somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি" এবং সন্ত্রাস বিরোধী টাস্কফোর্সঃ

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি" এবং সন্ত্রাস বিরোধী টাস্কফোর্সঃ

মহা জোট সরকার গঠনের পুর্বেই আওয়ামী লীগ প্রধান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা দিয়েছিলেন-তারা সরকার গঠন করলে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমনের উদ্দ্যেশ্যে আঞ্চলিক সন্ত্রাস বিরোধী টাস্ক ফোর্স তথা "দক্ষিন এশিয় সন্ত্রাস বিরোধী টাক্সফোর্স" গঠন করবেন। কিন্তু ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জী বাংলাদেশ সফরের পর তাদের হাইকমিশনার মিঃ পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন-"বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিকভাবে সন্ত্রাসবিরোধী টাক্সফোর্স গঠন করতে চায় ভারত"! এছারাও তারা দুই দেশের মধ্যে বানিজ্য চুক্তি নবায়ন(চুক্তির ৮ নং অনুচ্ছেদ চালু করণ সহ)এবং "বানিজ্য এবং বিনিয়োগ সুরক্ষা" বিশয়ে চুক্তি করেছেন।

স্বাভাবিক সম্পর্ক আছে-তেমন অবস্থায় বানিজ্য চুক্তি নবায়ন একটা রুটিন কাজ।বর্তমানে যে বানিজ্য চুক্তি নবায়ণ করা হয়েছে তা ১৯৭২ সনের বানিজ্য চুক্তির ধারাবাহিকতা মাত্র। ঐ সময় এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে জনাব এ আর মল্লিক এবং ভারতের পক্ষে মিঃ এল এন মিশ্র। তবে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি "বানিজ্য এবং বিনিয়োগ সুরক্ষা"র জন্য যে চুক্তি করেছে(প্রণব বাবু বাংলাদেশ সফরে আসার অনেক পুর্বেই তরিঘরি করে আমাদের মন্ত্রী পরিষদ কর্তিক অনুমোদিত হয়েছিল)-তা নিয়ে কিছু কথা থেকেই যায়। মুক্ত বাজার অর্থনীতির অনূসারী বাংলাদেশ দেশ বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশ চায়-বিদেশীরা এদেশে আসুক এবং এমন ভাবে বিনিয়োগ করুক যাতে উভয়পক্ষ লাভবান হয়।বাংলাদেশে ভারতীয় সহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ আছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য রয়েছে অভিন্ন নীতিমালা। এর বাইরে গিয়ে ভারতের সাথে "বিনিয়োগ সুরক্ষা"র জন্য আলাদা চুক্তি করতে হলো কেন তা আমরা বুঝতে পারছিনা। তাহলে কি আমরা ধরে নেবো-এযাবত কাল যত বিনিয়োগ এদেশে হয়েছে--সেগুলোর জন্য যথা যথ "সুরক্ষার" ব্যাবস্থা ছিলনা? কিন্তু ভারতীয় সহ যেসব বিদেশী বিনিয়োগকারী এদেশে চুটিয়ে ব্যাবসা করে আসছে, তাদের কোন অসুবিধা আছে বলেতো এযাবত শোনা যায়নি। তাহলে হঠাত এই "বিশেষ সুরক্ষা"র চুক্তি করার প্রয়োজন হলো কেন? তাহলে ভারত কি তাদের বিনিয়োকারীদের স্বার্থ সুরক্ষার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে যুক্ত রাস্ট্রের আদলে "কৌশলগত" (সাপ্টা) কিছু সুবিধা আদায় করে নিতে চাইছে?নাকি তাদের বিনিয়োগ রক্ষার জন্য প্রয়োজনে সৈন্য মোতায়েন করতে চায়!

এপ্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসবিরোধী টাক্সফোর্স ইস্যুকে কেন্দ্র করেও। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং পররাস্ট্র মন্ত্রীর এতদিনকার বক্তব্যে আমরা জান্তে পেরেছিলাম-"বর্তমান সরকার দক্ষিন এশীয় সন্ত্রাসবিরোধী টাক্সফোর্স গঠনে অত্যন্ত আগ্রহী"! আমরা পাঠক শ্রোতারা ধরে নিয়েছিলাম-দক্ষিন এশীয় দেশগুলো-অর্থাত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ভূটান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, এবং মিয়ানমারকে নিয়ে এই টাক্সফোর্স গঠিত হবে। কিম্বা উল্ল্যেখিত দেশ সমুহের ভিতর দু একটি দেশ কথিত এই মোর্চার সাথে জড়াবেনা। তারপর আমরা বিচলিত বোধ করেছিলাম যে, এই টাক্সফোর্সে বৃহত আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে ভারতের প্রধান্য থাকবে এবং ভারতের অঙ্গুলি হেলনই হবে প্রথম এবং শেষ কথা।

বাস্তবতা এর থেকেও নেতিবাচকভাবে ভিন্ন হওয়ায় আমরা শুধু বিচলিত নই, রীতিমত আতংকিত। কারন, পিনাক বাবু বলেছেন, ভারত চায়-"শুধু বাংলাদেশ আর ভারতকে নিয়ে দ্বিপাক্ষিক ভিত্তিতে" এই টাক্সফোর্স গঠিত হোক। যদি তাই হয়, তাহলে এটাকে আর দক্ষিন এশীয় টাক্সফোর্স বলা যাবেনা; বলতে হবে ভারত বাংলাদেশ টাক্সফোর্স। এধরনের একটি "ফোর্স" ভবিষ্যতে যেনো আমাদের দেশের জন্য "ফোর্স্ফুল" হুমকী হয়ে না দাঁড়ায়। কাজেই আমাদের সরকার তথা কর্তিপক্ষকে ভেবে দেখতে হবে-ওই ধরনের তথাকথিত বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী টাক্সফোর্স আদৌ আমাদের দেশের জন্য প্রয়োজন আছে কিনা।

সব চাইতে হাস্যস্কর কিন্তু প্রকৃত কথা বলেছেন সদ্য বাংলাদেশ ভিজিট করে যাওয়া আমারিকান সহকারী স্টেট সেক্রেটারী রিচার্ড এ বাউচার। তিনি বলেছেন-"সন্ত্রাস বিরোধী চুক্তি হলে আমেরিকা বাংলাদেশের নৌ সীমানা পাহাড়া হিতে সহযোগীতা করবে"! চমতকার কথা। আমরাতো এই আশঙ্কাই করেছিলাম-যেকোন চুক্তির ছুঁতোধরে ভারত কিম্বা বিশ্ব সন্ত্রাসী রাস্ট্র আমেরিকা বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় সৈন্য সমাবেশ করবে। সব চাইতে মজার বিশয়, বিশ্ব সন্ত্রাসের প্রধান হোতা, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের চরম বিরোধিতাকারী, বিশ্বনিন্দিত আমেরিকা বলছে সন্ত্রাস মোকাবেলায় সাহায্য করার কথা। ইসলাম এবং মুসলিম বিরোধী আমেরিকার সন্ত্রাস মোকাবেলার জলজ্যান্ত উদাহরন আজকের আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক সহ সকল মুসলিম রাস্ট্রগুলো।কাজেই এইসব অপ-চুক্তির বিরুদ্ধে এখনি আপামর মানুষের রুখে দাড়াবার সময়।তা নাহলে সন্ত্রাস নির্মুলের নামে আমাদের দেশের শান্তি প্রিয় মানুষ নির্মুল হয়ে যাবে।
১৬টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×