somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলচ্চিত্র বিনিময়: কি, কেন ও কীভাবে?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রসঙ্গ: বাণিজ্য
পাশের বাংলার ‘পোস্ত’ এসেছে বলাকায়। ক’দিন আগেও সেখানে চলেছে ‘ভয়ংকর সুন্দর’ যার প্রোডাকশন দেশি হলেও গল্প আর নায়ক এসেছিল পাশের দেশ থেকে। ফেসবুক আর অনলাইনে ‘লড়াই, লড়াই, লড়াই চাই’ বলে সারা দিন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নিয়ে যেভাবে বিশ্লেষণ করছেন তাতে সকলেরই সাধুবাদ প্রাপ্য। কিন্তু পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে আমাদের চলচ্চিত্র এখনও বয়ঃসন্ধি কাটাতে পারেনি কিছু সুনির্দিষ্ট সমস্যার কারণেই।
গেল বছরের খতিয়ানই নেই না কেন!! কলকাতার সবচে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র ছিল ‘চ্যাম্প’। বক্সিং নির্ভর সিনেমাটার প্রচারণা যেভাবে চালানো হয়েছে, পারলে বোমা ফাটিয়ে প্রোমোশনাল দেখানো হয়েছে টেলিভিশনে, যাতে দর্শকের মনে হয়েছে এই চলচ্চিত্র অবশ্যই দেখতে হবে।
তো খুব আগ্রহ নিয়েই সিনেমাটি দেখতে বসা এবং যথারীতি ভয়ানক হতাশ হওয়া। বিশ বছর আগের মদ চলে, কিন্তু বিশ বছর পুরানো সিনেমার গল্প না! সাথে মহান (!) অভিনেতাদের কাজকর্ম দেখলে চিরকালের মতো সিনেমা দেখার খিদেটাই নষ্ট হয়ে যায়। অথচ এনারাই বাংলাদেশে আসে চলচ্চিত্র বিনিময় নিয়ে কথা বলতে।
একটি দেশের চলচ্চিত্র দিয়ে সমাজের বা বোধের মানদণ্ড নিরূপণ করা যায়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় সমস্যা কাহিনীর সংকট। সাথে ভালো বিপণনের অভাব আমাদের ছোট্ট চলচ্চিত্রের বাজারকে আরও বেশি সংকুল করে তুলছে। ফলে মুখ থুবড়ে পড়ছে বড় বাজেটের অনেকগুলো প্রয়াস। ভালো পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী, অন্যান্য কলাকুশলীর সংকটও আমাদের আছে।

প্রসঙ্গ: নিরীক্ষা
পশ্চিম বাংলার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র কিংবা ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্র, দু’ক্ষেত্রেরই পরিস্থিতি অতীব বাজে। সারা বছরে হাতেগোণা দুই- একটা চলচ্চিত্র ছাড়া বাকি কোনো চলচ্চিত্রতে লগ্নি করা মূল টাকাই তুলে আনতে পারছে না ভেঙ্কটেশ-ধাণুকারা; যার বড় কারণ হিন্দি চলচ্চিত্রের বিরামহীন রাজত্ব, তামিল-তেলেগু চলচ্চিত্রের হুবহু নকলনবিশি বাংলা সিনেমা থেকে সেদেশের দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র টিকিয়ে রাখার জন্যই বাংলাদেশের বাজারটুকু জরুরি।

প্রসঙ্গ: কি করতে হবে? লড়াই? কিভাবে?
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের মুখ থুবড়ে পরার প্রধানতম কারণ মৌলিক গল্পের সংকট। হিসেব খুব পরিষ্কার, সেটা বুঝতে চলচ্চিত্র সমালোচক বা গোয়েন্দা হতে হয়না। বাংলাদেশে যে ক’জন ভালো মানের চলচ্চিত্র নির্মাতা আছেন বা যারা মৌলিক গল্প দেখিয়ে দর্শক ধরতে চাইছেন তাদেরকে পঙ্গু করে দিলেই কলকাতার চলচ্চিত্রের বাংলাদেশে রমরমা ব্যবসা গড়ে উঠবে। এই কাজটি খুব সুকৌশলে সুন্দর পরিকল্পনামাফিক করে যাচ্ছে একশ্রেণির স্বার্থলোভী, অর্থপিপাসু লোকজন। এদের সাথে পেরে ওঠা দায় হলেও পারতে হবে, ঠিক যেভাবে ভারত নিজেদের সিনেমা শিল্পকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশে কিছু ভালো মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ হলেও তা ভারতে প্রদর্শনের সুযোগ সুবিধা কিন্তু দেওয়া হচ্ছে না। ঠিক যেমনটা চলছে টেলিভিশনের চ্যানেলগুলো প্রদর্শন নিয়ে। সাথে এদেশের কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষতো আছেনই।
জহির রায়হান, খান আতাউর রহমান, আলমগীর কবির, সুভাষ দত্ত, তারেক মাসুদের মতো শক্তিমান চলচ্চিত্র পরিচালক যেদেশে ছিলেন সেই দেশে গল্প বলার লোকের অভাব পড়ার কথা না। হয়তো আরেকজন জহির রায়হান বা তারেক মাসুদ একদিন এসে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে উজ্জ্বল করবে। সেই আশায় দর্শক দিন গুজরান করছেন।


লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে আইস টুডে’র এই লিংকে।
http://icetoday.net/2017/09/filmsy/



বিনয় দত্ত
কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×