1. ভালো মানুষ হওয়ার জন্য আমার কাছে সবচেয়ে বড় গুণগুলো হলো সততা এবং সংবেদনশীলতা, স্বার্থহীনতা। স্বার্থপর মানুষদের তীব্রভাবে অপছন্দ করি, ঘৃণা করি হিপোক্রেসী। বিশ্বাসযোগ্যতা আমার কাছে বন্ধুত্বের খুব বড় শর্ত। আমি আজ পর্যন্ত কারো বিশ্বাস ভাঙি নি, বন্ধুত্বে যা কিছু চিড়ল ধরেছে অপরপক্ষ আমার বিশ্বাসে আঘাত করার জন্যই হয়েছে। এই ব্যাপারে আমি রুথলেস, ভয়ংকর নিষ্ঠুর। তাছাড়া, যে কারো সাথে, যে কোন বিশ্বাসের মানুষের সাথে মারাত্মক বন্ধুত্ব হয়ে যায়। তবে হ্যা, নিজের কাজ এবং বিশ্বাসের ব্যাখ্যা নিজের কাছে থাকতে হবে। শুধু 'সমাজ করে বলে করি', বা 'ইট লুকস কুল' টাইপের ভেড়ার পালের মানুষদের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয় না। হয় নি কখনও। হলেও টিকে না।
2. আমার একাডেমিক রেজালট বরাবরই ট্যান কার্ভিশ। বাবা মা কখনও কিছু বলার সাহস পায় নি, কারণ আমাকে কিছু বললেই আমি উলটা পথ ধরি। সুতরাং যেই বছর পড়তে ইচ্ছা করে, সেই বছর ভালো করি, যেই বছর করে না, সেই বছর খারাপ করি। রোল 63 থেকে 5 হওয়ার রেকর্ড আছে। ক্লাস এইটে বৃত্তি পরীক্ষার দু'সপ্তাহ আগে গণিত পরীক্ষায় পেলাম 30 এ 3। আমি বাসায় এসে কেঁদে অস্থির। সেবার জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় রমনা থানা থেকে মেধা তালিকার প্রথম দিকে নাম ছিল। সেটাই বাংলাদেশে আমার প্রথম এবং শেষ পাবলিক পরীক্ষা। গত সেমিস্টারে পড়ায় একেবার্লেই মন ছিল না। সাবজেক্টগুলোতে ফেইল করেছি আর টেনেটুনে পাশ করেছি। এবার আমার রেজালট দেখে আমিই টাসকি খেয়ে গেলাম। খুব ভালো রকমের 'ডিসটিংশন' পেয়েছি। আমার ইউনি জীবনের শ্রেষ্ঠ রেজালট। কিছুতে খারাপ করলে তাই হতাশ হওয়ার রাস্তা পাই না, দোষটা যে পুরোটাই নিজের, খুব ভালো করেই জানি।
3. গান গাই ভালোবেসে, যদিও প্রফেশনাল ট্রেইনিং নেই। আমার গানের সবচেয়ে বড় ভক্ত আমার ছোট বোন। একবার একজনকে জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলাম গান গেয়ে সিডিতে রেকর্ড করে। বিপুল আনন্দ পেয়েছিল। দুই বছর আগে একজনের সাথে অভিমান করে গান গাওয়া গাওয়া এবং শেখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এখন আগে শেখা গানগুলোই গাই, নতুন করে শেখা হচ্ছে না!
4. ক্লাস নাইনে মায়ের সাথে খুবই তুচ্ছ কারণে কথা কাটাকাটি হওয়ার পরে (এই মহিলার আমাকে নিয়ে সত্যিই খুব কষ্ট হয়েছে!) আগের দিন পাওয়া বৃত্তির হাজার খানেক টাকা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গিয়েছি সবার অজান্তে। খুব ভোর ছিল তখন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার এমন সব জায়গায় গিয়েছি সেদিন যেখানে আগে যাই নি কখনও। মজার এবং ভয়ংকর সব অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেদিন
। রাগালো মাথায় ভয়ংকর সব প্ল্যান করছিলাম, রমনা পার্কে রাত কাটাবো, না হয় শিশু পার্কের রেইলিং টপকে। ভাগ্যিস, মাকে ফোন করেছিলাম শাহাবাগ থেকে। মায়ের কণ্ঠ শুনে সাথে সাথে রিকসা চড়ে বাসা! আসলে এটা একটা উদাহরণ, আমি পাগলামি করতে জানি। পাগলদের ভয় নেই, শঙ্কা নেই, সংকোচ নেই। আমার ট্যানকার্ভের এসিমটোটের কাছাকাছি থাকার মুহূর্তগুলোতেও ওই ভাবগুলো লোপ পায়, পুরোপুরিই।
5. নির্জন জায়গা এবং প্রকৃতি অসম্ভব প্রিয়। হাঁটা এবং কথা বলায় আমার কোন ক্লান্তি নেই, যদি প্রিয় মানুষদের সাথে হয়। হাঁটাটা একাও চলে প্রচুর। তবে প্রিয় মানুষদের সাথে ব্যাপারটায় সত্যিই ক্লান্তি আসে না। ঢাকার রাস্তায় এক টানা তিন ঘন্টা হেঁটেছি, অনির্দিষ্টভাবে। একবার একজনকে সোজা পূব বরাবর দু' কিলোমিটার হাঁটিয়ে সমুদ্রে নিয়ে গিয়েছিলাম। আগে বলি নি কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। স্মরনীয় হন্টন!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০০৬ রাত ১১:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



