বাবা,
জুতা মাইরা গরু দান করার স্বভাব আমাগো অনেক আগে থেইকাই। সেই পঁচাত্তরে জুতা মারছিলাম আর অহন পঁয়তাল্লিশ বছর পর আইসা এক্কেবারে গরুদানের বন্যায় ভাসায় দিতাছি।
সালার, বীর বাঙালী আমরা। যেই মানুষটারে আমরা নির্বঙ্গশ করতে চাইছিলাম, যেই মানুষটারে মাইরা তার লাশের উপরে দিয়া আনন্দ মিছিল কইরা বেড়াইছিলাম, যেই মানুষটার খুনীদে বীর উপাধি দিয়া তাদের ছাইড়া দিসিলাম, যেই মানুষটার স্বপ্নের সোনার বাংলাকে ধ্বংস করতে করতে তামার বাংলা বানায় ফালাইলাম। সেই মানুষটার জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের জন্য সেই সব মানুষগুলার ছ্যাবলামী আর চাটুকারিতা দেইখা আমার হাগা আইতাছে।
আমাগো স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এইসব তেল মারার ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাঞ্জলীতে আপনার কিছুই আসে যায় না। যার গেছে সেই জানে, আমরা আপনার বংশধরদের কি ক্ষতি করছি। বাপ-মা, ভাই-ভাবী, চাচা সবাইরে মাইরা এখন তাগর জন্যে এক্কেবারে জীবন দিয়া দিতাছি। ঘেন্না হওয়া উচিৎ আমাগো। সারাজীবন ধইরা মাফ চাইলেও এই পাপের ক্ষমা পাওয়া যাইবো না। আমাগো যদি অহন পাছার কাপর তুইলা চাবুক মাইরা পাছা লাল বানায় দেয় তাও তো কিছু কইতে পারুম না। কারন আমরা তাগো লগে যেই অন্যায়-অবিচার করছি সেইটার কোন বিচার নাই।
যেই মানুষটারে কুত্তার মত মাইরা ফালায় রাখছিলাম, সেই মানুষটারে অহন জাতীর পিতা বানানোর লাইগা আমরা এক্কেবারে নাকের জল শরীরের ঘাম, চোখে জল একাকার কইরা ফালাইতাছি…
যাই হউক, আপনার মর্ম এই গাধা বাঙালী কোনদিন বুঝে নাই। কোনদিন বুঝবেও না। আপনে কি দিয়া গেছে আমাগোরে, আর আমরা সেইডারে কি বানাইছি যদি দেখতেন তাইলে নিজেই আত্মহত্যা করতেন। আপনার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে আপনার আশির্বাদে আর বংশধরের সাহসী অনুশাসনে। আপনার অনুপস্থিতি তাদের শিখাইছে কি কইরা নেকড়ের পালের মইদ্ধে লড়াই কইরা বাচতে হয়।
দোয়া রাইখেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৪৫