সেই ১৯৯৯ সালের মার্চে যশোরে উদিচীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী-জঙ্গী বোমা হামলা শুরু হলে এটাকে বিএনপি-জামাত ও পাকিস্তানের ISI কে দ্বায়ী করে আসছিল আওয়ামী-বাকশালী-তাবেদার গং। কিন্তু তখন থেকেই দেখা যাচ্ছিল জেএমবির ব্যাবহৃত আরডিএক্স বিস্ফোরক পদার্থ সমূহ ভারত হতে আগত। কিন্তু তখন (১৯৯৯-২০০১) সরকার কেন এটা স্বীকার করবে? ঢালাও ভাবে বলা হচ্ছিল যে জামাত নাকি জঙ্গী কায়দায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়। অথচ জেএমবির প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান হল যুবলীগ নেতা মির্যা আযমের আপন দুলাভাই। তাকে ধরা তো দূরে থাকুক জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ কাউকেই তখনকার হাসিনরা সরকার গ্রেফতরা করেনি যা স্পষ্টতই বলা চলে গ্রেফতার করার কোন ইচ্ছা ছিল না। গ্রেফতার করলে কৃত্রিম জঙ্গী তৎপড়তা কেমনে চলবে বাংলাদেশে? আর তাতে তো আলীগ ও ভারত ফায়দা তুলতে পারবে না। সে যাই হৌক ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হল বিএনপি-জামাতের চার দলীয় জোট। তারপর ২০০২ সালে কোরবানীর ঈদে ময়মনসিংহের এক সিনেমা হলে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শুরু হল জেএমবির দ্বিতীয় অধ্যায়। তখন যথারীতি আলীগ দ্বাবী করল মৌলবাদী-জঙ্গী গোষ্ঠী আধুনিক, প্রগতিশীলদের উপর হামলা করে চলেছে। শুধু তাই নয় কিছু মাজারেও বোমা হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে টাঙ্গাইল, ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর হযরত শাহ্ জালালের মাজারে। দেখা গেল বেছে বেছে এমন সব জায়গায় হামলা চালানো হচ্ছে যেখানে ইসলামের অনেক বিষয়ই নিষেধ আছে। যেমন মাজার ভক্তি অনেকটাই শিরকীর শামিল। তাই ইসলামের শত্রুরা অতি ইসলামীদের কিছু যুবক ও ব্যাক্তিদের কে বিভ্রান্ত করে হামলা চালানোর জন্য উস্কে দেয়। যে বিষয়ে জামাত, ইসলামী শাসনতন্ত্র সহ বেশ কিছু নির্বাচনে অংশগ্রহণ কারী বিভিন্ন ইসলামী দল দেশের মুসলমানদের কে সমাবেশ বক্তৃতা, বিবৃতির মাধ্যমে মাঝার ও উদিচী নামক চরম ইসলাম বিদ্বেষী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাবধান করে আসছিল, জেএমবি সহ ২/১ টি উগ্রবাদী দলের বোমা হামলার দ্বারা রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলা করা হয়। আওয়ামী-বাকশালী-তাবেদার গং এই জোর প্রচার-প্রপাগান্ডা চালায় যে জামাত, ইসলামী শাসনতন্ত্র এবং জেএমবি এক। স্পষ্টতই ফায়দা তোলার ভারতীয় তাবেদারদের কুৎসিত প্রচেষ্টা। এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ যেন শিরকী-কুফরী সমন্ধে বাছ বিচার না করতে পারে এই সকল ভারতীয় মদদে তথাকথিত ইসলামী জঙ্গীবাদ একটি ভয়ংকর হাতিয়ার। কথায় বলে অতিভক্তি চোরের লক্ষণ সে হিসেবে শুরুতেই জেএমবির কার্যক্রম সচেতন মহল কে নিঃসন্দেহে ধারণা দেয় যে এটা ভারতের কুটিল প্রয়াস বাংলাদেশ কে চাপে রাখতে। ২০০১-০৬ ভারতে তো বটেই তার প্রভাবধীন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্র পত্রিকায় জোর প্রচারণা চালানো হয় জঙ্গীতে ভরে গেছে বাংলাদেশ। ঠিক যেমন CIA আলকায়েদা নামক পুতুল বানিয়ে সন্ত্রাস তথা ৯/১১ নাটক রচনা করে আফগানিস্তান দখল করে। ঠিক তেমনি ভারতও বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গীর অজুহাতে বাংলাদেশে তার সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে আগ্রাসন চালানো পায়তারা;
http://www.911sharethetruth.com
http://www.wanttoknow.info/050908insidejob911
http://www.911review.org/Wiki/InsideJob.shtml
http://www.bushstole04.com
Click This Link was an inside job&type=
যেখানে খোদ অনেক মার্কিনারা বলছে যে এটা বুশের সাজানো নাটক তাই সেটা বিশ্বাস না করে কোন উপায় নেই। যে বুশ মিথ্যা অজুহাতে ইরাক দখল করতে পারে তার পক্ষে নিজ দেশে ৯/১১ অত্যন্ত সহজ। এভাবেই বাংলাদেশে ১৯৯৯ সাল হতে ২০০৫ এর বিশেষ করে ১৭ই আগষ্ট একযোগে ৬৩ জেলায় বোমা ফাটানো ঐ একই আন্তর্জাতিক চক্রান্তের ভারতীয় ভার্সন। ঐ ঘটনায় ব্যাবহৃত পাওয়ারজেল, ডেটোনেটর, টাইমার, ইলেকট্রনিক ডিভাইস সবই ভারতীয়। RAB এর কাছে গ্রেফতারকৃত শায়খ রহমান ও বিশেষ করে আতাউর রহমান সানি ২০০৬ সালে এবং ফাঁসী কার্যকরের পূর্বে ২০০৭ সালে ফখরুদ্দিনের সরকারের কাছে বলেছিল যে তাদের বিস্ফোরক সরঞ্জাম সহ অন্যান্য রসদ সবই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদাহ হতে চালান দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়াম-বাকশালী-তাবেদার গং জোট সরকার কে তো বটেই এমন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারকেও অপবাদ দেয় যে তারা নাকি বিগত চারদলীয় জোট সরকার কে বাচানোর চেষ্টা করছে। অর্থাৎ আওয়াম-বাকশালী-তাবেদার গং তখনও তাদের প্রভু ভারতের কথা যেন ফাস না হয় তার জন্য শোরগোল তুলে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে শেষমেশ নিজেদের বর্তমান মহাজোট সরকারও মেনে নিদে বাধ্য হয় যে বোমা ও অন্যান্য ক্ষতিকারক দ্রব্য সবই ভারত হতে আগত;
Click This Link
পরিস্থিতি এমন যে ঠিক ২০০৩ সালে ইরাকের সাদ্দামের বা তার সরকারের কোন কাকুতি মিনতি শুনে তাকে সাহায্যে এগিয়ে আসেনি বিশ্বের কোন প্রভাবশালী দেশ যেমন রাশিয়া, চীন তো বটেই এমনকি সৌদি আরব, কুয়েত বা ইরান। আমেরিকা ঠিকই ইরাক দখল করে নিয়েছে। একই ভাবে ২০০১-০৬ সালে জোট সরকারের সময় তাদের সমর্থক ব্যাতীত কেউই বিশ্বাস করেনি যে এর সাথে ভারত জড়িত। ২০০৫ সালে তৎকালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম ভারত সফরে সেই দেশের মিডিয়ার কাছে বলেন যে জেএমবির ব্যাবহুত বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি ভারত থেকে আগত, তখন সেই সময়কার বিরোধী নেত্রী হাসিনা এই কথায় ভীষণ গোস্বা হন;
Click This Link
এখানে উল্লেখ্য যে ঐ বছর হাসিনা ভারতে ব্যাক্তিগত সফরে(আজমীর শরীফ) গেলেও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ১ ঘন্টা বৈঠক এবং সোনিয়া গান্ধীর সাথে বৈঠক প্রমাণ করে যে ব্যাক্তিগত ভ্রমণ স্রেফ বাহানা মাত্র কারণ মহাব্যাস্ত মানমোহন সিং ১ ঘন্টা সময় কারো জন্য এমনি এমনি দিবেন তা স্রেফ বেকুব লোকেরাই ভাবতে পারে। কিভাবে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে ফায়দা লুটা তথা ক্ষমতায় আসা যায় তার পরিকল্পনাই হাসিনা তখন করে আসেন। ফলশ্রুতিতে ২০০৭ সালে ১/১১ এবং ২০০৮ সালে মহাজোটের ক্ষমতা লাভ করে। তাই হাসিনার বিডিআর প্রধানের মন্তব্যে গত্রদাহ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যে বর্তমান মহাজোট সরকারের প্রশাসনই বলছে যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে জেএমবির বৈদেশিক শাখা। যার নেতৃত্বে রয়েছে তিনজন ভারতীয় নাগরিক। এরা হল সাইফুল ইসলাম, কবিরুল ইসলাম এবং রফিকুল ইসলাম। এদের অধীনে আছে ১৫০০ জেএমবির কর্মী;
Click This Link
আমি নিশ্চিত যে ১৯৯৮ সাল হতেই জেএমবির ভারতীয় উইং সক্রিয়। তবে যদি প্রআলোর রিপোর্ট ধরলে দেখা যায় যে ২০০২ সাল হতে পশ্চিমবঙ্গের মালদাহে এই অংশ গঠিত হয়। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে ৭ বছর ধরে ভারত সরকারের চোখ ফাকি দিয়ে এবং ভারত সরকারের বাংলাদেশ সীমান্তের একতরফা কাটাতারের বেড়া টপকে কিভাবে বাংলাদেশে ঢুকে? কেউ চাইলেই ভারতের স্থানীয় মার্কেট হতে বোমার রাসায়নিক পদার্থ, ডেটোনেটর সহ অন্যান্য দ্রব্যাদি কিনতে পারবে না। তাকে অবশ্যই ভারত সরকারের লাইসেন্স থাকতে হয়। কিন্তু ১/২ টি বা বিচ্ছিন্ন নয় প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক কিভাবে সরকারের সহায়তা ছাড়া জেএমবি ভারত থেকে কিনে? তাই এখন যদি ভারত সরকারকে বাংলাদেশের মহাজোট সরকার তথাকথিত অনুরোধ করে তো ভারত তাদের কে হয় গায়েব করে ফেলবে নতুবা এমন রিমান্ড নিবে যে চৌদ্দ গুষ্টীর নাম তো ভুলবেই নিজের নামও ভুলে স্বীকার করবে বে যে এর সাথে বিএনপি-জামাত ও পাকিস্তানী ISI জড়িত। তবে যেহেতু বহু আগে হতেই বিএনপি-জামাতের জোট সরকার এর জন্য ভারত কে দ্বায়ী করে আসছে তাই বিএনপি-জামাত কে সরাসরি দ্বায়ী নাও করা হতে পারে। তখন হয়তো ISI কে দ্বায়ী করা হবে। আর বিডিআর বিদ্রোহে বাংলাদেশের সীমানা ৭-১৫ দিন অরক্ষিত থাকার সুযোগে বহু বিস্ফোরক বাংলাদেশে ইতিমধ্যে প্রবেশ হয়ে আছে বলে আমি বিশ্বাস করি। এ নিয়ে আমি ভয়ংকর অশুভ কিছু ঘটবে বলে মনে করি। কারণ পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জেএমবির ঘাটি ভারত চাইলেই দ্বায় এড়াতে পারবে না। তাই সে বাংলাদেশে বা নিজের দেশে ভয়ংকর সন্ত্রাসী নাটক রচনা করে এমন ডাইভার্সন তৈরি করবে যে মালদাহে জেএমবির ঘাটিন কথা হালে পানি পাবে না। ঠিক যেমন ২০০৮ এ মুম্বাবইয়ের তাজ, ওবরয় হোটেলে সন্ত্রাসী হামলা নাটক। এটা রচিত হয়েছিল যখন বিজেপি, হিন্দু মহাসভা ও সংঘ পরিবারের সদস্যদের মুসলমান সেজে মালগাও, ভারত-পাকিস্তান গামী ট্রেনে বোমা হামলায় জড়িত কর্ণেল পুরোহিত গ্রেফতার হলে ভারতীয় হিন্দু দল সমূহ কোনঠসা হয়ে পরে। মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলা তথা ডাই ভার্সণ তাদের কে বাচিয়ে দেয়। সে কারণেই মালগাও ও ট্রেনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায় জড়িত কর্ণেল পুরোহিত এবং বিভিন্ন বিজেপি নেতাদের ব্যাপারে কিছুই শোনা যাচ্ছে না। তাই বাংলাদেশে বা ভারতে আবার সে রকম কিছু হলে বাংলাদেশের আওয়ামী-বাকশলী ঘরাণার বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক এবং কলামিষ্টদের দাপটে জেএমরি বৈদেশিক ঘাটি যে পশ্চিমবঙ্গের মালদায় ছিল তা অনেকটাই চাপা পরবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:৫৬