পূর্ণ হতে চলো,, দিপ্তী
বললো জানো আমার মেয়ের
নাম কি? আমি বললাম না তুমি
বলো,, ওর নাম আমি রেখেছি
রনি। আমি চমকিৎ হলাম আসলেই
কি? দিপ্তী বল হ্যাঁ সত্যিই আমার
মেয়ের নাম রনি,,, কেনো
রেখেছি জানো এই
পৃথিবীতে আমি এখন দু জনকে
অনেক ভালবাসি এক আমার
স্বামী কে আর এক আমার মেয়ে
রনিকে আর এই পৃথিবী তে
একজনকে অনেক ঘৃণা করি সে
হচ্ছে তুমি? তাই আমি আমার
মেয়ের নাম রেখেছি তোমার
নামে যখন আমার মেয়েকে রনি
বলে ডাকবে তখন আমি তোমার
কথা মনে করে যেনো ঘৃণা করতে
পারি এইজন্য,, কিছু মনে করনা
এটাই সত্যি,, এই রিক্সা যাবেন।
আমার চোখে সামনে রিক্সা
করে দিপ্তী আর তার মেয়ে চলে
গেলো,,,,,
বুঝলি ভাই এটাই হচ্ছে আমার
প্রথম প্রেম কাহিনী আচ্ছা
সুভাষ,, তুই কখনো কাউকে
ভালোবাসিস নি,,,,,
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×