somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফখরুদ্দীনরা বিদেশী নাগরিক হয়েও দু'বছর বাংলাদেশ শাসন করেছেন

১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহুদিন পর পোস্ট দিলাম (কপি করা)


এই ষড়যন্ত্রের বিচার প্রয়োজনঃ-
চমকে ওঠার মতো তথ্য প্রকাশ করেছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। ৯ জানুয়ারি ‘অধিকার' আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে দেশের এই প্রবীণ আইনজীবী বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী ড. ফখরুদ্দীন আহমদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন না। সে ‘যোগ্যতা'ই তার নেই। কারণ, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং সংবিধানে বলা আছে, কোনো বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হতে পারবেন না। অন্যদিকে সত্য গোপন করে ফখরুদ্দীন আহমদ প্রধান উপদেষ্টা হয়েছিলেন। তার চারজন উপদেষ্টাও সংবিধানের একই ধারা লঙ্ঘন করেছেন। সত্য গোপন এবং সংবিধান ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ফখরুদ্দীন আহমদসহ তত্ত্বাধায়ক নামধারী ওই সরকারকে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মত প্রকাশ করেছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।
উল্লেখ্য, এর আগেও ফখরুদ্দীন আহমদের মার্কিন নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি জানিয়েছিল, ফখরুদ্দীন আহমদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী আবাসিক কার্ডধারী বা রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রে তার সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বারের উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটি বলেছিল, তিনি মার্কিন নাগরিকের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। তার স্ত্রী-সন্তানরাও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আরো জানিয়েছিল, ফখরুদ্দীন আহমদ অবৈধ পথে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের দুটি শহরে তার দুটি বাড়ি রয়েছে। এ দুটি বাড়ির মূল্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা। সে দেশের একটি ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে তার এক কোটি টাকা জমা রয়েছে। অন্য কয়েকটি ব্যাংকেও তার অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সময় ফখরুদ্দীন আহমদ তথ্যগুলো গোপন করেছিলেন। এসব তথ্য ও বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তাকে তলব করবে বলে সে সময় প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছিল। কারণ, ফখরুদ্দীন আহমদ সজ্ঞানে সংবিধান লঙ্ঘন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং সংবিধান নির্দেশিত ৯০ দিনের স্থলে প্রায় দু'বছর অবৈধভাবে ক্ষমতায় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করার অভিযোগও উঠেছিল। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ফখরুদ্দীন আহমদকে এ পর্যন্ত তলব করেনি। তিনিও তাই পার পেয়ে যাচ্ছেন। পার পাচ্ছেন জেনারেল মইন উ আহমেদসহ তথাকথিত ১/১১-এর অন্য খলনায়ক ও কুশীলবরাও। অথচ বন্দুকের জোরে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তারা দেশ ও জাতির নানামুখী ক্ষতি করে গেছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সর্বনাশও করেছেন তারা। কিন্তু হাতে ‘বন্দুক' থাকায় এবং কিছু বিদেশী শক্তির পাশাপাশি এদেশেরও বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমর্থন ছিল বলে কারো কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়নি তাদের। অথচ প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের জেলে ঢোকানো ও তাদের ওপর নির্যাতন চালানো, ব্যবসায়ীদের ভীত-সন্ত্রস্ত ও ব্ল্যাকমেইলিং করে অর্থনীতিতে ধস নামানো এবং তত্ত্বাধায়ক সরকারের এখতিয়ার বহির্ভূত নীতিগত বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ও কর্মকান্ড চালানোর দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের দায়িত্ব ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার সে দায়িত্ব পালন না করায় পরিষ্কার হয়েছে, ফখরুদ্দীনরা আসলেও বিশেষ কিছু এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই ক্ষমতা দখল করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, একথাও গোপন থাকেনি যে, লগি-বৈঠার নৃশংসতা থেকে জরুরি অবস্থা জারি করা পর্যন্ত সবই করা হয়েছিল সুচিন্তিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে। বহুল আলোচিত ‘রোডম্যাপ'ও ছিল সেই পরিকল্পনার অংশ। এর ভিত্তিতেই ডিজিটাল নির্বাচন হয়েছে, ক্ষমতায় বসানো হয়েছে আওয়ামী লীগকে। এখন চলেছে ‘ঋণ' পরিশোধ করার পালা। এজন্যই ফখরুদ্দীন আহমদ তার উপদেষ্টা শ্যালক ইফতেখার আহমদ চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে পেরেছেন। অন্য উপদেষ্টারাও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। প্রধান খলনায়ক জেনারেল মইন উ'র সম্পর্কে তো বলারই অপেক্ষা রাখে না।
ফখরুদ্দীন আহমদকে তলব করে বিচারের সম্মুখীন করার বিষয়টি নিয়ে অবশ্য প্রথম থেকেই সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু তাদের বদৌলতে ক্ষমতায় আসতে পেরেছে, সেহেতু আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে ফখরুদ্দীন আহমদ এবং জেনারেল মইন উ'সহ তার উপদেষ্টা ও অন্য দোসরদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া সম্ভব হওয়ার কথা নয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে বহুল আলোচিত ‘ডিল'ও সেভাবেই হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে ফখরুদ্দীনের বিরুদ্ধে প্রকাশিত তথ্যগুলোকে বাতিল করার কিংবা পাশ কাটিয়ে যাওয়ারও উপায় নেই। বিশেষ করে তার মার্কিন রেসিডেন্টশিপ বা নাগরিককত্বের বিষয়টিকে। কারণ, এর সঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধানের নির্দেশনা জড়িত রয়েছে। এ ব্যাপারেই সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। মার্কিন নাগরিক হিসেবে ফখরুদ্দীন আহমদের প্রধান উপদেষ্টা হওয়াটা কোনোভাবেই সংবিধানসম্মত হয়নি। তিনি নিজে তো বটেই, তাকে যারা প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন তারাও সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের এই বক্তব্যের সূত্র ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন ও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাখ্যায় এসেছে ফখরুদ্দীন সরকারের কর্মকান্ডের বৈধতার দিকটিও। এ ব্যাপারে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তথ্য গোপন করে মার্কিন নাগরিক ড. ফখরুদ্দীন আহমদের প্রধান উপদেষ্টা পদে নিযুক্তি যেহেতু সংবিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন ও বেআইনি, সেহেতু তার সরকার এবং সে সরকারের সকল সিদ্ধান্ত ও কর্মকান্ডও বৈধ বা আইনসম্মত হতে পারে না। ব্যাখ্যার এই দৃষ্টিকোণ থেকে ফখরুদ্দীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন এবং সে নির্বাচনের ভিত্তিতে গঠিত সরকারের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিকই আদালতে যেতে পারেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক যথার্থই বলেছেন, ফখরুদ্দীন আহমদসহ ওই সরকারের প্রত্যেককে বিচারের সম্মুখীন করা দরকার।
১৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×