দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ সরকার
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম গত এক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিন বছর আগের সঙ্গে তুলনা করলে কোনো কোনো পণ্যের দাম শতকরা একশ’ থেকে ৩শ’ ভাগ পর্যন্ত বেড়েছে। এক বছর আগের ৩০ টাকা কেজি চিনির দাম বর্তমান সরকারের আমলে সিন্ডিকেট করে ৭০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বর্তমানে ৫১ থেকে ৫৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডালের দাম ৩ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১৬০ ভাগ। আওয়ামী লীগ দায়িত্ব নেয়ার আগের দিন যে রসুন ছিল ২৪ টাকা কেজি, সেটা এখন ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শতকরা হিসাবে ২১২ ভাগ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে মূল্যবৃদ্ধির এসব তথ্য প্রতিফলিত হয়েছে।
টিসিবি’র গতকালের রিপোর্টে উল্লিখিত ৪৯টি পণ্যের মধ্যে ৩৭টির দামই গত এক মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে মোটা চাল ও আটার দাম কয় মাস তুলনামূলক কম থাকলেও গত এক সপ্তাহে মোটা চাল সাড়ে ১১ ভাগ, আটা সাড়ে ১৫ ভাগ, মসুর ডাল ১০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে মোট চালের কেজি দীর্ঘদিন ২০/২২ টাকা থাকলেও গতকালের সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৫/২৬ টাকা কেজির নিচে কোনো চাল পাওয়া যাচ্ছে না। গত পরশুর তুলনায় গতকালও মোটা চালের দাম কেজিতে এক টাকা বেড়েছে বলে টিসিবি জানিয়েছে। ১৮ টাকা কেজির খোলা আটা ২২ থেকে ২৪ টাকা ও প্যাকেটজাত ২৫ টাকা কেজিতে গতকালের বাজারে বিক্রি হয়েছে। মসুর ডাল সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সরকারি হিসেবে ১৩৫ টাকা কেজি ও বাস্তবে বাজারে ১৪০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। বোতলজাত সয়াবিন তেল একশ’ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে।
অথচ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, “দ্রব্যমূল্যের দুঃসহ চাপ প্রশমনের লক্ষ্যে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার ব্যবস্থা করা হবে। দেশজ উত্পাদন বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সময়মত আমদানির সুবন্দোবস্ত, বাজার পর্যবেক্ষণসহ বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মজুতদারি ও মুনাফাখোরি সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হবে, চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে। ভোক্তাদের স্বার্থে ‘ভোগ্যপণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ’ গড়ে তোলা হবে। সর্বোপরি সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য কমানো হবে ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা হবে।” বিগত নির্বাচনের আগে দেশের জনগণের কাছে এসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিন বদলের পালা নামে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন বক্তৃতায় ১০ টাকা কেজি চাল, ৫ টাকা কেজি কাঁচামরিচ, বিনামূল্যে কৃষকদের সার দেয়ার লোভনীয় প্রতিশু্রতি দিয়েছিলেন। বাস্তবতা হচ্ছে কৃষকরা এবার তাদের উত্পাদিত ধান, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের ভালো মূল্য না পেলেও ভোক্তাদের অনেক বেশি দাম দিয়ে স্থানীয় কৃষিজাত পণ্য কিনতে হচ্ছে। মধ্যস্বত্বভোগী, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়েওঠা সিন্ডিকেট ও দালালচক্র এবং চাঁদাবাজির কারণে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে এর আগে সরকারের মন্ত্রীরাও স্বীকার করেছেন। ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় সরকারি কোনো উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি। ফলে চাল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দরই সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। কৃষক পর্যায়ে সবজির দাম কম থাকলেও ভোক্তা পর্যায়ে দাম এখনও অনেক বেশি।
টিসিবি’র বাজার দরের বিশ্লেষণ : সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের বাজার দর তথ্যে বলা হয়েছে, গতকাল বাজারে মোটা চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। যা আগের দিনের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বেশি। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সরু চালের দাম এখন ৩০ থেকে ৪৫ টাকা। এই মানের চাল গত বছর এই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৩৩ থেকে ৪২ টাকা দরে। সরজমিনে আরও দেখা গেছে, ভালো মানের নাজিরশাইল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজিতেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির মতে, মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে এখন ২৮ থেকে ৩০ টাকা দরে। টিসিবি জানায়, এক কেজি আটার দাম এখন সর্বনিম্ন ২২ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৪ টাকা লিটারে। পাম তেল গত বছর এই সময়ে প্রতি লিটার ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হলেও, এখন বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৪ টাকা দরে। মসুর ডাল দেশের ইতিহাসে এখন সর্বোচ্চ দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে। এই ডাল গত বছর এ সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৯৫ টাকা কেজি দরে। বর্তমান সরকারের এক বছরের মাথায় দেশি মসুর ডালের দাম বেড়েছে ২৬ দশমিক ২৭ ভাগ।
টিসিবি’র তথ্যমতে, বাজারে এখন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দর ছিল টিসিবি’র হিসাব মতে ২৪ টাকা। এক বছরে দাম বেড়েছে ৪৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। রসুনের কেজি এখন ৯০ থেকে ১১০ টাকা। গত বছরও প্রতি কেজি রসুন কিনতে পাওয়া গেছে ২৮ থেকে ৩৬ টাকায়। টিসিবি জানিয়েছে, এক বছরের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে ২১২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
বাজারে প্রতি কেজি চিনির দর টিসিবি’র পরিসংখ্যানে ৫১ থেকে ৫৪ টাকা দেখানো হয়েছে। যে চিনি বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের আগের দিন ছিল মাত্র ৩০ টাকা কেজি। বাজারে সবচেয়ে নিম্নমানের পুরনো আলু বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে। গত বছর এ সময়ে আলুর দর ১০ থেকে ১৫ টাকা ছিল বলে জানিয়েছে টিসিবি। এক বছরের মাথায় আলুর দাম বেড়েছে ৮৮ শতাংশ। তিন বছর আগে ফার্মের ডিমের হালি ছিল ১২ টাকা, মাঝখানে ৩২ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শুধু এ কয়টি পণ্যই নয়, গত এক বছরে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, লবণ, মসলা, আদা, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দামই বেড়েছে। দাম হু হু করে বাড়লেও বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান। তবে এসব বৈঠকের পর পরই আরেক দফা করে দাম বাড়ানো হয়েছে। গত ২০ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও চিনির পাইকারি দর বেঁধে দেয়া হয়েছিল। তখন বাণিজ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এখন থেকে কোল্ড স্টোরেজে প্রতি কেজি সাধারণ আলু ২২ টাকা এবং প্রতি কেজি ডায়মন্ড আলু ২৩ টাকা দরে বিক্রি হবে। এছাড়া পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৬ থেকে ১৯ টাকা, রসুন ৬০ টাকা, আদা ৬০ টাকা, চিনি ৩৯ টাকা ৬৫ পয়সা দরে বিক্রি করবেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।’ তবে পরদিন থেকেই খুচরা বাজারে এসব পণ্যের দাম না কমে উল্টো বেড়ে যায়।
ঈদের আগের মসলা জাতীয় পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং এখন ভরা মৌসুম হওয়ায় এক মাসের ব্যবধানে কেবল মসলা জাতীয় কিছু পণ্যের দাম সামান্য কমেছে।
তিন বছরে মসুরের দাম বেড়েছে ১৬০ ভাগ : বাজারে মসুর, মুগ, এ্যাঙ্কর, ছোলাসহ সব ধরনের ডালের দামই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। তিন বছর আগেও মসুর ডাল পাওয়া যেত ৪৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। এখন সেই ডাল ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শতকরা হিসাবে দাম বাড়ার হার প্রায় ১৬০ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডালের দাম আরও বাড়বে। এদিকে সরকারের তরফ থেকে গত কয়েক মাস ধরেই প্রচার চালানো হচ্ছিল, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সরাসরি মসুর ডাল আমদানি করে কম দামে বিক্রি করবে। তবে গতকাল পর্যন্ত টিসিবি ডাল আমদানিই করতে পারেনি।
গতকাল রাজধানীর রহমতগঞ্জ ডালপট্টিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত মজুতে কোনো ঘাটতি নেই। আমদানিও স্ব্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে কেন বাজার চড়া? এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর বেড়ে যায় মসুর, মুগ, ছোলা, মটর ও খেসারিসহ সব ধরনের ডালের দাম। আমদানি বন্ধ করে দেন কেউ কেউ। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ডালের বাজার চড়া। ভারত থেকেও গত ৩ বছর ধরে মসুর ডাল আমদানি হচ্ছে না। কমে গেছে স্থানীয় উত্পাদন। এখন আবার ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব কারণে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে সামনে দাম কমার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল কাঁচাবাজার ও পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানগুলোতে প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকা দরে। টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ছিল ৪৫ টাকা। টিসিবির বাজারদর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০০২ সালে প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হয় ৩৬-৪৪ টাকা দরে, ২০০৩ সালে ৩৫-৪৬ টাকা দরে, ২০০৪ সালে ৩৫-৫০ টাকা দরে, ২০০৫ সালে ৪০-৫২ টাকা দরে, ২০০৬ সালে ৪৫-৬০ টাকা দরে।
মুগ ডাল ২০০৬ সালের আগস্টে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে। ২০০৮ সালে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা দরে, যা এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৬-১০৮ টাকা কেজি দরে। অ্যাঙ্কর ডাল গত দু’বছর আগেও প্রতি কেজি মাত্র ২০-২২ টাকা দরে কেনা যেত। এখন বাজারে অ্যাঙ্কর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ টাকা দরে। গত এক মাসের ব্যবধানে এ ডালের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে রহমতগঞ্জের ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বলেছেন, অ্যাঙ্কর ডাল সাধারণত নিম্নআয়ের লোকদের কাছেই বেশি বিক্রি হয়। এছাড়া হোটেল-রেস্তোরাঁয় এ ডাল দিয়েই মসুর ডালের চাহিদা পূরণ হচ্ছে এখন।
আলু : টিসিবির তথ্যমতে, গত ১৪ বছরের মধ্যে এত চড়া দামে আর বাজারে আলু বিক্রি হয়নি। অথচ এখন চলছে আলুর মৌসুম। গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২২-২৫ টাকা দরে। এক বছরে আলুর দর বেড়েছে ৮৮ শতাংশ।
গতকাল কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়তদার আমিনুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে আলুর কোনো ঘাটতি নেই। পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। তিনি জানান, গত বছরও এ সময় প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল পাইকারি বাজারে ৮-৯ টাকা, যা খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ১০/১২ টাকা কেজি দরে। তবে এখন পাইকারি বাজারেই আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকার উপরে।
টিসিবির তথ্যানুযায়ী, ১৯৯৬ সালে আলুর দাম ছিল সর্বনিম্ন ৯ ও সর্বোচ্চ ১২ টাকা কেজি। ২০০২ সালে সর্বনিম্ন ৫ এবং সর্বোচ্চ ১৪ টাকা। ২০০৫ সালে খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হয় প্রতি কেজি সর্বনিম্ন ৬ ও সর্বোচ্চ ১৫ টাকা।
অস্থির ভোজ্যতেলের বাজার : আন্তর্জাতিক বাজারে গত কয়েক মাসে ভোজ্যতেলের দামে খুব একটা হেরফের হয়নি বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন আমদানিকারক। তার পরও স্থানীয় বাজারে গত এক মাস ধরে ভোজ্যতেলের দামে ঊর্ধ্বমুখী। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে কয়েক মাস আগে বাণিজ্যমল্প্পী ফারুক খান সয়াবিন ও পামঅয়েলের দাম ঠিক করে দিলেও সে দামে তেল বিক্রি হয়নি। টিসিবির তথ্যমতে, ২০০৬ সালে বাজারে প্রতি কেজি সয়াবিনের দাম ছিল ৪৪-৫০ টাকা কেজি। ২০০১ সালে ৩২-৪২, ২০০২ সালে ৩৪-৪৮ এবং ২০০৬ সালে ৪৮-৬৫ টাকার মধ্যে খুচরা বাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে।
চিনির কেজি ৫৬ টাকা : বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে এখন ৫৬ টাকা দরে। অবশ্য টিসিবি জানিয়েছে, গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে চিনির দর ছিল ৫১-৫৪ টাকা কেজি। টিসিবির হিসাবে এক বছরের মাথায় চিনির দর বেড়েছে ৫৯ দশমিক ৯ ভাগ। চিনির দাম কমাতে সরকার গত রোজার মধ্যে শুল্ক কমিয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।
পেঁয়াজ-রসুন : ২০০৬ সালে বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ৮ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকায়। ২০০৬ সালে পেঁয়াজের খুচরা বাজার দর ছিল সর্বোচ্চ ২২ থেকে সর্বনিম্ন ১৩ টাকা। গতকাল বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৯০-১১০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির তথ্যমতে, গত এক বছরে রসুনের দাম বেড়েছে ২১২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
গুঁড়োদুধ : ১৯৯৬ সালে ২ কেজি ওজনের (টিনজাত) ডানো ব্র্যান্ডের গুঁড়োদুধ বিক্রি হয়েছে ৪৬৫-৫০০ টাকায়। বর্তমানে একই ব্র্যান্ডের ২ কেজি ওজনের দুধ বিক্রি হচ্ছে ১০৩০-১০৫০ টাকা দরে। গুঁড়োদুধের বড় একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গুঁড়োদুধের দাম গত ৮-৯ মাসে প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। বর্তমানে প্রতি টন গুঁড়োদুধ বিশ্ববাজারে ২ হাজার ডলারে নেমে এসেছে বলে জানান তিনি। গত বছরের জুন মাসে ওই দাম ছিল ৫ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার। তবে সে তুলনায় স্থানীয় বাজারে গুঁড়োদুধের দাম কমেনি।
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ



ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন
মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।